সন্দেহ
হ্যালো,
আমার বাংলা ব্লগ বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই। আশা
করছি ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি আপনাদের আশীর্বাদ ও সৃষ্টিকর্তার কৃপায়।এক
আমি @shapladatta বাংলাদেশ থেকে। আমার বাংলা ব্লগের একজন ভেরিফাই নিয়মিত ইউজার। আমি গাইবান্ধা জেলা থেকে আপনাদের সঙ্গে যুক্ত আছি।
আজ আমি শেয়ার করবো সন্দেহ নিয়ে বাস্তব সত্যি একটি ঘটনা। সন্দেহ প্রবনতা এমন এক জিনিস যা সন্দেহকারী ব্যাক্তির জীবন কুড়ে কুঁড়ে খায় এবং যাকে সন্দেহ করে তার জীবন তেজপাতা।সন্দেহ প্রবণতা একটা সাজানো গোছানো পরিবারকে নিমিষেই শেষ করে দিতেই যথেষ্ট।
সন্দেহ প্রবন ব্যাক্তি সমাজের আবর্জনা।বাংলাদেশে ৮০% আক্রান্ত এবং কোন না কোন ভাবে সন্দেহপ্রবন।সব থেকে বেশি লক্ষ করা যায় স্বামী স্ত্রী কে কিংবা স্ত্রী স্বামী কে এই সন্দেহ করে থাকে।সংসারে অশান্তি লেগেই থাকে সেজন্য। সেরকমই একটি ঘটনা আমার বাড়ির সামনের বাড়ির আজ তা আমি আপনাদের সাথে ভাগ করে নেবো।
তো চলুন দেখা যাক ঘটনাটি কি।
আমার বাড়ির সামনে এক মুসলিম পরিবারের বসবাস। ছেলেটির নাম এরশাদ।ছোট বেলায় মা মারা গেছে। বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করেছে এবং খুব কষ্ট করে অভাব অনোটনের মধ্যে বড়ো করেছে। এরশাদকে মাদ্রাসা পড়াশুনা করাতো। এরশাদেরা এক বোন দুই ভাই এবং দ্বিতীয় মায়ের ঘরে তিনবোন এক ভাই।
এরশাদ মাদ্রাসা থেকে আলেম, ফাজিল পাস করে বর্তমানে মাদ্রাসায় চাকুরী করে।দেখেশুনে পরিবার থেকে এরশাদকে নামাজি মুসলিম পরিবারের মাদ্রাসা থেকে এমএ পাস করা এক মেয়ের সাথে বিয়ে দেয়।
মেয়ের পরিবার বেশ সচ্ছল। মেয়েরা দুবোন ভাই নাই।এরশাদকে অনেক ভালোবাসে এবং মেয়ের সংসার গুছিয়ে দিয়েছে। এমন কোন কিছু দেয়া বাকি রাখেনি সংসারের। এরশাদের মা নেই জন্য শ্বশুর, শ্বশুড়ি অনেক ভালোবাসে।বিয়ের পর থেকে শ্বশুর বাড়িতে ছিলো বউ পড়াশোনার জন্য। বেশ ভালোই চলছিলো তাদের।
তাদের ঘর আলো করে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেয়।ছেলের বয়স এখন চার বছর। ছেলের বয়স যখন দু বছর তখন শ্বশুর বাড়িতে আসে মাঝে মাঝে থাকে এবং আবার বাপের বাড়িতে যায়।ইদানীং শ্বশুর বাড়িতে বেশি থাকে।কিছু দিন হলো বাবার বাড়িতে গেছে তিনমাস অতিবাহিত হলেও আসছে না। এরশাদের বড়ে ভাবি ও এরশাদের ছোট ভাই গেছে আনতে কিন্তুু এরশাদের বউ আনেনি এবং অনেক কথা শুনিয়েছে।
না আসার কারণ এরশাদ বউকে সন্দেহ করে।যার সাথেই বউ কথা বলে তার সাথেই সম্পর্ক রয়েছে এমন কথা বলে।ননদের বরের সাথে সম্পর্ক কখনো বা বলে দেবেরে সাথে সম্পর্ক কখনোবা অনলাইনে সম্পর্ক। যাকে পায় তার সাথেই সম্পর্ক এসব বলে।অনেক দিন থেকেই এ সমস্যা চলছিলো কিন্তুু গোপন রাখতে রাখতে এখন আর গোপন কথাটি রবেনা গোপনে এরকম পরিস্থিতি হয়ে গেছে।
আজকে এরশাদের বউ তার বাবা,চাচা ও রিলেটিভিটি কয়েকজনকে নিয়ে এসেছে এবং মিটিং বসিয়েছে।সেখানে অনেক উচ্চবাক্য ব্যাবহার করছিলো আমি গাইবান্ধা থেকে আসার সময় দেখলাম গ্রামের সিসিটিভি সব ঘরের পিছনে বসে আছে।
দেখে একটু হাসি পেলো কারণ মাঝে মাঝে ফেসবুকে এরকম ছবি দিয়ে ক্যাপশন লিখে দেয় গ্রামের সিসিটিভি। সেই কথাটা মনে পড়লো। এনারা বসে আছে বাইরে আর ঘরে মিটিং হচ্ছে পুরা কাহিনি শুনবে এবং পুরা গ্রাম ছড়াবে।
এরশাদের বউ পর্দায় থাকে সব সময়।বাইরে গেলে হাত মোজা,পা মোজা ইত্যাদি ব্যাবহার করে বাড়ি থেকে বের হয় না অথচ সেই মেয়ের নামে এমন নোংড়ামো মনোভাব স্বামির সত্যি অকল্পনীয় ও দুঃখজনক।
এরশাদ বউকে এমনি সন্দেহ করে সেগুলো কোন সুস্থ মানুষ নিতে পারবে না।একবার বলতে শুনলাম যে একজন ব্যাক্তি কয়টা পরকীয়া করতে পারে কথাটা শুনে খুব খারাপ লাগলো এই ভেবে যে একজন বাবা,কাকার মুখ থেকে কতো কষ্টে এরকম কথা বের হয়।
অনেক আলাপ-আলোচনার পর এরশাদের বউ বাচ্চার খেলনা,প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে চলে গেলো।আমাকে গেটে দেখে বল্লো কেমন আছেন আমি বল্লাম ভালো তো চলে যাচ্ছো কেন সে বল্লো আনতে যাবে।
তার কথায় বুঝলাম যদি এরশাদ নিজেকে শুধরে নিয়ে বউকে আনতে যায় তবেই হয়তো সে আসবে নইলে নয়।বাচ্চাটার জন্যে হলেও সংসার করা দরকার বলে আমি মনে করি।আসলে বাবা মায়ের বিচ্ছেদের ফলে সন্তানের জীবনে নেমে আসে কষ্ট। কোন মা,বাবার উচিত নয় বাচ্চা থাকলে বিচ্ছেদের পথে হাটার।বাচ্চার জন্য হলেও সব বানিয়ে নিয়ে সংসার করা উচিত।
মা,কিংবা বাবার বিয়ে হবে তাদের হয়তো জিবন স্বাভাবিক হবে কিন্তুু বাচ্চার জীবনটা এলোমেলো হয়ে যাবে।সৎ মা বা সৎ বাবা কখনো সন্তানের জন্য সুখকর হয় না।
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি আবারও দেখা অন্যকোন পোস্টের মাধ্যমে সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ ও নিরাপদে থাকুন।
টাটা
পোস্ট | বিবরণ |
---|---|
পোস্ট তৈরি | @shapladatta |
শ্রেণী | জেনারেল রাইটিং |
ডিভাইস | OppoA95 |
লোকেশন | বাংলাদেশ |
আমি হৈমন্তী দত্ত। আমার স্টিমিট আইডিরঃshapladatta. জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী। শখঃবাগান করাও নিরবে গান শোনা,শপিং করা। ভালো লাগে নীল দিগন্তে কিংবা জোস্না স্নাত খোলা আকাশের নিচে বসে থাকতে।কেউ কটূক্তি করলে হাসি মুখে উড়িয়ে দেই গায়ে মাখি না।পিছু লোকে কিছু বলে এই কথাটি বিশ্বাস করি ও সামনে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি।বিপদকে ও অসুস্থতার সাথে মোকাবেলা করার সাহস রাখি সহজে ভেঙ্গে পরি না। সবাইকে নিয়ে ভালো থাকার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি পর হিংসা আপন ক্ষয়। ধন্যবাদ ।
সন্দেহ এক প্রকারের মানসিক রোগের মত। যার ভিতরে একবার সন্দেহ প্রবেশ করে সে আর সন্দেহ থেকে বেরিয়ে আসতে পারে না। এর ফলে অনেক সুখের সংসার শেষ হয়ে যায়। দারুন একটি বিষয় নিয়ে লিখেছেন আপু।
ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
এই অবিশ্বাস একটি সুন্দর সংসারকে নষ্ট করে দেয়। সন্দেহ যত দানা বাদে, সম্পর্কের গিঁট তত আলগা হয়। সম্পর্ক আসলে এক পরম বিশ্বাসের উপর দাঁড়িয়ে থাকে। আর সেই বিশ্বাসের জায়গা না থাকলে সম্পর্কের কোন মূল্য নেই বলে আমি মনে করি। খুব সুন্দর ভাবে লেখাটি উপস্থাপনা করলে।
একদমই ঠিক বলেছেন দাদা সম্পর্ক এক পরম বিশ্বাসের উপরে দাঁড়িয়ে থাকে।