ছোটবেলায় কালবৈশাখীর সাঁঝে আম কুড়ানোর মজা
Copyright Free Image Source : PixaBay
চৈত্র মাস শেষ হতে চললো । আর দিন কতক পরেই নববর্ষের সূচনা । বৈশাখে মাসে হঠাৎ হঠাৎ যে তীব্র ঝড় ওঠে তার নামই "কালবৈশাখী" । বৈশাখের তীব্র গরমের কোনো এক দিনের অপরাহ্ন বেলায়, সাঁঝের বেলায় বা গভীর রাতে হঠাৎ তীব্র ঝড় ওঠে । ক্ষণিকের এই ঝড়ে তছনছ করে দিয়ে প্রকৃতি । ঝড়ের সাথে শুরু হয় কখনো সখনো মুষলধারে বৃষ্টি । এই ঝড় প্রকৃতিতে কিছুটা লন্ডভন্ড প্রভাব ফেললেও মোটের উপর বেশ কিছুক্ষণের জন্য স্বস্তিদায়ক আবহাওয়া এনে দেয় । তীব্র, ভ্যাপসা গরম থেকে অন্তত কয়েকটি ঘন্টার জন্য মুক্তি মেলে এই কালবৈশাখীর জন্য ।
আমাদের ছোটবেলায় কালবৈশাখী ঝড়কে মোটেও ভয় পেতুম না । ঝড় বরং আমার সব সময়ই বেশ পছন্দের ছিল । ঝড়ের আগে আকাশ কালো মেঘে ঢেকে চারিদিক অন্ধকার করে যাওয়া, হঠাৎ বাতাস পড়ে গিয়ে চারিদিকে থমথমে প্রকৃতির রূপ দেখতে আমার দারুন ভালো লাগে । এই সময়টাতে পাখিরা প্রাণপণে ডানা ঝাপটে ঝাপটে আর কুলায় ফেরে । আসন্ন ঝড়ের হাত থেকে তাদের খড়-কুটোর বাসা বাঁচানোর তাগিদে তারা যত দ্রুত সম্ভব কুলায় ফেরার চেষ্টা করে । আসন্ন ঝড়ের ব্যাপারটা টের পায় কীভাবে যেন পাখিরা, তীব্র স্বরে তাই চিৎকার করতে থাকে তারা ।
বৈশাখে আমগাছের ডালে আমের মুকুল থেকে কেবলমাত্র কচি কচি আম গজায়, এই কচি আমকে বলে আমের গুঁটি । এই সময় কালবৈশাখী ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে আমের গুঁটি গাছ থেকে ঝরে পড়ে । এই আমের গুঁটি কুড়ানোর মধ্যে দারুন এক উত্তেজনা কাজ করতো আমাদের ছোটবেলায় ।
যদি কালবৈশাখী অপরাহ্ন বেলায় হতো, তাহলে আমরা বিকেলবেলায় বন্ধুরা সবাই দলবেঁধে আম কুড়োতে যেতুম । এই সময় আম কুড়োনো নিয়ে কাড়াকাড়ি, ঝগড়াঝাঁটি এমনকি মারামারি পর্যন্ত হয়ে যেত । সন্ধ্যে অব্দি চলতো আমাদের আম কুড়োনোর মিশন । এরপরে কুড়োনো আমের আঠার থেকে বাঁচতে ভালো করে জলে কচলে কচলে ধুয়ে নিয়ে আমরা সবাই মিলে চলে যেতুম পুকুরপাড়ের বাঁধানো ঘাটের কাছে । ঘাটে বসে যে যার ঝিনুক বের করতাম আর আমের গুঁটির ছাল ছাড়িয়ে নুন লঙ্কা মাখিয়ে উস উস করে নালে ঝোলে ভীষণ টক সেই কাঁচা আম গপাগপ করে খেয়ে নিতাম ।
আবার কালবৈশাখী ঝড় যদি সন্ধ্যা বা রাত্তিরে হতো তখন আমরা সারা রাত ধরে ছটফট করতে থাকতুম যে সকালে ঘুম থেকে উঠেই কখন আম কুড়োতে যাবো । কালবৈশাখীর পরের দিন খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠেই ছুটতাম আমগাছের তলে । গিয়ে দেখতুম রাশি রাশি আমের পাতার মধ্যে এখানে সেখানে সদ্য কাদা কাদা মাটির উপরে পড়ে রয়েছে আমের গুঁটি । শুরু হয়ে যেত সেগুলো সংগ্রহের দারুন এক প্রতিযোগিতা । আর এক প্রস্থ ঝগড়া, মারামারি হতো বন্ধুবান্ধবদের মধ্যে । তারপরে স্কুল থেকে ফিরেই অমনি পুকুরঘাটে চলে যেতুম কুড়োনো আম নিয়ে । আর তারপর ? তারপরে কি হতো তা আগেই বলেছি ।
------- ধন্যবাদ -------
পরিশিষ্ট
Account QR Code
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
https://steemit.com/turkey/@eren2335/here-are-all-the-details-of-the-ancient-city-of-ephesus-in-turkey
Congratulations, your post has been upvoted by @nixiee with a 100 % upvote Vote may not be displayed on Steemit due to the current Steemit API issue, but there is a normal upvote record in the blockchain data, so don't worry.
Good morning dad, if the mango is a very juicy and tasty fruit, here in my country Venezuela there are different types of mangoes like the mango: Bocado, Hilacha, Pico de loro and Manga.
Congratulations, your post has been upvoted by @upex with a 40.39% upvote. We invite you to continue producing quality content and join our Discord community here. Keep up the good work! #upex
This is a very interesting post you have shared Dada, I can relate to the joy that comes from picking mangoes.
When I was a child, we do climb the mango tree to pluck the mango because of how impatient we use to be 😀😀.
Thank you for sharing with us 😊❤️❤️❤️
খুব ভালো লাগলো শৈশবের আম কুড়ানোর গল্পটি।ছোটবেলায় যারা গ্রামে ছিলো তারা এই গল্পটি পড়তে পড়তে নিজের ছোটবেলায় চলে যাবে নিঃসন্দেহে।এবং নিজের শৈশবের স্মৃতিচারণ করে ফেলবে। সব থেকে বেশি ভালো লেগেছে আমের আঠা ওঠানো এবং বাঁধানো পুকুর ঘাটে গিয়ে ঝিনুক বের করে আমের ছাল ছড়িয়ে নুন,লঙ্কা দিয়ে নালে ঝোলে উস উস করে আমের গুটি গপগপ করে খাওয়ার স্মৃতিচারণ।ধন্যবাদ দাদা খুব সুন্দর ছোটবেলার স্মৃতিচারণ করে আমাদের সঙ্গে ভাগ করে নেয়ার জন্য।
তারপর হলো ঝিনুক দিয়ে আম এর খোসা ছাড়িয়ে লবণ মরিচ দিয়ে খাওয়া শুরু করতেন।কিন্তু এই ঝিনুকটা ঠিক কি তা বুঝতে পারলাম না।ঝিনুক মানে তো জানি শামুক এর খোলস টাই।
ঝিনুক বলতে আমার মনে হয় আপু, যেগুলো চ্যাপ্টা অর্থাৎ চামচের মতোন দেখতে সেগুলো। গ্রাম অঞ্চলের অনেকে এই ঝিনুক গুলো চামচ হিসেবে ব্যবহার করে। ঝিনুকের এক পাশের অংশ খুবই ধারালো থাকে তা দিয়ে অনেক কিছু কাটা যায়।
দাদা আমিও কালবৈশাখী ঝরকে ভয় পেতাম না। আরো আনন্দে আত্নহারা হয়ে যেতাম। ছোট বেলার কথা মনে পরে গেলো আপনার ব্লগটি পড়ে। দাদা সবারই এরকম অনেক স্মৃতি রয়ে যায়। যার মধ্যে আমরা আর ফিরে যেতে পারি না। ছোটবেলাকার আম করানোর মজা ছিল আলাদা। শুধু একা নয় অনেকের সাথে দৌড়াদৌড়ি করে আম করানোর মজা এখুনো ভুলতে পারিনা। যা এখন স্মৃতি হয়ে গেছে। আপনার ছোটবেলার আম করানোর ঘটনাটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ দাদা।
ঝড় হলে আমরাও ভয় পেতাম না দাদা। ছোটবেলায় ঝড় হলে আমরা আম কুড়ানোর জন্য ঝড়ের আগে আগে দৌড়াতাম ।দেখতাম আকাশে অনেক মেঘ চারদিকে বাতাসের ঠেলা হালকা হালকা বৃষ্টি তাও সব সাথীরা মিলে আম কুড়াতে যেতাম ।ঠিক বলেছেন দাদা আমের গুঁটি কুড়ানোর মধ্যে দারুন এক উত্তেজনা কাজ করে ।আমরা ছোট আমের গুটি কুড়িয়ে নিয়ে সেগুলো অনেক সুন্দর ভাবে কেটে ঝাল দিয়ে মাখিয়ে সেগুলো খেতাম ।আমরাও সকালে ভোরবেলায় ঘুম থেকে উঠে আম করানোর উদ্দেশ্যে চলে যেতাম ।কিন্তু কয়েকদিন যেয়ে দেখতাম আমগুলো নেই ।আমাদের আগে ঘুম থেকে উঠে অন্য জন আমগুলো করিয়ে নিয়ে গিয়েছে ।ধন্যবাদ দাদা ছোটবেলার এই স্মৃতিগুলো মনে করে দেওয়ার জন্য আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।