উল্টো বিড়ম্বনা শেষ পর্ব😢
হ্যালো বন্ধুরা,
মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি "আমার বাংলা ব্লগ"এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সকল সদস্যগণ,কেমন আছেন সবাই? আশাকরি আপনারা সকলেই ভালো আছেন,সুস্থ আছেন?পরম করুণাময় ঈশ্বরের অশেষ কৃপায় আমিও পরিবারের সবাইকে সাথে নিয়ে ভালো আছি সুস্থ আছি।
আমি @bristychaki,আমি একজন বাংলাদেশী। আমার বাংলা ব্লগ এর আমি একজন ভেরিফাইড ও নিয়মিত ইউজার।আমি বাংলাদেশর গাইবান্ধা জেলা থেকে আপনাদের সাথে যুক্ত আছি। প্রতিদিনের মতো আমি আজও নতুন একটি ব্লগ নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি।আমি প্রতিনিয়ত চেষ্টা করি পোস্টের ভিন্নতা আনার।আজ তারই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে আজকের পোস্টটি আপনাদের সাথে শেয়ার করছি।
ইতিমধ্যে আমি উল্টো বিড়ম্বনা নিয়ে দুটি পোস্ট আপনাদের সাথে শেয়ার করেছিলাম, আশা করি আপনারা অনেকেই তা দেখেছেন।আজ আমি এই গল্পের শেষের অংশটুকু আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চলেছি।আমরা ভালোর জন্য অনেক কিছুই করে থাকি কিন্তু সেটা সবসময় আমাদের জন্য ভালো কিছু বয়ে আনবে তা কিন্তু নয়,ঠিক সেরকমই আমি ভালোর জন্য চিকিৎসা নিতে গিয়ে উল্টো বিরাম্বানার শিকার হয়েছি এবং তার জন্য আমাকে অনেক ভোগান্তির স্বীকার হতে হয়েছে এবং সেই সাথে অনেক পয়সাও খরচ করতে হয়েছে।সেই মুহূর্তটি আপনাদের সাথে শেয়ার করছি চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক।
দ্বিতীয় পর্ব-
সবগুলো ঔষধের দাম দেখে আমাকে জানান কতো হয়!তখন উনি সবগুলো ঔষধের দাম হিসেব করে আমাকে বললেন যে ৯৬৪২ টাকা।আমি তো শুনেই হতবাক হয়ে গেলাম!আমি সবমিলিয়ে ৪ হাজার টাকা নিয়ে ডাক্তার দেখতে আসছি।ভিজিট ৭'শ আর বাদবাকি দিয়ে যাতায়াত ঔষধ হয়ে যাওয়ার কথা এই ভেবেই আসছিলাম।হাসবেন্ড কে কল করে বিস্তারিত জানালাম তখন আমার হাসবেন্ড বললো তোমার সাথে ক্রেডিট কার্ড আছে না?আমি বললাম আছে তখন সে বললো তাহলে ১০ হাজার টাকা তুলে সবগুলো ঔষধ কিনে তারপর বাসায় যাবা।
শেষ পর্ব
পাশেই এটিএম বুথ ছিলো ওখান থেকে টাকা তুলে আবার ঔষধের দোকানে গেলাম গিয়ে সবগুলো ঔষধ নিয়ে বাসার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলাম।ভাগ্যিস হাসবেন্ড এর ক্রেডিট কার্ড টি আমার সাথে ছিলো তা না হলে তো আবারও ঔষধ কেনার জন্য পরেরদিন বগুড়ায় যেতে হতো!আমি যেখানেই যাই সবসময়ই সাথে কার্ড টা রাখি তার কারণ কখন কোথায় টাকার দরকার হবে তা তো আমরা জানি না,আর বিপদের সময় কারো কাছে টাকা চাইলেও পাওয়া যায় না এটা আমার আপনার সবার ক্ষেত্রেই সমান।বাসায় আসলাম ঔষধ প্রেসক্রিপশন মিলিয়ে দেখে নিলাম কখন কোন ক্রিম কোন লোশন লাগাতে হবে, কখন কোন ঔষধ খেতে হবে!সবগুলো ঠিকঠাক মতো নিয়মঅনুযায়ী লাগাতে গেলে পুরো দিনটার অর্ধেক সময় এর পিছনেই চলে যাবে কিন্তু কিছু করার নাই লাগাতেই হবে।
ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ ঠিকঠাক মতো লাগানো খাওয়া শুরু করলাম ভগবানের অশেষ কৃপায় এক রাতের মধ্যেই বেশ আরাম বোধ করলাম,চুলকানোটা অনেকটা কমে গেছে এবং পরের দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখে হাতের গোটা গুলো বেশ কমে গেছে।দেখে খুবই ভালো লাগলো এবং শারীরিক দিক থেকেও বেশ আরাম পাচ্ছিলাম।মনের খুশিতে তাড়াতাড়ি হাজবেন্ড কে ফোন করে জানালাম,সেও শুনে খুবই খুশি হলো।এভাবেই নিয়মমাফিক বেশ কয়েকদিন ঔষুধ লাগানোর পর মোটামুটি একেবারেই ভালোর দিকে।ভাবলাম আর হয়তোবা ডাক্তারের কাছে যেতে হবে না এটাই আমি সুস্থ হয়ে যাবো। একদিন দুপুরবেলা শুয়ে আছি হঠাৎ করে মনে হচ্ছিল আমার শরীরের চামড়া গুলো ফেটে যাচ্ছে এবং অনেক জ্বালা করছে।আমি তো খুবই ভয় পেয়ে গেলাম এবং সাথে সাথে আমার হাজব্যান্ড কে কল করে জানালাম।এই কথা শোনার সাথে সাথে আমার হাজব্যান্ড আমাকে বললেন আজকের দিনটা অপেক্ষা করো আগামীকাল বগুড়ায় আবার ডাক্তার দেখাতে যাবা।ওই দিনটা অনেক কষ্টে পার করলাম।
পরের দিন সকাল সকাল বাসা থেকে বেরিয়ে পড়লাম এবং কিছু টেস্ট দেয়া ছিলো সেগুলো টেস্ট করাতে দিলাম।তারপর ওখান থেকে বের হয়ে আমার এক আত্মীয়ের বাসায় গেলাম।ওখানে গিয়ে দুপুরের খাবার দাবার খেয়ে কিছুক্ষণ রেস্ট নিয়ে তারপর বিকাল চারটার দিকে বাসা থেকে বের হয়ে আসি ডাক্তার দেখানোর উদ্দেশ্যে।ডাক্তারের জন্য অপেক্ষা করছিলাম কিছুক্ষণের মধ্যে ডাক্তার চলে আসলেন এবং আমি চেম্বারের ভিতরে প্রবেশ করলাম।তারপর আমি বিস্তারিতভাবে ডাক্তার ম্যামকে খুলে বললাম এবং উনি খুব ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করলেন।তারপর উনি আমাকে আশ্বস্ত করে বললেন যে এগুলো ক্রিম লাগানোর কারণেই চামড়ার উপরের অংশটা উঠে যাচ্ছে তাই ভয় পাওয়ার কোন কারণ নেই।
দেখা হয়ে গেলে উনি আবার কয়েকটা ওষুধ লিখে দিলেন। ডাক্তারের চেম্বার থেকে বের হয়ে ঔষুধগুলো কিনে নিয়ে তাড়াতাড়ি করে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে গেলাম এবং ভালোভাবে বাসায় চলে আসলাম।ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী আবার নতুন ঔষুধ গুলো লাগানো শুরু করলাম।এভাবেই কয়েকদিন কেটে গেলো কিন্তু চামড়ার উঠা বন্ধ হওয়ার কোনো উন্নতি দেখতে পাচ্ছিলাম না।হাতের অবস্থা এমন হয়ে গেলো যেনো নিজের কাছেই বিরক্ত লাগছিলো দেখতে।হঠাৎ করে একদিন রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে মনে হলো শরীরের চামড়াটা বেশ টানটান লাগছিলো, হাতের কাছে গ্লিসারিন দেখতে পেলাম।হাতে একটু গ্লিসারিন এবং জল নিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে হাতে পায়ে লাগিয়ে নিলাম তারপর ঘুমাতে চলে গেলাম।ওমা পরেরদিন দেখি অবাক করা কান্ড!এক রাতের মধ্যেই আমার চামড়ার মধ্যে বেশ পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে দেখে ভালোই লাগলো। আর তখন থেকে দিনে তিনবার করে হাতে পায়ে গ্লিসারিন লাগানো শুরু করলাম।এভাবে দুই তিন দিন লাগানোর পর দেখি আমার চামড়া ঠিক আগের মতো হয়ে যাচ্ছে।তখন চিন্তা করলাম ওই ক্রিমগুলো আর না লাগিয়ে গ্লিসারিনটাই নিয়মিত লাগাই।এক সপ্তাহ গ্লিসারিন লাগানোর পর আমার শরীরের চামড়া গুলো একদম স্বাভাবিক হয়ে গেলো আগের মতোই মনে হচ্ছে।ভগবানের অশেষ কৃপায় ১৫ দিনের মধ্যেই আমার চামড়া একদম স্বাভাবিক হয়ে গেলো।
আর এভাবেই আমি একেবারেই সুস্থ,স্বাভাবিক হয়ে গেলাম।সবসময় যে মানুষ দামী জিনিস দিয়েই ভালো উপকার পাবে তা কিন্তু নয়,অল্প দামের জিনিস দিয়ে অনেক সময় অনেক ভালো কাজ দেয় যা আমি নিজেই প্রমাণিত।তবে এটা ভেবে শান্তি পাই যে দুইবার ডাক্তার দেখাতে আমার ১৫০০০ টাকা খরচ হয়েছে কিন্তু আমি একেবারে সুস্থ হতে পেরেছি এটাই আমার জন্য শান্তির বিষয়।এলার্জি নাম টা ছোট হলেও এর ভয়াবহতা অনেক বেশি যার হয় সেই একমাত্র বোঝে এর যন্ত্রণা কি!ভগবান সহায় ছিলো জন্যই হয়তোবা অল্পের উপর দিয়ে বেঁচে গেলাম।
ঈশ্বর সবাইকে ভালো রাখুক সুস্থ রাখুক এই প্রার্থনা করে আজ এখানেই শেষ করছি।
OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
পোষ্টের সব শেষে প্রশান্তি পেলাম। এখন সবকিছু স্বাভাবিক আছে জেনে ভালো লাগলো। হয়তো ওষুধের প্রভাবে হাত থেকে চামড়া উঠে যাচ্ছিল তবে একটানা বেশ কয়েকদিন গ্লিসারিন ব্যবহার করার কারণে চামড়াটা আবার ঠিকঠাক হয়ে গিয়েছে। হ্যাঁ সবই সৃষ্টিকর্তার রহমত।
দোয়া করি যেন দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন। আসলে সমস্যা হলে টাকা যে কত খরচ হয় তা বলে বোঝানো সম্ভব না। আমার আম্মার অসুস্থতার পর থেকে প্রায় পতি সপ্তায় সপ্তায় এমন হাজার হাজার টাকা চলে যাচ্ছে। যেখানে মাত্র চার হাজার টাকা নিয়ে গিয়েছিলেন সবকিছু সমাধান হবে সেই আশায় কিন্তু দেখা যাচ্ছে ওষুধের দামি তার ডাবল। তবে যাই হোক দ্রুত যেন সুস্থ হন সেই কামনা করি অসুস্থ থাকলে সত্যি মনের মধ্যে অন্যরকম অশান্তি।
যাক অবশেষে তাহলে আল্লাহর কৃপায় ভালো হলেন। কিন্তু কথা হলো সামান্য গ্লিসারিন দিয়ে যদি নিজেই ভালো হলেন তাহলে ডাক্তারের পিছনে শুধু শুধু ১৫০০০/- দেওয়ার দরকার কি ছিল। আশা করবো এখন থেকে বেশ সাবধানে থাকবেন। যাতে করে অসুখ বিসুখ আপনাকে ছুঁতে না পারে।
এলার্জি খুব খারাপ বিভিন্ন ধরণের এলার্জি রয়েছে। আপু আপনি ঠিক বলেছেন বিপদে পরলে কারো কাছে টাকা পাওয়া যায় না। আপনি সাথে করে কার্ড নিয়ে খুব ভালো করেছেন। ১৫০০০ টাকা গিয়েছে তাতে কি হয়েছে আপনি পুরোপুরি সুস্থ হয়েছেন জেনে খুশি হলাম। সুস্থতা সৃষ্টিকর্তার অশেষ নেয়ামত। আপনার জন্য দোয়া এবং শুভ কামনা রইলো।