"আমার প্রিয় পোষ্য পিকলুকে নিয়ে নিজস্ব কিছু কথা"
![]()
|
---|
HELLO,
EVERYONE
বেশ কিছুটা ভারাক্রান্ত মন নিয়ে পোস্টটা লিখতে বসলাম। পূর্বের অনেকগুলো পোস্টে আমি হয়তো আপনাদেরকে জানিয়েছে পিকলুর শরীরটা অনেক খারাপ। পশমে জট পড়ে যাওয়ার কারণে, ওর পশমগুলো কেটে দিয়েছি।
এখন ওর যা চেহারা হয়েছে, তার ছবি আপনি আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করতে পারবো না। কারণ আমি চাই যারাই আমার পিকলুকে দেখেছেন, তাদের মনে ওর পুরোনো চেহারাটাই থাকুক। প্রতিদিন আমি যখন পিকলুকে চোখের সামনে দেখি, আমার মন একটু একটু করে ভেঙে যায়।
![]()
|
---|
আপ্রাণ চেষ্টা করেও যদি নিজের মানুষকে সুস্থ করে তোলা না যায়, সেই অসহায়তা আসলে লিখে বোঝানো খুবই কঠিন। কিন্তু তবুও যেহেতু পিকলু আপনাদের কাছে পরিচিত, অনেকেই আপনারা ওকে ভালবাসেন, তাই ওর শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে আপনাদেরকে জানানোর জন্যই বলতে পারেন আজকের এই পোস্ট লেখা।
সত্যি কথা বলতে অবলা প্রাণীদেরকে পোষা খুব কঠিন একটা কাজ। আমরা আমাদের শারীরিক অবস্থার কথা, কষ্টের কথা, মুখে বলে অন্যকে বোঝাতে পারি। কিন্তু যারা নিজেদের কষ্ট মুখে বলে বোঝাতে পারে না, তাদেরটা বুঝে নেওয়াটা আসলেই কঠিন।শুরুর দিকে যতখানি কঠিন মনে হতো, এখন যেন এই পিকলুর চোখের ভাষা পড়তে আমার এতটুকুও কঠিন মনে হয় না। সেটা ওর কষ্ট হোক, ওর অভিমান হোক, কিংবা রাগ, প্রতিটা জিনিসই আমার কাছে একেবারেই স্পষ্ট।
![]()
|
---|
পিকলুর লিভারের সমস্যা ছিল জন্ম থেকেই। ওষুধ খাওয়ানো হয়েছিল নিয়মিত। এমনকি ওর ভ্যাকসিন গুলো দিতেও আমরা কখনো লেট করিনি। ডাক্তার যেভাবে বলেছে তেমনভাবেই কৃমির ওষুধ দিয়েছি। তৎসত্ত্বেও গত প্রায় এক বছর ধরেও শারীরিক অবস্থা ক্রমাগতই অবনতির পথে চলছে।
ডাক্তারের সাথে কথা প্রসঙ্গে এটাও জানতে পারলাম, বাড়ির কোনো মানুষের শারীরিক অবস্থার সাথে ওদের শারীরিক অবস্থাও বেশ খানিকটা জড়িত থাকে। একটা সময় শশুর মশাই ওর সম্পূর্ণ দেখাশোনা করতো। ওনার সাথে ওর বন্ডিংটাও বেশ ভালো ছিলো। প্রতিদিন সন্ধ্যাবেলায় চিরুনি নিয়ে বারান্দায় বসে পশম আঁচড়ে দিতেন শ্বশুরমশাই।
![]()
|
---|
তবে গত দু'বছর যাবৎ কিছুই করতে পারেন না। ওর সাথে খেলাও করেন না, ছাদে গিয়ে সময়ও কাটান না, ফলতো মনে মনে খানিক ডিপ্রেশনে ভুগছে পিকলু। আসলে আমরা ভাবি ডিপ্রেশন শুধু আমাদের হয়, কিন্তু না অনুভূতির দিক থেকে এই প্রাণীগুলোর সাথে আমাদের পার্থক্য থাকে না এতোটুকুও। পার্থক্য শুধু একটা জায়গাতেই, আমরা কথা বলে বোঝাতে পারি আর ওরা সেটা পারে না।
বহুবার করে ওষুধ পাল্টানো হয়েছে ওর। খাবারের স্বাদও পাল্টে দিয়ে দেখেছি, তবে শারীরিক অবস্থার যে খুব বেশি উন্নতি হয়েছে এমনটা নয়। আজকাল সিঁড়ি দিয়েও উপরে উঠতে পারে না। অথচ একটা সময় ছিল আমাদের কাউকে ওর আগে সিঁড়ি দিয়ে ছাদে উঠতে দিতো না। পায়ের ফাঁকা দিয়ে হোক, সাইড দিয়ে হোক, যে কোনো উপায়ে ও সবার আগে সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠতো।
![]()
|
---|
![]()
|
---|
তবে আজকাল যখন দেখি উপরে ওঠার জন্য সিঁড়ির কাছে গিয়ে আমাদের কারোর জন্য অপেক্ষা করছে, যাতে ওকে কোলে নিয়ে ছাদ পর্যন্ত পৌঁছে দিতে পারি। তখন আমার নিজের ভিতরে অসহায়তা কাজ করে। আমি দুর্বল হয়ে পড়ি।
প্রতিদিন ওকে নিজের হাতে খাইয়ে দিই এখন, কিন্তু খেতে চায় না একেবারেই। অথচ একটা সময় ছিল ওর খাবারের বাটি হাতে নিলে, এদিক ওদিক দৌড়াত খাবারের জন্য। তখন খাবার ঠান্ডা হওয়ার সুযোগ পর্যন্ত দিতো না, খাওয়ার জন্য এতটাই পাগল হয়ে যেতো। আজকাল ওর সেই পাগলামিটা একেবারে নিস্তেজ হয়ে গেছে।
বাড়ির পাশ থেকে একটা বিড়াল যেতে পারত না, অথচ আজ অচেনা মানুষ কলিং বেল বাজালেও পিকলুর ছুটে যাওয়ার শক্তিটুকু নেই। আগে আমি খাটে বসে থাকলে এক লাফে খাটে উঠে বসে থাকতো। আবার বকা দিলে নেমেও যেতো।
![]()
|
---|
আজকাল খাটের সামনে এসে আমার দিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে, কারণ খাটে উঠে বসার শক্তিটুকু ওর নেই। আমি কোলে করে খাটে তুলে দিলে তবেই ও বসতে পারে। সত্যি কথা বলতে পিকলুকে এমন ভাবে দেখতে আমি অভ্যস্ত নই বলে, ভিতরে ভিতরে আমি কেমন যেন ভেঙে পড়ছি।
অনেকগুলো দিন ধরে ওর শরীর অনেক বেশি খারাপ। ওষুধ নিয়মিত খাওয়ালেও আমি সত্যিই কিছু উন্নতি দেখতে পারছি না। তাই ওকে আর ধরে রাখতে পারবো না এই ভাবনাটাই বারংবার মনের মধ্যে উঁকি দিচ্ছে। ভবিষ্যৎ সম্পর্কে তো জানিনা তবে আশঙ্কা মন থেকে দূর হচ্ছে না কিছুতেই।
![]()
|
---|
![]()
|
---|
![]()
|
---|
![]()
|
---|
ঈশ্বর জানি না আমার সাথে কেন এমন করেন, মানুষের কাছ থেকে ভালোবাসা পাওয়ার আশা অনেক আগেই ত্যাগ করেছি, কিন্তু দুর্বলতা পুরোপুরি কাটিয়ে উঠতে পারিনি। তবে জীবনের অনেক খানি জায়গা জুড়ে আছে আমার পিকলু। ওই জায়গাটা ফাঁকা হয়ে গেলে আসলে কতখানি নিজেকে সামলে রাখতে পারবো, এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে বুঝতে পারছি না।
হয়তো আমি মরে যাবো না। তবে বেঁচে থাকার মধ্যেও অনেকখানি শূন্যতা থাকবে এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। যাইহোক আজকের পোস্টে পূর্বের কতগুলো ছবি আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম, যখন ওকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে গিয়েছিলাম।
ওষুধ খেতে চায় না একেবারেই, অনেক কষ্টে ইনজেকশনের সিরিঞ্জ দিয়ে ওকে ওষুধ খাওয়াই। আপনাদের প্রত্যেকের কাছে এটুকুই অনুরোধ করবো, ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করবেন হয় ওকে সুস্থতা প্রদান করুক, না হলে ওকে কষ্ট থেকে মুক্তি দিক, ওর কষ্টটা আসলেই চোখে দেখা যায় না। যাইহোক ভালো থাকবেন সকলে।
পিকলুর প্রতি আপনার ভালোবাসার সত্যিই প্রশংসনীয়। অসহায়েত্বর অনুভূতি যে কতটা কষ্টদায়ক তা আপনার লেখার প্রতিটি শব্দই স্পষ্ট। ওর বর্তমান অবস্থা দেখে মন সত্যিই ভারাক্রান্ত হয়ে গেল। প্রাণীদেরও যে অনুভূতি থাকে তারা যে আমাদের ভালোবাসা অনুভব করে আপনার এই উপলব্ধি অনেকের চোখ খুলে দেবে।
আপনার মনের কষ্ট কিছুটা হলেও কমুক এই প্রার্থনাই করি। আল্লাহপাক পিকলুকে সুস্থতা দান করুক।
@tipu curate
;) Holisss...
--
This is a manual curation from the @tipU Curation Project.
Upvoted 👌 (Mana: 1/8) Get profit votes with @tipU :)
যখন থেকে আপনার সাথে পরিচয় হয়েছে, তখন থেকে মোটামুটি পিকলু সম্পর্কে তার প্রতি আপনার ভালোবাসা সবকিছুই আমরা অবগত। তার অসুস্থতায় আপনি কতটা তার সঙ্গে ছিলেন আপনার প্রতি তার ভালোবাসা। আসলে একটা প্রাণীর প্রতি যখন ভালোবাসা জন্মায়, তখন তার প্রতিটা দিক আমরা খেয়াল রাখার চেষ্টা করি। বর্তমান সময়ের পিক গুলো অসুস্থ যার কারণে আপনি নিজেও অনেক বেশি চিন্তার মধ্যে রয়েছেন। তার উপরে আপনার ফ্যামিলির মধ্যে আপনার শ্বশুর অসুস্থ। আসলে আমাদের সমস্যা গুলো কেমন যেন শেষ হতে চায় না। দোয়া করি এগুলো খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠুক, আপনিও চিন্তা মুক্ত হন। ধন্যবাদ ভালো থাকবেন।
আমি যখন এই খানে কাজ করতে শুরু , তখন থেকেই আপনার পিলু সম্পর্কে জানতে পারি, আপনি ওনার প্রতি যে ভালোবাসা তা প্রায় পোস্টে পড়ে জানতে পারতাম,ও তা শুনে আমার কাছে খুবই ভালো লাগতো।
এই পোস্টটি পড়ে অনেক খারাপ লাগছে😢, একজন মানুষ অসুস্থ হয়ে গেলে কিছুই ভালো লাগে না সে তো প্রাণী তার মনে হয় খুব খারাপ লাগছে, জন্য নিস্তব্ধ খাবার খাচ্ছে না।
অসুস্থতার কারণে সে অনেকটাই দুর্বল হয়ে গেছে পিলু, আল্লাহর কাছে দোয়া করি যাতে তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে ওঠে।
একটি পোষা প্রাণীর প্রতি এত গভীর ভালোবাসা ও মায়া সত্যিই অনুপ্রেরণাদায়ক।
আপনার পোস্টটি খুবই হৃদয়স্পর্শী এবং গভীর অনুভূতির সাথে লেখা। পিকলুর প্রতি আপনার ভালোবাসা এবং তার বর্তমান অবস্থা জানতে পেরে খুব খারাপ লাগলো। পিকলু যেন তাড়াতাড়ি সুস্থ এই দোয়া করি।