নাটক রিভিউ||আই এম সিঙ্গেল
♥️আসসালামুআলাইকুম♥️
আমি @bristy1, আমার বাংলা ব্লগ এর একজন সদস্য। আর আমার এই প্রিয় কমিউনিটির প্রিয় বন্ধুগণ, আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি৷ সবার সুস্থতা কামনা করেই আজকের পোস্টটি শুরু করতে যাচ্ছি।
আজকের নাটকটা কিছুদিন আগেই দেখেছিলাম। আর তার পর ভাবলাম একটা রিভিউ পোস্ট করা যাক। সেই পরিপ্রেক্ষিতে চলে এলাম রিভিউটা নিয়ে।যদিও বর্তমানে এগুলো অল্পতেই হিট হয়ে যায়,তবে কিছু কিছু নাটক আবার বাস্তবসম্মতও হয়।যেমনটা এই নাটকে দেখতে পেলাম।আশা করি আপনারা রিভিউ পড়ে বুঝতে পারবেন।
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া।
নাটকের গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য |
---|
নাটকের নাম | আই এম সিঙ্গেল |
---|---|
পরিচালক | মাহমুদ মাহিন |
অভিনয় | ফারহান আহমেদ জোভান, কেয়া পায়েল সহ আরো অনেকে |
ভাষা | বাংলা |
মুক্তির তারিখ | ২৭ জুন ২০২৪ |
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া।
নাটকের শুরুতেই দেখানো হয় নায়ককে ঘুম থেকে জাগিয়ে তুলতে এসেছে তার বন্ধু।এখানে নায়কের নাম নিরব আর বাস্তবিক নাম জোভান। যাইহোক নিরব বলেই সম্বোধন করছি। বন্ধু এসেই তড়িঘড়ি করছে উঠে যাওয়ার জন্য৷ তখন সে বলে যে এত তাড়াতাড়ি সকাল হয়নি, তখন কিন্তু দুপুর ঘড়িয়ে এলো। তার বন্ধু তাকে ৮৫বার কল দিয়েছে, কিন্তু নিরব জানায় সে ফোন সাইলেন্ট করে ঘুমাচ্ছিল৷ তখন নিরবের বন্ধু বলল তার গার্লফ্রেন্ডের কি হবে? তখন সে জানায় গতকাল রাত থেকেই সে সিঙ্গেল। এর পরিপ্রেক্ষিতে নিরবের বন্ধু তাকে বিভিন্ন কথাবার্তা বলে এবং সবকিছু তাকে খুলে বলে৷
যাইহোক নিরবের বন্ধু বলে যে তার প্রিন্সেস দেশের বাইরে থেকে আসছে তার সাথে দেখা করার জন্য যাবে৷ এটা শুনে তাচ্ছিল্যের সুরে নিরব তার বন্ধুকে বিভিন্নরকমভাবে কথা শোনায়৷ যাইহোক এসব কথার মাঝে নিরবের বন্ধু তাকে বলল তার গাড়ি নিয়ে যেতে। সে রাজি হচ্ছিলো না, তবুও বন্ধুর জোরাজুরিতে সে রাজি হয়ে গেল৷ এরপর তারা দুজনে মিলে তার সাথে দেখা করার জন্য চলে গেল৷ সেখানে গিয়ে তার সাথে দেখা করার পর নিরব নিজেই ফিদা হয়ে যায়,হাহাহা। তারপর সে ঐ মেয়ের সাথে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে তুলে। তার বন্ধুর সাথে ঐ মেয়েকে কোন কথাই বলতে দিচ্ছিল না৷ তারা দুজনেই শুধু কথাবার্তা বলছিল৷
প্রথমদিন ঘুরাঘুরি করার পর মেয়েটা নিরবের নাম্বার নিয়ে নেয়।এভাবে প্রতিনিয়ত কথা বলতে বলতে তাদের মধ্যে সুন্দর সম্পর্ক সৃষ্টি হয়ে যায় এবং যার প্রিন্সেস ছিল তার সাথে কথাবার্তা বলে না৷ তার সাথে সময় অতিবাহিত করেনা৷ শুধুমাত্র নিরবের সাথেই ঘোরাঘুরি করতে পছন্দ করত৷ সে বিদেশ থেকেই ভেবে নিয়েছিল যে এরকম একজন মানুষের সাথে সে ঘুরাঘুরি করবে এবং ঠিক সেরকমই একটি মানুষ সে এই দেশে এসে পেয়ে গিয়েছে৷ এতে তো মেয়েটি মহা খুশি। ও হ্যা,মেয়েটির নাটকের চরিত্রের নাম ছিল জেরিন।
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া।
এখন নিরবের বন্ধু দেখে যে তার সাথে তার কথিত প্রিন্সেসের কোন ধরনের যোগাযোগ নেই এবং তার সাথে কোনভাবে সে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে না।কোনো সময় অতিবাহিত করে না৷ তখন সে অনেক কান্নাকাটি করতে থাকে এবং সে বলে যে জেরিনকে তার পছন্দ ছিল। তাকে সে পছন্দ করার কারণেই এখানে নিয়ে এসেছে এবং দেশে আসার পরে যখন থেকে সে তার বন্ধুর সাথে জেরিনের দেখা করিয়ে দিয়েছে এরপর থেকে তার সাথে কোন যোগাযোগ নেই৷ তাদের সম্পর্কের ভেতরেও কোন ধরনের গভীরতা তারা দেখতে পায় না৷
এভাবে যখন সে অনেক কান্নাকাটি করতে থাকে তখন সে হঠাৎ করে হেসে দেয় এবং সে ভাবে যে নিরবের তো তিন মাসের বেশি কোনো গার্লফ্রেন্ডই টিকে না। তাই যেন তিন মাস পরে সে জেরিনকে তার কাছে দিয়ে দেয়৷ এরপরও তারা বিভিন্ন জায়গায় আবারও দেখা করতে থাকে। একদিন একটা জায়গায় যখন নিরব এবং জেরিন দেখা করার জন্য যায় সেখানে নিরবের প্রাক্তন একজন গার্লফ্রেন্ড সেখানে চলে আসে। সে জেরিনকে দেখে বিভিন্ন কথা বলতে থাকে এবং এটাও বলে যে তিন মাসের জন্য সেও জয়েন করেছে৷ এভাবে আরো কিছু কথাবার্তা বলে সে সেখান থেকে চলে যায়৷
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া।
এরপর একদিন নিরব জেরিন দুজন রেস্টুরেন্টে যায়। সেখানে জেরিনকে সে প্রপোজ করে এবং এই প্রপোজ করার পর থেকে তাদের এই সম্পর্কের মধ্যে ফাটল সৃষ্টি হয়৷ তখন সে অনেক রাগান্বিত হয়ে যায়। সে বলে যে তার মতো ছেলেদের একটাই সমস্যা যদি কখনো ভালোভাবে কথাবার্তা বলে তখন তারা ভাবে যে তাদের ভালোবাসা হয়ে গিয়েছে৷ এই ভালোবাসা তারা এত গভীরভাবে নেয় কেন৷ বিদেশে এরকম ছেলেদের সাথে কথা বলা তাদের কাছে শুধুমাত্র বন্ধুত্বই৷
নিরবের সাথেও সে শুধুমাত্র বন্ধুত্বই করেছে৷ সে কখনোই তাকে ভালোবাসেনি৷ সবসময় তাকে বন্ধু হিসেবে দেখত৷ যখন নিরব এই কথাগুলো শুনে তখন সে অনেক কান্নাকাটি করতে থাকে৷ এই বিষয়টি শোনার পরে সে একেবারে অন্যরকম হয়ে যায় এবং সে প্রতিনিয়তই জেরিনের কথা চিন্তা করতে থাকে৷ এই কথা চিন্তা করতে করতে সে অনেক কষ্ট পেতে থাকে৷ এর পরবর্তী সময়ে যখন নিরব কিছু করতে পারে না তখন সে একেবারে নেশাগ্রস্ত হয়ে যেতে থাকে৷ সে এত বেশি পরিমাণে তাকে ভালোবাসে যে একটা সময় তার জীবন শেষ করে দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছিল৷ এরপর নিরবের বন্ধু আর জেরিন তার বাসায় গিয়ে এই অবস্থা দেখতে পায় এবং সে বুঝতে পারে যে সে আসলে তাকে ভালবাসতো৷ পরবর্তীতে তাদের দুজনের সম্পর্ক তারা ভালোভাবেই মেনে নেয় এবং এভাবে তাদের দুজনের মিল হয়ে যায়।
আমার ব্যক্তিগত মতামত।
জোভান এবং কেয়া পায়েলের নাটক প্রায়ই দেখা হয়৷ এই নাটকে প্রথম দিকে যখন জোভান অনেক মেয়ের সাথে প্রেম করত এবং তিন মাসের বেশি তার কোন গার্লফ্রেন্ড টিকতো না। তখন সে একের পর এক অনেক মেয়ের সাথে প্রেম করত,চিট করতো সবার সাথে৷ তবে সর্ব শেষে নতুন করে যখন নাটকের আসল নায়িকা আসলো অর্থাৎ কেয়া পায়েলকে দেখলো তখন থেকেই সে যেন একটি আলাদা ভালোলাগা দেখতে পায়। প্রথমদিকে বন্ধুত্বের মতই ছিল আর কেয়া পায়েল এটাই ভেবেছিল। পরবর্তীতে জোভান কেয়া পায়েলকে প্রপোজ করাতে কেয়া পায়েল রেগে যায়।সে এটা প্রত্যাশা করে নি,এত অল্প সময়ের ব্যবধানে সে প্রপোজ করে বসবে।যাইহোক কেয়া পায়েল বিভিন্নভাবে ইগ্নোর করে জোভানকে। জোভান বিভিন্নরকম ভাবে ভেঙে পড়ে, নেশা করে।একপর্যায়ে সে তার জীবন শেষ করে দেওয়ার জন্য পদক্ষেপ নেয়। তখনই কেয়া পায়েল বুঝতে পারে যে আসলেই তাকে ভালোবাসতো। এরপর তাদের মধ্যে মিল হয়ে যায়৷ আমার মনে হয় এটা বাস্তবিক সময়ের ভিত্তিতেই করা। আর এরকম কিছু প্রায়ই দেখা যায়। কেউ জানে, কেউ জানে না।যাইহোক সর্বোপরি সে কেয়া পায়েলকে পেয়ে হ্যাপি, দুজন ভালোভাবেই মেনে নিল।মোটকথা এই নাটকের হ্যাপি ইন্ডিং হলো।
আমার ব্যক্তিগত মতামত অনুসারে নাটকের রেটিংঃ |
---|
৯.৮/১০
সবাই অনেক অনেক ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন। সবার জন্য আন্তরিক ভালোবাসা রইল। সম্পূর্ণ পোস্টে আমার ভুল-ত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। |
---|
♥️আল্লাহ হাফেজ♥️ |
---|
আমি তাহমিনা আক্তার বৃষ্টি। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি বাংলায় কথা বলি,আমি বাংলায় নিজের মনোভাব প্রকাশ করি। আমি নিজের মত করে সবকিছু করার চেষ্টা করি। আমি বিভিন্ন জিনিস আঁকতে পছন্দ করি। বিভিন্ন ধরনের ছবি আঁকা, রঙ করা, নতুন নতুন কিছু তৈরি করা আমার পছন্দের কাজ। তবে রান্নাবান্না আমার ভালোলাগা, চেষ্টা করি সবসময় নিজে নতুনভাবে কিছু রান্না করার। ভ্রমণপ্রেমীদের মত আমিও ঘুরতে পছন্দ করি। পরিবারের সবাইকে নিয়ে আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আপু আপনি আজকে আমাদের মাঝে বেশ দারুন একটি নাটক রিভিউ করে শেয়ার করেছেন। আই এম সিঙ্গেল নাটকটি কিছুদিন আগে মুক্তি পেয়েছে দেখলাম কিন্তু এখনো দেখা হয়নি চেষ্টা করব খুব দ্রুত নাটকটি দেখার জন্য। আসলে জোভান এবং কেয়া পায়েলের নাটক দেখতে আমার কাছে সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে। আসলে তিন মাসের বেশি জোভানের প্রেম ঠিক তো না সত্যিই বেশ দারুন ব্যাপার নাটকটি তো দেখতে হয় তাহলে খুব দ্রুত। এমনিতেই প্রেম কাহিনী নাটক দেখতে আমি সবথেকে বেশি পছন্দ করি। ধন্যবাদ আপু এত সুন্দর ভাবে নাটকটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
নাটকটা একদম বাস্তবসম্মত একটা নাটক ছিল। বর্তমান সমাজে এরকম বহু লোক দেখা যায়। যাই হোক অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া এত সুন্দর একটা মন্তব্য ভাগ করে নেয়ার জন্য।
দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে মন ভালো রাখা যায় না। একেকটা নিউজের পর এক একটা নিউজ সত্যি বেশ খারাপ লাগছে এগুলো শুনতে। যাইহোক আপনি খুব সুন্দর একটা নাটকের রিভিউ শেয়ার করেছেন আপু। যদিও নাটকটা দেখা হয়নি তবে আপনার পোষ্টের মাধ্যমে পুরো নাটকটা সম্পর্কে জানতে পারলাম। সবশেষে নাটকে হ্যাপি এন্ডিং হয়েছে। ধন্যবাদ আপু এত সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
জি আপু নাটকটা আসলেই কিন্তু সুন্দর ছিল। আর এটা অনেক ক্ষেত্রে কিন্তু দেখতে পাওয়া যায়। যাই হোক ধন্যবাদ আপনাকে আপু।
এই ধরনের নাটক গুলো আমার খুব কম দেখা হয়।মাঝে মধ্যে কিছু ক্লিপ দেখে ইউটিউব থেকে এই ধরনের নাটক দেখি।গল্পটা মজার আপনিও দারুন ভাবে গুছিয়ে রিভিউ দিয়েছেন। ধন্যবাদ আপনাকে।
জি ভাইয়া ছোট ছোট ক্লিপগুলো দেখতে ভালোই লাগে। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনি পুরো নাটকের কাহিনী আমাদের মাঝে সুন্দর ভাবে শেয়ার করছেন। জোভান এবং কেয়া পায়েলের অভিনয় আমার কাছে অনেক ভালো লাগে।আপনার শেয়ার করা নাটকটি তবে এখনো দেখা হয়নি। নাটকের রিভিউ পড়ে দেখার আগ্রহ বেড়ে গেলো।ধন্যবাদ আপু পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
ভালো লাগবে ভাইয়া। নাটকটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্তই অনেক সুন্দর কিছু উপস্থাপনা হয়েছে, ধন্যবাদ আপনাকে।
জোভান এবং কেয়া পায়েলের নাটকগুলো আমার খুব ভালো লাগে। তাদের বেশিরভাগ নাটক আমার দেখা হয়েছে। আই এম সিঙ্গেল এই নাটকটা যদিও দেখা হয়নি কিন্তু রিভিউ পোস্ট পড়তে ভালো লেগেছে। জোভান কেয়া পায়েলকে আসলেই অনেক ভালোবেসে ফেলেছিল। তাইতো কেয়া পায়েল জোভানের প্রস্তাবে রাজি না হওয়াতে, সে অনেক কষ্ট পায় আর নেশা করতে থাকে। সবশেষে দুজনের মিল হয়েছে দেখে খুব ভালো লাগলো। নাটকের শেষে এরকম মুহূর্ত আসলে বেশি ভালো লাগে।
নাটকটা কিছুদিন আগে কিন্তু মুক্তি পেল। অনেক সুন্দর ছিল এই নাটক দেখলেই বুঝতে পারবেন। ধন্যবাদ আপু আপনাকে।
আপনি তো খুব সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ করেছেন।জোভান এর নাটক আমার খুব ভালো লাগে। যদিও আমি আই এম সিঙ্গেল নাটকটি দেখি নাই। তবে নাটকের কাহিনী পড়ে অনেক ভালো লাগলো। আসলে নাটকের জোভান দেখতেছি মেয়েদের সাথে প্রেম করে হয়তবা সময় পার করতেছে। এই কারণে তার প্রেমগুলো তিন মাসের উপর টিকতেছে না। সময় পেলে নাটক টি দেখার চেষ্টা করব। সুন্দর একটি নাটক রিভিউ করার জন্য ধন্যবাদ।
হ্যাঁ আপু বর্তমান সমাজে এমন অনেককে দেখা যায় এরকম করে। পরবর্তীতে যাদের পাওয়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষা থাকে,তারা হয়তো জীবনে আসেও না। যাই হোক অসংখ্য ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্য ভাগ করে নেয়ার জন্য।