বিয়ে একটি সুন্দর সময়।
কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।
বিয়ে মানেই আনন্দের একটি উৎসব যেখানে থাকে বাড়ির প্রত্যেকটি আত্মীয়-স্বজন। যারা সারা বছর অনেক দূরে দূরে থাকে এই বিয়ের সময় তারা একত্রে মিলিত হয়। আসলে আমার মনে হয় এই অনুষ্ঠান করে বিয়ে করা মানেই একটা সুন্দর গেট টুগেদার। অর্থাৎ এই বিয়ের সময়ে সব আত্মীয়-স্বজন মিলে একত্রে কয়েকদিন অনেক সুন্দর স্মরণীয় সময় কাটায় এবং অনেক আত্মীয়-স্বজনের সাথে দেখাও হয়ে যায়। কিন্তু এই বিয়ের ব্যাপারটা একদিকে যেমন আনন্দের অন্যদিকে কিন্তু খুবই কষ্টের। কারণ যদি বাড়ির ছেলের বিয়ে হয় তবে বাড়িতে পরিবারের নতুন সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি হয়। কিন্তু যদি পরিবারের মেয়ের বিয়ে হয় তাহলে পরিবার থেকে একজন সদস্য সংখ্যা কমে যায়। আর সেই সাথে থাকে মেয়েকে দূরে পাঠানোর অনেক বেশি কষ্ট। তবে আমাদের জীবন সুখ দুঃখ নিয়ে গড়ে উঠেছে তাই একদিকে যেমন সুখের দিন আসবে অন্যদিকে তেমন দুঃখের সময়ও থাকবে। সমাজের মানুষের অনেক ধারণা থাকে বা ছোটবেলা থেকে শুনে আসছি মেয়েদের বিয়ে হলে মেয়েরা পর হয়ে যায়। আর আমার মনে হয় মেয়ের বিয়ে হয়ে গেলে মেয়েরা পর হয়ে যায় না বরং আমাদের পরিবারের সদস্য সংখ্যা আরো বেড়ে যায়।
কারণ আমাদের একটি পরিবারে যে সদস্য সংখ্যা সেটা বেড়ে আরেকটি পরিবার যোগ হয়ে সদস্য সংখ্যা আরো অনেক বেড়ে যাচ্ছে। কারণ বলা হয় বিয়ে শুধু দুটি মানুষের মধ্যে হয় না দুটি পরিবারের মধ্যে হয়। তাই জামাই অথবা বৌমার সাথে সাথে তার পরিবারের মানুষও নিজের পরিবারের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়। অর্থাৎ তারাও পরিবারের সদস্য হয়ে যায়। তাই আমার মনে হয় বিয়ে কেন্দ্রিক এই মেয়ে পর হয়ে যাওয়া ব্যাপারটাকে দূরে সরিয়ে আমাদের পুরো আনন্দে দিনগুলো ভরিয়ে তোলা উচিত। কারণ সবাই আমাদের আপন। আর এই বিয়ের কেনাকাটা করতেও কিন্তু অনেক মাস লেগে যায়। কারণ একবার বিয়ের দিন ঠিক হয়ে গেলে কেমন মনে হয় দেখতে দেখতে বিয়ের দিন চলে আসে তারপরও কেনাকাটা শেষ হয়ে পারে না। প্রতিদিন কেনাকাটা করতে বেরোলেও বাড়ি এসে মনে পড়ে ঠিক প্রয়োজনের একটা জিনিস না কিনে ভুলে চলে এসেছি। আর শাড়ি গয়না বা অন্যান্য জামাকাপড়ের সাথে মানানসই সাজগোজের জিনিস কেনাটা তো আরও বেশি কষ্টকর হয়ে ওঠে। আসলে ছেলের বাড়ি হোক বা মেয়ের বাড়ি বিয়ের কেনাকাটা, সবাইকে নিমন্ত্রণ করা, ডেকোরেটার্স বা অন্যান্য সামগ্রী আগে থেকে অর্ডার দিয়ে রাখা এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের কাজ করতে করতেই যেন মাসখানেক লেগে যায়।
আসলে আমাদের কেনাকাটা করতে সবারই অনেক বেশি ভালো লাগে এবং সবাই অনেক বেশি পছন্দ করে আর তার মধ্যে যদি হয় বিয়ের কেনাকাটা তাহলে এই কেনাকাটার আনন্দটা থাকে অনেক গুনে বেশি। আর তার ওপরে যদি থাকে নিজের পরিবারের মধ্যে কারোর বিয়ে যেমন নিজের ছেলে অথবা মেয়ের বা ভাই অথবা বোনের তাহলে তো কেনাকাটার সাথে সাথে বাড়ির পরিবেশটা পুরোটাই পরিবর্তন হয়ে যায়। বাড়ির চারিদিকে একটা বিয়ে বিয়ে গন্ধ ছড়িয়ে যায় অর্থাৎ চারিদিকে যেখানেই দেখো বিয়ের তোর জোর থাকে তাই পুরো পরিবেশটাই বিয়ে বিয়ে অনুভব হতে থাকে। কি জামা পরবো কেমন করে সাজবো, মেহেন্দি পরা, কখন কি করা হবে এবং কোন সময় ঘুম থেকে উঠবো আর সারারাত সবাই মিলে গল্প করতে করতেই সময় কাটিয়ে দেবো না ঘুমিয়ে এইসব পরিকল্পনা হয়েই থাকে ভাই-বোনদের বা বন্ধু-বান্ধবদের মধ্যে। তবে এটা সত্য যে বিয়ে বাড়ি মানেই ঘুমের অভাব কখনো কারোর ঘুম পরিপূর্ণ হয় না। কারণ অনেক রাত জেগে সবকিছু গোছানো এবং অনেক কাজ করার থেকেই যায়। তারপর ভোরবেলা ও ঘুম থেকে উঠে অনেক কাজ থাকে যা শুভ লগ্নের মধ্যেই সম্পন্ন করতে হয়। তাই ঘুমটা মোটামুটি চলেই যায় বিয়ের দিনগুলোতে। এই বিয়ের মধ্যে সবথেকে কষ্ট করতে হয় বেশি যাদের বিয়ে হয় তাদের অর্থাৎ বর আর বউয়ের। কারণ একে তো বিভিন্ন নিয়ম থাকলে, যাতে তাদের দরকার হয় আর চারিদিকে বিয়ের আয়োজন সব ঠিকঠাক হচ্ছে কিনা সেদিকেও কিছুটা খেয়াল রাখতে হয়।
দ্বিতীয়ত বিয়ের প্রায় এক মাস আগে থেকেই শুরু হয়ে যায় তাদের বিভিন্ন আত্মীয় বাড়িতে আইবুড়ো ভাত খাওয়া। আর সব আত্মীয় বাড়িতেই এত ভালো ভালো পদের রান্না করে এবং এত মসলা দিয়ে মুখরোচক রান্না করে বিয়ের দিন আসতে আসতেই হবু বর আর বউয়ের পেটের অবস্থা প্রায় খারাপ হয়ে যায়। তখন তাদের মনে হয় কেউ যদি শুধু একটু ডাল ভাত দিত বা সেদ্ধ ভাত দিত সেটা যেন তাদের জন্য অমৃত হত। তবে এইসব কারণেই হয়তো আগেকার দিনে নিয়ম করেছিল বিয়ের দিন উপোস থাকার। অর্থাৎ বিয়ের দিন সারাদিন কিছু না খেয়ে শুধুমাত্র জল বা হালকা কিছু খেয়ে থাকতে হবে। হয়তো সারা মাসে উল্টাপাল্টা খাওয়ার কারণে এবং বিয়ের দিন মসলাদার এবং মাছ মাংস খেয়ে যদি বর বা বউয়ের পেট খারাপ হয়ে যায় তাহলে অনেক বড় সমস্যা হতে পারে। সেই জন্যই মনে হয় বিয়ের দিন কিছু না খাওয়ার নিয়মটি চালু করা হয়েছে। তবে যে কারণেই হোক না কেন এটা খুবই ভালো উপকার হয়। বিয়েতে একটু কষ্ট থাকলেও অনেক বেশি আনন্দ এবং পরিবারের ভালোবাসা এবং আশীর্বাদ নিয়ে দুজন ব্যক্তি একটি নতুন জীবন শুরু করতে যায়। তাই তাদের জন্য আমাদের সবসময়ই ভগবানের কাছে প্রার্থনা করা উচিত যে তারা যেন তাদের নতুন জীবনে ভালো থাকে এবং সারা জীবন একসাথে সুখে শান্তিতে থাকতে পারে।
আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।
বিয়ে মানে হাসি আনন্দ, খাওয়া দাওয়া সকলের সাথে সুন্দর মুহূর্ত অতিবাহিত করা। বিয়ে মানে দুটি হৃদয়ের বন্ধন যেখানে সম্পর্ক অটুট বন্ধনে আবদ্ধ হয়। ধন্যবাদ আপনাকে পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।
বিয়ে অবশ্যই একটি সুন্দর উৎসব। শুধু দুটি মানুষের মধ্যে না দুটি পরিবারের মধ্যেও ঘটে। এই সুন্দর উৎসব একটি দিনের সম্পন্ন হয় ঠিক কথা কিন্তু এই উৎসবকে দীর্ঘদিন সুন্দরভাবে টিকিয়ে রাখতে দুটি মানুষসহ দুটি পরিবারের সবার অবদান অনেক বেশি। যত সুন্দর ভাবে টিকে থাকবে ততই সুন্দর লাগবে উৎসবের রেস। আমাদের বিয়ের উপলক্ষে নানান দৌড় জোর এবং ব্যবস্থাপনা সবকিছুই বড় সুন্দর এছাড়াও বিয়ের প্রত্যেকটা নিয়মকানুন এর পেছনে একটা না একটা বাস্তব কারণ লুকিয়ে আছে। আর সব মিলিয়ে দেখতে গেলে বিবাহ উৎসব বড় মনোরম।