চড়ুইভাতি
হ্যালো আমার বাংলা ব্লগবাসী।আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন।আমিও ভাল আছি।আজ আপনাদের সাথে মজার কিছু মুহুর্ত শেয়ার করব। |
---|
শীতকাল চলে এসেছে।যখন গ্রামে থাকতাম তখন শীতের দিন ছিল আমাদের কাছে স্বাধীনতার আরেক নাম।ডিসেম্বরের মাঝামাঝি পরীক্ষা শেষ হয়ে যেত।তখনকার দিনে খুব কম ছাত্রই পরের ক্লাসের পড়া এগিয়ে নেওয়ার জন্য পরীক্ষা শেষ হতে না হতেই পড়া শুরু করত। আমি তো করতামই না।
ফলাফল সারাদিন খেলাধুলা।আবার শীতকালে ধানের জমি গুলো ফাকা থাকত। সেখানেই কাটত আমাদের দিন।সারাদিন নানা ধরনের খেলাধুলা চলত।আর এখানেই আমরা সবাই মিলে চড়ুইভাতি করতাম।চড়ুইভাতি আর কিছুই না,সবার বাড়ি থেকে তেল,নুন চাল, ডিম নিয়ে এসে নিজেরা রান্না করে খাওয়া
আমার পাড়ায় আমরা প্রতিবছর শীতে একটি পিকনিক এর আয়োজন করি।খুবই ধুমধাম এর সাথে হয় পিকনিক।প্রায় ৮০-১০০ জন মিলে একসাথে খাওয়াদাওয়া করা হয়।পাড়ার একমাত্র বেকার বলে উদ্যোক্তা,আয়োজক সব আমি সাথে বান্ধবী নাফিও থাকে।অর্থাৎ সমস্ত দায়িত্ব আমাদের দুজনের।
তো এবছর ও পিকনিক হবে।কিন্তু চাইলেই তো আর হয়না।এত মানুষের পিকনিক মানে অনেক কাজ। সর্বপ্রথম কাজ হল লিস্ট করা।কারন আমাদের এলাকায় ভাড়াটিয়া দের সংখ্যা বেশি৷ প্রতিবছরই লোকজন চেঞ্জ হয়।তাই প্রতিবছর নতুন করে লিস্ট করতে হয় কোন বাড়ি থেকে কতজন খাবে।তার থেকেও বড় যে কাজ মেনু ঠিক করা।
তো গতকাল পাশের বাসার আন্টির আংকেল দেত সাথে প্রাথমিক পর্যায়ের খসরা আলোচনা চালাচ্ছিলাম।তখন আন্টি বলল পিকনিক কবে? আমি বললাম ডিসেম্বরের ২০তারিখ এর পর।ততদিনে সবার পরীক্ষা শেষ হয়ে যাবে।বাচ্চারাও মজা করতে পারবে।
আন্টি বলল ধুর এভাবে খালি মুখে মিটিং জমে নাকি।তার থেকে নাও কাল একটা ছোট খাট খাওয়াদাওয়ার আয়োজন করা হোক।খেতে খেতে সব বিষয়ে আলোচনা করা যাবে।আমি আমুদে মানুষ। এগুলো তে আমি সর্বদা রাজি।আন্টিকে বললাম আন্টি মেনু কি? আর চাদা কত?
আন্টি বলল সিম্পল মেনু।খিচুড়ি,বেগুন ভাজি।আর কোন চাদা নেই। সবার বাড়ি থেকেই চাল,তেল, বেগুন নেওয়া হবে।খড়ি যা লাগে সব আন্টি স্পন্সর করলেন।অনেকটা চড়ুইভাতির মত।
আজ সকাল বেলা সবার থেকে নুন,তেল লাকড়ি তোলা হল তারপর দুপুরে খাওয়াদাওয়া। রান্নাবান্নার দায়িত্ব আন্টিদের।দুপুরে আন্টিরা রান্না করে সবাইকে ডাক দিলেন।সবাই মিলে মাটিতে বসে পড়লাম প্লেট নিয়ে।এরপর আন্টিরা সবাইকে খিচুড়ি বেগুনভাজি দিলেন এবং নিজেরাও নিলেন।
খিচুড়ির সুন্দর গন্ধে ততক্ষণে পেটের ভেতর আগুন লেগে গেছে।অবশেষে সবাই মিলে খাওয়া শুরু করলাম।খিচুড়ির স্বাদ একদম অমৃতের মত।পেট ভরে খাওয়াদাওয়া করলাম সবাই।তবে মজার ব্যপার হল যে পিকনিক নিয়ে আলোচনা করার জন্য আজকের খাওয়াদাওয়া তা নিয়ে কিন্তু কোন কথা নেই সবাই খাওয়াদাওয়ায় ব্যস্ত।আমিও আর মনে করে দিলাম না।সুস্বাদু খিচুড়ি উপভোগ করতে থাকলাম।
OR
আমি বৃত্ত মোহন্ত (শ্যামসুন্দর)। বর্তমানে ছাত্র। নতুন কিছু শিখতে, নতুন মানুষের সাথে মিশতে আমার খুব ভাল লাগে। তেমনি বই পড়া আর ঘুরে বেড়ানো আমার পছন্দের কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম। মুক্তমনে সব কিছু গ্রহণ করার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি,"বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর, সবার আমি ছাত্র"।
চুড়ই ভাতি পোস্ট টি পড়ে আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। এরকম চড়ুই ভাতি গল্পগুলো আম্মুর কাছে অনেকবার শুনেছি। আমিও যখন ছোট ছিলাম। তখন নানুর বাড়ি গেলে এরকম চুড়ই ভাতি কয়েকবার করা হয়েছিল। এগুলো করতে খুবই ভালো লাগে সবার খুব মজা করে খায় । যাই রান্না করা হোক না কেন। হঠাৎ করে অনেক মজা করে পিকনিক করেছেন জেনে খুবই ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
আপনাকেও ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
সত্যি ভাইয়া ডিসেম্বর মাস এলেই যেন আলাদা রকমের ভালোলাগা তৈরি হতো। সবার পরীক্ষা শেষ হয়ে যেত। খেলাধুলা, হইহুল্লোর সবকিছুতে মেতে থাকতাম আমরা। আমাদের গ্রামের বাসায় গেলে সবচেয়ে বেশি মজা হতো। আমার সমবয়সী যারা ছিল তাদেরও পরীক্ষা শেষ হয়ে যেত। সবাই মিলে অনেক আনন্দ করতাম। এখনকার সময়কার বাচ্চাকাচ্চারা তো পরীক্ষা শেষ হওয়ার কয়েকদিন যেতে না যেতেই নতুন বই পড়া শুরু করে দেয়। আমি কিন্তু মোটেও তা করতাম না। ক্লাস শুরু হওয়ার পরে পড়াশোনা শুরু করতাম। যাইহোক ভাইয়া আপনারা প্রতিবছর সবাই মিলে পিকনিক করেন জেনে ভালো লাগলো। এর আগেই কিন্তু দারুণ একটি চড়ুইভাতি হয়ে গেল ভাইয়া। খিচুড়ি আর বেগুন ভাজা একেবারে জমে গেছে।
হ্যা।এখনকার বাচ্চারা এসব সুন্দর মুহুর্ত গুলো থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
ভাইয়া আমি তো আপনার এই পোস্ট পড়ে কল্পনার মধ্য দিয়ে ছোটবেলায় চলে গিয়েছি। আমরাও পরীক্ষা শেষ হলে যখন কয়েকদিনের জন্য ছুটি পেতাম তখন চড়ুইভাতি খেলতাম। সেই দিনগুলো খুবই মজার ছিল। আমার কাছে সবচেয়ে বেশি ভালো লাগতো সবাই একসাথে বসে খাবার খাওয়া। আমরা প্লেটে খেতাম না আমরা কলাপাতায় সবাই খেতাম। কলাপাতায় খাওয়ার মজাই আলাদা। ভাইয়া আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
আমরাও বেশ কিছুবার কলাপাতায় খেয়েছি।আসলেই সেই দিন গুলো খুব মজার ছিল।ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
ভাইয়া, আমাকে বলতেন আমিও আসতাম।সেই ছেলেবেলার কথা মনে পরে গেল।আমরা ও ঠিক এ রকম চড়ুইভাতি খেলতাম।আহারে, সেই দিনগুলি কি ভালো লাগা মিশে ছিল, আজ ও মনে দোলা দিয়ে যায়। সুন্দর মুহুর্ত অতিবাহিত করেছেন, এটাই স্মৃতিতে মিশে থাকবে। শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া। অনেক শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
আপু এবার তো হঠাৎ হয়ে গেছে তাই নিমন্ত্রণ করতে পারি নি। বড় পিকনিকের অগ্রীম নিমন্ত্রণ রইল।আর আপনার জন্যও রইল শুভ কামনা।
চড়ুইভাতির কথা শুনে একেবারে ছোটবেলার কথা মনে পড়ে গেল। তাছাড়া আপনারা সবাই মিলে এত বড় পিকনিকের আয়োজন করেন শুনে ভীষণ ভালো লাগলো। তবে এর আগে যে একেবারে ছোটখাটো একটা চুড়ুইভাতির আয়োজন করে ফেললেন ভীষণ ভালো লাগলো। খিচুড়ি আর বেগুন ভাজা বেশ দুর্দান্ত একটা মেনু ছিল। এভাবে তৈরি করলে তো মজাটাই আলাদা। বেশ ভালো লাগলো। পিকনিকের আয়োজনটা নিশ্চয়ই শেয়ার করবেন।
অবশ্যই পিকনিকের আয়োজন ও শেয়ার করা হবে আপু।ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
আপনার আন্টি তো বেশ আমুদে মানুষ। পিকনিকের লিস্ট করার জন্যই ছোটখাটো আরেকটি চড়ুইভাতির আয়োজন করে ফেলল। আর এরকম বাড়ি বাড়ি থেকে তেল, লবণ, চাল, ডাল নিয়ে পিকনিক করা হতো খুবই মজা হতো সেই পিকনিক গুলো। আর এরকম খিচুড়ি তো অসম্ভব সুস্বাদু হত। ছোটখাটো চড়ুইভাতি করে নিশ্চয়ই পিকনিকের আয়োজনে সম্পন্ন করে নিয়েছেন। খুব আনন্দ হবে বোঝাই যাচ্ছে।
আমাদের পাড়ার সবাই প্রায় এরকম আমুদে।পিকনিক এর আয়োজন কিছুই হয়নি।সবাই খিচুড়ির প্রশংসা তেই ব্যস্ত হয়ে গিয়েছিল।ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
ছেলেবেলায় কত যে এরকম চড়ুইভাতি খেলেছিলাম তার কি কোন হিসাব আছে। আমাদের সময়েও এভাবে বড় রাই এগিয়ে আসতো। আর আমরা তখন বাসা থেকে চাল পেঁয়াজ মরিচ নিয়ে যেতাম চড়ুই ভাতি খেলার জন্য। আজকে আপনার পোস্টটি পড়ে ছেলেবেলায় চলে গেলাম।
আমাদের সময় কিন্তু আমরা নিজেরাই রান্না করতাম।ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
খাদ্য রসিক লোকজন হলে যা হয় আর কি। সব কিছু তেই আমাদের খাওয়া আগে। আর আমি দেখেছি বড়রা যদি এমন হই হুল্লোড় করতে পছন্দ করে তবে বাচ্চারা আরেকটু বেশী উৎসাহ পায়। আর এই ধরণের বড়রা বেশ কম বেশী স্পনসরও করে
এখানে যেমন আন্টি জ্বালানি স্পনসর করে দিলেন। ঘর থেকে চাল ডাল নিয়ে বেগুন নিয়ে ছোট খাট চড়ুইভাতি তো জমে ক্ষির একদম।
একদম জমে ক্ষীর। আর খাবারের স্বাদের কথা নাই বললাম।ধন্যবাদ দিদি সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
ছোট বেলায় যখন পরীক্ষা শেষ হতো,তখন আমরা ফ্রেন্ডরা এই রকম চড়ুইভাতি করতাম। তবে আমাদের এখানে এটাকে ঝোলাপাতিল বলা হত।বেশ মজা হতো।আমাদের এখানে মাটির চুলা ছিলো না, আমরা ইট দিয়ে চুলা বানিয়ে রান্না করতাম।বিভিন্ন জায়গা থেকে শাক তুলে আনতাম🤣🤣।আপনার পোস্ট পড়ে বেশ ভালো লাগলো,পুরোনো দিনের কথা মনে পড়ে গেলো।চড়ুই বাতির খাবার গুলো বেশ মজা লাগতো।
আসলেই রান্না যেমনই হোক, খেতে অনেক মজা লাগত।আমরাও তো শাক,লাকড়ি এগুলো কুড়াতাম। কত সুন্দর ছিল সেই দিন গুলো।