এইচ এম পি ভি- HMPV- হিউম্যান মেটা নিউরো ভাইরাস।। ভয় পাবো নাকি পাবো না?
প্রিয় আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা,
সমস্ত ভারতবাসী এবং বাংলাদেশের বাঙালি সহযাত্রীদের আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।
আশা করি আপনারা ঈশ্বরের কৃপায় সুস্থ আছেন, সব দিক থেকে ভালোও আছেন। আপনাদের সবার ভালো থাকা কামনা করে শুরু করছি আজকের ব্লগ।
টাইটেল দেখে আশা করি আপনারা বুঝতেই পারছেন আমি কি বিষয়ে আজকে কথা বলতে চলেছি।
বেশ কিছুদিন যাবৎ নানান টিভি চ্যানেলে এইচ এম পি ভাইরাসের কথা শোনা যাচ্ছে। কেউ কেউ তো ভয় দেখাচ্ছে করোনার মতো অতিমারি আসছে। আবারো লকডাউন হবে অনেক মানুষ মারা যাবে। কেন জানিনা কথাগুলো শোনার পর থেকেই আমার একেবারে বিশ্বাস হচ্ছিল না। আমার তো মনেই হয় না যে কোন পরিস্থিতিতেই আমাদের দেশে আর একবারও লকডাউন হবে বলে।
এদিকে যেই ফোন করছে সেই বলছে মাস্ক ব্যবহার করতে এমনকি করোনার সময় যে যে ধরনের সাবধানতা অবলম্বন করেছিলাম ঠিক সেই ধরনেরই সাবধানতা অবলম্বন করে দিন যাপন করতে হবে। সত্যি বলতে কি বর্তমানে শীতকাল হওয়ার কারণে রাস্তাঘাটে এত বেশি ধুলো যে আমাদের প্রত্যেককে এমনিই মাস্ক ব্যবহার করতে হয়। নইলে গলার মধ্যে ধুলো আটকে সে কাশি শুরু হয় তা যেন আর থামতেই চায় না।
তবে এইগুলো তো দৈনন্দিন জীবনের ঘটনা, কিন্তু সত্যিই যদি এইচএমপি ভাইরাস করোনার মত হয় তবে তো বেঁচে থাকাই বিপন্ন হয়ে উঠবে। কারণ মুম্বাইতে সেই সময় থাকার দরুণ আমি বেশ ভালোই বুঝেছিলাম লকডাউনের এফেক্টে ঠিক কেমন হয়৷ এইসব কিছু মনের ভেতর চলছিল তাই নানান ওয়েবসাইটে এবং ভিডিও ইত্যাদি দেখলাম। সবকিছু দেখে যা বুঝেছি -
চীন জাপানে এই ভাইরাসের প্রকোপ একটু বেশি দেখা দিলেও ভারতবর্ষে এখনো সেই ভাবে প্রকোপ দেখা যায়নি, দু তিনটে বাচ্চার মধ্যে পাওয়া গেছে। তবে উপসর্গগুলো কিন্তু খুবই সাধারণ সেগুলো নিয়ে আলোচনা করছি।
উপসর্গ-
এইচএমপি ভাইরাস হলো মূলত শ্বাসযন্ত্র জনিত রোগ। তাই শ্বাসযন্ত্র জনিত যে কোন উপসর্গ দেখা দিলেই এইচএমপি ভাইরাস আক্রমণ হতেই পারে। আবার সাধারণ ঠান্ডা লাগা থেকেও এই উপসর্গগুলি দেখা দিতে পারে৷ কারণ উপসর্গে বিশেষ কোন উল্লেখ নেই যা দেখে পরীক্ষা করার আগেই বলে দেওয়া যাবে এটা এইচ এম পি ভি৷ সেই সাধারণ উপসর্গগুলি হল,
- জ্বর
- কাশি
- নাক বন্ধ হওয়া
- শ্বাসকষ্ট, ইত্যাদি
এই উপসর্গ গুলো দেখা দিলেই যে এইচএমপি ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত এমনটা ভাবার কোন কারণ নেই। করোনা চলে যাওয়ার পর থেকে বা স্থিতিশীল অবস্থায় আসার পর থেকে আমাদের প্রত্যেকেরই জ্বরজ্বালা বেড়েছে এবং সামান্য ঠান্ডা লাগলেও তা সারতে অনেকদিন সময় লেগে যায়। সিজিন পরিবর্তনের সময় জ্বর হলে তার তাপমাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় অনেকবেশি হয়। এমনকি পেটখারাপও লেগেই থাকে। তাই জ্বর কাশি নাক বন্ধ ইত্যাদি হয়েছে মানে যে এইচএমপি ভাইরাস ঢুকে পড়েছে এমনটা নয়।
তবুও নিজেদের সুবিধার্থে এবং সাবধানে থাকার জন্য কিছু সাবধানতা অবলম্বন করা যেতেই পারে। যেমন,
সাবধানতা অবলম্বন-
যেকোনো ভাইরাস যখন ছড়িয়ে পড়ে চারপাশে তখন তাকে নির্মূল করার আগে প্রয়োজন হয় তার সাথে মোকাবেলা করার। যেহেতু ভাইরাস আমাদের শরীরে বাসা বাঁধে তাই শারীরিকভাবে নিজেদেরকে অনেক বেশি শক্তিশালী করে তুলতে হবে।
সাথে এটাও মাথায় রাখতে হবে, করোনার প্রকোপ কিন্তু আমাদের ইমিউন সিস্টেম অনেক খারাপ করে দিয়েছে৷ তাই কিছু পদক্ষেপ এইচএমপিভির জন্য নিলে স্বাভাবিক জীবনেও খানিক সুস্থতা থাকা যায়৷
যেমন,
মোটামুটি বাইরে বেরোলে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে।
যেহেতু সংক্রমণ করে তাই নিজের থেকেই অন্যান্য মানুষের সাথে একটু ডিসটেন্স রেখে চলতে হবে।
যেভাবে বাড়িতে সবাই আদা, শিউলি পাতার রস, মধু, খায় সেইগুলোই করতে হবে। অর্থাৎ হঠাৎ ঠান্ডা লাগা থেকে নিজেকে দূরে রাখতে হবে।
খাদ্য তালিকায় আমলকি, পাতিলেবর রস, ক্যারিপাতা, সজনে পাতার ডাঁটা ও ফুল ইত্যাদি যুক্ত করতে হবে। ঠিক যেগুলো আমাদের ছোটবেলায় পৌষ মাঘ ফাল্গুন মাসে খাওয়ানো হত, বলা হত এইগুলো খেলে ভাইরাস বাসা বাঁধবে না৷
একটু বেশি পরিমান জল খেতে হবে৷ জলের থেকে উপকারী আর কিই বা থাকে। জল খেলে শরীরের টক্সিন বেরিয়ে যায় আর শরীর অনেক ভালো থাকে৷ তবে অবশ্যই এমন পরিমান জল খাওয়া ঠিক নয় যা কিডনিতে চাপ সৃষ্টি করবে। মোটামুটি তিন থেকে চার লিটার।
চিকিৎসা-
আপাতত ইনফ্লুয়েঞ্জার যে ধরনের চিকিৎসা হয় সেই চিকিৎসা এখানে করা হচ্ছে।
গুজব -
বেশ কিছু সাক্ষাৎকার ও প্রতিবেদন পড়ে জানলাম,
কলকাতার এক বিশিষ্ট ডাক্তারের মতে এই এইচএমপি ভাইরাস বহু বছর আগেই পাওয়া গেছে । আজ হঠাৎ কিংবা নতুন নয় বিষয়টি। আর এটি করোনার মত অতিমারি কখনোই হবে না। কারণ যেকোনো বাচ্চার ঠান্ডা লেগে সর্দি ইত্যাদি হলে শ্বাসযন্ত্রের নালীটা পরীক্ষা করলেই দেখা যায় এইচএমপি ভাইরাস আক্রান্ত। সকলে না হলেও বেশ কিছু তো পাওয়া যাবেই।
আসলে গুজব ছড়াতে খুব একটা বেশি সময় লাগে না৷ পরিশ্রমও হয় না৷ তাই সহজেই ছড়িয়ে পড়ে৷ আর আজকালকার সুপারফাস্ট ইন্টারনেটের দুনিয়ায় যেকোন জিনিস ছড়িয়ে পড়ত্র বা ভাইরাল হতে সময় লাগে না৷ বুদ্ধি লাগে৷ কারণ ভাইরাল হওয়া বিষয় থেকে ইনকামও খানিক হয়৷ এইসব আবার সোসালমিডিয়া ভাইবও বলা চলে।
অর্থাৎ ভীত বা সন্ত্রস্ত হওয়ার কোন কারণ নেই। খুবই স্বাভাবিক ভাইরাস এটি। যা আমাদের সাথে প্রতিনিয়তই ঘটে যাচ্ছে। কারণ ওয়েদার চেঞ্জের কারণে আমরা প্রত্যেকেই কমবেশি ঠান্ডা লাগা আর সর্দি কাশিতে ভুগছি। তাই উপসর্গলোক পড়ে খুব একটা বেশি যে ভয় লেগেছে তা কিন্তু নয়।
তবে সাবধানতা অবলম্বন করা যেতেই পারে। কারণ এই সময়টা আমাদের অসুস্থতার সময়। ঠান্ডার প্রকোপে সব কিছু স্থিতিশীল হলেও যেই ঠান্ডা কমতে থাকবে সমস্ত ভাইরাস মাথা চাড়া দিয়ে উঠবে৷ তাই মোকাবিলা করার জন্য নিজেকে শক্তিশালী করায় কোন ক্ষতি নেই৷
যাইহোক গুজবে কান দিতে না-ই বলব, যা আসবে যা হবে সেটার সাথে তো লড়াই করতেই হবে। বেশি ভয় পেয়ে বা ভেবে কোন কাজ নেই৷ ভালো খাওয়াদাওয়া, সুস্থ সবল থাকা আমাদের প্রধান উদ্দেশ্য হওয়াই কাম্য।
ঠিক বললাম?
বন্ধুরা আজকের আলোচনা এই পর্যন্তই৷ আপনারাও অবগত নিশ্চই ভাইরাসটির সাথে। তাও একবার আলোচনা করে নিলাম।
আজ আসি? আবার আসব আগামীকাল। ততক্ষণ ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। আশা করি আমার আজকের পোস্টটি আপনাদের উপকারেই আসবে৷
টা টা
পোস্টের ধরণ | জেনারেল রাইটিং |
---|---|
কলমওয়ালা | নীলম সামন্ত |
মাধ্যম | স্যামসাং এফ৫৪ |
লোকেশন | পুণে,মহারাষ্ট্র |
১০% বেনেফিশিয়ারি লাজুকখ্যাঁককে
~লেখক পরিচিতি~
আমি নীলম সামন্ত। বেশ কিছু বছর কবিতা যাপনের পর মুক্তগদ্য, মুক্তপদ্য, পত্রসাহিত্য ইত্যাদিতে মনোনিবেশ করেছি৷ বর্তমানে 'কবিতার আলো' নামক ট্যাবলয়েডের ব্লগজিন ও প্রিন্টেড উভয় জায়গাতেই সহসম্পাদনার কাজে নিজের শাখা-প্রশাখা মেলে ধরেছি। কিছু গবেষণাধর্মী প্রবন্ধেরও কাজ করছি। পশ্চিমবঙ্গের নানান লিটিল ম্যাগাজিনে লিখে কবিতা জীবন এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি৷ ভারতবর্ষের পুনে-তে থাকি৷ যেখানে বাংলার কোন ছোঁয়াই নেই৷ তাও মনে প্রাণে বাংলাকে ধরে আনন্দেই বাঁচি৷ আমার প্রকাশিত একক কাব্যগ্রন্থ হল মোমবাতির কার্ণিশ ও ইক্যুয়াল টু অ্যাপল আর প্রকাশিতব্য গদ্য সিরিজ জোনাক সভ্যতা।
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সব্বাইকে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন৷ ভালো থাকুন বন্ধুরা। সৃষ্টিতে থাকুন।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
https://x.com/neelamsama92551/status/1876336867093963009?t=49r6D3Z_OjdvlnpxRfXc2Q&s=19
সুন্দর একটি সচেতনতামূলক পোষ্টের মাধ্যমে অনেক কিছু তথ্য জানতে সাহায্য করলি। এই ভাইরাস বর্তমানে চীন দেশে ভীষণভাবে ছড়িয়ে পড়ছে। আর সেই দেখে আমরা প্রত্যেকেই ভীত হচ্ছি। ভগবানের কাছে প্রার্থনা করি যেন তিনি আর সেই পরিস্থিতি না দেন সেখানে মানুষ না খেতে পেয়ে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছিল। সবকিছু গতিশীল হোক এবং মানুষের জীবনে আর কোন অতিমারি ফিরে না আসুক।
করোনার লকডাউনের মত পরিস্থিতি হার হবেনা বলেই আমার ধারণা। আর সামান্য সচেতনতা অবলম্বন করলে এই ভাইরাস থেকে আমরা অচিরেই দূরে থাকতে পারবো।
তাই যেন হয়। কারণ আর লকডাউন হওয়া মানে করে খাওয়া মানুষের প্রচুর পরিমাণ ক্ষতি হওয়া। আগেরবার বহু মানুষ কাজ হারিয়ে পথে বসে গেছিলেন। তাই সেই ধরনের পরিস্থিতি আর সৃষ্টি না হওয়াই ভালো। তার থেকে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি এই ভাইরাস যেন খুব ভয়াবহ রূপে অবতীর্ণ না হয়।
দারুন তো। আপনি তো দেখছি ভাইরাস টিকে নিয়ে দারুন একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন। ভাইরাস নিয়ে বিস্তারিত আলোচনার পাশাপাশি আপনি এর কারন , লক্ষন এবং প্রতিকারের সকল কিছু আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। এমন দারুন একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
বর্তমানে বাজারে যে শোরগোল পড়েছে তাই ভাবলাম এই পোস্টটি খুবই উপকারী হবে শুধু তাই নয় সময় উপযোগীও বটে। সেই কারণেই করা এবং আপনি যে পড়েছেন আপনার ভালো লেগেছে জেনে আনন্দিত হলাম। অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি আপু আপনাকে।