বার্তা বাহক! The messenger!
|
---|
একলা বসে ঘরের চালে একটি কবুতর;
শুভ্রতায় মাখা দেহ, মনের অভ্যন্তর!
এক পলকে এদিক ওদিক
কাকে যেনো চোখ খোঁজে!
ওরাও কি মানুষের মতই
একে অন্যের কথা বোঝে?
ইতিহাসের পাতায়
উল্লেখিত আজও পারাবত;
তুমি ছিলে অতীতের,
বার্তা বাহকের মারফত।
ডালে নয়, ডানায় ভরসা,
শিখেছি তোমার কাছে;
তাইতো আজও চলছি একলা,
কেউ নেই আগে-পাছে!
সঙ্গী থাকলে হারাবার ভয়;
বিশ্বাসভঙ্গ, মিথ্যাচার, অভিনয়!
মনের শুভ্রতা বিলীন আজি;
অসাধু কর্মে, নিমজ্জিত হতে সকলেই রাজি!
অর্থের জন্য সব বিসর্জন দিতে পারে;
সন্তান, মাতা-পিতাকে খুন করে মারে!
সম্পদ বড়, সম্পর্কের চেয়ে;
তাই আজও বড় কষ্ট! যদি হয় মেয়ে!
যৌতুক নেবার পরিবর্তে হবে যে দিতে;
শৈশব থেকেই মাপা শুরু খরচের ফিতে!
লেখাপড়া করে কি পাবে?
হাঁড়ি ঠেলতে, পরের ঘরে সেইতো যাবে!
তৈজসপত্র পরিষ্কারে দিক মন;
হাতের কাজে শিখুক রন্ধন!
হায়রে নারী! আজও তোরা
পরিবারের বোঝা;
এখনো নয়তো আর কবে,
করবি কোমর সোজা?
-সুনীতা দত্ত। |
---|
একটি পাখি যেখানে স্বাধীনভাবে আকাশে উড়তে সক্ষম, সেখানে কত নারী আজও পরাধীন! |
---|
উন্নত সমাজের বুকে দাঁড়িয়ে আজও পুত্র সন্তানের বাজার দর বেশি!
সর্বত্র না হলেও কিছু পিছিয়ে পড়া দেশের ক্ষেত্রে, বহু রাজ্যেও এই বিষয়টি আজও প্রযোজ্য।
এর প্রমাণ পাওয়া যায় যখন প্রথম কন্যা সন্তান জন্মাবার পরে, পুত্র সন্তান পাবার আশায় একের পর এক জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণ হয়ে দাঁড়ায় অনেক পরিবার, আর সাথে বয়ে আনে অভাব।
কারণ, উপার্জন তো বৃদ্ধি পায়নি, পেয়েছে পেটের সংখ্যা! কোথা থেকে ভালো শিক্ষা, পোশাক আর খাবারের যোগান দেবে?
মুশকিল হলো, এই দলভুক্ত যে কেবল পুরুষ সেটা কিন্তু নয়, দুর্ভাগ্যবশত এই মানসিকতা বহনকারীদের মধ্যে নারীও সামিল।
এটা লজ্জার এবং ধিক্কার জনক! আমি নারী বলে কথাটা বলছি এমনটা নয়, কারণ আমি আগেও উল্লেখ করেছি আমি লিঙ্গ বৈষম্যতার
শিক্ষা পেয়ে বড় হইনি।
আমরা দুটি কন্যা সন্তান,
মাতা পিতার সুস্থ্য চিন্তা ভাবনার একটি উৎকৃষ্ট প্রমাণ।
সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়ে কিন্তু জানতে পারে না তারমধ্যে কতটা ক্ষমতা আছে কতটা নেই!
প্রথমে ডাক্তার জানান, সন্তান সুস্থ্য ভূমিষ্ঠ হয়েছে। এরপর কন্যা সন্তান হলে, তাকে একরকম মানসিক বিকলাঙ্গ তৈরি করা শুরু হয়ে যায় জ্ঞান হবার আগে থেকেই!
তার প্রতিভার বিকাশ অনেক পরিবার প্রায় ইচ্ছে করেই হয়ে দেয় না আজও!
আর যদি হয় পুত্র সন্তান? তাহলে তো মাটিতে পা রাখতে দেওয়া যাবে না! বংশধর বলে কথা!
আর কতযুগ সূর্যের আলো থেকে মুখ ফিরিয়ে থাকবে কিছু মানসিকতা? |
---|
ভবিষ্যতের হাতের লাঠি! উপার্জন করে বৃদ্ধ বয়সে মাতা পিতাকে দেখবে!
আচ্ছা, যদি এই পরিকল্পনাকে সত্যি বলেই ধরে নেওয়া যায়,
তাহলে রাস্তায় রাস্তায় হাত পেতে বেড়াতে দেখা যায় কেন বৃদ্ধ বয়সীদের?
কেনই বা বৃদ্ধাশ্রম তৈরির কথা মাথায় আসলো কিছু সমাজ সেবীদের?
সমাজ উন্নতির সূত্রপাত বোধহয় ঘর থেকেই শুরু হয়! যতক্ষণ আমরা একে অপরের পরিপূরক হিসেবে সন্তানদের সমান মর্যাদা দিয়ে বড় করতে না পারবো, ততক্ষণ উন্নত সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব নয়।
খুব মজার একটি কথা বিশ্বখ্যাতি প্রাপ্ত বাবুর্চি বিকাশ খান্না মাস্টার শেফ অনুষ্ঠানে জানান আর সেটা হলো, ওনার মা শৈশব থেকেই ওনাকে নিজের রান্না নিজেকে করে খাবার শিক্ষায় বড় করে তুলেছেন।
সময় হাতে থাকলে তার সফলতা আজ কতদূর ছড়িয়েছে, সেটা গুগল করে দেখে নিতে পারেন!
তাকেও একজন নারী বড় করে তুলেছেন, সাথে পিতা নামের একজন পুরুষ পার্থক্য কেবল মানসিকতায় ছিল।
আজকের কবিতাটি সেই সকল মানুষের উদ্দেশ্যে রইলো যারা, নিজেদের তথা পরিবারের অনেকের ইচ্ছে ডানা গুলোকে অসময়ে ছেঁটে ফেলছেন।
আপনার আজকের পোস্টটি শুধুমাত্র একটি পোস্ট নয়। এটি সমাজের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা, যা নারীদের স্বাধীনতা এবং স্বপ্নের পথে হাঁটতে উৎসাহিত করবে। আমি মনে করি, এমনি তে আমি কবুতরকে অনেক ভালোবাসি, আজকে আপনি, সুনীতা দত্ত উনার একটা কবিতা আমাদের সাথে উপস্থাপন করেছেন। সত্যিই আমার কাছে পড়ে অনেক ভালো লেগেছে।
এটি একটি বাস্তবমুখী কবিতা, যা আমাদের সমাজের অন্ধকার দিকগুলিকে খোলাসা করেছে। সুনীতা দত্ত, তার কবিতার মাধ্যমে সেই সমস্ত নারীদের জন্য, একটি প্রতিধ্বনি তৈরি করেছেন! যারা এখনও অবহেলিত ও মানসিকতার শিকলে বাঁধা। কবিতার ভাষা এবং আপনার ভাবনা এতই মর্মস্পর্শী আমাদের মতন পাঠককে এক নতুন দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করে।
যে দৃষ্টিভঙ্গি নারীকে তার প্রকৃত মর্যাদা, স্বাধীনতা এবং সম্ভাবনার দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। এত সুন্দর একটি বিষয়বস্তু নিয়ে আপনি আজকে আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। সত্যি সমাজে এখনো, অনেক পরিবার রয়েছে যা মেয়ে সন্তানকে পছন্দ করে না। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ দিদি। ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন, আপনার জন্য সব সময় শুভকামনা রইল।
@tipu curate
;) Holisss...
--
This is a manual curation from the @tipU Curation Project.
নারী ও পুরুষের সমান অধিকারের বিষয়টি আজও অনেক সমাজে শুধুমাত্র কথার মধ্যেই সীমাবদ্ধ। বাস্তবতা হলো, কন্যা সন্তান জন্মের পর থেকেই তাকে নানা রকম সামাজিক প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হয়। আপনার কবিতা ও লেখার মাধ্যমে বাস্তব চিত্র উঠে এসেছে, যা সত্যিই চিন্তার বিষয়।
একটি সুস্থ সমাজ গঠনের জন্য মানসিকতার পরিবর্তন জরুরি। সন্তান ছেলে হোক বা মেয়ে তার স্বপ্ন, শিক্ষা ও ভবিষ্যতের গুরুত্ব সমান হওয়া উচিত। সুন্দর ও গভীরভাবে ভাবনার খোরাক জোগানো লেখার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ দিদি।