"চেরি ফুলের গল্প"
![]()
|
---|
Hello,
Everyone,
গতকাল সারারাত খাপছাড়া ঘুমিয়েছি। গোটা রাতের মধ্যে কতবার যে কাশির কারণে উঠে পড়েছি তার কোনো ঠিক নেই। গলা যেমন খুসখুস করছে, তেমনই ব্যথা।
সবকিছু মিলিয়ে গত দুদিন শরীরটা বেশ খারাপ। আজও দিনের বেলায় দু-তিনবার ভালো লাগছে না বলে খাটে শুয়েছি, কখন চোখ লেগে এসেছি বুঝতেও পারিনি। আবার ঠিক কাশির কারণেই উঠে পড়েছি।
মূলত আবহাওয়ার কারণেই শরীরের অবস্থা এমন। না শান্তিতে শুতে পারছি, আর না ভালোভাবে খেতে। যাইহোক আমার আগের পোস্টে আপনাদেরকে জানিয়েছিলাম অহনার অন্নপ্রাশন থেকে ফেরার পথে, ট্রেন ধরার পূর্বে আমরা মছলন্দপুরের ফুল মার্কেট থেকে ফুল কিনেছিলাম।
![]() |
---|
![]() |
---|
আসলে ফুল মার্কেটে আপনি যে কোনো ফুলই পাইকারি দরে পাবেন। আর যেহেতু মার্কেটটা একদম স্টেশন এর পাশেই ছিলো, তাই তাড়াহুড়ো থাকলেও খুব সহজেই ফুল কিনে নিয়ে আসা সম্ভব হয়েছিলো। আমি এবং দিদি দুজনেই মূলত গাঁদা ফুল এবং চেরি ফুল কিনেছিলাম, বাড়ির নিত্য পুজোর জন্য
গাঁদা ফুল একটু বেশি দিন রেখে পূজো দিলেও নষ্ট হয় না, তবে চেরি ফুলগুলো বেশিদিন ভালো থাকে না, যেহেতু ওর পাঁপড়ি গুলো খুব পাতলা হয়। এই কারণে তারপর দিন পুজো দিতে বসে আমি চেরি ফুলগুলো দিয়ে আসনটা খুব সুন্দর করে সাজিয়েছিলাম। আর সৌভাগ্যবশত সেদিন মাঘী পূর্ণিমা ছিল।
![]() |
---|
মাঘ মাসের পূর্ণিমা তিথিতে অনেকের বাড়িতেই লক্ষ্মীপূজো হয়ে থাকে। আসলে বিভিন্ন সমস্যার কারণে যারা দুর্গাপুজোর পরে লক্ষ্মী পূজা করতে পারেন না, তারাই মূলত মাঘ মাসের পূর্ণিমাতে লক্ষ্মী পূজা করে থাকেন। যদিও আমাদের বাড়িতে লক্ষী পূজোর দিনেই পুজো হয়েছিলো, তবুও ভাবলাম যেহেতু একটা ভালো দিন, তাই সকালে উপোস করে ফুল দিয়ে আসনটাকে খুব সুন্দর ভাবে সাজিয়েই পুজো দেবো।
![]() |
---|
তার সাথে আমাদের গাছ থেকে তুলে আনা বিভিন্ন ধরনের ফুল ছিলো। আসলে বর্তমানে ছাদের গাছগুলিতে অল্প অল্প করে হলেও বিভিন্ন ধরনের ফুল ফোটে। আর গাছের ফুল তুলে পূজা দেওয়ার আনন্দ, সেটা আসলেই অন্যরকম হয়।
তবে ঐদিন আসন সাজানোর পরে শাশুড়ি মা ডেকে বললেন কয়েকটি ছবি তোলার কথা। সত্যি বলতে আমি নিজে ছবি তোলার কথা ভুলে গিয়েছিলাম।
![]() |
---|
তবে আজকাল শাশুড়ি মা জানেন আমি পোস্ট লেখার কারণে ছবি তুলে রাখি, তাই কখনো কখনো আমি ভুলে গেলে শাশুড়ি মা মনে করিয়ে বলেন, - "সোনা এই জিনিসটার তো ছবি তোলোনি।" আর আমিও তৎক্ষণাৎ ফোন নিয়ে পৌঁছে যাই ছবি তোলার জন্য।
একটা কথা এতদিনে বোধহয় প্রত্যেকেই জেনে গেছেন সাদা রংটা আমার ভীষণ প্রিয়, সেটা পোশাকের ক্ষেত্রে হোক বা ফুলের ক্ষেত্রে। আমার চোখ সবসময় সাদা রঙের দিকেই আকৃষ্ট হয়।
![]() |
---|
চেরি ফুলটাও পছন্দ হওয়ার এটা একটা অন্যতম কারণ। যদিও বেশ কিছু চেরি ফুলের পাঁপড়ি ভরা থাকে, আবার কিছু চেরি ফুলের মাঝখানটায় হলুদ রং হয়। পাঁপড়ি গুলো চারপাশ দিয়ে থাকে। এই দুটি ফুলই আমার বেশ পছন্দ তবে, এই দিন ফুল দিয়ে আসার সাজাতে গিয়ে দেখলাম, দুই রকমের ফুলই মেশানো রয়েছে।
তাড়াহুড়োতে আসলে আপনাদের জন্য ফুল মার্কেটের কোনো ছবি তুলতে পারিনি। তাহলে আপনাদেরকে দেখাতে পারতাম মছলন্দপুরের ফুল মার্কেটটা নেহাৎ খুব একটা ছোট নয়। কত ধরনের, কত রংয়ের ফুল যে সে মার্কেট রয়েছে দেখলে ওখানেই চোখটা জুড়িয়ে যায়। সত্যি বলতে ওই মার্কেটে বছরের অন্য কোনো সময় যাওয়া হোক বা নাই হোক, মা মারা যাবার পর থেকে বছরের একটা দিন অর্থাৎ মায়ের বাৎসরিক কাজের দিন, মালা নেওয়ার জন্য ওখানে যাওয়াই হয়।
![]() |
---|
এজন্য হয়তো দিদিরা ফুল না নিলে আমারও সেদিন আলাদা করে ফুল নেওয়া হতো না। তবে ফুলগুলো নিয়ে ফিরে আসার সময় ঝুলন্ত রজনীগন্ধার মালা গুলো দেখে মায়ের কথায় মনে পড়লো।
আসলে একই রজনীগন্ধা ফুলের মালা, শুধু একটু লাল গোলাপ ও সোনালী জরির কারণে সেটা ব্যবহার করা হয় বিয়েতে। আর শুধু রজনীগন্ধা ফুল দিয়ে তৈরি করা মালা ব্যবহার করা হয় মৃত মানুষের ছবিতে দেওয়ার জন্য। ফুল সেই একই, শুধু লাল রঙের ছোঁয়াতে জীবনের সম্পূর্ণ দুটো বিপরীত ক্ষেত্রে এদের ব্যবহার ভিন্ন।
যাইহোক সেই দিনের তোলা ছবিগুলোই আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম। আপনাদের কার কার চেরি ফুল পছন্দ অবশ্যই জানাবেন। ইউটিউবে ক্ষীরাই নামক জায়গার ভিডিও খুব দেখি, যেখানে হরেক রকম ফুলের চাষ হয়। জায়গাটা সম্পর্কে অনেকেই ভিডিও শেয়ার করেছেন, বড় ইচ্ছে হয় সেখানে গিয়ে ফুলগুলিকে খুব কাছ থেকে দেখার। তবে আদেও সেই সৌভাগ্য কবে হবে জানি না।
তবে যদি কখনো সম্ভব হয় সেখানে যাওয়া, অবশ্যই আপনাদের সাথে সেই ফুলের রাজ্য ঘুরে দেখার অনুভূতি পোস্টের মাধ্যমে শেয়ার করবো। সকলের সুস্থতা কামনা করে আজকের পোস্ট এখানে শেষ করছি। ভালো থাকবেন সকলে। শুভ রাত্রি।
|
---|
আপনার শরীর খারাপ থাকার পরেও আপনার পোস্টটি মনোমুগ্ধকর হয়েছে। আমি কখনো সরাসরি চেরি ফুল দেখিনি কিন্তু এই ফুলের নাম আমি অনেক শুনেছি।চেরি ফুল এবং গাঁদা ফুলের সৌন্দর্য সত্যিই অসাধারণ! আপনার গল্প এবং ছবি দুটি খুব সুন্দরভাবে মিলেছে।প্রকৃতির এই সুন্দর ফুলগুলোর মধ্যে আপনি যেভাবে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করেছেন, সেটা সত্যিই প্রশংসনীয়। আশা করি খুব শীঘ্রই আপনি সুস্থ হয়ে উঠবেন। আপনার জন্য সব সময় শুভকামনা রইল দিদি
Curated By sergeyk
Thank you for your support @sergeyk Sir. 🙏
প্রথমেই দোয়া করি দিদি, আপনে তারাতারি শারীরিক ভাবে সুস্থ হয়ে উঠুন। আসলে অসুস্থ হলে কোনো কিছুই ভালো লাগে না। আপনার মতো আমিও আজকে সারা দিন ৪/৫ বার ইচ্ছা না থাকা সত্তেও বিছানায় গিয়ে ঘুমিয়ে পরেছিলাম মূলত আমার মাথার সমস্যা বাড়ার কারণে। যাই হোক নিজের শরীরের খেয়াল রাখবেন।
আজকে চেরি ফুলের গল্পটা অনেক ভালো লাগল। এটা ঠিক বলেছেন, ফুলের দোকান থেকে ফুল কিনলে কম দামে পাওয়া যায়, তারা অনেক সময় পাইকারি রেট ধরে বিক্রয় করে থাকে
আসলে স্থান ভেদে ফুলেট কদর ও ব্যবহার আলাদা হয়ে থাকে। পোষ্টটা পড়ে ভালো লাগল দিদি। ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।