অন্যের পরিস্থিতি উপলব্ধি করতে হলে, একই পথে হাঁটার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
যতক্ষণ আমরা সুদিনের মাঝে দিন অতিবাহিত করি ততক্ষণ কিন্তু আমাদের কাছে সব পরিস্থিতি সহজ এবং সাবলীল বলে মনে হয়।
এমনকি অন্যের পরিস্থিতি নিয়ে সমালোচনা করতে একটুও কার্পণ্য করিনা। তবে যেটি মনে রাখার বিষয় পরিস্থিতি কারোর কখনোই এক্ রকম থাকে না।
ছোটবেলায় শোনা একটা গানের দুটো লাইন এখানে উল্লেখ করলে হয়তো লেখার বিষয় বেশ খানিকটা সুস্পষ্ট হবে।
গানটি হয় কেউ শুনেছেন, আবার অনেকেই শোনেন নি ।
আজকে যে রাজা ধীরাজ..
কালকে ভিক্ষা চায়!
চিরদিন কাহারো সমান নাহি যায়।"
আমরা কেবলমাত্র অন্যের পরিস্থিতি উপলব্ধি করতে পারি, যখন আমাদের একই পথে হাঁটার অভিজ্ঞতা থাকতে থাকে।
বাকি সময় কথাগুলো বাড়তি জ্ঞান বলে পাত্তা দিতে চাই না।
যেমন হারালে, পাওয়ার মূল্য বোঝা যায়। ঠিক তেমনি নিজে একই পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে গেলেই অন্যের পরিস্থিতি অনুধাবন করা যায়।
আজকে কথাগুলো বলছি গত কালের একাকীত্বের অনুভতির মধ্যে যাবার পরে।
সম্পর্ক যখন থাকে, কাছের মানুষগুলোকে অপমান করতে, হেয় করতে দু'বার আমরা ভাবি না।
অথচ তারাই যখন আমাদের হাত ছেড়ে চিরতরে হারিয়ে যায়, তখন সম্পর্কের পাশাপাশি অন্যেরা যারা এই পরিস্থিতির স্বীকার তাদের মনোভাব অনুধাবন করতে সক্ষম হই।
যাদের জীবনে এখনও মাতা পিতা বর্তমান তাদের উদ্দেশ্যে আজকে আমার এই লেখা।
অনেক সময় ক্রোধের বশবর্তী হয়ে এমন অনেক কথা তাদের আমরা বলে ফেলি, যার প্রতিউত্তর তারা হয়তো দেন না, মুখ বুজে সন্তানের ছেলেমানুষী ভেবে চুপ করে থাকেন।
তারা কিন্তু ভিতরে কষ্ট পান না, এমনটি নয়!
তাহলে কেনো তারা এসকল ব্যবহার মেনে নেন?
কারণ, মা বাবার কাছে সন্তান চিরদিন ছোটই থাকে।
আর ঠিক সেই কারণে সব দোষ বেশিরভাগ সময় নিজের উপরে নিয়ে সন্তানকে রক্ষার প্রয়াস করেন।
বাইরে থেকে চক চক করলেই যেমন ভাবার কোনো মানে নেই যে সেটা সোনা!
তেমনি অন্যের দৈনন্দিন হাসিমুখ বা তার পোশাক দেখে এটা ও ধরে নিতে নেই যে ব্যাক্তিটির জীবন দুঃখ বহির্ভূত!
জানবেন, মা বাবা অনেক সময় হাসিমুখে অনেক কিছু মেনে নিলেও তাদের ভিতরের যন্ত্রণা আমরা অনেক সময় উপলব্ধি করতে অক্ষম।
এখানে উপস্থিত সকলেই জানেন গতকাল আমার জন্মদিন ছিল।
আমি সেই সকল মানুষের দলে সামিল যারা অকালে মা বাবার ছত্র ছায়া হারিয়েছেন।
আর ঠিক সেই কারণে যেমন বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতা হয়েছে একটা পথ পাড়ি দিতে গিয়ে, ঠিক তেমনি বুঝেছি কিছু সম্পর্কের ব্যতিক্রম কখনোই হয় না।
পিছনে সমালোচনা করা, অন্যের পরিস্থিতি, জীবনযাপন নিয়ে ব্যঙ্গ করা, তাদেরকে কিছু পরামর্শ দেওয়া এরকম অনেকের সাথেই হয় এই কথাগুলো বলা সহজ কাজ!
কথাগুলোর প্রকৃত মূল্যায়ন সম্ভব তখন;
যখন সেই একই পরিস্থিতির স্বীকার আমরা নিজেরা হই।
আমাকে অনেকেই বলে এই একাকীত্বের জীবন ভালো, যেখানে কাউকে জবাবদিহি করতে হয় না, পূর্ণ স্বাধীনতা আছে, ইচ্ছে হলে রান্না করলাম নইলে নয়, কেউ জিজ্ঞাসা করার অথবা প্রশ্ন করার নেই কেনো রান্না করিনি।
একদিক থেকে কথাগুলো সত্যি, কিন্তু দৃষ্টিভঙ্গি একটু পৃথক করে যদি দেখি তাহলে, কেনো খাইনি, বাড়ি ফিরতে দেরি হলে দুশ্চিন্তা করা, কোনটা করা উচিত আর কোনটা নিজের জন্য সঠিক নয় সেরকম শুভাকাঙ্ক্ষীর কি সত্যি প্রয়োজন নেই?
এরপর অসুস্থ হলে এক গ্লাস জল এগিয়ে দেবার মানুষের সত্যি কি প্রয়োজন হয় না?
রবীন্দ্র রচনাবলী তে একটি বানীর সাথে আমরা কম বেশি সকলেই পরিচিত আর সেটা হলো:-
ওপারের সর্ব সুখ, আমার বিশ্বাস।
নদীর ওপার বসে দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে;
কহে, যাহা কিছু সুখ সকলি ওপারে।
আমরা যে পরিস্থিতিই থাকি না কেন, সর্বদা অন্যদের সুখী আর খুশি ভেবে থাকি।
তবে, যখন নিজেকে সেই পরিস্থিতিতে পড়তে হয়, তখন আসল বিষয় উপলব্ধি করতে পারি।
কথা বলা আর পরিস্থিতি থেকে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে নিয়ে কথা বলার পার্থক্য হলো একটায় সমালোচনা আর অন্যটায় থাকে সহমর্মিতা।
বাস্তব জীবনে সকলেই নিজের জায়গায় দাঁড়িয়ে সমস্যার সম্মুখীন, কাজেই নিজের সমস্যা শ্রেষ্ঠ এবং অন্যেরটা বাতুলতা মাত্র এই ভাবনা থেকে সর্বাগ্রে বেরিয়ে আসার প্রয়োজন আছে।
উপরিউক্ত বিষয়বস্তু তে সম্পূর্ণ নিজের অভিমত প্রকাশের প্রয়াস করেছি, সহমত পোষণ এর আশা নিয়ে নয়।
"চিরদিন কাহারো সমান নাহি যায়,
আজকে যে রাজা ধীরাজ..
কালকে ভিক্ষা চায়!
চিরদিন কাহারো সমান নাহি যায়।"
এই গানটি আমার আজ প্রথম শুনা,, আপনি ঠিক বলেছেন আমরা যেই পরিস্থিতি তে থাকিনা কেন,, অন্যর সুখী বা খুশি উপলব্ধি করি,, কিন্তু আমাদের ভিতর এর পরিস্থিতি কেউ উপলব্ধি করে না নিজের সমস্যা নিজেই সমুখে নিজে দাড়িয়ে সমাধান করতে হয়। অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর একটা পোস্ট করার জন্য।
মানুষকে নিয়ে সমালোচনা করা আমাদের সহজাত স্বভাব। তবে একজন ব্যক্তি তখনই বুঝতে পারে যে অন্য আরেকজন ব্যক্তির জায়গায় যায় এবং একই রকমের পরিস্থিতির শিকার হয়।
মাঝে মাঝে আমরা আমাদের পিতা-মাতাকে অকারণে কষ্ট দিয়ে থাকি এবং তাদেরকে দেওয়া কষ্ট গুলো পিতা-মাতারা কিছু মনে করে না এবং কারণ পিতা মাতারা সবসময় মনে করেন আমার সন্তান ছেলেমানুষই করছে এবং এখনো অনেক ছোট আছে। তবে ছোটবেলায় আপনি পিতা পাতার স্নেহ হারিয়েছেন কথাটি শুনে বেশ খারাপ লাগলো
তবে অবশ্যই আমাদেরকে সকলের সমস্যাগুলোকে সমস্যা মনে করতে হবে। নিজের সমস্যাটাই যে বড় তা কিন্তু না। নিজের জায়গা থেকে অন্যের কষ্ট অনুভব করা না গেলেও এ বিষয়ে আমাদের কখনো সমালোচনাকারী হওয়া ঠিক না
আসলেই আপন মানুষ এখন কাছে থাকে তখন আমরা তাদের গুরুত্ব দেই না। তারা কোন কিছু বললে আমাদের মেজাজ খারাপ হয়ে যায়। আমরা তাদের সাথে বাজে কথা বলা শুরু করি। একটা বারও চিন্তা করি না তারা যখন আমাদের পাশে থাকবে না। তখন আমাদের জীবনটা কেমন হবে মাঝে মাঝে আমি নিজে উপলব্ধি করি। যাদের বাবা মা এই পৃথিবীতে বেছে নেই তারা এই পৃথিবীতে কতটা কষ্টে বসবাস করছে।
কথাগুলো চিন্তা করতে করতে মাঝে মাঝে নিজের চোখ দিয়ে জল পড়তে শুরু করে। আর তখনই বুঝতে পারি আমাদের জীবনটা কতটা কঠিন। আসলে একাকীত্ব থাকাটা অনেক বড় কঠিন। আবার মাঝে মাঝে দেখা যায় একা থাকা অনেক ভালো। অন্ততপক্ষে আপন মানুষের কাছ থেকে পাওয়া অবহেলার যে যন্ত্রনা সেটা সহ্য করতে হয় না। আজকে আপনার পোস্টে উল্লিখিত প্রত্যেকটা কথা অনেক মূল্যবান। অবশ্যই অন্যের পরিস্থিতি বুঝতে হলে আমাকে সেই পরিস্থিতি দিয়ে যেতে হবে। তাহলেই আমি বুঝতে পারবো। আশা করি আপনার আগামী দিনের পথ চলা অনেক বেশি সুন্দর হবে।
পৃথিবীতে সবচেয়ে সহজ কাজগুলোর মাঝে একটা হলো কোন কিছু সম্পর্কে একটা ধারনা করা আরকটা হলো ভালোমতো কিছু না জেনে অন্যের দিকে সমালোচনার আঙুল তোলা।
প্রতিটি মানুষেরই নিজস্ব কিছু সমস্যা কস্টবোধ থাকে।এটা বাইরে থেকে একদমই বোঝা যায় না।যতক্ষন পর্যন্ত সেইখানে নিজে না দাড়ানো যায়।
পরিবারের সদস্যরা সবসময়ই নিজেদের পরিবারের সদস্যদের আগলে রাখে। বিশেষ করে বাবা মায়েরা।আমি নিজে একজন মা হিসেবে বলতে পারি যে,অনেক সময়ই বাচ্চারা অনেক কিছু বলে ফেলে কিংবা এমন কোন আচরণ করে, সেটা যে আমাকে কস্ট দেয় না এমন না।যদিও আমি ওই সময়টা চুপ থাকলেও পরবর্তী সময়ে এটা নিয়ে কথা বলি এবং জানতে চাই যে তুমি যে এই আচরণ তখন করলে এটা ঠিক আছে কিনা?
কিন্তু এই কাজটা খুব কম বাবা মাই করে থাকেন।সাথে সাথে বাবা মায়েরদের একটা স্বভাব থাকে বাচচার দোষ ঢেকে নেয়া।এটা অতিরিক্ত ভালোবাসা থেকেই করে থাকেন। যদিও এই জিনিসটা সাময়িকভাবে বাচচাকে অন্যদের নজরে ভালো করলেও দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি করে থাকে।
আর এই ক্ষতির জন্য আমরা নিজেরাই দায়ী। পরিবার যেমন ভালো করতে পারে তেমনি ক্ষতিও করগে পারে।সবকিছুর পরেও একা থাকার চেয়ে সবার সাথে থাকাটাকেই বেশি ভালো মনে হয় আমার।আমি ছোট পরিবার থেকে এসে জয়েন্ট পরিবারে এসে পরেছিলাম। তখন ভালো লাগে নাই আমার শুরুতে কিন্তু একটা সময় আমি বুঝতে পারলাম এখানে অসুবিধার চেয়ে সুবিধাই বেশি।
আসলে এটা দৃষ্টিভঙ্গির বিষয়। আমি কিভাবে চিন্তা করছি।
আপনি খুব চমৎকারভাবে আপনার মনের কথাগুলো তোলে ধরেছেন আপনি।
ভালো এবং সুস্থ থাকবেন সবসময়।
Mem @sduttaskitchen can i work in this community??
Certainly you can my friend just join us on discord to familiar with the community and it's regulations. You will get our discord link inside the pinned post.
Okay I definitely join you discord ☺️