আমার জীবনের কিছু প্যারানরমাল অভিজ্ঞতা : ঘটনা ০১

আমি একটু অতিমাত্রায় বিজ্ঞান বিশ্বাসী । প্রচলিত যাবতীয় কুসংসস্কারের ঘোরতর অবিশ্বাসী । তাই, স্বাভাবিকভাবেই ভূত-প্রেতে কোনও বিশ্বাস নেই । এমনকি, অলৌকিক কোনো কিছুতেই বিশ্বাস নেই আমার । তা সত্ত্বেও পৃথিবীর বুকে এমন কত অদ্ভুত, অলৌকিক ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটছে যার কোনো বিজ্ঞান সম্মত ব্যাখ্যা আজও মেলেনি । শেকসপীয়ার এর সেই জগৎ বিখ্যাত লাইন - "স্বর্গে ও মর্ত্যে এমন অনেক অদ্ভুত ঘটনা ঘটছে প্রতিনিয়ত, হোরেশিও, যা তুমি কল্পনাও করতে পারবে না ।" বিপুলা এ পৃথিবীর কতটুকু জানি আমরা । প্রতিদিন কত না অদ্ভুত, অলৌকিক, ভৌতিক এবং আধি-ভৌতিক ঘটনা ঘটেই চলেছে আধুনিক বিজ্ঞান তার কোনো ব্যাখ্যা আজও দিতে পারেনি । বিজ্ঞান সে সব ঘটনাকে অমীমাংসিত রহস্য বলে আখ্যায়িত করেছে, কিন্তু অলৌকিক বলতে নারাজ । টাইটানিক জাহাজ তৈরী হওয়ার বহু আগে এক লেখক একটি উপন্যাস লেখেন । উপন্যাসটিতে তিনি একটি জাহাজ নিয়ে লেখেন যার নাম "টাইটান" । তিনি তার উপন্যাসে টাইটান নামের বিশাল এক জাহাজের সমুদ্রে যাত্রী সমেত ডুবে যাওয়ার ঘটনা লেখেন । এটি ছিল তার প্রথম সমুদ্র যাত্রা । উপন্যাসে তিনি লেখেন শেষ রাতে এক বিশাল হিমশৈলের সাথে ধাক্কা লেগে জাহাজটি ডুবে যায় । তিনি তাঁর উপন্যাসে যতজন যাত্রীর মৃত্যুর কথা উল্লেখ করেছিলেন সেটি আশ্চর্যজনক ভাবে মূল দুর্ঘটনার সাথে হুবহু মিলে যায় । এমনকি , পর্যাপ্ত লাইফ বোট না থাকাতে যে এতো যাত্রীর মৃত্যু হয়েছিল সেটিও মূল দুর্ঘটনার সাথে মিলে যায় । টাইটানিক জাহাজ ডুবির পরে এই লেখক এবং তার উপন্যাস নিয়ে শোরগোল পড়ে যায় । লেখকও স্বীকার করে নেন যে স্বপ্নে তিনি এই গল্পের মূল প্লটটার ধারণা পেয়েছিলেন । এত বছর পরেও বিজ্ঞান শুধু এটাকে কাকতালীয় ঘটনা ছাড়া আর কিছু বলতে নারাজ । এমন হাজারো ঘটনা রয়েছে পৃথিবীর বুকে । আমি তো মোটে একটিকে আপনাদের সামনে হাজির করলাম । এখন আসা যাক মূল ঘটনায় । এখন আমিও জীবনে কিছু অদ্ভুত ঘটনার সাক্ষী আছি । বিয়ের পরে তনুজা এমনই একটি ঘটনার সাক্ষী হয়ে আশ্চর্য হয়ে গিয়েছিলো । তো চলুন শোনা যাক । মাধ্যমিক পাশের পরে এক বিকেলে আমি আর আমার এক কাজিন তাদের গ্রামের রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছি বাসের অপেক্ষায় । আমরা বুড়োর বটতলা নামে গাঁয়ের ওই বাস স্টপেজে দাঁড়িয়ে রয়েছি প্রায় মিনিট পঁচিশেক এর মতো । স্টপেজ থেকে ২০০ মিটার দূরে একটি বাঁক । বেশ কিছু গাছগাছালি জট পাকিয়ে আছে বাঁকের মুখের কাছটায় । এমন সময় আমি বাসটিকে দেখতে পেলাম বাঁকের মুখে, স্টপেজের দিকে আসছে, হর্ণও পরিষ্কার শুনতে পেলাম । এর পরে বাসটি গাছ গাছালির জটলায় অদৃশ্য হলো । এবং তারপরে, আর কখনোই সেটিকে দেখতে পেলাম না । আমি এই ঘটনাকে নিজের চোখের ভুল মানে হ্যালুসিনেশন বলে চালিয়ে দিতে পারতাম অনায়াসে যদি না আমার বন্ধুও এই ঘটনার সাক্ষী না হতো । আরো হতবাক হয়ে গেলাম যখন বাস স্টপেজের চায়ের ঝুপড়ির বুড়ো দোকানদারও অবাক হলো আমাদের মতো। সেও বললো বাস দেখেছে আসতে, হর্ণও শুনেছে । এই ঘটনার প্রায় আরো ১৫ মিনিট পরে রিয়েল বাস এসেছিলো । এই অবাক করা ঘটনার একটি বিজ্ঞানসম্মত ব্যাখ্যা আমি অনেক পরে পেয়েছিলাম । আমার মতো এমন অদ্ভুত ঘটনার সাক্ষী পৃথিবীতে এমন নাকি অনেকেরই হয়েছে । না, এটা কোনো দৃষ্টিবিভ্রম নয় । প্রকৃতির এক অত্যাশ্চর্য খেয়াল এবং রহস্য । ক্যামেরায় রেকর্ড করার মতো অনেক খন্ড দৃশ্য, শব্দ সহ প্রকৃতি রেকর্ড করে রাখতে পারে এবং কোনো কোনো সময়ে সেটা মাত্র কয়েক সেকেন্ড এর জন্য সে প্লে করতে পারে । জটিল আছে এই ব্যাখ্যাটি । একদিন একটি আলাদা পোস্টে এটি নিয়ে বলবো । পরপর কয়েকদিন আমার জীবনে ঘটে যাওয়া এমন কিছু অত্যাশ্চর্য প্যারানরমাল ঘটনা নিয়ে লিখবো । [নেক্সট প্যারানরমাল ঘটনা ০২.....] বি: দ্রঃ উপরে বর্ণিত ঘটনাটি শতভাগ সত্য । বুড়োর বলা সেদিন কেউ বিশ্বাস করেনি । বুড়ো বয়সের ভীমরতি, চোখের ভুল বলেছিলো সবাই । আর আমরাও নিজের পরিবারে ঘটনাটি বলার পরে সবাই এটা খুব হাসাহাসি করেছিল । কিন্তু, আমরা দু'জন শুধু জানি সেদিনকার ঘটনা ছিল শতভাগ সত্য ।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.15
JST 0.029
BTC 61829.34
ETH 2395.18
USDT 1.00
SBD 2.63