আলোর উৎসবে
প্রথমেই সবাই কে জানাই দীপাবলির শুভেচ্ছা। যদিও আমি একটু লেট।দীপাবলি কে বাংগালী সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দ্বিতীয় বড় উৎসব এর মাঝে ধরা হয়। দীপাবলীকে বিভিন্ন যায়গায় বিভিন্ন নামে ডাকা হয়।কোথাও দেওয়ালী,কোথাও ভূত চতুর্দশী,ধানতেরাস। তবে যে নামেই ডাকা হোক না কেন আনন্দে কোথাও কম বেশি হয়না। দীপাবলি কে আলোর উৎসব ও বলা হয়। তবে মজার বিষয় হল দীপাবলি উৎসব কিন্তু পালিত হয় আমাবস্যায়।
দীপাবলির পেছনে যে ঘটনা টি স্মরণীয় সেটি হল রামচন্দ্র লংকা বিজয়ের পর যখন অযোধ্যায় ফিরে আসছিলেন তখন প্রজারা রাজ্যকে উজ্জ্বল আলোয় সাজিয়ে তোলে। এখনো সেজন্য দীপাবলি তে বাড়িঘর আলোয় আলোয় সাজিয়ে তোলা হয়। সাজানোর জন্য ঐতিহ্যগত ভাবে সাধারণত মাটির প্রদীপ ব্যবহার করা হয়। তবে বর্তমানে যুগের সাথে তাল মিলিয়ে ইলেকট্রিক বাতি ও বিভিন্ন রঙিন বাতিও ব্যবহার করা হয়। তবে ছোট বেলার দীপাবলি যতটা রঙিন ছিল এখন যেন সেটা ফিকে হয়ে গেছে।চলুন ছোট বেলার কিছু স্মৃতি শেয়ার করি
দীপাবলি কে ভূত চতুর্দশী বলা হয় এটা আগেও বলেছি। ছোট বেলায় ঠাকুমা বলত এদিন নাকি চৌদ্দটি ভূত ঘুরে বেড়ায়।আর এই ভূতের হাত থেকে বাচার জন্য বানানো হত ভূত গুড়া।কি অবাক হচ্ছেন ভুতকে আবার কিভাবে গুড়া করা যায়। আসলে এটি একধরনের ছাতু।তবে এই ছাতুর স্পেশালিটি হল এর মাঝে বিভিন্ন ধরনের ঔষধি গাছের শিকর বা লতা। দীপাবলি আসার আগে থেকে আমাদের শুরু হত শিকড় আর লতা সংগ্রহের প্রতিযোগীতা। এখন আর এই ছাতু তৈরির চল খুব একটা দেখা যায়না।তবে এই ছাতুর স্বাদ যেন এখনো মুখে লেগে আছে।
এবার প্রদীপ নিয়ে ছোট বেলার একটা মজার খেলা বলি।আপনারা হয়ত জানেন আমার জন্ম গ্রামে। গ্রামে তখনো ইলেকট্রিক বাতি ছিল না। ফলে লোকজন বাড়ি আলোকিত করার জন্য ব্যবহার করত মাটির প্রদীপ। এখন ছোট বাচ্চা যারা ছিল তাদের মাঝে প্রতিযোগীতা হত কে কতগুলো প্রদীপ চুরি করতে পারে। ফলে সন্ধ্যা থেকে সবাই তক্কে তক্কে থাকতাম রাত কখন গভীর হবে আর কখন চুরি করতে বের হব।এসব প্রদীপ এর কিন্তু কোন মূল্য থাকত না। তবে চুরি করে জমানো এবং পরের দিন সবার মাঝে গর্ব করে দেখানোতেই ছিল মজার।এরপর এই প্রদীপ দিয়ে অবশ্য দাড়িপাল্লা,গাড়ির চাকা সহ নানা ধরনের জিনিস বানাতাম।
তবে দীপাবলির সব থেকে যে জিনিসটা আকর্ষণীয় ছিল তা হল পটকা। ফুটানোর থেকেও বড়, ফুটানোর আগের তোড় জোড় টাই ছিল গুরুত্বপূর্ণ। দশ পনের দিন আগে থেকে বাবা কাকা দের সাথে জেদ করে পটকা কেনা,তারপর সেগুলো রোদে শুকানো।এরপর রাতে সবার সাথে ফোটানো।কার পটকা কত জোরে ফাটবে,কার সাহস কত,কে হাতে পটকা ফোটাতে পারে আরো কত রকমের মজার খেলা।লিখতে গিয়ে আবার মানস চক্ষে দেখতে পাচ্ছি সেই মুহুর্তগুলো।
আজ সেই দিন গুলো শুধুই স্মৃতি।তবে সোনালী স্মৃতি, যে স্মৃতি রোমন্থন করে পার করে দেওয়া যায় ঘন্টার পর ঘন্টা।যে স্মৃতি ঠোটের কোনায় ফুটিয়ে তোলে হাসির রেখা।এই স্মৃতি নিয়েই থাকতে চাই সারাজীবন।
OR
আমি বৃত্ত মোহন্ত (শ্যামসুন্দর)। বর্তমানে ছাত্র। নতুন কিছু শিখতে, নতুন মানুষের সাথে মিশতে আমার খুব ভাল লাগে। তেমনি বই পড়া আর ঘুরে বেড়ানো আমার পছন্দের কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম। মুক্তমনে সব কিছু গ্রহণ করার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি,"বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর, সবার আমি ছাত্র"।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Thank you, friend!


I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
আমি দিওয়ালি বলে জানতাম, ভূত শব্দটা শুনে আমি খানিকটা আশ্চর্য হয়েছে, তারপর আপনার পুরো পোস্ট পড়ার মাধ্যমে বুঝতে পারলাম বিষয়টি। আলোকসজ্জায় বেশ দারুন লাগছে আপনাকে।
ভূত গুড়া নামটা তো বেশ মজার। আমি তো ভেবেছিলাম ভূতকে গুড়া করা হয় নাকি। যাই হোক আপনাদের ওই উৎসবটা সম্পর্কে বেশ কিছু জিনিস জানতে পারলাম। আগে এত কিছু জানা ছিল না। আলোকসজ্জার ফটোগ্রাফি গুলো ভালোই ছিল। ছোটবেলায় প্রদীপ নিয়ে এই খেলাটা তো বেশ মজার। রাতে চুরি করে দিনের বেলা গর্ব করতেন.... ভালোই তো 😄
ছোট ছিলাম অত তো বুঝতাম না। ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
দীপাবলি রাতে অনেক মজা করেছেন মনে হচ্ছে ভাই। তবে এটা আপনি ঠিকই বলেছেন দীপাবলি র সবথেকে মজার জিনিস হচ্ছে পটকা ফোটানো। আলোর উৎসবে চমৎকার একটি মুহূর্ত অতিবাহিত করেছেন ধন্যবাদ ভাই।