একটি দিনের কথা! About a day!
![]() |
---|
প্রতিটি দিনকে যদি খুব ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করা হয়, তাহলে খুঁজে পাওয়া যাবে তার অন্তরালে একটি হারিয়ে যাওয়া দিনের সাথে বিভিন্ন স্বাদের বেশকিছু অভিজ্ঞতা সঞ্চিত হয়েছে জীবনের ঝুলিতে!
আমরা গতানুগতিক মনে করে বিষয়টি উড়িয়ে দিয়ে থাকি বলে সেই অভিজ্ঞতার মূল্যায়ন করতে সমর্থ হই না প্রায় সময়!
রাস্তায় চলার সময় হোক, চেনা অচেনা প্রতিবেশী হোক দেখবেন, বাচনভঙ্গি থেকে শুরু করে ভাবনাচিন্তা সবকিছুর মধ্যেই একটা ভিন্নতা নজরে পড়বে।
এই যে এতগুলো কথা লিখলাম সেটাও আজকের দিনে আমার উপার্জিত অভিজ্ঞতার নিরিখে দাঁড়িয়ে।
ব্যক্তিগত জীবনে আমি ভীষণরকমের স্পষ্টভাষী তথা স্পষ্টবাদী!
আরেকটি বিষয় আমি সৃষ্টিকর্তা আর নিজের বিবেকের কাছে ছাড়া;
কারোর কাছে পরিষ্কার থাকতে হবে এবং জবাব দিতে, বিষয়টিকে আমি বাধ্য বলে মনে করি না।
অনেকেই আমাকে অসামাজিক ভাবতে পারেন, কারণ মন জুগিয়ে মিথ্যে বলে কারোর সুনজর কাড়ার পক্ষপাতী আমি নই, আর আমি সেটা করতেও পারি না!(যদিও কখনও চেষ্টা করিনি)!
আমি মিথ্যে বলা মানুষদের থেকে সহস্র যোজন দূরত্ব বজায় রাখতে পছন্দ করি। আমার মুখ দেখলে আমার অভিব্যক্তি সুস্পষ্ট রূপে বোঝা যায়,
সেটাও আমি লুকোতে সক্ষম নই।
কাজেই, অনেকেই আমাকে সমাজে অচল পয়সা ভেবে নিতে পারেন।
আজকের দিনটি কিন্তু আমার চন্ডী রূপের আরেক প্রতিচ্ছবি ছিল।
ঘটনাটি শুরু থেকেই আপনাদের সম্মুখে তুলে ধরছি,
তাহলে হয়তো বুঝবেন একটি দিন কিভাবে বিভিন্ন অভিজ্ঞতা বয়ে নিয়ে আসে!
তখন সকাল সাড়ে আটটা হবে হয়তো, আজকে যেহেতু কিউরেশন
তাই রাতে ভালো ঘুম হয়না, একটা দায়িত্বের বিষয় মাথায় কাজ করে।
দরজায় বেল বাজলো! দরজা খুললাম।
দেখছি নিচের মাসিমা করুন স্বরে জানালেন জলের পাম্প ঠিক হয়নি,
ওনার ছেলে বউ নিয়ে শ্বশুরবাড়ি চলে গেছে!
যাঃ বাবা! নাহ্ এটা মনে মনে ভেবেছিলাম!
কাজেই, পাম্প সরাবার লোক নেই, আমি যদি একটা মিস্ত্রির ব্যবস্থা করি!
সঙ্গে সঙ্গে ফোন করলাম আমার সেই মিস্ত্রিকে যিনি আগের সপ্তাহে আমার কাজ করে গেছেন।
উনি আবার আরেক জলের পাম্প ঠিক করার মিস্ত্রির নম্বর দিলেন।
মাসিমার সামনে স্পিকারে কথা বলে জানতে পারলাম বেলা সাড়ে চারটে নাগাদ মিস্ত্রী আসবেন।
ফ্ল্যাট কালচারে অনেকেই অভ্যস্ত নয়, তাই একটা ফ্ল্যাট টাকা আছে বলে কিনে ফেললেই হয় না।
![]() |
---|
একটা বেলাশেষের শিক্ষা! |
---|
এমন অনেক বিষয় যেটা আপনি নিজের বাড়িতে স্বাচ্ছন্দ্যে করতে সক্ষম,
সেটা কিন্তু ফ্ল্যাটে সম্ভব নয়।
এটা অনেকেই বুঝবেন না, যারা এই কালচারে অভ্যস্ত নয়।
ফ্ল্যাটের একটা আলাদা স্ট্যান্ডারিটি আছে, সেটা মেনে সকলকে চলতে হয়।
যাক, শুধু একটা বিষয় খারাপ লাগে, সেদিন যখন ফ্ল্যাটের মিটিং হয়েছিল, ওইদিন জানাতে পারতেন ওনার ছেলে থাকবে না! তাহলে, এই তিন চার দিনের বাড়তি কষ্ট ওনাকে সহ কাউকেই পোহাতে হতো না!
একদিকে, কলে জল শেষ! আরেক দিকে কিউরেশন, তার উপরে মিস্ত্রির সাথে দাড়িয়ে কাজ দেখা।
যদিও আমার সাথে আরো দুজন শেষ পর্যন্ত ছিল, কিন্তু সময় তো বসে থাকে না, সে চলে নিজের মতো করে!
আজকে, যে বিষয়টি খারাপ লাগলো জেনে, সেটা হল, ফ্ল্যাটের মুল জলের ইলেকট্রিক লাইন এতটাই খারাপ পরিস্থিতিতে আছে, যেকোনো সময় হয় ফ্ল্যাটে আগুন লেগে যেতে পারে!
আর নয়তো, কোনো মিস্ত্রী যদি জলের ট্যাঙ্ক পরিষ্কার করতে ওঠে, তাকে দুর্ঘটনার সামনে পড়তে হতে পারে।
আমার অবাক লাগে, মিথ্যে দিয়ে যারা সমাজে নাক উঁচু করে ঘুরে বেড়াচ্ছে তাদের দেখে!
নিজেদের ফলাও করে ফ্ল্যাটের মালিক বলে বেড়াচ্ছে অথচ বকেয়া অর্থ দিতে নারাজ!
আমার ভীষণ রকমের মাথা গরম হয়ে গেছে যখন ঘরে উপস্থিত থেকেও অটো সেন্সর ঠিক করবার সময় মানুষের উপস্থিতি নজরে পড়েনি!
জানিনা এদের আদপেই কালচার শব্দের সাথে পরিচয় আছে কিনা?
যদি থাকতো তাহলে বুঝতে পারতো জলের প্রয়োজন সকলের, কাজেই এক ছাদের নিচে বসবাস করতে হলে, পাশে উপস্থিত থাকাটা ভদ্রতায় সামিল।
তাই, বাকি যারা উপস্থিত ছিলেন, তাদের সামনেই আমি জানিয়ে দিয়েছি, ছাদের তালা পরিবর্তন করা হলো;
এখন থেকে যাদের বকেয়া অর্থ নেই, কেবলমাত্র তারাই ছাদ ব্যবহার করতে পারবেন।
সবটাই বারোয়ারী ভেবে নিলে তো চলবে না! ছাদে সূর্যাস্তের কিছু ছবি তুলতে গিয়ে মনে হলো এই শিক্ষিত মানুষের চাইতে পাখিগুলোর মধ্যেও শৃঙ্খলা অধিক বিদ্যমান!
![]() |
---|
মানবজাতির শিক্ষা নেওয়া উচিত এই প্রাণীকূলের কাছ থেকে শৃঙ্খলার সংজ্ঞা! |
---|
সন্ধ্যে নামতেই সারিবদ্ধ ভাবে ঘরে ফিরে যাচ্ছে।
সাথে দেখলাম, তাদের অনুকরণে মানুষের নকল উড়োজাহাজে চড়ে দেশের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে পৌঁছনোর তাগিদ।
জীবনের সবচাইতে মূল্যবান বিষয় হলো, একটি দিন থেকে আপনি কতখানি শিক্ষা, অভিজ্ঞতা কুড়িয়ে নিতে পেরেছেন।
আমি খুব ভালো করে জানি, আজকে অনেক সমালোচনার সম্মুখীন সমস্যার সমাধান করে দেবার পরেও আমাকে হতে হবে!
তবে, এইজন্য আমার বিশেষ কিছু যায় আসে না, কারণ আমি যেটাই করেছি তার পিছনে কোন আত্মস্বার্থ ছিল না।
সার্বিক স্বার্থে কোন কাজের জন্য যদি সমালোচনার সম্মুখীন হতে হয়,
তাহলে সেটা অন্তরালে বসে একজন শুনে তার যথাযত বিচার করবেন বলে আমি বিশ্বাস করি।
![]() |
---|
অস্তমিত সূর্য্য একটি দিনের সমাপ্তির সাথে দিয়ে গেলো আরো কিছু অভিজ্ঞতা! |
---|
দিনশেষে, ভালো লাগা কাজ করে যখন সমাজে মেয়েরা সংসার ছাড়া কোন কাজ পারে না ভাবা মানুষগুলোর মুখে এইভাবে ঝামা ঘষতে সক্ষম হই।
আজকের কাজে ফ্ল্যাটের একটা পুরুষ উপস্থিত ছিল না, কাজেই যারা এই ধরনের মানসিকতা বহন করেন, তাদের জন্য এটা একটা উদাহরণ।
অনেক পুণ্য করলে নারী দেহে জন্মগ্রহণ করা যায়, কারণ নারী এমন অনেক কাজে সক্ষম যেটা পর্যন্ত পৌঁছতে বিজ্ঞানকেও হার মানতে হবে!
যদি সততার পথে অবিচল থাকা যায়, সৃষ্টিকর্তা তাঁর সাথে থাকেন, আর কাকে চাই জীবনযুদ্ধ জয় করতে উনি সাথে থাকলে?
![1000010907.gif](https://steemitimages.com/0x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmXWAyVb1Cc1XAWU6HFRVVZopNCk2VhWTCH1VVxJdBwBJD/1000010907.gif)
![1000010906.gif](https://steemitimages.com/0x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmc8yviUiSxfyoxr2Hiq7W5HcV2ytbSck6fdFkomrJ2PfH/1000010906.gif)
আত্মকেন্দ্রিক মানুষগুলি আত্ম স্বার্থ ছাড়া সার্বিক ভাবেও যে মানুষের জন্য কোনো কাজ করা যায়, এই বিষয়টা সম্পর্কে অবগত আছে বলেই আমার মনে হয় না। কারণ তারা তাদের জগৎটাকে মুষ্টিমেয় কয়েকজনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখে। তাই সার্বিক অর্থে কোনো মানুষের জন্য কিছু ভাবার মত মানসিকতার বিকাশ তাদের ভিতরে চোখে পড়ে না।
আমার তো খারাপ লাগে সেই সকল বাচ্চাদের কথা ভেবে, যারা এই আত্মকেন্দ্রিক মানসিকতা সম্পন্ন মানুষদের মধ্যে বেড়ে উঠবে। কারণ ভবিষ্যতে তারাও এই একই রকম মানসিকতা বহন করে সমাজকে কলুষিত করবে।
কোনো একটা জায়গায় এই কথাটা পড়েছিলাম যে, -সমালোচনা করার জন্য যোগ্যতা লাগে না, সমালোচিত হওয়ার জন্য যোগ্যতা লাগে। তাই যদি আপনাকে নিয়ে পাঁচটা লোক সমালোচনা করে সেক্ষেত্রে সেই সমালোচনার যোগ্যতা আপনার অর্জিত বলেই তারা করে।
সমস্যার সমাধান করতে না পারলেও সমস্যা নিয়ে সমালোচনা করার মানুষের সত্যিই আজকাল অভাব নেই এবং হাস্যকর বিষয় এটাই, তারা সেই সকল মানুষদেরকে নিয়েই সমালোচনা করে যাদেরকে ছাড়া তারা সমস্যার সমাধান করতে পারে না। আপনি নিজের জন্য নয় সকলের কথা ভেবে হয়তো সমস্যার সমাধানের জন্য কিছু সিদ্ধান্ত দিয়েছেন, তার জন্য যদি কেউ সমালোচনা করে তাহলে সত্যিই আপনার তাতে কিছু যায় আসে না।
আর ঠিক যেমনটা আপনি বলেন সর্বদা বিচার একজনের উপরেই ছেড়ে দেওয়া উচিত। কারণ তার কাছে প্রিয়-অপ্রিয় বলে কোনো বিচার নেই। বিচার হয় শুধুমাত্র ন্যায়-অন্যায়, সত্যি-মিথ্যে, সৎ-অসৎ এই বিষয়গুলির উপরে ভিত্তি করে। তাই যা আপনি করেছেন তা একেবারেই সঠিক।
পাখিদেরকে দেখে সত্যিই আমাদের মতন শিক্ষিত সমাজের অনেক কিছু শেখার আছে। তবে আপনার মতন করে, দলবদ্ধভাবে পাখিদের উড়ে যাওয়া দেখে ঠিক কোন শিক্ষাটা আমাদের গ্রহণ করা উচিত, এটা বোঝার মতন শিক্ষিত আমরা অনেকেই নই। বরাবরের মতনই ভালো লাগলো আপনার পোস্ট পড়ে। ভালো থাকবেন ম্যাম।
0.00 SBD,
4.79 STEEM,
4.79 SP
Your comment has been supported by THE PROFESSIONAL TEAM. We support quality posts, Original quality comments anywhere, and any tags
আমি মনে করি, আপনার লেখা সত্যিই এক ধরনের প্রেরণার উৎস, কারণ আপনি বাস্তব অভিজ্ঞতার মাধ্যমে জীবনের মূল্যবোধ এবং নৈতিকতা নিয়ে যে লেখা গুলো আমাদের সাথে শেয়ার করেন, তা শুধু আমাদের মতন পাঠকদের ভাবনার জন্যই নয়, বরং তাদের দৃষ্টি চক্ষু জাগ্রত করার জন্যও কাজ করেন।
জীবনের প্রতি আপনার দৃষ্টিভঙ্গি আমাদের বলে, যে, প্রতিটি মুহূর্তে কিছু না কিছু শেখার রয়েছে এই জীবন থেকে!
বিশেষ করে আপনি যে ভাবে নারীদের ক্ষমতায়ন নিয়ে কথা বলেছেন, তা অত্যন্ত প্রশংসনীয়।
একজন নারীর পরিশ্রম এবং সততা যেকোনো চ্যালেঞ্জকে জয় করতে সক্ষম, সেটা আপনার বাস্তব জীবনের গল্পের মাধ্যমে স্পষ্টভাবেই ফুটে উঠেছেন আমাদের মাঝে। আপনার গল্পটি খুবই গভীর এবং বাস্তব অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে রচিত ছিল, এর জন্য আপনাকে ধন্যবাদ দিদি। ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আপনার জন্য সব সময় শুভকামনা রইল দিদি।
Your content has been successfully curated by our team via @kouba01.
Thank you for your valuable efforts! Keep posting high-quality content for a chance to receive more support from our curation team.
Thank you @kouba01 Sir for supporting me 💕
Your content has been successfully curated by our team via @kouba01.
Thank you for your valuable efforts! Keep posting high-quality content for a chance to receive more support from our curation team.
Thank you, my dear friend @kouba01, for this encouraging support 😊!
Much appreciated 👍
আপনি বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছেন, মানুষ প্রতিদিন নতুন কিছু শিখে আমাদের সারাদিনের কার্যক্রম থেকে অন্য একটা দিনের কার্যক্রম সম্পূর্ণ আলাদা এবং আমরা সেখান থেকেই সামনের দিকে এগিয়ে যাই।
সৎ থাকা এবং নিজের বিবেকের কাছে কাচের মত স্বচ্ছ থাকা খুবই প্রয়োজন, এতে করে বাকি সবাই কি ভাবল তা খুব বেশি একটা যায় আসে না। সবাই আপনাকে কি ভাবলো তার থেকে বেশি গুরুত্ব হল আপনি কি ভাবেন, আপনার অভিজ্ঞতাগুলো শুনে খুবই ভালো লাগলো।
আপনার কথার সাথে আমিও সহমত পোষণ করছি। অনেকেই হয়তোবা আপনাকে অসামাজিক অন্য কিছু বলতে পারে। তবে আমি মনে করি আপনি আপনার জায়গা থেকে ১০০% সঠিক আছেন। আজকাল মানুষের মন জুগিয়ে চলতে গেলে মিথ্যা অভিনয় ছাড়া এই পৃথিবীতে বাঁচা অনেক বেশি কঠিন হয়ে যায়। তাই আপনার মত করে যদি চলতে পারতাম তাহলে কতই না ভালো হতো।
প্রতিটা প্রাণীর মধ্যেই শৃঙ্খলা রয়েছে শুধুমাত্র শৃঙ্খলা নেই আমাদের মত মানুষদের মধ্যে। আমরা হাজার চেষ্টা করেও নিজেদের মধ্যে শৃঙ্খলা অধ্যাবসায় কোন কিছুই নিয়ে আসতে পারি না। আপনার একটা দিনের অভিজ্ঞতা আপনি আমাদের সাথে চমৎকার ভাবে শেয়ার করেছেন। যেটা দেখে বেশ ভালো লাগলো ধন্যবাদ ভালো থাকবেন।
@rubina203 আজকাল প্রায় মানুষ সাদা কালোর চাইতে রঙ্গিন মোড়কে মোড়ানো কথা বেশি পছন্দ করেন!
আমি শৈশব থেকেই এমনটাই! যদি কোন জিনিস পছন্দ না হতো আমার মুখ দেখলেই সকলে বুঝে যেতো;
একই বিষয় কথার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
আমার মনে হয়, ভালো সম্পর্কে অভিনয়ের কোন জায়গা নেই।
যদি সত্যি কারোর মঙ্গল আমরা চেয়ে থাকি তাহলে সেখানে ভালোবাসার পাশপাশি শাসন এবং শৃঙ্খলা থাকবেই।
এটা আপনি আরো ভালো বুঝবেন একজন মা হিসেবে।