ছদ্মবেশী! (Duel personality!)

in Incredible India4 days ago (edited)
1000048488.png

লেখাটা গতকাল শুরু করেও শেষ করবার শারীরিক অবস্থায় ছিলাম না!
যবে থেকে সুন্দরবন ঘুরে ফিরেছি, একটা না একটা শারীরিক প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।

এরমধ্যে অনেক ওষুধ আগেই খেয়েছি, দুদিন ঠিক থাকছি, আবার কোন নতুন সমস্যা এসে উপস্থিতি হচ্ছে।

নতুবা লেখা আমি বিশেষ না লিখে থাকি না, আজ চেষ্টা করবো দুটো লেখা লিখে নিজের লেখার সংখ্যা অপরিবর্তিত রাখতে, বাকিটা শারীরিক অবস্থার উপরে নির্ভর!

তবুও বাঁচোয়া গতকাল কমিউনিটির রিপোর্ট লিখে পাবলিশ করতে সক্ষম হয়েছিলাম। এখানে উপার্জন করতে ইচ্ছুক ব্যক্তির সংখ্যা খুঁজে পাওয়া গেলেও, দায়িত্ব নেবার থেকে ঝেড়ে ফেলার মানুষের সংখ্যা বেশি!

বিষয়টা হল, আমি ধীরে ধীরে
মানুষের যত কাছে যাচ্ছি;
সময়ের সাথে তাদের অন্তরের অভ্যন্তরে সুপ্ত দ্বিতীয় চরিত্রটি সময়ের সাথে চিনতে পারছি।
সেটা এতটাই কদর্য্য যে, নিজেকে মানিয়ে নেওয়া একেবারেই সম্ভব নয়!

IMG_20250129_104041.jpg
বাহ্যিক নয়! অভ্যন্তরীণ গঠন আমাদের পৃথক করে, উপস্থিতি ক্ষণিকের হলেও কিছু যায়, আসে না!

উপর থেকে সকলেই মানুষের মতই দেখতে হলেও, তার ভিতরে অবস্থিত থাকে দুটি সত্ত্বা।
কারোর ক্ষেত্রে সদর্থক সত্ত্বার আধিক্য অধিক, আবার কেউ কেউ এই সদর্থক সত্ত্বার অভিনয় এত সুন্দরভাবে করেন যে, বোঝার উপায় নেই তাদের ভিতরে কেবল আত্মস্বার্থে ভরা।

একটা উদাহরণ দিলে হয়তো বুঝবেন,
দেখবেন যে মানুষগুলো দৈনন্দিন জীবনে কাজে আসে, ধরুন আপনি এদের কাজের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয়, তাহলেই এদের দেখা মিলবে, নইলে ভুলে যান!

মানুষ আজকাল মানুষকে ব্যবহার করে! অবাক করা বিষয় হলেও সত্যি!
যদি কোন মানুষ বোঝে অপর পক্ষ থেকে নিজের ভাড়ার ভরা সম্ভব( সেটা আর্থিক, শারীরিক উভয়ক্ষেত্রে) তাহলেই সম্পর্ক টিকিয়ে রাখবে, নইলে মুখ ফিরিয়ে চাইবেও না।

এরা আসলে বাস্তব জীবনের ছদ্মবেশী! কারণ সামনাসামনি পড়ে গেলে এক মুখ হাসি নিয়ে অভিনয়টা বেশ ভালই করে।

আমি তাদের অধিক পছন্দ করি যারা সরাসরি নিজের স্বার্থ তথা পছন্দ অপছন্দের কথা স্পষ্ট ভাষায় বলতে সক্ষম;
আর এই ছদ্মবেশীদের থেকে আমি নিজেকে যতটা সম্ভব দূরে রাখতে চাই।

1000046889.jpg
1000046890.jpg
কিছু ফুল সৃষ্টিকর্তার চরণে নিবেদিত হলেও সব ফুলের জায়গা হয়না ঠিক এই কারণেই যে তারা ভ্রমরকে আকৃষ্ট করতে ব্যস্ত থাকে!

এদের চেনার সহজ উপায়:-

  • নিজেদের কাজে সবসময় আপনাকে পাশে চাইবে, কিন্তু আপনার প্রয়োজন এদের পাশে পেতে চাইলে অজুহাত তৈরি করাই থাকবে!

  • নিজের পছন্দ অপছন্দ নিয়ে পিছনে সমালোচনা করলেও, সেটি মুখের উপরে জানানোর ক্ষমতা থাকে না, কারণ এরা সকলের কাছে ভালো থাকতে পছন্দ করেন!

  • আপনি যদি প্রয়োজনে আসেন, তবেই এরা যোগাযোগ রাখবে, আর যদি বোঝে যোগাযোগ নিজেদের বিশেষ লাভ নেই, তখন সময়ের স্বল্পতার অজুহাত!

  • দায় এড়াতে সিদ্ধহস্ত! সেটা খুব কৌশলের সাথে করে থাকে, যদি বুঝে যায়, সেখানে নিজের আয়ের চেয়ে, খরচের ভয় অধিক!

এই ধরনের বৈশিষ্ট্য যুক্ত মানুষগুলো সমাজকে অভ্যন্তরীন দিক থেকে ঘুন ধরিয়ে দিচ্ছে বলেই, আজ অনেক মানুষ একা থাকা পছন্দ করেন।

IMG_20250129_103450.jpg
IMG_20250129_103507.jpg
এই এক ফসলি কলাগাছের কান্ড থেকে পাতা সবটা ব্যবহার হয়ে গেলে তার প্রয়োজন শেষ!কারণ? সেই গাছ থেকে আর পাবার কিছুই নেই!

এই কয়েকদিন অসুস্থ হবার পর থেকে, পিছু ফিরে চেয়ে খানিক অবাক হয়েছি, কিভাবে আমাকে ব্যবহার করা হয়েছে, আত্মস্বার্থ চরিতার্থে।

নিজের ক্ষতি করে, অন্যের কথা ভাবতে গিয়ে শুধু ব্যবহৃত হয়েছি। অথচ, অপরপক্ষ দিব্যি গা ঝাড়া দিয়ে বছরের পর বছর আমার এই বিশ্বাসকে ব্যবহার করে গেছে।

আমি প্রয়োজনে একবার যদি পাশে পেয়েছি, হাজারবার পাশে থেকেছি তাদের প্রয়োজনে!
কিছু মূহুর্ত এমন ছিল, যখন না বলতে পারবে না বলে নিঃশ্চুপ থেকে জানান দিয়েছে কাজটা করতে পারবে না।

তাই নিজেকে এইসব ব্যালেন্স করা ছদ্মবেশীদের থেকে সহস্র যোজন দূরে রাখবো বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

একটা বিষয় এরা বেমালুম ভুলে যায়, আর সেটা হলো, অলক্ষ্যে মনের সুপ্ত দ্বিচারিতা একজন কিন্তু পড়ছেন।
আমি আগেও লিখেছিলাম, শিশুপাল শ্রী কৃষ্ণের সম্পর্কে ভাগ্নে হয়েও পার পায়নি।

যদি আপনাদের আসে পাশে এমন ছদ্মবেশী দেখেন পারত পক্ষে ঘেঁষবেন না, এরা সূঁচ হয়ে ঢুকবে আর ফাল হয়ে বেরোবে।

এরা স্বার্থ ছাড়া কারোর ছায়া পর্যন্ত মারায় না, কাজেই, এইসব মানুষের সঙ্গের চাইতে একলা পথ চলা অনেক বেশি শ্রেয়, কথায় আছে যার কেউ নেই ভগবান আছেন!

তাই, সৎ পথে থাকলে আর মনের মধ্যে দ্বিচারিতা রেখে ছদ্মবেশীর ভূমিকা পালন না করলে তিনিই রক্ষা করবেন।

দেখবেন কিছু ফুল পুজোয় নিবেদিত হলেও, অনেক ফুল সেই আওতাভুক্ত নয়, আপনাদের কাছে কারণটা জানতে চাই, মন্তব্যের মাধ্যমে জানাতে ভুলবেন না!

1000010907.gif

1000010906.gif

Sort:  
 4 days ago (edited)

আজকে আপনি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের উপর আলোকপাত করেছেন ! যা আমাদের সবার জীবনের সাথে সম্পর্কিত।আপনার লেখা একটি চিরন্তন সত্যের প্রতিফলন, যেখানে সমাজের দ্বিচারিতা এবং ছদ্মবেশীদের মুখোশ খুলে দেওয়া হয়েছে,ছদ্মবেশী মানুষদের চেনার ও তাদের থেকে সতর্ক থাকার পরামর্শ খুবই প্রাসঙ্গিক। একদিন হয়তো আমরা বুঝতে পারবো, একলা পথই আমাদের সত্যিকারের শান্তি ।আপনি সত্যিই খুব ভালোভাবে আপনার পোস্টে তুলে ধরেছেন ! কিভাবে কিছু মানুষ শুধুমাত্র নিজেদের স্বার্থের জন্য অন্যদের ব্যবহার করে। সমাজে এমন মানুষের সংখ্যা কম নয়, কিন্তু আমাদের উচিত তাদের থেকে দূরে থেকে সৎ পথেই চলা।

আপনি যে বিষয়টি তুলে ধরেছেন, তা আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, জীবনে সৎ থাকতে গেলে কিছু ত্যাগ এবং সাবধানতা জরুরি। আপনার পোস্ট পড়ে খুব ভালো লাগলো! ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন, আপনার জন্য সব সময় শুভ কামনা রইল দিদি।


Best regards
You created exclusive and quality content
We wish you a happy new year 2025
Team 01 - Steemit Explorers Team

image.png

@damithudaya

 4 days ago 

Thank you @damithudaya Sir for supporting me 💕 🙏

 3 days ago 

আমি বরাবর স্পষ্টভাষী সেই অর্থে হয়তো ছিলাম না, একদম যখন ছোট বাবা কাউকে টাকা ধার দিয়েছে, হয়তো লজ্জার কারণে ফেরৎ চাইতে পারতেন না, আমাকে পাঠিয়ে দিতেন এবং শিখিয়ে দিতেন বলবে, জ্যেঠু বাবার কাছে টাকা শেষ হয়ে গেছে, তাই তোমার কাছে বাবার যে টাকাটা আছে, সেটা কি তুমি দেবে?

আমি কথাটা নিজের স্টাইলে বলতাম, ঐ বাড়িতে আমার বেশ যাতায়াত ছিল, মা এর হাত থেকে পালিয়ে বহুবার আশ্রয় পেয়েছি!

কাজেই, বাড়ির উঠোন থেকেই চিৎকার ও.... ও.... জ্যেঠু বাবা পাঠিয়েছে তোমার কাছে বাবা টাকা পায় সেটা ফেরত নিতে।

সত্যি বলতে অতগুলো কথা গুছিয়ে বলতে যা সময় ব্যয় হবে তার চাইতে সোজা কথা সোজা ভাবে বলে দিতাম।

তবে, আমার মা এবং বাবা মারা যাবার পর বাস্তবের নগ্ন রূপ দেখে নিজেকে অনেক কঠিন করতে হয়েছে।

 3 days ago 

এই কমেন্টের উত্তরের মাধ্যমে! আপনার সম্পর্কে আরো কিছু জানতে পারলাম। আপনি জীবন থেকে অনেক কিছুই শিক্ষা দিয়েছেন।

 4 days ago 

বর্তমান সময়ে আসলে এই ধরনের মানুষ অনেক বেশি দেখতে পাওয়া যায়। বিশেষ করে আমরা যদি আমাদের পরিবারের কথা বলি। আমরা প্রতিনিয়ত যাদেরকে রান্না করে খাওয়াই বা তাদের পাশাপাশি থাকি। তাদেরকে সাহায্য করি শুধুমাত্র কোন একদিন আপনার সমস্যার কারণে আপনি কোন একটা কাজ করতে পারেননি। তখনই কিন্তু তাদের আসল রূপটা বেরিয়ে আসে।

আমার মনে হয় আমি সামনে যেমন পেছনেও ঠিক একই রকম থাকা উচিত। একই মানুষের দুইটা রূপ অনেকবার দেখেছি কিন্তু সেটা দেখে আমি অবাক হয়েছি। অবাক হওয়ার বর্তমান সময়ে কিছুই নেই, মানুষ নিজের রূপ পরিবর্তন করতে অনেক বেশি পারদর্শী।

এই ধরনের মানুষ বর্তমান সময়ে অনেক বেশি দেখা যায় নিজের পরিবারের মানুষগুলোকেই ঠিকমতো এখন চেনা যায় না। একটু পরিবর্তন হলেই দেখা যায় তাদের মুখ ভার করা অনেক কথা শুনতে হয়। আসলে মানুষ স্বার্থের কারণেই ভালোবাসে স্বার্থ শেষ আপনাকে ভুলে যাবে।

 3 days ago 

সেই এখন তো সম্পর্ক শুধু হিসেবের! লাভ লোকসান মেপে একে অন্যের পাশে দাঁড়ায়!
দিতে পারলে ভালো নইলে কালো!
তবে, তাতে বিশেষ কিছু যায় আসে না, কারণ একজন অন্তরালে বসে কোনটা সাদা আর কোনটা কালো কার মনে চলছে পড়তে সক্ষম।

 4 days ago 

দিদি আপনার লেখা খুবই গভীর এবং চিন্তাভাবনা উদ্রেককারী। আপনি যে ছদ্মবেশী মানুষদের কথা বলেছেন, তারা সত্যিই সমাজের জন্য ক্ষতিকর। নিজেদের স্বার্থের জন্য অন্যদের ব্যবহার করা এবং মনের মধ্যে দ্বিচারিতা রাখা কোনোভাবেই সঠিক নয়। আপনি যেভাবে এই বিষয়টি তুলে ধরেছেন, তা অনেককে সচেতন করবে। একজন সৎ মানুষের পথেই চলা উচিত, আর যারা নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করতে অন্যদের ব্যবহার করে, তাদের থেকে দূরে থাকাই শ্রেয়। সত্যিকার অর্থে, সৎ পথই দীর্ঘমেয়াদে সেরা পথ।

 3 days ago 

আমাদের সকলের মধ্যেই অল্প বিস্তর ছদ্মবেশী বাস করে একবার ভেবে দেখবেন।

অনেক সময় আমরা চাইলেও মনের কথা মুখে আনতে পারি না! অপছন্দ হলেও মিষ্টি হেসে কথা বলতে হয়, এরকম অজস্র উদাহরণ আছে।


Best regards
You created exclusive and quality content
We wish you a happy new year 2025
Team 01 - Steemit Explorers Team

image.png

@damithudaya

Loading...
Loading...

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.24
JST 0.037
BTC 99591.56
ETH 3097.25
SBD 3.71