জীবন -Life!
|
---|
একটা শব্দ লক্ষ মানে;
বুঝবে তারাই, লড়াইটা জানে!
তুমি শান্ত, তুমি নিরাকার,
তুমি একটা সুযোগ বটে;
তথাপি তুমি সহজবোধ্য নয়কো মোটে!
বুঝলে অর্থ সময় খুশি হয়;
বোঝে না যারা, তারাই পিছিয়ে রয়!
অপচয় করে প্রতি মুহুর্ত
নিয়ে অভিমান হাজারো শর্ত
না বুঝেই তোমার গভীর অর্থ
সময়ের ব্যবহারে হয় যে ব্যর্থ!
নালিশ নিয়ে মুখ ফিরে বসে!
আজ গেলে কি কাল ফিরে আসে?
হেলায় হারাচ্ছে তোমার গুরুত্ব;
অহংকার, রেশে হয়ে উন্মত্ত!
গড়তে নারাজ, অনীহা দৃষ্টিতে;
কলহ, বিবাদে লিপ্ত, অনাগ্রহ সৃষ্টিতে।
শেষ লগ্নে যখন শূন্যতা থাকে পড়ে;
জীবনের হিসেব কষতে,
তখন সব বসে নড়েচড়ে!
জীবনের চলার পথে দৃঢ়তা হলো সবচাইতে বড়ো হাতিয়ার! |
---|
লেখাটা আজকে কিছু ছন্দের সমষ্টি দিয়ে শুরু করলাম।
প্রকারভেদ ভিন্ন হলেও সকলের নিজের নিজের জীবনের প্রতি নালিশ আছে।
এখন এই নালিশ কখনও অন্যের অর্থের প্রাচুর্য্য দেখে মনে আসতে পারে! অপরের আছে নিজের কেনো নেই?
অন্যের সৌর্ন্দয্য দেখে একই চিন্তা আসতে পারে!
আবার অন্যের সফলতা দেখেও কিন্তু অনেকের মনে একই প্রশ্ন আসে!
কখনো কখনো অন্যের হাসি খুশি ভরা মুখ দেখে মনে হতে পারে, বাবা কি সুখী মানুষটা!
আবার, পরীক্ষায় পরিচিত কারোর ভালো ফলাফল একই নালিশ বয়ে আনতে পারে নিজের প্রতি!
আমিও তো কম পড়াশুনা করিনি, আমার তো ওই মানুষের চাইতে বরং দুটো মাস্টার বেশি ছিল, এর আগে তো আমার চাইতে খারাপ ফল করতো ইত্যাদি ইত্যাদি!
তারপর, সবশেষে কোনো উত্তর না পেয়ে ভাগ্যের দোহাই দিয়ে নিজেকে খানিক শান্ত করা।
এরপর দেখা যায় নালিশ পরিবর্তিত হয় ঈর্ষায়!
সেই ঈর্ষার বশে মুখের আগল খুলে বেরিয়ে আসে নিজের স্বরূপ হামেশাই।
আজকে, যে বিষয় তুলে ধরতে এসেছি সেটা সকলের জানা বিষয়, কিন্তু প্রতিদিন আমরা বিষয়টি অগ্রাহ্য করে সময়ের অপব্যবহার করে চলেছি।
আমরা সকলেই কিন্তু জানি জীবন একটাই, পরজন্মে কিছু মানুষ বিশ্বাসী কিন্তু সেটা কারা দেখেছেন?
জলের কিন্তু নিজস্ব রঙ নেই, তবুও তার অপর নাম জীবন! আর দূরের ওই পর্বত সব মরশুমেই অবিচল! |
---|
তাহলে যেটা দেখতে পাচ্ছি তার নিরিখে বলা যেতে পারে, জীবন একটাই!
তবে, সময়ের অপচয় করে এই একটামাত্র জীবনের অধিকাংশ আমরা নষ্ট করি জেনেশুনে।
তাই শেষ পাতে পড়ে থাকে কেবলমাত্র নালিশ আর ঈর্ষা।
অথচ, যারা পারেন আর যারা পারেনি, তলিয়ে দেখলে বোঝা যায় পার্থক্য রয়ে গেছে সময়ের সঠিক ব্যবহারের মধ্যেই।
যে মুহূর্তে একজন সৃজনশীল মানুষ কাজে নিজেকে নিয়োজিত করেছিল, সেই মুহূর্তে অনেকেই ব্যস্ত ছিল সময় অপচয় করতে, তাহলে জীবনের প্রতি নালিশ কি তাদের সত্যি সাজে?
সকল প্রতিকূলতা পায়ে দলে এগিয়ে গেছে যারা তাদের জীবন সময়ের হাত ধরে এনে দিয়েছে সামাজিক পরিচয়। কেবলমাত্র অর্থ উপার্জন যাদের লক্ষ তারা আটকে থেকেছে নির্দিষ্ট পরিধিতে, আর যারা বুঝেছে অর্থের চাইতেও বড়ো যশ, তারা ভিন্ন পথে হেঁটে মনোনিবেশ করেছেন সৃজনশীল কাজে।
তারা গড়ে রেখে গেছে তাদের সৃষ্টির নজির নব প্রজন্মের মাঝে।
কেউ নিজের গানের প্রতিভার বিকাশ করে গেছেন, কেউ নৃত্যের;
কেউ আবিষ্কারের হাত ধরে সামাজিক উন্নয়ন করে রেখে গেছেন, কেউ বিশ্বকবির শিরোপা পেয়েছেন তাঁর অনবদ্য লেখায়।
আমি বিশ্বাস করি, সৃষ্টিকর্তা কিছু না কিছু প্রতিভা দিয়েই এই ধরায় সকলকে পাঠিয়েছেন, পার্থক্য কেউ তাকে কাজে লাগিয়ে এগিয়ে গেছে, আর বাকিরা ভাগ্য আর নালিশের অজুহাতে এড়িয়ে গেছে সমস্ত দায়।
একটাই জীবন, আর সময়ের মত এটিও একটি একটি করে বছরের হাত ধরে শেষের পথে এগিয়ে চলেছে, তাই অন্যের পারদর্শিতার সমালোচনা করে সময় ব্যয় না করে, নিজের মধ্যের অলসতা আর পিতৃ পুরুষের রেখে যাওয়া সম্পদ বসে খাওয়ার আকাঙ্খা থেকে বেরিয়ে এসে, নিজের দক্ষতায় তাদের মুখ উজ্জ্বল করবার প্রয়াস করলেই বোধহয়, জীবনের প্রকৃত সংজ্ঞা খুঁজে পাওয়া যায়।
বাকি তো রাস্তার পশুরাও বেঁচেই রয়েছে, আলাদা কি বা করা হলো মানুষ রূপে জন্মে? ভেবে দেখবেন একবার নালিশ করবার পূর্বে!
পেরেছেন নিজের ক্ষমতায় কিছু করতে?
পারলে সাধুবাদ, আর নইলে ভাগ্যকে অপবাদ দিয়েই জীবন একদিন শেষ হয়ে যাবে!
হাতেগোনা কয়েকজন পাওয়া যাবে কিনা এটা নিয়েও আমি সন্দেহ এর মধ্যে রয়েছি। আসলে বর্তমান সময়ে প্রতিটা মানুষ একে অন্যের প্রতি নালিশ রয়ে যায়। দিন শেষে যতই আমরা চেষ্টা করি তাদের প্রতিটা কথা মেনে চলার। তারপরেও একটা পরিবারের ক্ষেত্রে যদি বলি তাহলে তার সন্তানের প্রতি নালিশ থাকে। মায়ের থাকে তার স্বামীর প্রতি নালিশ এটা বাস্তব। নালিশ ছাড়া মানুষ আপনি পাবেন না হয়তো বা দুই একজন।
আমাদের জীবন একটাই আর এই জীবনের প্রতিটা সময়কে যদি আমরা গুরুত্ব সহকারে গ্রহণ করতে পারি। তাহলে কিন্তু আমরা জীবনের আসল স্বাদ উপভোগ করতে পারি, কিন্তু আমাদের মধ্যে অনেকেই রয়েছে আমাদের জীবনের সময়টাকে অপচয় করে। তাদেরকে হয়তো বা হাজার জীবন দিলেও তাদের কাছে কম মনে হবে।
জীবনটাকে উপভোগ করার জন্য পরিশ্রম অবশ্যই প্রয়োজন। আমরা যদি পরিশ্রম না করে জীবনটাকে উপভোগ করার চেষ্টা করি তাহলে জীবনের আসল মানে আমরা কখনোই পাবো না। জীবন সম্পর্কে আপনার ছন্দ এবং লেখাগুলো সত্যিই মন ছুয়ে গেল। ধন্যবাদ ভালো থাকবেন।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমাকে সাপোর্ট দেয়ার জন্য ভালো থাকবেন।
@rubina203 ধন্যবাদ বহুদিন বাদে আপনার মন্তব্য পেয়ে বেশ ভালো লাগলো।
আমি যেটা বিশ্বাস করি সেটা হলো, একটি সুস্থ্য দেহে জন্মে যদি আমরা প্রতিটি দিনকে হেলায় হারাই তাহলে সেটা সৃষ্টিকর্তা সুনজরে দেখেন না।
কত মানুষ শারীরিক বিকলঙ্গতা নিয়েও দৈনন্দিন জীবনে সংঘর্ষ করে যাচ্ছেন, সেখানে কিছু মানুষ সুস্থ্য দেহে জন্মগ্রহণ করেও অলসতা করে, অন্যের উপর নির্ভর করে দিনযাপন করছেন!
এই বৈষ্যমতা সৃষ্টিকর্তা দেখেন আর ঠিক সেই কারণে শেষ হাসি হাসে সেই মানুষগুলো যারা সৃষ্টিকর্তার পথ অবলম্বন করে প্রতিকূলতা কাটিয়ে এগিয়ে যেতে সক্ষম।
সময় সকলের জন্য নির্দিষ্ট কাজেই তাকে যে যেভাবে ব্যবহার করবে, ফলাফল আসবে সেই অনুযায়ী।
আপনার লেখা খুবই সুন্দর এবং গভীর। এটি সময়ের মূল্য এবং জীবনকে যথাযথভাবে ব্যবহার করার গুরুত্ব সম্পর্কে একটি প্রেরণামূলক বার্তা দেয়। আমরা মাঝে মাঝে নিজেদের নালিশ এবং ঈর্ষার মধ্যে আটকে যাই, অথচ সত্যিকার অর্থে জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত মূল্যবান। আপনার লেখা স্মরণ করিয়ে দেয়, সৃজনশীলতা, পরিশ্রম এবং সময়ের সঠিক ব্যবহার কীভাবে আমাদের জীবনের মান বাড়াতে পারে।
এটি আসলেই এক ধরনের প্রতিফলন, যা আমাদের নিজেকে উপলব্ধি করতে সহায়তা করে এবং আমাদের জীবনের উদ্দেশ্য খুঁজে পেতে উৎসাহিত করে।
Thank you so much
রাতারাতি যারা পরিবর্তনের আশা নিয়ে জীবনে এগিবার প্রয়াস করেন, তাদের পাতে কেবলমাত্র নিরাশা, হতাশা আর ঈর্ষা পড়ে থাকে।
দৃষ্টিভঙ্গি আমাদের জীবনের মূল পাথেয়। যে যেমনভাবে জীবনকে দেখবে, পরিচালিত করবে, পরিশেষে সেই অনুযায়ী ফলাফল পাবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
জীবনের নালিশ নিয়ে, এত সুন্দর করে ছন্দ মিলিয়ে কবিতা তৈরি করেছেন। যা মনমুগ্ধকর ও অতুলনীয়, মানুষ যদি সঠিক সময়ে! সঠিক কাজটা না করতে পারে সময়ের সাথে। তাহলে মানুষ অনেক পিছিয়ে পরে, হয়তো তার জীবনের অংক মিলেনা , এবং পরে মানুষ ভাগ্যের উপরে দোষ দেয়। হ্যাঁ আমরা বেশিরভাগ মানুষই, অন্যকে নিয়ে সমালোচনা করি। বা প্রতিহিংসা করি! কখনো নিজের দিকে ফিরে তাকাই না, যে আমি কে! আমি আপনার কথার সাথে একমত পোষণ করি, নিজের প্রতি নালিশ না করে, অন্যের সমালোচনা না করে। নিজেকে কিভাবে উন্নত করা যায় , কিভাবে সময় কে, সঠিক ব্যয় করা যায়। কিভাবে মানুষের মতন মানুষ হওয়া যায়। আমাদের সবার এই দিগে নজর রাখা উচিত। আপনার পোস্টটি পড়ে জীবনের প্রতি অনেকটাই নালিশ কমে গেল।
আপনি আজকে একটা ভিন্ন রকমের বিষয়বস্তু নিয়ে পোস্ট করেছেন। পড়ে অনেক ভালো লাগলো, ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। আপনার জন্য সব সময় শুভকামনা রইলো।
প্রথমেই ধন্যবাদ আপনার অভিমত প্রকাশের জন্য।
আপনার উপস্থিতি সহ আপনার মন্তব্য সবসময় আমার নজর কাড়ে।
মূল বিষয় হলো অন্যের সাথে নিজের তুলনার পরিবর্তে, অন্যের সমালোচনার বদলে যদি কাজগুলো নিজেকে উন্নতির জন্য ব্যবহার করা যায়, মানে নিজের মধ্যে কি কি ভুল আছে, কিভাবে নিজেকে আরো উন্নত করা সম্ভব সেটাকে বলে সৃজনশীলতা।
আর ইতিহাস সাক্ষী যারা এই কাজটি যারাই করেছে তারা জীবনে দেরিতে হলেও সমাজে নিজেদের নজির রেখে গেছেন সৃষ্টির হাত ধরে।
এখানেই একজন মানুষ ব্যতিক্রমী হয়ে ওঠেন অনেকের থেকে।
নিজের বিফলতা নিয়ে হতাশ হয়ে পড়েন বেশিরভাগ মানুষ অথচ দেখুন থমাস আলভা এডিসন দশ হাজারবার বিফল হয়েও হাল ছাড়েননি তাই আজকে ঘরে ঘরে ইলেকট্রিক বাতি জ্বলছে।
তার দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে তিনি বলেছিলেন, আমি শিখেছি, নয় হাজার নিরান্নই বার এর পদ্ধতি বাল্ব তৈরির সঠিক পদ্ধতি নয়।
বিফলতা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে, এগিয়ে যাওয়ার নাম জীবন।
আপনাকে ধন্যবাদ দিদি, এত সুন্দর একটি উত্তর দেওয়ার জন্য।
Thank you 😊
Best regards
You created exclusive and quality content
We wish you a happy new year 2025
Team 01 - Steemit Explorers Team
@graceleon
Thank you my dear friend @graceleon for your encouraging support 😊😍💕