Better Life With Steem | The Diary game 10, December |
প্রতিদিনই চেষ্টা করি একটু সকালবেলা ঘুম থেকে ওঠার জন্য। তাহলে সকালবেলায় ধীরে সুস্থে নিজের জন্য সময় বের করতে পারি। কিন্তু রাতের বেলা ভাঙ্গা ভাঙ্গা ঘুম হওয়ার কারণে আজকে ঘুম থেকে উঠতে অনেকটাই বেলা হয়ে গেছে। তাই তাই ঘুম থেকে উঠে কোন রকমে ফ্রেশ হয়েই রান্না ঘরের দিকে দৌড় দিয়েছি নাস্তা বানানোর জন্য।
আমার সবচেয়ে বিরক্ত লাগে এই নাস্তা বানানো। যতভাবে সম্ভব আমি চেষ্টা করি এই কাজটাকে সহজ করতে।আগে বুয়াকে দিয়ে রুটি বানিয়ে রাখতাম কিন্তু কেউই তেমন একটা পছন্দ করে না বুয়ার বানানো রুটি। তাই যতই বিরক্ত লাগুক না কেন এই কাজটা আমিই করি। অবশ্য এখন ছেলেরা আগের মতো নাস্তা করে সাথে বাসার মানুষও কমে গেছে তাই খুব বেশি ঝামেলাও নেই আগের মতো।এখন রুটি বানিয়ে হালকা সেকে রাখি সেটা দিয়েই কাজ চালাই।
কিন্তু আজকে এত কম সময়ে রুটির সাথে কি দিবো সেটা নিয়ে চিন্তায় ছিলাম খানিকটা। পরে অবশ্য আর বেশি কিছু না করে দ্রুত ডিম ভাজা আর স্যালাড বানিয়ে দিলাম।
হাবিকে দেখলাম সকাল বেলাতেই মন খারাপ। কারণটা জেনে অবশ্য আমারও কিছুটা মন খারাপ হয়ে গেলো। আজকের দিবাগত রাতেই আমার শাশুড়ি মারা গিয়েছিলেন ৪ বছর আগে । ওই সময়টা আসলেই খুব খুব খারাপ ছিল।
একদিকে আমার শাশুড়ি মা ক্যান্সারের সাথে যুদ্ধ করছিলেন আরেকদিকে ভাগ্নের মেয়েকে জন্মের পর সপ্তাহখানেক ইনকিউবেটরে এরপর লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল। ওর হাসপাতাল কাছে ছিল বলে ভাগ্নে তখন আমাদের বাড়িতেই বেশি আসা-যাওয়া করতো। আমার ননাস আর ভাগ্নেকে ভেঙে পড়তে দেখেছি। এক সপ্তাহের মাঝে দুটো মৃত্যু দেখতে হয়েছিল খুব কাছ থেকে।
নাস্তা করে সে ব্যাংকে চলে যাওয়ার পরে গাছগুলোকে রোদ দিতে গিয়ে দেখলাম বাইরেটা কুয়াশায় সাদা হয়ে আছে। একদিন লালচে হয়ে থাকতো কিন্তু আজকে সাদা হয়ে আছে।
এরই মাঝে দেখলাম ছেলে উঠে এসেছে। ওকে বললাম যে, চল একদিন কুয়াশা দেখতে ভোর বেলাতে বের হই।অনেক দিন আসলে আমাদের ঢাকার বাইরে থাকার জন্য যাওয়া হচ্ছে না। এই জিনিসটা খুব মিস করি আমি।
Edited by Canva |
---|
এরপর রান্নাঘরে ঢুকে পরলাম দুপুরের রান্না শেষ করতে। আজকে যে আমার হাবির জন্মদিন সেটা বেমালুম ভুলে গিয়েছিলাম । শুধু আমি না ছেলেরাও ভুলে গিয়েছিল। ওরা বড়ো হওয়ার পর থেকে জন্মদিন এর মতো বিষয়গুলো ওরাই মনে রাখে।রান্না শেষ করার কিছুক্ষন পরে আমার ছোট ছেলে এসে বলতেছে যে, আজকেতো বাবার জন্মদিন।
এটা শোনে ওকে বললাম যে, মনে নাই তো নাই-ই । এটা নিয়ে তোমার বাবাকে আর কিছুই বলার প্রয়োজন নেই , সারপ্রাইজ দিব আসলে।
সন্ধ্যার দিকে ছেলেকে একটা কেক ও কয়েকটা চিকেন বলের স্টিক নিয়ে আসতে বললাম। আর আমি মুরগী, বেগুন ভাজা আর পোলাও রান্না করলাম।
Edited by Canva |
---|
এরই মাঝে হাবিও চলে আসলো।রাতের খাবার শেষ করে কেক কাটলো বাচ্চারা।হাবির মন দেখলাম সকালের চেয়ে আরো বেশি খারাপ ।এই মাসে আমার বাবাও মারা গেছে। কিন্তু কিছু করার নেই এটাই জীবন। হাসি -আনন্দ আর কান্না পাশাপাশি চলে। কস্টটাকে এক পাশে ঠেলে রেখে আমাদেরকে সবার সাথে সামনে এগিয়ে যেতে হয় হাসিমুখে।
প্রথমে জানাই হাবিব ভাইকে শুভ জন্মদিন 🌺।আপনার পরিবারের জন্য ভালোবাসা রইলো। জন্ম ও মৃত্যু এটা মানুষের হাতে নাই আমরা সবাই জানি। সকল কিছু সৃষ্টিকর্তার হাতে তিনি কখন কাকে নিয়ে যাবে,এটা আমাদের সৃষ্টিকর্তা আগে থেকে নির্ধারণ করে রেখেছে। আমরা তো মানুষ তাই পরিস্থিতি যেমনই হোক আমরা গুছিয়ে নিতে পারি।আমি জানতে পারলাম আপনার পোস্টটি পড়ে যে এই মাসে আপনার শাশুড়ি মারা গিয়েছে আপনার ননাস এর বাচ্চাটি মারা গিয়েছে এমন কি আপনার পিতা ও মারা গিয়েছে। যাই হোক সৃষ্টিকর্তা যা করে আমাদের ভালোর জন্যই করে,আর সবচাইতে ভালো লাগলো আজকে হাবিব ভাইয়ের জন্মদিন মন খারাপ থাকলেও কিছুটা সময় আপনাদের পাশে পেয়ে হয়তো কষ্টগুলো ভুলে যাবে। আপনার পোস্টটি পড়ে ভালো লাগলো ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।
স্বামীকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানানোর জন্য জানানোর জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। একদম ঠিক কথা বলেছেন সৃষ্টিকর্তা যা কিছু করে সেটা মানুষের মঙ্গলের জন্যই করে।
আপনার মন্তব্য করে ভালো লাগলো। ভালো থাকবেন সব সময়
@sayeedasultana শেষ ভালো যার সব ভালো, কাজেই দিনশেষে জন্মদিন পালন করতে পারা এবং আপনার স্বামীকে উপহারস্বরূপ স্বযত্নে আপনার হাতের ছোঁয়া দিনটিকে একটি অন্য মাত্রা দিয়েছে।
চলার পথে জীবন ভিন্ন অভিজ্ঞতা দিয়ে আমাদের নিয়ে যায় এটা বোঝাতে সম্পর্ক কতখানি মূল্য রাখে আমাদের জীবনে।
তাই খারাপ লাগা গুলোকে পাশে নিয়ে তাদের জন্য বাঁচতে হয়, যারা সংগোপনে কিছু আশা নিয়ে আমাদের পথ চলায় পাশে থাকেন।
যদিও বেশ দেরি করে ফেললাম আপনার লেখায় নিজের মন্তব্য প্রকাশ করতে, তবে আমার পক্ষ থেকে আপনার বেটার হাফ কে জন্মদিনের অনেক শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করছি।
আশাকরি, এই বার্তা আপনি আমার পক্ষ থেকে ওনাকে পৌঁছে দেবেন। আপনাদের আগামী পথচলা সুগম এবং সুদীর্ঘ হোক এই কামনা করি। ভালো থাকবেন সবসময়।
'চলার পথে জীবন ভিন্ন অভিজ্ঞতা দিয়ে আমাদের নিয়ে যায় এটা বোঝাতে সম্পর্ক কতখানি মূল্য রাখে আমাদের জীবনে।'আপনার লেখা এই লাইনটা পড়ে আমি চিন্তা করতেছিলাম যে, আসলেই কতটা বাস্তবতা আপনি তুলে ধরেছেন এই দুটো লাইনের মাঝে।
একদমই ঠিক বলেছেন যে, আমাদেরকে সব কস্ট পাশে ফেলে বাচতে হয় আমাদের পাশে থাকা মানুষগুলোর জন্য।
তবে দেরিতে হলেও আরো একটা জিনিস আমি বুঝতে শিখেছি যে অন্যদের সাথে সাথে নিজেকে ভালো রাখাটাও জরুরি সব দুঃখ -কস্টকে পাশে ফেলে।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এত চমৎকার করে আমার স্বামীকে জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানানোর জন্য। সে-ও আপনাকে ধন্যবাদ জানাতে বলেছে।
আমারও আপনাকে রিপ্লাই দিতে দেরি হয়ে গেল।গতরাতেই আমি আপনার কমেন্ট দেখেছিলাম কিন্তু বাইরে ছিলাম তখন।ভেবেছিলাম বাসায় গিয়ে রিপ্লাই দিব কিন্তু পরে ভুলে গিয়েছিলাম।
ভালো থাকবেন সবসময়।