এভাবেও ভালো থাকা যায়
"কথা" শব্দটি দুই অক্ষরের। কিন্তু এর পরিধি বৃহৎ।কথা'র মাধ্যমেই সবার সাথে ভালো সম্পর্ক গড়ে আবার কারো সাথে খারাপ৷ "কথা" নামক শব্দটি সহ্য করার ক্ষমতা যার যত বেশি সেই এই পৃথিবীতে তত বেশি সুখি৷ কয়েকটি উদাহরণ দিলে হয়তো পুরো ব্যাপারটি সহজে আপনাদের বোধগম্য হবে বলে আশা করছি।
গতকাল বিকালে রুমে শুয়ে ছিলাম, রুমের বাহিরে নতুন মানুষের কন্ঠের আওয়াজ পেলাম। তাদের বাড়িতে নাকি ছেলের বউয়ের সাথে হালকা কথা-কাটাকাটি হয়েছে সেগুলোই বর্ণনা করছিলো৷
আজ এক বিচারে সামিল হয়েছিলাম। সেখানেও ব্যাপারটা ঠিক আগেরটার মতোই। বউ শাশুড়ী ঝামেলা, কথা-কাটাকাটি।
প্রসঙ্গ যখন টেনেছি তবে কিছু কথা বলার সুযোগ চেয়ে নিচ্ছি।
খেলাধুলা করতে গিয়ে দুই পরিবারের দুই সন্তান ঝগড়া করেছে, তা নিয়ে আবার বড়রা বড়রা কথা-কাটাকাটি করতে করতে একপর্যায়ে মারামারিই লেগে গিয়েছিল। সেটাকে কেন্দ্র করে পুরো মহল্লায় বেধে গিয়েছিলো তুমুল কান্ড।
উপরে যতগুলো উদাহরণ আমি উপস্থাপন করেছি, আপনি যদি সেগুলো গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেন তবে দেখতে পাবেন সবগুলোর মুলে রয়েছে "কথা" নামক শব্দটি। কারণ, কথার মাধ্যমেই তো কথা কাটাকাটি কিংবা ঝগড়া হয়। যদি ঝগড়া এড়িয়ে চলতে চান তবে নিতে হবে কিছু পদক্ষেপ। পদক্ষেপগুলোর সর্ব উত্তম পন্থা হলো চুপ থাকা৷
কিভাবে....? আসুন বুঝিয়ে বলি...., গতকিছুদিন আগে আমাদের দোকানের সামনে দাঁড়িয়েছিলাম, দেখলাম একজন ব্যক্তি রাস্তার ওপার থেকে এসে আমাদের এক ব্যবসায়ীর সাথে প্রচন্ড চড়াও হয়ে অকর্থ ভাষায় গালিগালাজ করলো। বিপরীতে ওই ব্যবসায়ী কোনো প্রতিবাদ না করে মুখ বুঝে সব কথা সহ্য করে নিলো৷ দ্বিতীয় পক্ষের কোনো প্রতিউত্তর না পেয়ে যিনি গালিগালাজ করছিলেন তিনি কিছুক্ষণ পরই চুপ হয়ে চলে গেলেন।
একবার ভাবুনতো, যাকে গালিগালাজ করা হয়েছে তিনি যদি প্রতিউত্তর করতেন তাহলে ঝগড়াটা কোন পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছাতো....? তিনি চুপ ছিলেন বলেই ঝগড়ার সমাপ্তি সেখানেই হয়েছে৷
ছোটবেলা থেকে একটি গল্প শুনে বড় হয়েছি। গল্পটির সারমর্ম এই রকম, এক ব্যক্তি তাদের মোড়লের কাছে নালিশ করল, "আমার বউ প্রতিদিনই আমার সাথে ঝগড়া করে। যার জন্য প্রতিনিয়ত সংসারে অশান্তি হয়। সব ঘটনা ভালোভাবে শোনার পর উনি বললেন তোমার বউ যখন কটুকথা কথা বলে তুমি তখন কি কর...? উত্তরে ওই ব্যাক্তি বললেন, আমিও কটুকথা বলি।
উনি ব্যাপারটা বুঝতে পেরে এক বোতল পানি ওই ব্যাক্তির হাতে ধরিয়ে দিলেন আর বললেন, তোমার বউ যখন তোমার উদ্দেশ্যে কটুকথা বলবে তখন তুমি এখান থেকে এক চুমুক পানি নিয়ে মুখের ভিতরে ধরে রাখবে, তোমার বউয়ের রাগ না থামা পর্যন্ত পানি গিলবা না৷ তারপর দেখো ঝগড়া আর দীর্ঘায়িত হবে না। উক্ত ব্যাক্তি মোড়লের দেয়া ফর্মুলা ব্যবহার করে কয়েকদিন পর খেয়াল করলো, আগের মত আর ঝগড়া বাঁধে না। সংসারে শান্তি ফিরে এসেছে৷
আশাকরি উপরিউক্ত গল্পের সারমর্ম আপনারা ভালোভাবেই বুঝতে পেরেছেন৷
বুলেটের চেয়ে কথার আঘাত বেশি ভয়ানক। আমরা যদি একটু চুপ থাকতে শিখি তাহলেই অনেক বড় ধরনের বিপদ এড়িয়ে চলতে সক্ষম হবো৷ তবে এক্ষেত্রে আমাদের ধৈর্যের পরিধি বাড়াতে হবে। লক্ষ্য করে দেখেছেন কখনও...? পাগল কিংবা মুখ বধির মানুষের শত্রু কিন্তু কম। কারণ, তারা কথার পিঠে কথা বলে না। এই একটা গুণই তাদেরকে শত্রুমুক্ত রাখতে সক্ষম। কেউ যদি একটু "কটুকথা" শুনিয়েই দেয়, তবে সমস্যা কোথায়...? ধৈর্য ধরে না হয় শুনেই নিবো। চলুন না প্রমাণ করি, "এভাবেও ভালো থাকা যায়"।
TEAM 5
Congratulations! Your post has been upvoted through steemcurator08.Thank you for your support.
মানব সভ্যতার ইতিহাস যত সামনের দিকে এগিয়েছে কালে কালে ভাষার পরিবর্তন ঘটেছে। আমরা ভাষা ব্যবহারের স্বাধীনতা পেয়েছি। শুধুমাত্র কথা দিয়েই অনেক অসাধ্য সাধন করা সম্ভব। ইংরেজীতে একটি কথা আছে "Power Of Words". এই কথার ক্ষমতা যে কতখানি তা আমরা আসে পাশে তাকালেই বুঝতে পারবো। ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোষ্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
"কথা" সামান্য একটি শব্দ। কিন্তু এর পরিসর বৃহৎ। তাই আমাদের উচিত বুঝেশুনে কথা বলা।
ধন্যবাদ ভাইয়া, আপনার মুল্যবান মতামত প্রদানের জন্য।
বাস্তবতা নিয়ে চমৎকার একটা পোস্ট আপনি আমাদের সাথে উপস্থাপন করেছেন। আসলে কথা শব্দটা ছোট্ট হলেও, এর ভেতরে কিন্তু অনেক রহস্য লুকিয়ে থাকে। একটা মানুষ যদি কথা সহ্য করতে পারে। তাহলে তার মত সুখী হয়তোবা আর কেউ থাকেনা। আমার মা সবসময় একটা কথা বলত, "বোবা মানুষের কোন শত্রু নেই!" অর্থাৎ যে মানুষটা চুপ থাকে সে মানুষটা নিজেও ভালো থাকতে পারে। চারপাশের মানুষকেও ভালো রাখতে পারে। ধন্যবাদ চমৎকার বিষয় নিয়ে আলোচনা করার জন্য। ভালো থাকবেন।
আমাদের এলাকার এক বড় ভাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যায়নরত। ওনার সাথে যখন চলাফেরা করি তখন আর দু’তিনজন যতই ভুলভাল কিছু গল্পে মেতে উঠিনা কেনো ওনার তাতে কোনো হুরুক্ষেপও নেই। উনি উনার মতো শুধু আমাদের সংগ দেয়। একটি কথার প্রতিউত্তরও করেন না৷ কথা কম বলা এই ছেলেটাই আমাদের এলাকার সবচেয়ে ভালো ছেলে হিসেবে বিবেচিত।
ধৈর্যশীলতা হওয়া খুব প্রয়োজন। আমি মনে করি যার ধৈর্য কম সে কোন কিছুতেই ভালোভাবে উপস্থাপন করতে পারে না। আপনার লেখায় খুব সুন্দর ভাবে ধৈর্যশীলতার বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটা লেখা আমাদের উপহার দেওয়ার জন্য। ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।
কথার পরিধি আসলেই বৃহৎ। আমার মা বলতো কথা হলো তীরের মতো, একবার বের হয়ে গেলে তাকে ফেরানো সম্ভব হয় না। তাই বুঝে শুনে কথা বলবি।
আর এই কথা নিয়েই ঝগড়াঝাটি লেগেই থাকে। চুপ থাকলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এড়ানো যায়।
তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে চুপ থাকলে ফলাফল হীতে বিপরীত হতে পারে। মানুষ পেয়ে বসবে। তাই জায়গা বুঝে চুপ থাকা এবং কথা বলা উচিত।
ভালো লাগলো আপনার আজকের লেখা পড়ে।
ভালো থাকবেন সবসময় এই শুভকামনা রইলো আপনার জন্য।
আসলে কথা শব্দটির অর্থ কখনো শেষ করা যাবে না। এই কথা বলার মাধ্যমে একজনের সাথে ভালো বন্ধুত্ব হবে আবার ভালো সম্পর্ক হবে আবার এই কথার মাধ্যমেই জীবন ধ্বংস হয়ে যায়। আপনার সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ে খুব ভালো লাগলো আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ভাই আপনি চমৎকার একটি টপিক নিয়ে আমাদের মাঝে আলোচনা করেছেন। কথা বা জবান একবার মুখ ফসকে বেড়িয়ে গেলে সেটি আর ফেরত পাওয়া যায় না। তাই কথা বলায় আমাদের সকলকে সংযত হওয়া উচিত। মহান আল্লাহ্ তা'লা কম কথা বলা ব্যক্তিকে পছন্দ করেন।
আপনি ঠিক বলেছেন, কথার মাধ্যমেই যত মারামারি, ঝগড়া ঝাটির সৃষ্টি হয়। সব কিছুর মূলে রয়েছে কথা। তাই আমাদের এই কথা বলায় কিছুটা সংযত হওয়া উচিত। ভালো থাকবেন ভাই।
মুখ থেকে কথা ছুটে গেলে আর বন্দুক থেকে গুলি বের হয়ে গেলে, তা আর ফেরানো যায় না, যা ঘটার তাই ঘটে যায়। আমরা চুপ থাকতে শিখলে অনেক ভয়ানক বিপদ থেকে রক্ষা পেতে পারি। এজন্য প্রচুর ধৈর্যশীল হওয়া উচিত। ধৈর্যশীল না হলে ঝগড়ার বিপরীতে ঝগড়া না করে চুপ থাকা মোটেও সম্ভব না।