দীর্ঘ নয় মাসের জার্নি শেষ করে, নবজাতক কে দেখে নিজের অজান্তেই শান্তি পেলাম।
জীবনের এক নতুন অধ্যায়ের অভিজ্ঞতা, যদিও এটা শুরু হয়েছিল আজ থেকে আরো নয় মাস আগে, তবে শেষ পর্যায়ে এসে বুঝতে পারছি,একটা মা তার জীবনে সাথে কতটা লড়াই করে একটা সন্তানকে পৃথিবীতে আনে, এটা সত্যিই অনেক বেশি কঠিন,,।
তবে আমি আমার চেষ্টা ধারা এই কঠিন সময়টা কে পার করতে চাই, বর্তমানে আমি হসপিটালে ভর্তি আছি,, গত ১৩ ফেব্রুয়ারি রোজ বৃহস্পতিবার, এবং পহেলা ফাল্গুন, সত্যিই এই দিনটা আমার কাছে স্মৃতির পাতায় স্মরণীয় হয়ে থাকবে, গত চারদিন যাবৎ আমি হসপিটালে ভর্তি, একটা মেয়েকে মা হতে গেলে জীবনের সাথে কতটা লড়াই করতে হয়।
তা হসপিটালের গাইনি ওয়ার্ডে আসলে খুব কাছ থেকে দেখা যায় বোঝা যায়। যদি ওটা আমার দ্বিতীয় বারের অভিজ্ঞতা তবুও আমার কাছে এটা অনেক বেশি কঠিন ছিল, কারণ আমি প্রথমবার বুঝতেই পারিনি। একটা মা যখন সি সেকশন যায় তখন তার কেমন অনুভূতি হয়। যেহেতু এই টাইমে আমি সবকিছু প্রথম থেকে জানতে পেরেছিলাম তাই ভয়ে কাজটাও বেশি করছিলো।।
আমার আম্মু শাশুড়ি এবং আমার হাজবেন্ডের আমার কাছে সব সময় ছিল, তাদের এত বেশি সান্তনা যেন আমার গায়ে লাগছিল না শুধু অঝোরে চোখের পানি পড়েছে ভয়ে কি হবে আমার এত বেশি ভয় লাগছিল ধীরে ধীরে যেন সময় ঘনিয়ে এসেছিলো আমার ওটিতে যাওয়ার টাইম ছিল সকাল আটটা বাজে ২০ মিনিট।
সারাটা রাত আমার টেনশন এ ঘুম হয়নি সকাল বেলা যাবার আগে দুই রাকাত নামাজ আদায় করে নিলাম ,,,আর কেন জানি মনে হচ্ছিল যদি আমি আর ফিরে না আসি শুধু ভয় আর ভয় লাগছিলো,,সে সময়টা৷ তে আমার আম্মু আমাকে এত বেশি সাহস দিলো,এবং ফোনের ক্যামেরা অন করে ধরে রাখলাম নিজের হাসিটা তখন ধরে রাখতে পারলাম না।
এই কঠিন সময় এমন ছবি সত্যিই অনেক বেশি, হাস্যকর মনে হচ্ছিল তখন কিন্তু অন্তরে ভয় লাগছিলো,এরপর আর কি করার সময় নষ্ট না করে, আমি ওটি রুমে চলে গেলাম , ওখানে যাওয়ার পরে আমাকে কতগুলো যে মেডিসিন নিতে হয়েছে সেগুলো বলে বোঝানো যাবে হয়তো আমি একা না প্রত্যেকটা মেয়ে যখন মা হয় তাদের কে এগুলো দিতে হয়।
তখন আরো বেশি ধারনা করছিলাম আমার মাও আমার জন্য কতটা কষ্ট করেছে, সত্যি মা না হলে মায়েরে কষ্টগুলো অনুভব করা যায় না। প্রত্যেকটা মায়ের হয়তো আমার মত এরকম কষ্ট অনুভব করে, জীবনে আর কিছু হোক বা না হোক আপনার সব সময় মাকে ভালবাসবে কারণ মায়ের এই ঋণ কখনো শোধ করা যাবে না।
আমি প্রথম বাবার বাচ্চা মুখ দেখতে পাই আর বাচ্চা কে দেখার পরে আমার সকল কষ্ট দুঃখ যন্ত্রণা যেন কোথায় হাওয়া হয়ে গেল, নিজের ভেতরের বেদনা টা কি আর অনুভব করতে পারলাম না, তখন আরও বেশি অনুভব করলাম কষ্টের পরে সুখ সব দুঃখ গুলো যেন হাওয়া হয়ে বাতাসের সাথে উড়ে গেলো,,।
তবে এর পরে আমি পুরা একটা দিন ছিলাম,আইসিওতে যেখানে নাম শোনা মাত্রই ভেতরটা কেঁপে ওঠে, ওই একটা দিন ছিল আমার জন্য আর বেশি ভয়ানক ওটা মনে হয় পরে একদিন শেয়ার করবে, তবে ওখান থেকে বের হওয়ার পরে শান্তি অনুভব করছিলাম এবং দুই বাচ্চা কে দেখার পরে নিজেকে অনেক বেশি খুশি মনে হচ্ছিল।
দীর্ঘ ৯ মাসের যে কষ্ট দুঃখ ছিল সব ভুলে গেলাম আমার এই ছোট্ট পরিবারটাকে দেখে, সবাই দোয়া করবেন আমার এই ছোট্ট পরিবারের সাথে আপনাদেরকে নিয়ে যেন সবসময় ভালো থাকতে পারি । যাইহোক আজ আর লেখা সম্ভব নয় পরের এক দিন আবার হাজির হবো আল্লাহ হাফেজ।
কথায় আছে মেয়েদের মাতৃত্ব হলো মেয়েদের জন্মের সার্থক। মা শব্দটা যতই ছোট এর অর্থ বিশাল। মায়ের সংঞ্জা অল্প কিছুতে দেওয়া যায় না। ৯ মাস ১০ দিন ধরে শরীরের রক্তবিন্দু দিয়ে একটু একটু গড়ে তোলা একটি মানব সন্তান এটা যে কতটা কষ্ট তা শুধুমাত্র যে নারী মা হতে পেরেছে সেই বুঝতে পারে।
নরমাল ডেলিভারি হলে প্রসব বেদনা যে কত কষ্ট তা শুধুমাত্র সেই মা বোঝে। অনেকে বলে সিজারে কোন কষ্ট নেই, হাঁটতে হাঁটতে ওটিতে যায় আর বেবী নিয়ে আসে । সিজারের আগে যত প্রকার ওষুধ খাওয়ানো হয় এবং এনেস্থিসিয়া যখন মেরুদন্ডে দেয়া হয়, সেই থেকে মা স্বেচ্ছায় পঙ্গুত্ববরণ করে নেয়।
নরমাল ডেলিভারি হলে তো অল্প কিছু দিনের ভিতরে ব্যথা সেরে যায় কিন্তু একজন মায়ের সিজার হলে সেই মায়ের যন্ত্রণা থাকে সারা বছর ধরে। তারপরও এত কষ্টের পরও সন্তানের মুখ দেখে মা সকল কষ্ট ভুলে যায়। সন্তানের হাসি মুখের কাছে তার এই কষ্ট তখন কিছুই মনে হয় না ।
নবজাতক শিশু ও আপনার জন্য রইল অনেক অনেক ভালোবাসা ও দোয়া। তবে মিষ্টি খাওয়াতে ভুলবেন না কিন্তু! সেটা পাওনা রইল ।
0.00 SBD,
2.95 STEEM,
2.95 SP
সত্যি মা শব্দটা অতি ছোট হলেও এর অর্থ বিশাল, একটা ছোট্ট রক্ত বৃন্দকে ভিতরে রেখে বড় করাটা দীর্ঘ ৯ টা মাস এটা শুধু ওই মাই বুঝতে পারে তার অবস্থাটা, তবুও দিনশেষে আমরা একটু শান্তি খুঁজে পাই সব কষ্ট ভুলে যায় যখন নবজাতকের মুখ দেখতে পাই ,, যত কষ্ট যন্ত্রণা কোথায় যে ভুলে যাই তা এ মা ছাড়া আর কেউ বুঝতে পারবে না,, ভালো লাগলো আপনার মন্তব্যটা পড়ে আর হ্যাঁ অবশ্যই মিষ্টি গুলো কিন্তু খেয়ে নিবেন, 🧆🧆🧆
Your comment has been supported by THE PROFESSIONAL TEAM. We support quality posts, Original quality comments anywhere, and any tags
ধন্যবাদ স্যার।
Thank you for sharing on steem! I'm witness fuli, and I've given you a free upvote. If you'd like to support me, please consider voting at https://steemitwallet.com/~witnesses 🌟
ছোট্ট সোনাকে কোলে পেয়ে আপনি কতটা খুশি তা আপনার মুখের হাসি দেখেই বোঝা যাচ্ছে। সত্যি এই অনুভূতি প্রত্যেকটি মেয়ের জীবনে এক বিশেষ প্রাপ্তি। আপনি ও পুচকু সোনা দুজনেই ভালো থাকবেন ।ভগবান আপনাদের মঙ্গল করুন। পুচকু সোনার মন ভরে যত্ন নেবেন।
আপনার পোস্টটি সত্যিই অনেক স্মৃতিময়। মা হওয়ার এই অনুভূতি কেবল একজন মায়েরই বুঝতে পারে। আল্লাহ আপনাকে এবং আপনার পরিবারের সবাইকে সুস্থ ও সুখী রাখুক। এবং আপনার ছেলেকে আল্লাহ সব সময় ও হেদায়েত দান করুক, এই দোয়াই রইল! আপনাকে অভিনন্দন আপু💕
আলহামদুলিল্লাহ, প্রথমেই আপনার বাচ্চার জন্য অনেক অনেক শুভেচ্ছা। আসলে একজন মায়ের কি পরিমাণ কষ্ট সেটা শুধু একজন মাই বলতে এবং বুঝতে পারবে। আমরা ছেলেরা হয়ত, অনুভব করার চেষ্টটা করতে পারি, কিন্তু প্রকৃত কষ্ট ত্যাগটা বুঝতে পারি না৷ তবে আমি আমার বোনের বাবু পেটে যখন ছিল তখন অনেক খেয়াল করেছি আপুর কত সমস্যা হতো। যাই হোক, আপনার এবং আপনার বাচ্চার সুস্থতা কামনা করছি৷ নিজের এবং বাচ্চার দিকে খেয়াল রাখবেন।
একদম ঠিক তাই ছেলেরা এই কষ্ট বুঝতে পারে না,, তবে খুব কাছ থেকে দেখলে বোঝা যায় মা হওয়া কতটা কষ্ট। তবে না হতে হলে এই কষ্ট অবশ্যই ভোগ করতে হবে, আর এত এত কষ্ট করার পরেই সে সুখটা মিলে যখন বাবুকে দেখা যায়।
প্রথমেই আপনাকে এবং আপনার নবাগত শিশু পুত্রকে অনেক ভালোবাসা ও আদর পাঠালাম এই মন্তব্যের মাধ্যমে। যদিও কয়েকদিন আগেই আপনার জীবনে এক অঘটন ঘটেছে, কিন্তু যেমনটা অ্যাডমিন ম্যাম বলেছিলেন, হয়তো তিনি আবার ফিরে এসেছেন আপনার কোল জুড়ে।
ছবিটি দেখেই মনটা জুড়িয়ে গেলো, সম্ভব হলে কাছে গিয়ে নিশ্চয়ই কোলে তুলে আদর করতাম। কিন্তু তা সম্ভব নয় বলেই দূর থেকে অনেক আদর পাঠালাম ওর জন্য। আশীর্বাদ করি ভালো থাকুক, সুস্থ থাকুক, জীবনে সব আশা পূরণ হোক, আর সব থেকে বেশি যেটা মন থেকে চাই, ও একজন প্রকৃত মানুষ হোক। পাশাপাশি আপনারাও দ্রুত সুস্থতা কামনা করি।
মা হওয়া আসলেই মুখের কথা নয়। তাই নয় মাসের এই দীর্ঘ জার্নি আপনার জন্য অনেক কষ্টের হলেও, সন্তানের মুখ দেখে তা আপনি ভুলে গেছেন, এখানেই মা হওয়ার সার্থকতা। আপনার পুরো পরিবারের জন্য অনেক শুভকামনা রইল দিদি। খুব ভালো থাকবেন।
মন্তব্যটা পড়ে আমার নিজেরও ভীষণ ভালো লেগেছে যদি এমন সম্ভব হতো তাহলে অনেক ভালই হতো, তবে এটা শুধু স্বপ্নে বাস্তবে কখনো হবে কিনা জানিনা, তবে দূরে থেকেও যে কেউকে আদর, ভালোবাসা যায় আশীর্বাদ করা যায় এটাও সত্য যেমনটা আপনি বললেন।
আপনাদের এত এত আশীর্বাদ থাকলেও একদিন সত্যি একজন প্রকৃত মানুষের মত মানুষ হবে,ইনশাআল্লাহ, আর হ্যাঁ একদম ঠিক কথাই বলেছেন মুখের কথা নয় আর সব কষ্টই ভুলে গিয়েছি, নবজাতকের মুখের দিকে তাকিয়ে,,,।
Your post has been supported by THE PROFESSIONAL TEAM. We support quality posts, quality comments anywhere, and any tags
thank you ❤️
আলহামদুলিল্লাহ, আপনার অনুভূতি পড়ে সত্যিই মন ছুয়ে গেল। মা হওয়ার পথটা যত কঠিনই হোক, সন্তানের মুখ দেখার পর সব কষ্ট যেন নিমেষে ভুলে যায় একজন মা। একজন মা মা যে কষ্ট সহ্য করে সন্তানকে পৃথিবীতে আনন্ত ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। তবে এই কঠিন সময় আপনার আম্মু ও শাশুড়ি যেভাবে পাশে ছিলেন তা সত্যিই প্রশংসনীয়। একজন মায়ের ভালোবাসা সীমাহীন, আর একজন শাশুড়ি ও ঠিক তেমনই, যখন তিনি মায়ের মতই পাশে দাঁড়ান। আপনার এই সুন্দর ছোট্ট পরিবার সবসময় ভালো থাকুক সুস্থ থাকুক।
কমেন্টটা পড়ে আমার বেশ ভালো লেগেছে, আমার কাছে কেন জানি মনে হয় কেউ কি ভালবাসলে ভালোবাসা পাওয়া যায় নিজের মা কিবা শাশুড়ি যেই হোক না কেন হতে পারে পৃথিবীর অন্য কোন সম্পর্ক, তবে সবার ক্ষেত্রে যে এমনটা হবে সেটা কিন্তু নয় কারণ পৃথিবীর প্রত্যেকটা মানুষ ভিন্ন ভিন্ন রকমের,, তবে হ্যাঁ এটা ঠিক বলেছেন শাশুড়ি হিসেবে তিনি আমার এই কঠিন সময় আমার পাশে ছিলেন অনেক ভাবেই যার প্রশংসা না করলেই নয়।।
আলহামদুলিল্লাহ প্রথমে আপনার বাচ্চার জন্য অনেক অনেক ভালোবাসা, বাবুটা দেখতে অনেক সুন্দর এন্ড কিউট হয়েছে, দীর্ঘ নয় মাস কষ্ট করার ছেলের মুখ দেখে আপনি পিছনের কষ্ট সব ভুলে গিয়েছেন।
আমি সব সময় ছোট বাবুদের সাথে খেলাধুলা করি বেশি বড় মানুষদের সাথে কম মেলামেশা করি।
যদি কাছে থাকতাম তাহলে আপনার ছেলে একজন খেলার সঙ্গী হতে পারতাম। কিন্তু এটা তোর আর সম্ভাবনা নেই।
ছোট্ট বাবুকে নিয়ে ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন ও আপনাদের জন্য দোয়া করি যাতে সুস্থ সুন্দরভাবে বেড়ে ওঠে।
আপনার পোষ্টটি পড়ে খুব ভালো লাগছে যা আপনাকে বলার মত নয়
খুবই ভালো লাগলো কমেন্টটা পড়ে চাইলে সবই সম্ভব সমস্যা নাই চলে আসতে পারেন , আমার ছেলের খেলার সঙ্গী হিসেবে সংঘ দিতে, ছোট বাচ্চাদের আমারও অনেক ভালো লাগে তাদের ছোট ছোট তাকানো ছোট, হাত পা, দিয়ে ইশারা করা দেখতে ভীষণ ভালো লাগে খুবই ভালো লাগলো, আপনার মন্তব্যটা পড়ে।।
১০০% ঠিক বলেছেন আপু যখন আস্তে আস্তে শিশুগুলো বড় হয় পাকনা পাকনা কথা বলে তখন আরো বেশি ভালো লাগে তাদেরকে, মনে চায় সব সময় তাদের এই পাকনা পাকনা কথাগুলো শুনতে থাকি।
হঠাৎ করে একদিন দেখবেন আপনাদের বাসায় চলে এসেছি বাবুর সাথে খেলাধুলা করার জন্য। ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন বাবু জন্য দোয়া করি যাতে সুস্থ সুন্দরভাবে বেড়ে উঠে
বাবাটার জন্য প্রথমেই অনেক অনেক ভালোবাসা ও আদর রইলো ।দোয়া করি বড় হয়ে একজন ভালো মানুষ যেন হয়।
একদম ঠিক বলেছেন ,ওটির ভেতরে ঢোকার মূহুর্তটা আসলেই খানিকটা ভয়ের ।আমার দুই ছেলেই সিজারিয়ান বেবি।তাই এই জার্নিটা আমিও পার করে এসেছি ।
মা হওয়াটা মুখের কথা না ।এর জন্য শারীরিক ও মানসিক অনেক ধকল যায়।এসময়ে কাছের মানুষগুলোর ভুমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ।
মা ও ছেলে দুজনেই ভালো থাকুন এই দোয়া করি ।
একদম ঠিক তাই মা হওয়া মুখের কথা নয়, শারীরিক ও মানসিক যে ধকল যায় তা শুধু সে মা টা এই জানে, যদিও বর্তমান সময় সবকিছু উন্নত তবে সিজারিয়ান পদ্ধতি মানেই, সারা জীবন নিজেকে কষ্ট ভোগ করতে করতে বেঁচে থাকতে হয়, যাইহোক ধন্যবাদ খুব সুন্দর একটা মন্তব্য করার জন্য।