মুভি রিভিউ: রেড নোটিশ
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।
আজকে আমি আপনাদের সাথে একটা মুভি রিভিউ শেয়ার করে নেবো। আজকে আমি যে মুভিটি আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো সেটি অ্যাকশন+কমেডি+থ্রিলার। কমেডি মুভিগুলো দেখতে বেশ মজার, মনে আনন্দ দেয় খুব। এই মুভিটি কেউ দেখেছেন কিনা জানিনা কিন্তু দেখে বেশ আনন্দ পাওয়ার মতো আকর্ষণীয় আছে। এই মুভিটির নাম হলো " রেড নোটিশ"। বেশিদিন বয়েস না এই মুভির, রিসেন্ট বের হয়েছে। আশা করি এই মুভির রিভিউটি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।
☬কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:☬
✔মূল কাহিনী:
মুভির শুরুতে দেখা যায় ডোয়াইন জনসন এবং রিতু আর্য দুইজন আর তাদের সহকর্মী সহ একটা মিউজিয়ামে যায়। এই মিউজিয়ামে মূলত হাইলি সিকিউর জায়গায় সোনা গলিয়ে তৈরি একধরণের এগ মানে ডিম এর মতো দেখতে একটা মূল্যবান জিনিস রাখা ছিল আর এটি চুরি হওয়ার সম্ভাবনা ছিল তাই তারা দুইজন চেক করতে এসেছিলো। এরা দুইজন আমেরিকান FBI এজেন্ট হিসেবে কাজ করে। আর এখানে রায়ান রেনল্ডস ব্যক্তিটি চোর হিসেবে অভিনয় করে। যাইহোক এরপর তারা মিউজিয়ামে গেলে ডোয়াইন জনসন সেই ডিম্বাকৃতি জিনিসটাকে চেক করে কিন্তু তার সন্দেহ হয় এবং পরে একটা ড্রিংক এর ক্যান নিয়ে তার উপরে ঢালতেই সেটা গলে যায় অর্থাৎ সেটি নকল বের হয়। তারা মিউজিয়ামে ঢোকার আগেই চোর সেটি চুরি করে নেয় এবং ডোয়াইন জনসন সেটি দেখে ফেলে আর তাকে ধরার জন্য সারা মিউজিয়াম দৌড়াদৌড়ি করে কিন্তু উপরের থেকে লাফ দিয়ে চোরটি পালিয়ে যায় সেই ডিম টা নিয়ে। ( রায়ান রেনল্ডস চোর হলেও কমিডি তে ফাস্ট) এরপর চোরটি সেই ডিমটা নিয়ে বিচ এর মাঝে তার একটি বাড়িতে চলে আসে কিন্তু তার আসার আগেই ডোয়াইন জনসন এবং রিতু আর্য রুমের ভিতরে বসেছিল। আর চোরটি আসতেই FBI অফিসাররা তাকে ঘিরে ফেলে এবং সেই সোনার তৈরি ডিমটি তারা উদ্ধার করে আর চোরটিকে গ্রেফতার করে জেলে নিয়ে যায়। তবে তাদের চোখে ধুলো দিয়ে অরিজিনাল ডিমটা আরেকজন মেয়ে গ্যাল গ্যাডট চুরি করে নেয় আর নকল একটা ডিম্ রেখে দেয় গাড়ির ভিতরে বাক্সে। এরপর ডোয়াইন জনসন কে সন্দেহ করে রিতু আর্য আর তাকে গ্রেফতার করে রাশিয়ান জেলে নিয়ে যায় সেখানে ওই চোরটাকে আর ডোয়াইন জনসন কে একই কারাগারে রেখেছিলো।
কারাগারে দুইজন দুইজনকে দেখে একপ্রকার চমকে যায় এবং চোরটি ডোয়াইন জনসন কে বলে আপনি এখানে কি করছেন। তখন ডিমটা চুরি নিয়ে তাদের মধ্যে কথোপকথন হয়, ডোয়াইন জনসন চোরটির কাছে জানতে চায় যে ডিমটা কে চুরি করেছে। চোরটি জেলের মধ্যে খাবার খাওয়ার সময় এই বিষয় নিয়ে বলে এইরকম দেখতে টোটাল ৩টি ডিম্ আছে যার মধ্যে আর দুটি অন্য একজনের কাছে আছে। এরপর রাশিয়ান পুলিশ তাদের দুইজনকে ধরে নিয়ে গ্যাল গ্যাডট মেয়েটির কাছে নিয়ে যায় এবং সে কিভাবে কি করে ডিমটা চুরি করেছিল সেটা তাদের সামনে বলে আর $৮ মিলিয়ন ডলার ডোয়াইন জনসন এর একাউন্ট এ ট্রান্সফার করে দিয়ে তাকে চুরির কেস দিয়ে দেয় একপ্রকার। এরপর মেয়েটি তাদের বলে তার সাথে কাজ করার জন্য হাত মিলাতে কিন্তু ডোয়াইন জনসন রাজি হয় না। এরপর জেলের ভিতরে গ্রাউন্ডে তাদের দিয়ে পাথর তুলিয়ে অন্য জায়গায় রাখার কাজ দেয় আর এই ফাঁকে তারা সেখান থেকে পালানোর পরিকল্পনাও করে। এরপর তারা দুইজন জেলের ভিতরে কিচেন ঘরে ছোট একটা বিস্ফোরণ ঘটায় আর পুলিশগুলোকে মেরে সেখান থেকে বেরিয়ে যায়। তবে পুলিশ পরবর্তীতে তাদের পিছনে দৌড় শুরু করে আর গুলি বর্ষণও করে। কোনোমতে সব পুলিশগুলোকে ফাঁকি দিয়ে রাশিয়ান হেলিকপ্টার করে তারা দুইজন লন্ডনে চলে যায়। সেখানে চোর রায়ান রেনল্ডস এর এক বন্ধুর সাথে দেখা হয় এবং তারা তখন প্লেনে উঠে পরিকল্পনা সাজায় কিভাবে শয়তান লোকটার কড়া সিকিউরিটির মধ্যে দিয়ে অরিজিনাল ডিমটাকে উদ্ধার করা যায়।
তারা দুইজন ভেলেনশিয়াতে গিয়ে নামে যেখানে সেই ডিমটা রাখা ছিল। সেখানে ওই শয়তান লোকটি মূলত পার্টি করছিলো আর তারা দুইজন সেখানে প্রবেশ করে আর সেখানে তাদের সাথে গ্যাল গ্যাডট এর দেখা হয় এবং কথোপকথনও হয়। এরপর অনেক পদ্ধতি অবলম্বন করে সমস্ত সিকিউরিটি ভেঙে তারা সেই রুমে পৌঁছিয়ে যায় যেখানে সেই অরিজিনাল সোনা দিয়ে তৈরি ডিমটা রাখা ছিল। কিন্তু সেখানে FBI এজেন্ট রিতু আর্য পৌঁছিয়ে যায় আর তাদের গ্রেফতার করার চেষ্টা করে কিন্তু তারা তাকে একটা রুমে আটকে চলে যায়। সেখানে গ্যাল গ্যাডটও পৌঁছিয়ে যায় এবং তাদের দুইজনের সাথে অনেক্ষন হাতাহাতি হয় কিন্তু তারা পারে না কেউ। এর মধ্যে সেখানে সেই শয়তান লোকটা চলে আসে আর তাদের ধরে একটা ঘরে আটকে রাখে আর তাদের কাছে তৃতীয় ডিমটা কোথায় আছে সেটি জিজ্ঞাসা করে। সেটির অবস্থান বলতেই মেয়েটি অরিজিনাল একটি ডিম নিয়ে পালিয়ে চলে যায় আর তারা দুইজন হাতকড়া খুলে শয়তানটাকে ঘুষি মেরে অজ্ঞান করে ফেলে দেয় এবং সেখান থেকে একটা গোপন পথ দিয়ে বাইরে বেরিয়ে আসে। এরপর তারা ট্রেনে করে সেই লোকেশনে যায়, এটি ছিল একটা জঙ্গলের ভিতরে যেটা বহু বছর আগে রায়ান রেনল্ডস এর বাবা তৈরি করে গিয়েছিলো । তবে তারা জঙ্গলের ভিতরে রাস্তা হারিয়ে ফেলে কিন্তু যেখানে তারা দাঁড়িয়ে ছিল সেখানে মাটির নিচে একটা দরজা খুঁজে পায়।
রায়ান রেনল্ডস এবং ডোয়াইন জনসন সেই দরজা খুলে সেখান দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করে আর ভিতরে বিভিন্ন দরজা খুলে আরো ভিতরে প্রবেশ করে। ভিতরে লাইটগুলো জ্বালিয়েছিলো সব হাইড্রোইলেক্ট্রিক পাওয়ার এর সাহায্যে। এরপর রায়ান রেনল্ডস সেই তৃতীয় ডিমটি খুঁজে পেয়েছিলো কিন্তু সেখানে গ্যাল গ্যাডট আর FBI এজেন্টরাও কিভাবে পৌঁছিয়ে যায় তাদের ট্র্যাক করে। এরপর তাদের ৩ জনের সাথে অফিসারদের গোলাগুলি , মারামারি হয়। ওর ভিতরে রায়ান রেনল্ডস এর বাবার তৈরি অনেকগুলো গাড়ি ছিল এবং তাতে করে তারা বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে কিন্তু সামনে কোনো রাস্তা না থাকায় তাদের সবাইকে জলে ঝাঁপ দিতে হয়। এরপর রায়ান রেনল্ডস জলের থেকে সোনার তৈরি ডিম সহ উপরে উঠে আসে আর তাদের দুইজনকে ডেকে ডেকে পায় না, তবে তারা দুইজন অন্য সাইট দিয়ে উপরে উঠে আসে। এরপর তারা দুইজন রায়ান রেনল্ডস এর কাছ থেকে তৃতীয় ডিমটা নিয়ে নেয় আর কাইরো নামক একটি স্থানে চলে যায় আর সেখানে সোনা গলিয়ে তৈরি করা ৩ টি ডিম ছিল এবং সেখানে FBI এজেন্ট চলে আসে আর সেই এগগুলো আর সেখানে উপস্থিত লোকজনগুলোকে গ্রেফতার করে নেয়। এরপর দেখা যায় সমুদ্রের মাঝ বরাবর রায়ান রেনল্ডস, ডোয়াইন জনসন এবং গ্যাল গ্যাডট একটি বোটে থাকে এবং FBI অফিসাররা ট্র্যাক করে সেখানেও চলে যায় কিন্তু তারা সেটা আগে থেকেই বুঝতে পেরে সেখান থেকে ফারার হয়ে যায়। এরপর তাদের ৩ জনের নামে FBI রেড নোটিশ জারি করে দেয় সিল মেরে।
✔ব্যক্তিগত মতামত:
এই রেড নোটিশ মুভিটা মূলত সোনা দিয়ে তৈরি এগ এর উপর ভিত্তি করে করা। এই এগটি রিসার্চ এর মাধ্যমে সোনা গলিয়ে ল্যাবে তৈরি করা ছিল। আর এই এগ এর কাছে ওর কাছে নিয়ে কাড়াকাড়ি হয়। এখানে মোস্ট ইম্পরট্যান্ট যে কাহিনীটা হয়েছে সেটা হলো এই প্ল্যানগুলো ডোয়াইন জনসন এবং গ্যাল গ্যাডট দুইজনের প্রথম থেকেই তৈরি করা, এটা আর কেউ জানতো না। প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত তারা দুইজনের প্ল্যানে এই তৃতীয় এগটিকে উদ্ধার করে তোলে। এই মুভিটির মধ্যে একটা টুইস্ট আছে দারুন, না দেখলে বোঝা যাবেনা। আমার কাছে মুভিটি অনেক ভালো লেগেছে। আর কমিডি মুভিগুলো দেখতে অনেক ভালো হয়।
✔ব্যক্তিগত রেটিং:
০৮/১০
✔মুভির ট্রেইলার লিঙ্ক:
কমেডি না থাকলে মজা পাওয়া যায় না। আর জনসনের মুভি সব ভালোই হয়।
খুবই সুন্দর করে মুভি রিভিউ করেছেন। উপস্থাপনা ছিল এক কথায় অসাধারণ। যদিও আমি রেড নোটিশ মুভিটা কখনো দেখিনি। কিন্তু আপনার আজকের মুভি রিভিউ থেকে আমি অনেক কিছু জানলাম। আমি সময় করে একদিন মুভিটা দেখবো খুবই সুন্দর একটি মুভি। সব মিলিয়ে খুব সুন্দর একটা মুভি রিভিউ দিয়েছেন।
রেড নোটিশ মুভি বেশিদিন হয়নি বেরিয়েছে। মুভিটা অনেক ভালো, একদিন সময় করে দেখে নেবেন। দেখলে আরো ভালোভাবে বুঝতে পারবেন।
মুভির নাম টা শুনেছি কিন্তু দেখার সৌভাগ্য কখনো হয়নি।কিন্তু আপনার এতো সুন্দর ভাবে মুভি সম্পর্কে বিস্তারিত জানার ফলে সেটা দেখার ইচ্ছে জাগল ভাইয়া।খুব শীগ্রই মুভিটা দেখব ভাইয়া।ধন্যবাদ ভাইয়া এতো সুন্দর একটা মুভি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
ইউটিউবে পরে বেরিয়েছে। অরিজিনাল নেটফ্লিক্স এ আছে। পড়ে নিয়েছেন বিষয়টা এখন দেখলে আপনার কাছে আরো ভালো লাগবে । অনেক সুন্দর একটা মুভি।
দাদা আপনি যাই বলেন আজকের মুভিটা কিন্তু অসম্ভব সুন্দর। রিভিউটা পড়ে খুবই ভালো লাগলো। আর সত্যি কথা বলতে জনসনের মুভি এমনিতে অনেক বেশি সুন্দর হয় । ওর প্রতিটা ছবির মধ্যে অনেক একশন হয়। দেখতে খুবই ভালো লাগে। আমি এই পর্যন্ত জনসনের যতগুলো মুভি দেখেছি সবগুলোই ভাল লাগছে। অনেক ধন্যবাদ দাদা এতো সুন্দর একটি মুভি রিভিউ আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
হ্যা জনসনের মুভিগুলো সব হিট মুভি। ওর মুভি আমি প্রায় দেখি। জনসন অ্যাকশন ছাড়া মুভি করে না, আর ওর অ্যাকশন মুভিতে মানায় বেশি।
দাদা মুভিটি আমিও কিছুদিন আগে দেখেছি। আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে। অ্যাকশনে ভরপুর এ ধরনের মুভি আমার কাছে ভালই লাগে। রিভিউটাও ভালই লিখেছেন আপনি। তবে রেটিংয়ে আমি আপনার চাইতে আরো এক কম দিতাম।
হ্যা অ্যাকশন এ ভরপুর, অ্যাকশন মুভির সাথে কমেডি থাকলে আরো বেশি ভালো লাগে দেখতে। আর রেটিং তো যার যার দেখার কাছে, দেখে যার যেমন ভালো লাগবে সে তেমন দেবে।
দাদা খুবই সুন্দর একটি মুভি রিভিউ করেছেন আপনি। আপনার মুভি রিভিউ পড়ে এই সিনেমাটি দেখার জন্য সত্যিই আমার মন ছটফট করছে। আগামীতে যে কোন সময় মুভিটি দেখে নেব ইনশাল্লাহ। খুবই সুন্দর একটি মুভি রিভিউ পোস্ট উপহার দেওয়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
মন ছটপট করলে দেখে ফেলতে হবে, বেশিক্ষন আটকে রাখলে হবে না ইচ্ছাকে। দেখে ফেলুন তাহলে দ্রুত।
মুভিটি রিভিউ পড়ে মুভি দেখার প্রতি আমার আগ্রহ বেড়ে গেল ।আমি সাধারণত এ ধরনের মুভি দেখতে খুব বেশি ভালোবাসি। মুভিটিতে যেহেতু সব ধরনের টুইস্ট আছে সে ক্ষেত্রে আমাকে অবশ্যই মুভি দেখতে হবে। এত সুন্দর একটি মুভি রিভিউ দেয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা।
আমার কাছেও এইসব মুভি ভালো লাগে। এখনকার মুভিতে অ্যাকশন না থাকলে আমার তেমন ভালো লাগে না। মুভিটি অনেক ভালো। আপনি দেখে নেবেন, মনে হয় আপনার কাছেও ভালো লাগবে।
দারুণ রিভিউ করেছেন মুভিটা।তবে কাহিনি পড়ে মনে হচ্ছে মুভিটা দেখতেই হবে কোনোমতে মিস করা যাবে না।এইরকম টুইস্ট জাতীয় মুভি আমার খুব ভালো লাগে।ধন্যবাদ দাদা।
হ্যা, মুভিটা অনেক ভালো। দেখে নিও সময় করে। টুইস্ট জাতীয় মুভিগুলো অনেক ভালো হয়। আর বিশেষ করে চোর যদি কমেডি হয় তাহলে আরো বেশি ভালো লাগে😁।