কোথায় গেল সেই বর্ষা!!
হ্যালো বন্ধুরা।
আসসালামু আলাইকুম।
কেমন আছেন সবাই? জানি এই বর্ষায় সকলেই গরমে অতিষ্ঠ। বর্ষার এক নতুন রূপ দেখছি আমরা এবার। কেউ যদি এক বছর কোমায় থেকে এখন জেগে ওঠে তবে না বললে বুঝতেই পারবে না এটা বর্ষাকাল। একটা সময় ছিল যখন আকাশ পানে তাকালে বোঝা যেত এটা কোন ঋতু চলছে। গ্রীষ্ম, বর্ষা শরৎ, হেমন্ত, শীত আর বসন্ত,, প্রত্যেকেরই নিজস্ব একটা রূপ ছিল। এবার সেই চিরচেনা রূপকে খুব মিস করছি।
আজ থেকে প্রায় ১৫ বছর আগের কথা। সেই সময়টা ছিল জীবনের গোল্ডেন মুহূর্ত। না ছিল কোন টেনশন, না ছিল কোন ব্যস্ততা। ওই সময়ের বর্ষাকালের কথা হঠাৎই মনে জেগে উঠলো। একটানা ৭-৮ দিন বৃষ্টি হয়েছে এমনও দেখেছি। পুরো আকাশটা ভয়ংকর কালো রূপ ধারণ করত। সন্ধ্যে লাগার আগেই আম্মু রান্নাঘর থেকে রান্নাবান্না সেরে ঘরে চলে আসতো। রাতের আঁধার নামার সাথে সাথে আবার মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হতো। আব্বু রাত্রে অফিস থেকে বাসায় ফিরত। আব্বুর আসা একটু কষ্ট হয়ে যেত। তবে আব্বু যখন অফিস থেকে বাসায় আসতো সবাই একসাথে হারিকেনের আলোতে খেতে বসতাম। কি সুন্দর বাত্তির আলোর মত (কেরোসিনের বাতি) উজ্জ্বল স্মৃতি।
কোন এক দুপুরে বারান্দায় বসে বৃষ্টি দেখছি। হঠাৎ আমার মেজ কাকা কোদাল হাতে মাঠের দিকে ছুটে চলছে। আম্মু জিজ্ঞেস করল কোথায় যাচ্ছে। কাকা জোরে জোরে বলল মাঠের সাথে পুকুর ভেসে যাচ্ছে। ওদিকে নাকি অনেক মাছ পাওয়া যাচ্ছে, সেখানেই যাচ্ছেন উনি। ওই সময় মাঝেমধ্যেই কাকারা মাছ ধরতে যেত মাঠে। মাঠ আর পুকুর ভেসে একাকার হয়ে গেলে মাছ সব মাঠে চলে আসতো। তখন থুর্কুচ, কাঁচি, টর্স লাইট নিয়ে রাতে মাছ ধরতে যেত অনেকেই। প্রচুর মাছ পাওয়া যেত তখন। একটু কষ্ট করলেই এক বেলার মাছ হয়ে যেত।
সে মাছগুলোর কি স্বাদ!! ছোট ছোট মাছ যখন আম্মু চচ্চড়ি করত তখন তৃপ্তি করে অনেকগুলো খেয়ে উঠতাম একবারে। পুঁটি, সোল, খোলসে, কৈ, চিংড়ি, টাকি ইত্যাদি মাছ পাওয়া যেত। বর্ষাকালে আরো একটা জিনিস আমার খুব ভালো লাগতো, তা হচ্ছে স্কুল ফাঁকি দিতে পারতাম প্রচুর। এখন সেটাই ভাবি, কোথায় গেল সেই বৃষ্টির দিনগুলি। গত বছরও এতটা খারাপ অবস্থা ছিল না। এবার দেখেছেন তো গরমের সময় কি পরিমান গরম পড়েছে?? সবকিছুই কেমন অস্বাভাবিক লাগছে না??
মানুষ যেমন কর্ম করতেছে তেমন ফল পাচ্ছে। জলবায়ুর পরিবর্তন হচ্ছে প্রতিনিয়ত। জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার অত্যাধিক পরিমাণ বেড়েছে পৃথিবী জুড়ে। গত বছরের তুলনায় এই বছর আবহাওয়াতে যে পরিমাণ পরিবর্তন দেখছি তাতে সামনের বছরগুলো যে কিভাবে কাটবে সেটাই ভাবছি। বর্ষাকালে নেই বৃষ্টি , তুখোর রোদে মনে হচ্ছে চৈত্র মাস। আর গরমের কথা কি বলবো।।। আজ থেকে পাঁচ বছর পর বাংলাদেশের মানুষ কি করে বাস করবে সেটাই ভাবছি। হয়তো আমাদের খুব পস্তাতে হবে।
এখন শুধুই স্মৃতি হিসেবে রয়ে গেছে ছোটবেলায় কাটানো বর্ষার দিনগুলো। ৭-৮ দিন যাবত একাধারে বৃষ্টি হওয়া তো দূরের কথা সাত আট মিনিট ভালোভাবে বৃষ্টি হতে দেখতেছি না আমি। পৃথিবীযে কোন দিকে যাচ্ছে আর আমাদের অবস্থা কি হবে সামনে সেটাই চিন্তার বিষয়।
image source & credit: copyright & royalty free PIXABAY
VOTE @bangla.witness as witness

OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |

Thank you, friend!


I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
সত্যি ভাইয়া এখন বৃষ্টি সাত দিন কেনো সাত মিনিট ও ভালো মতো নামছে না।আসলে ভাইয়া আগের দিনে হারিকেন জ্বালিয়ে পড়ালেখা করা ও ঘুরে বেরানো এগুলো এখন শুধু স্মৃতি হিসেবে রয়েছে।সত্যি মানুষ যেমন কর্ম করছে তেমনি ফল পাচ্ছে। আগের দিন আর এখনকার দিন রাত পার্থক্য।আপনার পোস্ট পড়ে অনেক ভালো লাগল। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
এখন আর আগের মতো বর্ষার আমেজ নেই।টানা ভারি বর্ষণ দেখায় যায়না কয়েক বছর।জলবায়ু পরিবর্তন এর মূল কারণ।জি ভাইয়া আপনি ঠিক বলেছেন,পৃথিবী সামনের দিকে কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে,সেটা চিন্তার বিষয়।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।
সত্যি ভাই আপনার পোস্টটি দেখে সে ছোট্টবেলার কথা মনে পড়ে গেল আমার। বর্ষার সেই দিনগুলোতে খুব বেশি স্কুলে যাওয়া হতো না ।বাসায় বসে ভাই বোনেরা মিলে লুডু খেলা হত, আর আম্মু গরম গরম পিঠা ভেজে দিত ,বাদাম ভাজা দিত, বুট ভাজা দিত ,মুড়ি মাখা দিত,খুব মনে পড়ে গেল সেই দিনটি। দিন রাত সেই কালো অন্ধকারে ছেয়ে থাকতো। এখন মনে হচ্ছে যেন আস্তে আস্তে সে বর্ষা কাল গুলো আমাদের কাছ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে।
প্রকৃতি দেখে এখন আর ঋতু বোঝার কোন উপায় নেই। বর্ষাকালেও বর্ষার দেখা নেই। আসলে ছোটবেলার সেই সময় গুলো এখনোও মনে পড়ে। সন্ধ্যা থেকে মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হয়ে যেত। মা দাদীরা রান্না করে সন্ধ্যার মধ্যেই ঘরে চলে আসতেন। আসলে সেই সময় গুলো এখনো অনেক মনে পড়ে। ভাইয়া আপনার লেখাগুলো পড়ে অনেক ভালো লাগলো।
সত্যি ই ভাইয়া আগের সেই বর্ষনমূখর দিন আজ বড্ড বেশী মিস করি।আপনার অনুভূতি তো আমার চাইতেও মজার।আসলে সত্যিকারের বর্ষার সৌন্দর্য কিন্তু গ্রামেই।খুব ভালো লাগলো আপনার অনুভূতি গুলো পড়ে। বর্ষার এই পানিতে মাছ আসা।সে এক অপুর্ব অনুভূতি। ধন্যবাদ ভাইয়া শেয়ার করার জন্য।
ইস্ দিলেন তো সেই ছেলেবেলার গুড়া মাছ ভূনা খাওয়ার কথা মনে করিয়ে। কতদিন যে এমন বর্ষার পানির মাছ খাওয়া হয় না। অনেক পরিবর্তন হয়েছে এখন আবহাওয়ার। এখন আর সেই ছেলেবেলার শীত গ্রীষ্ম আর বর্ষা হারিকেন দিয়ে খুঁজে পাওয়া যায় না। অসাধারন লিখেছেন ভাই।
হায় হায় হায় ভাই দিন দুপুরে এভাবে পোষ্ট করে বর্ষাকে খুঁজেন? ভাবি দেখলে তো কেস খেয়ে যাবেন, হা হা হা।
সত্যি সেই বর্ষা যেন আর বর্ষা নেই অনেকটাই ফর্সা হয়ে গেছে, তাইতো বৃষ্টির দেখা মিলে না, নেই বর্ষার সেই মাছের স্বাদগুলো। প্রকৃতির এই পরিবর্তনে পাল্টে গেছে আমাদের পুরনো সেই স্মৃতি।
বৃষ্টি আর বর্ষা কোথায় যে হারিয়ে গেল বুঝতেই পারতেছি না। 😜
ভেবেছিলাম শ্রাবণ মাসে হয়তো বৃষ্টির দেখা মিলবে কিন্তু তাও হলো না ।
আসলে আমরা প্রকৃতির উপরে যে পরিমাণ টর্চার করছি সেই হিসেবে তো অনাবৃষ্টি হওয়া অনিবার্য।একটা সময় প্রচুর বৃষ্টি হতো মানুষজন উজান মাছ ধরার জন্য পুকুর পাড়ে অপেক্ষা করত। রাত্রিবেলা টর্চ লাইট নিয়ে বের হতো কোছ নিয়ে মাছ ধরার জন্য। যদিও এই দৃশ্য গুলো এখনকার জেনারেশন শুধু গল্পেই শুনে যাবে, হয়তো দেখবে না। আমাদের প্রকৃতির উপর অত্যাচার আমাদের জন্য কূফল বয়ে আনছে। যেমন বৃষ্টি হচ্ছে না আর সামনে খরাও দেখা যাবে এবং যে পরিমাণ রোদের টেম্পারেচার বাড়ছে কি হয় আল্লাই জানে।
ভাইয়া ঠিক বলেছেন দশ পনের বছর আগে টানা ৭-৮ দিন বৃষ্টি হতো । আমরা বৃষ্টির কারনে অতিষ্ট হয়ে বলতাম আকাশ ছিদ্র হয়ে গেছে। আর এখন পুরো বিশ্ব বৃষ্টির জন্য হাহাকার করছে। বাংলাদেশে যে হারে গরম বাড়ছে সামনের দিন গুলোযে কি হবে আল্লাহই জানে। ধন্যবাদ ভাইয়া।