পুরী
নমস্কার বন্ধুরা,
পুরী কেবলই একটি পর্যটন স্থান বা তীর্থভূমি নয়; এটি রহস্যময় অলৌকিকতার এক আধার যা যুগ যুগ ধরে মানুষের কল্পনা ও বিশ্বাসকে উসকে দিয়েছে।পুরীর অন্যতম প্রধান আকর্ষণ জগন্নাথ মন্দির যা তার অদ্ভুত বৈশিষ্ট্যের কারণে বিশ্বব্যাপী চর্চিত। এখানে এমন কিছু ঘটনা ঘটে যা বিজ্ঞানের ব্যাখ্যার বাইরে বলে মনে হয়।মন্দিরের শীর্ষে থাকা পতাকাটি প্রতিদিন পরিবর্তন করা হয় এবং তা সবসময়ই বাতাসের বিপরীত দিকে উড়তে দেখা যায়—যা প্রকৃতির সাধারণ নিয়মকে অগ্রাহ্য করে।আরেকটি আশ্চর্যের বিষয় হলো, মন্দিরের গম্বুজের ছায়া দিনের যে কোনো সময়েই দেখা যায় না, যেন এটি নিজেই কোনো অলৌকিক শক্তির দ্বারা নিয়ন্ত্রিত!
পুরীর আরেকটি বিস্ময়কর ঘটনা হলো মন্দিরে রান্নার প্রথা।এখানে প্রতিদিন ৫৬ প্রকার ভোগ রান্না করা হয় যা একাধিক স্তরে রাখা মাটির হাঁড়িতে প্রস্তুত হয়।চমকপ্রদ বিষয় হলো রান্নার পদ্ধতি এমন যে উপরের হাঁড়ির খাবার আগে সিদ্ধ হয় তারপর ধীরে ধীরে নিচের হাঁড়িগুলোর খাবার রান্না সম্পন্ন হয়—যা স্বাভাবিক তাপ ও পদার্থবিদ্যার নিয়মের সাথে মেলে না!আরও রহস্যময় বিষয় হলো যত সংখ্যক ভক্তই আসুক, প্রতিদিনের রান্না করা প্রসাদ কখনো ফুরিয়ে যায় না আবার বাড়তেও দেখা যায় না।
পুরীর সমুদ্রতটেও অদ্ভুত বৈশিষ্ট্য রয়েছে।সাধারণত সমুদ্রের ঢেউ তীরের দিকে আছড়ে পড়ে কিন্তু পুরীতে মন্দিরের দিকে গেলে এক অদ্ভুত নীরবতা নেমে আসে।বলা হয় সিংহদ্বার পেরোলেই সমুদ্রের গর্জন থেমে যায় আর মন্দির থেকে বেরোলেই সেই শব্দ ফিরে আসে।এছাড়া, অন্যান্য স্থানে সমুদ্র থেকে স্থলভাগে বাতাস বয়ে আসে কিন্তু পুরীতে দিনের বেলায় তা উল্টোভাবে স্থল থেকে সমুদ্রের দিকে প্রবাহিত হয় এবং রাতের বেলায় স্বাভাবিকভাবে ফিরে যায় যা একটি বৈজ্ঞানিক রহস্য।
জগন্নাথ মন্দিরের রথযাত্রাও অলৌকিক কাহিনির এক বড় অংশ।প্রতিবছর বিশাল রথ টানা হয় যেখানে লাখ লাখ মানুষ অংশ নেয়।আশ্চর্যের বিষয় হলো রথ চলতে শুরু করলে হঠাৎই কোনো কিছু বা কেউ এক অদৃশ্য শক্তি দিয়ে রথকে টেনে নিয়ে যায় বলে মনে হয় এবং কখনো কখনো হাজার হাজার মানুষের চেষ্টার পরও রথ নড়ে না। এছাড়া, প্রতি ১২ থেকে ১৯ বছর পর নবকল্পব্রিক্সা (দেবমূর্তির পরিবর্তন) অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে পুরনো কাঠের মূর্তির ভেতরের "ব্রহ্ম পদার্থ" গোপনে নতুন মূর্তির মধ্যে স্থানান্তরিত করা হয়।কিন্তু সেই পদার্থটি কেমন তার প্রকৃতি কী—এটি আজও সম্পূর্ণ অজানা কারণ কোনো মানুষই এই স্থানান্তরের দৃশ্য প্রত্যক্ষ করতে পারে না।
এছাড়া, পুরীর সাথে যুক্ত রয়েছে চক্র তীর্থের অলৌকিকতা।এটি এমন একটি স্থান যেখানে বিশ্বাস করা হয় ভগবান বিষ্ণুর চক্র এখনও মাটির নিচে সুপ্ত অবস্থায় রয়েছে।স্থানীয়দের মতে, এখানে দাঁড়ালে এক অদ্ভুত শক্তির অনুভূতি পাওয়া যায়।
এভাবে পুরী শুধুমাত্র ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে নয় অলৌকিক রহস্যের কেন্দ্রস্থল হিসেবেও ব্যাপকভাবে আলোচিত।এই রহস্যময় ঘটনাগুলি যুগ যুগ ধরে মানুষের মনে কৌতূহল সৃষ্টি করেছে এবং অনেক গবেষকও এর বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা খোঁজার চেষ্টা করেছেন।কিন্তু পুরীর অলৌকিকতা এখনো এক বিশাল অজানা অধ্যায় হয়ে রয়ে গেছে যা শুধু বিশ্বাস, অনুভূতি ও অভিজ্ঞতার ওপর ভিত্তি করে টিকে আছে।
VOTE @bangla.witness as witness

OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |


Congratulations, your post has been upvoted by @nixiee with a 5.822719711090833 % upvote Vote may not be displayed on Steemit due to the current Steemit API issue, but there is a normal upvote record in the blockchain data, so don't worry.
ওই যে হাঁড়িগুলোতে রান্না হয় তাতে জল দেওয়া হয় না। এমনকি ভাতেও৷ এমনিই সেদ্ধ হয়৷ দারুব্রহ্ম যাকে বদলানো হয় তা মন্দিরের পেছনেই একটি জায়গায় পুঁতে দেওয়া হয়। এবং তা কিছু বছরের মধ্যেই মাটির সাথে মিশে যায়৷ যে মানুষ বা পন্ডাটি ওই ব্রহ্মপদার্থ জগন্নাথের পুরনো অবয়ব থেকে বার করেন এবং নতুন পন্ডার হাতে তুলে দেন নতুন অবয়বে স্থানান্তরিত করার জন্য সেই মানুষটি সাধারণত বৃদ্ধ হন এবং স্থানান্তরের ছ'মাসের মধ্যেই মারা যান৷
আমি ওখানের এক পুরোহিতের সাথে কথা বলেছিলাম উনি বলেছিলেন কেউ একজন নাকি দেখেছিল জিনিসটা কি তবে সাথে সাথেই অন্ধ হয়ে যান এবং কিছু মুহুর্তের মধ্যে তীব্র অসুস্থ হয়ে মারাও যান৷
অদ্ভুত বিষয় মন্দিরের মাথার ওপর দিয়ে না কোন বিমান ওড়ে না কোন পাখি।
এটা শুনে তো একেবারেই অবাক হয়ে গেলাম। পুরী তো দেখছি একেবারে রহস্যে ঘেরা। পোস্টটি পড়ে অবাক করা কিছু তথ্য জানতে পারলাম বৌদি। ভীষণ ভালো লাগলো পোস্টটি পড়ে। এমন তথ্যবহুল একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
যদি ভুল না বলি, আমার তো মনে হয় আপনারা যেবার পুরো পরিবার নিয়ে পুরীতে বেড়াতে গিয়েছিলেন, সম্ভবত এই মন্দির দেখতেই গিয়েছিলেন দিদিভাই। বেশ অজানা কিছু তথ্য জানালাম এই লেখার মাধ্যমে।