আবোল তাবোল জীবনের গল্প [ ফ্রাইডে স্পেশাল ]

in আমার বাংলা ব্লগyesterday

হ্যালো বন্ধুরা,

কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি এখন ভালো আছি এবং চঞ্চল আছি, অবশ্য এর পেছনের পুরো ক্রেডিট আমার বাংলা ব্লগ এর, $PUSS এরও আছে। তাদের অবদান এমনই থাকুক সব সময় এবং জীবনের সুন্দর সময়গুলো আরো উপভোগ্য হয়ে উঠুক, সেই প্রত্যাশাই করছি। যাইহোক, আজকে শুক্রবার আর শুক্রবার মানেই আমার আবোল তাবোল জীবনের গল্পের স্পেশাল এপিসোড, জীবন হতে বাস্তবমুখী কিছু শেয়ার করার দিন। আজকে অবশ্য ছোট বেলার একটা বিষয় তুলে ধরার চেষ্টা করবো।

কারণ দুই একদিন আগের একটা বিষয় মনে পড়েছে, সেটা হলো মেয়েকে মাছ খাওয়ানোর সময় উপরের কালো অংশটুকু তাকে দিলে সে প্রশ্ন করে বসে এই অংশটুকু কালো কেন? বলে রাখছি আমাদের পরিবারের মাঝে একজন বাদে বাকি সবার কাছে প্রিয় পদ হলো মাছ, সেটা ভেজে দেয়া হোক কিংবা রান্না করে দেয়া হোক, মাছ থাকলে আর কিছুই লাগে না হি হি হি। আমার এই অভ্যেসটা সেই ছোটবেলা হতেই কারন আমার বাবারও প্রিয় ছিলো মাছ। এখানে আরো একটা কারণ আছে, সেটা হলো আমাদের গ্রামের বাড়ি। আমার দাদার বাড়ি সন্ধীপ, যেখানে মাছই হলো সকল রান্নার প্রধান আইটেম, হি হি হি।

যার কারনে বাবার প্রিয় ছিলো মাছ আর সেখান হতে আমাদেরও প্রিয় হয়ে যায়। তবে সন্ধীপের মাছগুলোর স্বাদ সত্যি দারুণ, সেখানে মাছ রান্নায় দ্বিতীয় কোন সবজি ব্যবহার করা হতো না শুধুই মাছ থাকতো। এখন অবশ্য কি অবস্থা জানি না, কারন শেষবার গিয়েছি সেটাও ১২ বছরের বেশী হয়ে গেছে। দাদা মারা গেছে তারপর বাবা মারা গেলো, এরপর আসলে খুব একটা যাতায়াত নেই। এমনি ফুফাতো বোন এবং চাচাতো ভাইদের সাথে ফোনে কথা বার্তা চলে। আমাদের বর্তমান সম্পর্কগুলো সত্যি কেমন জানি হয়ে গেছে, আগের মতো সেই আবেগ কিংবা ভালোবাসা কোনটাই নেই, সবাই সবাইকে ভীষণ ব্যস্ত ভাবি, দেখা সাক্ষাতের সময় কই?

fish-market-7519944_1280.jpg

যাইহোক, কথা মনে হচ্ছে ভিন্ন দিকে চলে যাচ্ছে। মেয়ের প্রশ্ন শুনে আমাদের ছোট বেলার একটা কথা মনে পড়ে গেলো বিশেষ করে মাছের পিঠের সেই কালো অংশ নিয়ে। আমি যখন ছোট ছিলাম তখন তো আর এতো এতো স্মার্ট ডিভাইস ছিলো না অবশ্য টেলিভিশন ছিলো তবে সাদাকালো। আমরা নির্দিষ্ট সময়ে খেতে বসতাম, তখন আবার কারো জন্য বসে থাকা লাগতো না, খাবার দেয়া হতো সময় মতো। আমরা সময় মতো খেতে বসতাম আর বায়না ধরতাম গল্প শুনানোর জন্য। সেই সময়ের প্রচলিত গল্প ছিলো এটা, ইলিশ মাছ আর হরিণ এর সাথে নদী পার হওয়ার প্রতিযোগিতা হয়েছিলো, কিন্তু সেখানে বিজয়ী হয়েছিলেন ইলিশ মাছ। হেরে যাওয়ার কারনে হরিণের মাংসের একটা অংশ মাছদের দিয়ে দেয়া হয় এবং সেই কারনে মাছের পিঠের কিছু অংশ এমন কালো থাকে।

এখন অবশ্য এটা মনে পড়লে নিজের কাছেই হাসির খোরাক হয়ে যায় হি হি হি। ছোট বেলায় আমরা এমন অসংখ্য গল্প শুনতাম বড়দের কাছে, আর আমরা সেগুলো দারুণভাবে বিশ্বাসও করতাম। বড়রা মিথ্যা বলে কিন্তু আমাদের শান্তনা দেয়ার জন্য এমনটা বলে থাকেন, এটা আমরা কোনভাবেই বিশ্বাস করতাম না। সত্যি তখন এসব গল্পের প্রতি আমাদের ভীষণ আকর্ষণ ছিলো। কিন্তু বর্তমান প্রজন্মের কাছে এগুলো শুধুই কাল্পনিক এবং হাসির বিষয়, তাদের যেমন আকর্ষণ নেই ঠিক তেমনি তারা এগুলো শুনতেও চান না। বাস্তবতা কতটা পরিবর্তন এনে দিয়েছে আমাদের মাঝে।

Image Taken from Pixabay

ধন্যবাদ সবাইকে।
@hafizullah

break .png
Leader Banner-Final.pngbreak .png

আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।

break .png

Banner.png

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 yesterday 

আপনি কি আবার আপনার মেয়েকে সেই হরিণ আর ইলিশ মাছের গল্প শুনাননিতো? 😅

 yesterday 

আবার জিগায়, তবে আমাদের মতো তারা এসব গল্প একদমই বিশ্বাস করে না।

 yesterday 

হাহাহা! মাশাআল্লাহ। আল্লাহ আপনার সন্তানকে উত্তম জাজাহ দান করুন।

 yesterday 

এরকম ধরনের টুপি পরানো গল্প আমি অনেক শুনেছি তবে মাছ আর হরিণের গল্পটা কখনো শুনিনি। মাছের পিঠের অংশটা কালো হওয়ার জন্য আমার মেয়ে কিন্তু ওটা খায় না। এমনি তো খুব একটা মাছ পছন্দ করে না তাও ওকে এভাবে বোঝাই যে তুই বাঙালি তোর মাছ খাওয়াটা দরকার । হা হা হা৷

আমাদের ছোটবেলাটা একেবারেই আলাদা ছিল, একসাথে গোল হয়ে বসে যেতাম ঠাকুমা থালায় থালায় ভাত বেড়ে দিত, যা খাবার হতো তাই খেতাম। কি খেতে ভালোবাসি আর কি বাসি না সেটা বোধহয় আজও জানিনা।

 yesterday 

তবে টুপি পরানোর গল্পগুলো কিন্তু ভীষণ ভালো লাগতো আমাদের নিকট তখন। হ্যা, তখন বড়দের পছন্দই ছিলো আমাদের পছন্দ, এটা খাবো না, ওটা খাবো না এসব ছিলো না আমাদের মাঝে। শুধু খাবার কেন সব কিছুতেই বড়দের পছন্দই ছিলো আমাদের পছন্দ।

 yesterday 

আমাদের কি পছন্দ অপছন্দের বোধ বা জায়গা ছিল দাদা? নাকি বোধ ছিল? যখন যা জুটেছে তাই কী আনন্দের৷

 yesterday 

হেরে যাওয়ার কারনে হরিণের মাংসের একটা অংশ মাছদের দিয়ে দেয়া হয় এবং সেই কারনে মাছের পিঠের কিছু অংশ এমন কালো থাকে।

এই গল্প বড়দের মুখ থেকে আমিও শুনেছি ভাই। তখন বড়দের মুখ থেকে বিভিন্ন ধরনের গল্প শুনতে কি যে ভালো লাগতো,সেটা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। যাইহোক আমি তো ভাবছি আমার সন্তান হলে আমিও ইলিশ মাছ এবং হরিণের গল্প শুনিয়ে দিবো😂। বেশ ভালো লাগলো পোস্টটি পড়ে। এতো চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 20 hours ago 

ইলিশ মাছ আর হরিণের এই গল্পটা আমার শৈশবকেও কৌতূহলী করে তুলেছিল। আমি আমার মায়ের মুখে শুনেছিলাম গল্পটা। যদিও এখন কোন ভিওি খুজে পায় না হা হা। তবে এগুলো ঐ ছোটবেলার কাহিনী হিসেবেই ঠিক আছে। মাছ আমার খুব একটা পছন্দ না। খুব কম খাওয়া হয়।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.16
JST 0.030
BTC 68227.33
ETH 2646.21
USDT 1.00
SBD 2.70