জীবনের গল্প
স্কুল ব্যাগ কাধে করে ঝিলের পাড়ে বসে আছে রুদ্র।টিউশনে যাওয়ার কথা এসময়,কিন্তু যায় নি।যাবেই বা কোন মুখে।তিন মাসের বেতন বাকি।চক্ষুলজ্জায় ভাইয়া এতদিন কিছু বলে নি।কিন্তু ভাইয়াও তো স্টুডেন্ট।টিউশনের টাকা দিয়েই তার চলতে হয়।তাই আর থাকতে না পেরে বলেই দিয়েছেন।
পরপর দুই-তিন দিন বলেছে।আজকে গেলে আজকেও বলত,সবার মাঝে দাড়াতে হত।তাই রুদ্র যায়নি।ভাইয়া হয়ত ভাবছে বাড়ি থেকে টাকা রুদ্র ঠিকই নিয়েছে,কিন্তু সেটা ভাইয়া কে না দিয়ে নিজে মেরে দিয়েছে।
কিন্তু আসলে তা না।রুদ্র সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান।দাদা মৃত্যুর সময় কিছুই রেখে যান নি রুদ্রর বাবা চাচাদের জন্য। রুদ্র বাবা বড়।উনিই ছোট সব ভাইদের লেখাপড়া শেখান বড় করেন।রুদ্রর প্রায় সব চাচা রাই আজ প্রতিষ্ঠিত।সবারই বেশ অর্থকরী আছে।
কিন্তু এই সবাইকে গড়ে তুলতে গিয়ে রুদ্রর বাবা নিজের কিছুই করে উঠতে পারেন নি।তার বিশ্বাস ছিল,যে ভাইদের তিনি সব কিছুর বিনিময়ে মানুষ করলেন তারা নিশ্চয় তার বিপদের দিনে তাকে কখনো ফেলে দেবে না।রুদ্রর মা তার বাবাকে বার বার বুঝিয়েছেন, নিজের একটু জমি জায়গা করো,একটা মাথা গোজার ঠাই অন্তত বানাও। তোমার ভাইদের দেখো,তোমার মাঝে থেকেই সবাই বাড়ি ঘর করল।
রুদ্রর বাবা তখন রুদ্রর মা কে বলতেন,"আরে ওদের বাড়িই তো আমার বাড়ি।গেলে দেখবে রাজার মত বরণ করে নেব।"
যুগ যে পালটে গেছে উনার সে সম্পর্কে কোন ধারনাই নেই।উনি সেই আগেকার যুগেই পড়ে আছেন।এভাবেই কাটছিল তাদের দিন।মোটা ভাত-কাপড়ে বেশ চলছিল।কিন্তু রুদ্রর বাবার মাথায় হঠাৎ ভূত চাপে উনি নতুন ব্যবসা করবেন।জমি জমা তো নেই,যা কিছু সঞ্চয় ছিল তা ব্যবসায় ইনভেস্ট করলেন।কিন্তু সহজ সরল মানুষ হওয়ায় বেশিদিন টিকতে পারলেন না। লোকসান দিলেন।
এরপর কিছুদিন চুপচাপ থাকলেন।তারপর আবার ব্যবসার ভূত মাথায় চাপল।এবার সবাই তাকে খুব করে বোঝালেন।কিন্তু কে শোনে কার কথা।উনি ব্যবসা করবেনই।ফলাফল ধার কর্জ করে ইনভেস্ট করলেন।ফলাফল তো জানাই।আবার লোকসান।ফলে রুদ্ররা ধাক্কা খেল প্রচুর।এতদিন তাদের আর যাই হোক অভাব ছিল না।কিন্তু এখন,........
ভাইয়া আসলে বাস্তবতা এমনই ।মানুষ নিজের প্রয়োজন টুকু ফুরিয়ে গেলে তখন আর পেছনের দিকে ফিরে তাকায় না। আর যারা নিঃস্বার্থভাবে অন্যের জন্য করে পরবর্তীতে তারাই দুর্ভোগের শিকার হয়। যাই হোক গল্পটি বেশ ভালোই শুরু করেছেন। ভালো লেগেছে পড়তে। পরবর্তী পর্ব খুব তাড়াতাড়ি দেখতে চাই ।ধন্যবাদ।
চেষ্টা করব আপু।ধন্যবাদ
রুদ্রর বাবার জন্য খারাপ লাগছে খুব। এমনিতেই ওনার কিছু তেমন নেই। তার উপর দুইবার লোকসানে কি হাল হয়েছে বেচারার কে জানে। মধ্যবিত্ত পরিবার গুলো এমনই হয়। বিশেষ করে বড় যারা হয়। তাদের অনেক কিছুই ত্যাগ করতে হয়। কিন্তু পরিবারের বাকি সদস্য এই ত্যাগ এর মূল্য দিতে পারেনা। যেমন রুদ্রর চাচারা।
ঠিক বলেছেন ভাইয়া।ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
বেচারা রুদ্রের বাবার জন্য বিষন কষ্ট হচ্ছে। কারন তিনি স্বাধীন ভাবে নিজে কিছু করে খেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বাস্তবতার যাতা কলে পড়ে তা আর হয়ে উঠে না। আর এখন মানুষগুলো কেমন যেন একটু স্বার্থপর হয়ে যাচ্ছে। দেখা যাক আগামী পর্ব আবার কেমন হয়।
ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
আসলে মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলেদের এমন হাজারো সমস্যা নিয়েই চলতে হয় , যেমন রুদ্র ৷টিউশনের টাকা দিতে পারছে না৷ আর বাস্তবতা তো বাস্তবতাই ৷ দিন শেষে কেউ আপন নয় , যেমন রুদ্রর চাচারা ৷ যার জন্য এত কিছু পেলো তার কথা মনে রাখতেই পারলো না ৷ যাই হোক রুদ্রর বাবার জন্য একটু খারাপ লাগলো ৷ ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটি গল্প শেয়ার করার জন্য ৷ ভালো লাগলো ৷ পরবর্তীতে পর্বের অপেক্ষায়...
ধন্যবাদ ভাইয়া অনেক উৎসাহিত হলাম আপনার মন্তব্য থেকে।
গল্পটা পড়া শুরু করতে না করতেই কেন জানিনা শেষ হয়ে গেল। আমি ভেবেছিলাম মনে হয় পুরো একটা গল্প। আসলে আমাদের সব মধ্যবিত্ত পরিবারেরই একই দশা।
বেশ সাজিয়ে গুছিয়ে লিখেছেন গল্পটা। পরবর্তী পর্ব তাড়াতাড়ি দিয়ে দিয়েন...
হ্যা দাদা। পরবর্তী পর্ব আসবে আজ কাল।অনেক উৎসাহ পেলাম দাদা। ধন্যবাদ।
গল্পটি পড়তে পড়তেই শেষ হয়ে গেল। এমন জায়গায় শেষ হলো আকর্ষন রয়েই গেল।কিন্তু এখন.....। মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো নানা টানাপোড়েনে চলে এটাই সত্যি। রুদ্রর বাবার জন্য খারাপ ই লাগছে।এমনিতেই তার কিছুই নেই।তার ওপর লোকসান হওয়াতে কি হয় তা কে জানে।বড় সন্তানগুলোর উপর অনেক দায়িত্ব থাকাতে তাদের অনেক কিছুই ত্যাগ করতে হয়।আর আজকাল মানুষ গুলো বড্ড স্বার্থপর হয়।দেখি সামনের পর্বে কি অপেক্ষা করছে।ধন্যবাদ ভাইয়া শেয়ার করার জন্য।