দুটি কবিতা - "দুঃখ-সুখ"
Copyright-free Image source : Pixabay
দুটি কবিতা - "দুঃখ-সুখ"
💘
ছোট্ট একটি ভূমিকা : এখানে দুটি কবিতা শেয়ার করেছি । প্রথমটি আজকে লিখেছি । পরিণত লেখা । মানুষের জীবন নিয়ে লেখা । একজন পুরুষের আকুতি ফুটে উঠেছে । এই পুরুষ শাসিত সমাজে শুধু নারীরা নয় পুরুষরাও প্রতারণা, মিথ্যে ভালোবাসার প্রতিশ্রুতি আর হৃদয় ভাঙার ব্যাথার সায়রে নিমজ্জমান । পুরুষ তার চোখের জল লুকিয়ে ফেলে, কেননা সে যে পুরুষ ।
আর দ্বিতীয়টি হলো কাঁচা হাতের লেখা । আমার স্কুল জীবনে লেখা একটি হাসির কবিতা । ক্লাস সেভেনে পড়ার সময় স্কুল ম্যাগাজিনে দিয়েছিলুম লেখাটি । বেশ বড় ছিল কবিতাটি । আজ এত দীর্ঘ বছর পর মনে করতে গিয়ে দেখছি স্মৃতিরা অস্পষ্ট, ঝাপসা, বিবর্ণ-প্রায় । তারপরেও মনের গহনে হাতড়ে হাতড়ে কিছু কিছু কবিতার লাইন উদ্ধার করতে পেরেছি । তাই-ই সাজিয়ে দিলুম এখানে । কোনো সংশোধন ছাড়াই । পুরোনোকে পুরোনোই থাকতে দিলুম ।
♡ ♥💕❤
ভালোবাসতাম তোমায় আমি,
খুব বেশি, হৃদয়ের সবটা দিয়ে ।
কথা দিয়েছিলেম তোমায়,
থাকবো সুখে দুঃখে তোমারই পাশে ।
আমি জানতাম আমিই তোমার সব,
তোমার হাসি-কান্না, দুঃখ-সুখ,তোমার মনের কথা,
শুধু ভাবতাম আমারই জন্য ।
খুব বেশিদিন তো নয়,
এই তো সেদিন তোমায় সাথী করে,
করেছিলাম শুরু
আমার জীবনের সু-দীর্ঘ পথে চলা ।
আঁকা-বাঁকা বন্ধুর পথ পার হতে চেয়েছিলাম
তোমারি হাত ধরে ।
বেঁচে থাকার স্বপ্নে বিভোর হয়ে
আঁকড়ে ধরেছিলাম তোমার দু'হাত ।
তারপরে আকাশ জুড়ে উঠলো সে কী তীব্র
কালবৈশাখীর এক ঝড় ।
এলোমেলো করে দিলো নিমেষে
সকল সাজিয়ে রাখা সুখ ।
ব্যাথার সায়রে উঠলো ফুঁসে
বেদনার রঙে নীল,
আর দুজনের মাঝে জন্ম নিলো দূরত্ব অপার ।
ভালোবাসতে তুমি,
হয়তো বা এখনো বাসো ।
তবে আমি তোমার দ্বিতীয় পুরুষ,
এটা এখন তুমিও মানো ।
মিথ্যের জাল বুনে সেদিন আমায় বলেছিলে
"তুমি আমার প্রথম পুরুষ",
এতো বড় মিথ্যেটা অনায়াসেই বলে দিলে ?
হৃদয় আমার কাঁদে আজো,
কাঁদুক ।
পুরুষ হৃদয় কাঁদলেও চোখ ভেজে না ।
সুখস্মৃতিতে তুমি থাকবে
আমার প্রথম নারী হয়ে ।
আর থাকবে দু'জনের মাঝে
অভিমানী আমার দ্বিতীয় পুরুষ সত্ত্বা ।
কাঁদো, পুরুষ তুমি কাঁদো ।
Copyright-free Image source : Pixabay
সেদিন মাঠে খেলতে গিয়ে
হঠাৎ, দাঁড়িয়ে গেলুম ভীষণ ভয়ে ।
দেখতে পেলুম ক'টি ছেলে
ব্যাটের বাড়ি মারছে ফেলে ।
হায় হায় হায় ! মারে কাকে ?
আরে ! এ যে আমাদেরই ভুতো কে ।
কি হয়েছে রে ? ব্যাপার কি ?
ওদের চড় মেরেছিস ? সে কী !!
কেন মারলি ? কি জন্য ?
বলিস কী রে ? জঘণ্য !
তোকে বলেছে রাঙা মুলো !!
ওই বখাটে গুলো ?
এবার কোথায় যাবি তোরা ? দাঁড়া দাঁড়া ।
পিটিয়ে তোদের করছি খাড়া ।
এই মারলাম চড়, আর এই মারলাম গুঁতো !
এ কী ! এ কী ! সবার হাতে কেনরে ভাই জুতো ?
পালিয়ে আয়রে ওরে ভুতো,
তা না হলে খাবিরে খুব জুতো !
বলেই আর না করে দেরী,
দিলাম দৌড় প্রাণের আশা ছাড়ি ।
♡ ♥💕❤
দাদা দ্বিতীয় পুরুষ পড়ছিলাম আর যেন আয়নাতে নিজের মুখ টাই দেখছিলাম। বর্তমানের তথাকথিত ভালোবাসার বাস্তব চিত্র একদম তুলে ধরেছেন। সবটাই আপনি জানেন। আসলে জীবনের এই পর্যায়ে এসে বারবার একটা কথাই মনে হয় দাদা, এই সকল মেয়েদের জীবনে স্পেশাল ওয়াণ বলতে কিছু নেই তাদের কাছে বেটার ওয়ান টাই আগে। এদের জন্যই ভালোবাসা নামক পবিত্র জিনিস টা বারবার কলঙ্কিত হয়েছে। এসব নিয়ে আর বেশি না বলাই ভালো।
আর দ্বিতীয় কবিতাটা পড়তে খুব মজা পেয়েছি দাদা। সাত-আট বছরের কোন ছোট বাচ্চা যদি এই কবিতাটা আবৃত্তি করতো খুব সুন্দর শোনাতো।
পুরুষের একচোখে তার প্রিয়তমা, আরেক চোখে পরিবার।
অন্যকোনো চোখ নাই নিজেকে দেখিবার। হ্যাঁ! এটাই পুরুষ। বর্তমান সমাজে পুরুষ এখন প্রতারিত হয় প্রতিনিয়ত। চোখ ভিজিয়ে হয়তো কাদঁতে পারেনা, কিন্তু তাদের অন্তরে অনেক কষ্টই যে লুকায়িত থেকে যায় 🙂
এই লাইনগুলো আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে দাদা। যাকে মনে থেকে ভালোবাসি তার কাছে আমি যদি হয়ে যায় দ্বিতীয় পুরুষ। এর থেকে কষ্টের আর কি হতে পারে! 🙂
দ্বিতীয় কবিতাটি অনেক আগের হলেও পড়া মজা পেলুৃম দাদা 🥰
দ্বিতীয় কবিতাটি খুবই মজার দাদা।ভুতো নামটি শুনেই সেই লাউ গুড় গুড় গল্পের কথা মনে পড়ছে।রঙ্গা, বঙ্গা ও ভুতো নামের তিনটি কুকুর ছিল এক বুড়ির।যাইহোক আর প্রথম কবিতাটি বর্তমান সমাজের ,যেখানে ছেলেরাও ভালোবাসায় ধোকা খেয়ে লুকিয়ে সবার আড়ালে কাঁদে।কিন্তু সেই মানুষগুলো বুঝে না কাউকে কাঁদিয়ে নিজেও ভালো থাকা যায় না।ধন্যবাদ দাদা।
বাহ! কবিতায় দেখছি দাদা সেই ছোট বেলা হতেই বেশ পারদর্শী, প্রথম কবিতাটি নিয়ে কিছু বলবো না কারন সেটা আপনি পরিণত বয়সে লিখেছেন। কিন্তু দ্বিতীয়টির কথা না বললেই না, বেশ লিখেছেন সেটা, মজার সাথে ছন্দ তার সাথে দারুণ অর্থ, বেশ লেগেছে আমার কাছে।
দাদা আপনার কবিতা পড়ে মনের মাঝে ব্যথার অনুভূতি তৈরি হলো। আসলে পুরুষের কান্না কেউ দেখে না। হয়তো পুরুষের কান্নায় হৃদয় ভেজে। কিন্তু চোখের পাতা ভেজে না। দাদা আপনার লেখা দুটো কবিতাই আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। বর্তমানের লেখা কবিতাটির মাঝে পুরুষের কষ্টের অনুভূতি প্রকাশ করেছেন। আর দ্বিতীয় কবিতাটি যেটা আপনি আপনার শৈশবে লিখেছিলেন সেই কবিতাটি পড়ে ভালো লাগলো। কবিতাটি আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। অনেক সুন্দর ভাবে দুটি কবিতা শেয়ার করার জন্য আপনাকে জানাচ্ছি ধন্যবাদ। সেই সাথে আপনার জন্য ভালোবাসা রইলো। ♥️♥️
দাদা, তোমার লেখা দ্বিতীয় কবিতাটি খুবই মজার একটা কবিতা হয়েছে । পড়ার সময় বেশ ভালো লাগছিল। এবার আসি প্রথম কবিতায়। প্রথম কবিতার ভাববস্তু আমার এক বন্ধুর জীবনের সাথে পুরোপুরি ভাবে মিলে গেল। আমার সেই বন্ধু তার জীবনের এই দুঃখের কথা আমায় বলেছিল । তার জীবনে এক নারী আসে যাকে সে প্রথম ভালবাসে কিন্তু সেই নারী আমার বন্ধুকে প্রথম ভালোবাসার কথা বললেও সেই নারীর প্রথম ভালোবাসা অন্য কেউ ছিল। আমার বন্ধু ছিল সেই নারীর দ্বিতীয় মানুষ । কয়েক বছর পরে তাদের সম্পর্ক শেষ হয়ে যায়। সম্পর্ক শেষ হয় যার কিছুটা আগে আমার সেই বন্ধু একথাগুলো জানতে পারে ।সেগুলো জানার পরে খুব কষ্ট পায় এবং আমার সাথে এই বিষয়গুলো শেয়ার করে। সেই কথাগুলো মনে পড়ে গেল তোমার লেখা কবিতাটি পড়ে । আমার সেই বন্ধুটার প্রথম ভালবাসা সেই নারী হয়েছিল কিন্তু সেই নারীর প্রথম ভালোবাসা আমার বন্ধু হতে পারেনি। দ্বিতীয় পুরুষ হয়ে থেকে ছিল এবং শেষে সেই নারী সেই সম্পর্ক শেষ করে চলে যায়। সেই সময়টাতে আমি আমার বন্ধুকে প্রচন্ডভাবে মনের দিক থেকে ভেঙ্গে পড়তে দেখেছিলাম।
এই লাইনগুলো শতভাগ আমার বন্ধুর শেয়ার করা ঘটনার সাথে মিলে যায়।
ভালোবাসতে তুমি,
হয়তো বা এখনো বাসো ।
তবে আমি তোমার দ্বিতীয় পুরুষ,
এটা এখন তুমিও মানো ।
মিথ্যের জাল বুনে সেদিন আমায় বলেছিলে
"তুমি আমার প্রথম পুরুষ",
এতো বড় মিথ্যেটা অনায়াসেই বলে দিলে ?
কবিতার পটভূমি ভীষণ চমৎকারভাবে তুলে ধরেছেন দাদা। আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে। তবে প্রথম কবিতার ভাবার্থ আমার মাথায় মোটেও ঢোকেনি, একদম মাথার উপর দিয়ে চলে গেছে😁। তবে দ্বিতীয় কবিতাটি ভীষণ উপভোগ করেছি খুব ভালো লেগেছে আমার কাছে 😍
তবে আপনার পরবর্তী কবিতা ভুতো জুতো কবিতাটি পড়ে আমার এতটাই ভাল লেগেছে তা হয়তো আপনাকে বলে বোঝাতে পারব না ভালো লাগার কারণ হচ্ছে আপনার শব্দচয়ন ও একটি লাইনের সাথে অন্য লাইনের অন্ত্যমিল আপনি আমাদের মাঝে দেখিয়েছেন তা একজন প্রতিষ্ঠিত লেখক এর পক্ষে সম্ভব। আপনার সর্বক্ষেত্রে বিচরণ বিষয়টি আমার কাছে দারুন লাগে দাদা। আসলে আমাদের এমনই রিসোর্স পারসন হওয়া উচিত যাতে যে কাজে আমাদের দাগ হোক না কেন সেখানে আমরা আমাদের দক্ষতার ছোঁয়া দেখে আসতে পারি।
দাদা আপনার দ্বিতীয় পুরুষ কবিতাটি আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। বাট কোন কমেন্ট করব না,
নিরব শ্রোতা হয়ে থাকবো
নীরব পাঠক হয়ে রবো
শুধু উপলব্ধি করব,
কল্পনার জগতে ভেসে বেরাবো।
পুরুষের কান্না কেউ দেখে না দাদা
তাদের কান্না গায়ের রক্ত ঝরা ঘাম হয়ে ঝরে।
মাঝরাতে তাদের ঘুম ভেঙ্গে যায়
চোখ ছলছল খোলা আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকে।
দাদা ভালো লাগে আপনার লেখনি ভালো লাগে আপনার কবিতা। আপনার জন্য অনেক শুভকামনা রইল বেঁচে থাকুন হাজার বছর, লিখে যান মানুষের জন্য।