দারিদ্র্যতা😪
হ্যালো
আমার বাংলা ব্লগ বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই। আশা করছি ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি আপনাদের আশীর্বাদ ও সৃষ্টিকর্তার কৃপায়।
আমি @shapladatta বাংলাদেশ থেকে। আমার বাংলা ব্লগের একজন ভেরিফাই নিয়মিত ইউজার। আমি গাইবান্ধা জেলা থেকে আপনাদের সঙ্গে যুক্ত আছি।
দারিদ্র্যতা খুব ভয়ংকর যার জীবনে দারিদ্র্যতা এসেছে এবং যারা দারিদ্র্যতা দেখেছে খুব কাছ থেকে তারাই শুধু এর ভয়ংকর অবস্থা সস্পর্কে বুঝবে।গল্প শুনেছি ভুক্তভোগীদের কাছে যে তারা এতোটা দরিদ্র ছিলো যে দিনের পর দিন অনাহারে দিনপাত করেছে। শাক খেয়ে জীবিকা নির্বাহ করেছে।
আমার দিদু গল্প করবো যে তার ভাত খেতে বসলে গ্রামের বাচ্চা দাড়িয়ে থাকতো এসে আর তাদের কে কিছু দিতো তাই খেতো তারা।আমিও দেখেছি আমাদের গ্রামের অনেক দরিদ্র মানুষ তবে এখন তারা সচ্ছল।
আমি তখন বেশ ছোট তবে সব কিছু স্পষ্ট মনে আছে আমার পাশের বেশ কয়েকটা বাড়ি এতোটা দরিদ্র যে নুন আনতে পান্তা ফুরায় এমন অবস্থা। আমাদের বাড়িতে কাজ করতো এক লোক তার ছোট একটা বাচ্চা বয়স এক বছর। বাচ্চা কে যে ভাত খাওয়াবে সেই ভাত তার ঘরে নাই।তাহলে বুঝুন যে এক বছরের একটি বাচ্চা কে খাওয়ানোর মতো ভাত নাই কি করুন অবস্থা তাদের।
বাচ্চা কান্না করছিকো ক্ষুধায় মা আর ঠিক থাকতে না পেরে একটি গ্লাস নিয়ে এসেছে বাচ্চার জন্য ভাত নেবে বলে।ভাত চাইতে সংকোচ বোধ করছিলো।মা ভেবেই নিয়েছে জল নিতে এসেছে গোড়া বাঁধানো টিউবওয়েলের।কারন বাচ্চাদের অসুস্থতায় ডাক্তার বলে দিতেন পাকা গোড়া টিউবওয়েলের জল খেতে হবে আর তখন আমাদের বাড়ির টিউবওয়েল থেকে জল নিতে আসতেন।
পুরা গ্রাম জুড়ে শুধু আমাদের বাড়িতে ছিলো টিউবওয়েলের গোরা বাঁধানো।তো ঐ মহিলার হাতে গ্লাস দেখে মা ভেবেছিলো জল নিতে এসেছে। কিছু টা সময় দাড়িয়ে থাকার পর বলেই ফেলেছেন দিদি এই গ্লাসে একটু ভাত দেবেন মা অবাক হয়ে বল্লো গ্লাসে কেন তখন বল্লো যে মেয়েকে খাওয়াবো ঘরে এক মুঠো চাল নাই যে মেয়েকে রান্না করে দেবো।মা একটি প্লেটে ভাত দিতে চাইলে নিলো না গ্লাসেই ভাত ও তরকারি নিয়ে দ্রত চলে গেলো। সেই দিনের কথাটা আমার এখনো মনে পড়ে।আমি মাঝে মাঝেই ভাবি এক বছরের মেয়ের পেট ভরানোর ক্ষমতা থাকে না কতোটা দারিদ্র্য সীমার নিচে গেলে।
দিদুর কাছে শোনা একটি গল্প তা হলো দিদু খেতে বসছে দুপুরে খাওয়া শেষ হয়নি বাড়ির সবার খাওয়ার পর খেতে বসছে দিদু আর এমন সময় পাশের বাড়ির এক ছেলে এসে দিদুর সামনে বসে পড়েছে আর বলছে মামি পাঁচদিন থেকে ভাত খাই না আজ খেতে না পারলে মনে হয় আমরা সবাই মরে যাবো।একথা শেনার সাথে সাথে দিদুর প্লেটের খাওয়া অর্ধেক ভাত দিয়েছে। প্লেটের ভাত দেয়ার কারণ পরিবারের সবার খাওয়া শেষ আর ভাত নেই।এই ভাত খাওয়ার পর দিদু চাল ও চলু দিয়েছে ছেলে টিকে আর সে বাড়িতে নিয়ে গিয়ে ভাই,বোন, মা কে নিয়ে খেয়েছে।
আর একটি দারিদ্র্যতা আমার দেখা তাহলো আমার পিসির বিয়েতে যখন বরযাত্রী ও নিমন্ত্রণ অতিথি খাওয়ার পেন্ডেলে খেয়ে উঠেছে আর আগে থেকে ব্যাগ নিয়ে দাড়িয়ে থাকা মহিলা পুরুষ মানুষের উচ্ছিষ্ট গুলো ব্যাগ ভরে নিতো এমন বাড়িতে নিয়ে যেতো।এই দৃশ্য দেখে আমার খবু খারাপ লেগেছিলো। খুব কষ্ট পেয়েছিলাম অতটুকু বয়সে।কতোটা অসহায় ও দারিদ্র্য হলে মানুষ মানুষের উচ্ছিষ্ট খেতে পারে তা নিজ চোখে না দেখলে বোঝানো যাবে না।
তবে তারপর বাড়িতে এবং গ্রামে বা আশে পাশে অনেক বিয়ের অনুষ্ঠান হয়েছে ঐ দৃশ্য আর দেখতে হয়নি।তবে শুনেছি এবং ফেসবুকে মাঝে মাঝে দেখি ঢাকা শহরে উচ্ছিষ্ট বা নষ্ট খাবার খায় পথ শিশুরা।সত্যি এরকম দৃশ্য দেখার বা শোনার কোন ইচ্ছে আমার নাই।সৃষ্টি কর্তার কাছে প্রার্থনা করি কারো জীবনে এমন দারিদ্র্য না দেক।সবাই তুন বেলা খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকুন সেই কামনা করি।
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি আবারও দেখা হবে অন্যকোন পোস্টের মাধ্যমে।
সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ ও নিরাপদ থাকুন।
অসাধারণ আপু আপনি অনেক সুন্দর একটি টপিক নিয়ে আজ আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। যা পড়ে আমার খুবই ভালো লাগলো। আসলে দারিদ্রতা এমন একটা নিষ্ঠুর জিনিস যেখানে জাত পাত ভেদাভেদ কিছুই মানে না। আমি যখন আইভীর কষ্টে ছিলাম তখন ওইখানকার লোকজন এত দারিদ্রতার মধ্যে বসবাস করত যা ভাষায় বলার মতো না। শুধুমাত্র এক প্যাকেট বিস্কিটের জন্য তারা যা ইচ্ছে তাই করতে পারে এমনকি মানুষও খুন করতে পারে। তাছাড়া আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর মানুষ এতটাই অভাবে পড়েছিল যে নদীর মাছ আর লাউ খেয়ে দিন পার করত যা শুনেছি আমার পিতার কাছ থেকে। যাইহোক আপু আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ অনেক সুন্দর একটি বিষয় সুন্দরভাবে আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য।
0.00 SBD,
4.22 STEEM,
4.22 SP
আপনি দারিদ্র্যতা কাছ থেকে দেখেছেন। আসলে এরকম দারিদ্র্য আমাদের কে কষ্ট দেয় চোখের সামনে দেখলে।আমিও শুনেছি আমার দাদির কাছে এরকম গল্প।
Well said but people will not change and if it comes to it everyone discriminates, hates and envies.
🍀♥️
দারিদ্র্যতা খুব ভয়ংকর একটা জিনিস। যার জীবনে দারিদ্র্যতা এসেছে একমাত্র সেই ব্যক্তির জানি এর কত জ্বালা। যারা দারিদ্র্যতা খুব কাছ থেকে দেখেছে তারাই শুধু এর ভয়ংকর অবস্থা সস্পর্কে বুঝবে। অসাধারণ একটি টপিক নিয়ে আজ আপনি লিখেছেন আপু। আপনার লেখা পোস্টটি পড়ে সত্যিই অনেক ভালো লাগলো। অনেক মূল্যবান একটি গল্প আজ আপনি লিখে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। ধন্যবাদ আপু এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
ঠিক বলেছেন আপু যারা দারিদ্র্যতা কাছ থেকে দেখেছেন তারাই বুঝতে পারবে এর ভয়ংকর অবস্থা সম্পর্কে।
আজ সকালেই যখন মাছ কিনছি একজন দরিদ্র মহিলা এসে দাঁড়ালেন পাশে। তার হাতে সাধ্যমত কিছু তুলে দিলাম। দরিদ্র মানুষ দেখলে ভীষণ খারাপ লাগে আমার। আসলে মানুষ আজ বড় স্বার্থপর হয়ে গেছে। আর ঈশ্বর সমাজে সাম্যবাদ দেয়নি। তাই কেউ অনেক খায় আর কেউ খেতে পায় না। তোমার লেখাটা পড়ে মনটা কষ্টে ভরে গেল। ঈশ্বর সকলকে সাম্যবাদ দিন এবং সম্পদের সম বন্টন করুন।
খুব সুন্দর মন্তব্য করেছেন দাদা।
বেশ দারুণ একটি টপিক নিয়ে লিখেছেন আপু।আসলে দরিদ্র এমন একটি জিনিস যে এই কষ্টের মাঝে দিন পার করেছে সে অনুভব করতে পারবে। আর যারা দেখেছে অতি কাছ থেকে তারাও বুঝতে পারবে দরিদ্রতা কি জিনিস। আসলে দরিদ্র মানুষ দেখলে খুব কষ্ট লাগে। কারণ আমরা আর যাই হোক তিন বেলা তিন মুঠো খেতে পারছি। ভালো-মন্দ খাচ্ছি।কিন্তু যারা এই দরিদ্রের ভেতরে তাদেরকে আসলে আমাদের সাহায্য করা উচিত যে যায় জায়গা থেকে সামর্থ্য অনুযায়ী।দারুন লিখেছেন আপু। ধন্যবাদ পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।
ঠিক বলেছেন আপু দারিদ্রতা খুবই ভয়ংকর। আশেপাশে যখন এই ধরনের মানুষগুলোকে দেখি খুবই মায়া হয়। যতটা সম্ভব চেষ্টা করি নিজের মতো করে তাদেরকে সাহায্য করার। দিনশেষে সবাই ভালো থাকুক এতটুকুই চাওয়া।
বেশ সুন্দর বিষয় উপস্থাপন করেছেন আপু । আসলে দারিদ্রতা সত্যি খুব ভয়াবহ এবং আমাদের জন্য অভিশাপের বিষয়। দারিদ্রতা আমাদের জীবনে ভয়াবহ কষ্ট নিয়ে আসে। যা আমাদের জীবনের মৌলিক চাহিদা গুলো পূরণ করতে বাধা প্রদান করে। আমাদের দেশে অনেক মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে তা সত্যি খুব খারাপ বিষয়। ধন্যবাদ আপনাকে আপু পোস্ট টি শেয়ার করার জন্য।