'ভালোবাসি তোমাকে ' গল্পের নবম পর্ব
হ্যালো বন্ধুরা,
আপনার সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভালো আছেন সুস্থ আছেন।আজ আমি আমাদের মাঝে 'ভালোবাসি তোমাকে' গল্পের নবম পর্বটি উপস্থাপন করছি। আশা করি, আপনাদের সবার ভালো লাগবে।তাই বিলম্ব না করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।
সোর্স
শুভ ওয়াশ রুম থেকে বেরোনোর সঙ্গে সঙ্গে অর্পা শুভকে বলে তোমাকে কে যেন ফোন দিয়েছিলো। অনেকবার ফোন দেওয়ার কারণে আমি ভাবলাম হয়তোবা কোন সমস্যা হয়েছে তাই তোমার অনুমতি ছাড়াই ফোনটি আমি রিসিভ করি। শুভ বলো ইটস ওকে কে ছিল? অর্পা বলে আমি তার পরিচয় জানতে চেয়েছিলাম কিন্তু সে তোমার কথা বলল যে তুমি তাকে চেনো। তখন শুভ বলে আচ্ছা ঠিক আছে ফোনটা দেখি কে দিয়েছে। তখন অর্পা ফোনটি শুভর কাছে দেয় শুভ রিসিভ কলে যে দেখে সে আর কেউ নয় তার স্ত্রী মনিকা। তাই সে অর্পাকে বলে তোমার বৌদি ফোন দিয়েছিলো। তখন অর্পা একটু অবাক চোখে শুভর দিকে তাকায়। শুভ বলে কি হয়েছে তুমি এমন করে তাকিয়ে আছ কেন আমার দিকে? অর্পা বলে তুমি আবার কবে বিয়ে করলে? শুভ বলে সে এক ঘটনা বিয়ের কোন ইচ্ছা ছিল না কিন্তু বাবা-মার চাপের কারণে বিয়েটি করতে হয়।অর্পা বলে তোমার বইয়ের নাম কি? শুভ বলে মনিকা।অর্পা বলে খুব মিষ্টি নাম একদিন পরিচয় করিয়ে দিও।অর্পা বলে অনেকদিন ধরে তোমাকে একটা কথা বলব বলব কিন্তু কোনদিন বলা হয়নি আর হয়তো কোনদিন বলতেও পারবো না। শুভ বলে কি এমন কথা বলতে পারবে না?অর্পা বলে এক না পাওয়ার কথা। শুভ বলে এ আবার কেমন কথা।অর্পা বলে এসব কথা বাদ দাও খাবার চলে এসেছে চলো খেয়ে নেই। শুভ ও অর্পা দুজনে খাওয়া-দাওয়া শেষ করে আবারো কাজে মনোযোগ দিল।
অফিস ছুটি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শুভ লেট না করে সঙ্গে সঙ্গে চলে যায় বাসায়। বাসায় যে কলিং বেল দেয় ওপার থেকে মনিকা ছুটে আসে কলিংবেলের শব্দ শুনে দরজা খুলতে। দরজা খুলতেই শুভ দেখে মনিকার মুখ অন্ধকার হয়ে আছে। শুভ মনিকাকে বলে কি হয়েছে কোন কারনে মন খারাপ? মনিকা বলে কিছু হয়নি আপনি ফ্রেশ হয়ে আসুন আমি আপনার জন্য শরবত তৈরি করছি। শুভ আবার জিজ্ঞাসা করে কি হয়েছে তোমার মুখ অন্ধকার কেন? মা বাবার জন্য পরান পড়ছে? মনিকা একটু গম্ভীর গলায় শুভকে উত্তর দেয় আমি বললাম না কিছু হয়নি আমার। তাহলে বারবার কেন জিজ্ঞাসা করছেন। শুভ বুঝতে পারে মনিকার কিছু একটা হয়েছে কিন্তু এখন সে কিছু না বলে সঙ্গে সঙ্গে চলে যায় ফ্রেশ হতে। ফ্রেশ হয়ে রুমে আসতে দেখে অর্পা ফোন দিয়েছে। ফোনটি রিসিভ করতেই অর্পা বলে নতুন জায়গায় এসে আমার না কিছু ভালো লাগছে না।চলো না রাতে কোন রেস্টুরেন্টে খাওয়া দাওয়া করি। শুভ অর্পাকে বলে আজ নয় অন্য একদিন যাওয়া যাবে। কিন্তু অর্পা কিছুতেই মানতে চায় না সে অনেক রিকোয়েস্ট করে। পরবর্তীতে শুভ রাজি হয় এবং রেডি হয়ে সে বেরিয়ে পড়ে। যাওয়ার সময় মনিকাকে বলে সে একটু বাইরে যাচ্ছে ফিরতে রাত হবে তাকে খেয়ে ঘুমিয়ে পড়তে।
মনিকা তাকে বারণ করতে পারে না। সে ভাবতে থাকে বিবাহের অনেকদিন হয়ে গেল। কিন্তু এখনো পর্যন্ত সে বাইরে রাতে কোথাও যায়নি। আজ কি হলো যে তাকে আজ অফিস থেকে এসে বাইরে যেতে হল। যাই হোক সে টিভিতে মুভি দেখতে দেখতে ঘুমিয়ে পড়ে। হঠাৎ কলিং বেল বেজে ওঠে। তার ঘুম ভেঙ্গে যায় আর সে দরজা খুলে দেখে শুভ। শুভ মনিকাকে বলে তুমি এখনো ঘুমাওনি? মনিকা বলে আপনার জন্য ওয়েট করছিলাম আপনি কখন আসবেন। আপনি ফ্রেশ হয়ে আসেন আমি আপনার জন্য খাবার রেডি করছি। তখন শুভ বলে আমি রাতে খাব না বাইরে থেকে খেয়ে এসেছি। মনিকা তখন বলে আপনি বাইরে থেকে খেয়ে এসেছেন একটাবার আমাকে বলতে পারতেন। আমি আপনার জন্য না খেয়ে বসে আছি। আপনি কখন আসবেন একসঙ্গে আমরা খাব। আর আপনি এখন এসে বলছেন আপনি খেয়ে এসেছেন। কি হয়েছে আপনার? আপনি কি কোন কারনে আমার উপর রাগ করে আছেন? শুভ বলে কি সব বলছো তুমি। আমি কেন তোমার উপর রাগ করতে যাব আর তুমি এমন কিছু করোনি যে তোমার উপর আমি রাগ করবো। আজ হঠাৎ এক ফ্রেন্ড ফোন দিয়েছিল আর রাতে খাওয়ার দাওয়াত দিয়েছিল তাই গিয়েছিলাম। শুভ মনিকাকে বলে আমি তো তোমাকে বলে গিয়েছিলাম খাওয়া-দাওয়া করে ঘুমিয়ে পড়তে। ঠিক আছে যখন খাওনি এখন খেয়ে নাও আমি ঘুমাতে যাচ্ছি।
এই বলে শুভ ঘুমাইতে চলে যায়। আর অন্যদিকে মনিকা খাবারগুলো গুছিয়ে সেও ঘুমাতে চলে যায়। কারণ তার খেতে ইচ্ছা করছিল না মনটা খুব খারাপ ছিল। রুমে যে দেখে শুভ ঘুমিয়ে আছে তাই তাকে আর না ডেকে সেও ঘুমিয়ে পড়ে। শুভর রাত তিনটার দিকে ঘুম ভেঙে যায়। সে রান্না ঘরে যায় জল খেতে। লাইট অন করে যখন ফ্রিজে জল এর বোতল নিতে যায় তখনই দেখে খাবার গুলো ফ্রিজে রেখে দেওয়া। শুভ তখনই বুঝতে পারে মনিকা রাতে না খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে। তখন শুভর একটু খারাপ লাগে শুভ বুঝতে পারে মনিকা বাড়িতে একা থাকে।আর সে সব সময় আমার জন্যই চিন্তা করে। আমি খেয়েছি কিনা কি করছি সব সময় খেয়াল রাখে। আর আজ আমি তার কথা চিন্তা না করে বন্ধুকে হ্যাপি করতে আমি তাকে দুঃখী করে ফেললাম। এটা আমার করা ঠিক হয়নি।যাই কিছু হয়ে যাক বেচারা আমার জন্য বসে থাকে। শুভ নিজের ভুল বুঝতে পেরে চলে যায় রুমে মনিকাকে ঘুম থেকে ডেকে তুলতে। শুভ মনিকাকে ডাক দেয় কিন্তু মনিকা কোন সাড়া দেয় না। অনেক ডাকাডাকির পরে মনিকা শুভকে বলে কি হয়েছে এত রাতে ডাকছেন কেনো? শুভ বলে তুমি রাতে না খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েছ? মনিকা বলে হ্যাঁ না খেয়ে ঘুমিয়েছি।তো আপনার কি? শুভ বলে আমার অনেক কিছু ওঠো আমার ক্ষুদা লেগেছে খেতে দাও। মনিকা বলে ক্ষুধা লেগেছে আপনি যে খেয়ে নিন না।আমাকে কেন ডাকছেন আমার ঘুম আসছে। তখন শুভ বলে তুমিও আমার সঙ্গে খাবে। মনিকে বলে আপনার কি মাথা খারাপ হয়েছে মাঝরাতে এখন ভাত খেতে হবে। শুভ বলে আমি কোন কথা শুনতে চাই না তুমি এখন উঠবে এবং আমার জন্য খাবার রেডি করবে।
তখন মনিকা বলে কেন এত রাতে বিরক্ত করছেন। আপনার ক্ষুধা লেগেছে আপনি খেয়ে নিন। তখন শুভ বলে আমার ভুল হয়েছে এবারের মতন ক্ষমা করে দাও। মনিকা বলে আপনি কেন সরি বলছেন সরি তো আমি আপনাকে বলব। আমি আপনার জন্য শুধু শুধু বসে ছিলাম। শুভ বলে আমি আমার ভুল বুঝতে পেরেছি চলো খুব ক্ষুধা পেয়েছে কিছু খেতে দাও। মনিকা শুভর দুটি হাত ধরে বলে আপনি কি করে পারলেন এমনটা। আপনি তো জানেন আমি আপনার জন্য ওয়েট করি। আর আপনি আজ আমাকে রেখে একা একা খেয়ে এসে বললেন আমি খেয়ে এসেছি। একটাবার চিন্তা করলেন না যে আপনার জন্য কেউ না
খেয়ে অপেক্ষা করে বসে আছে। শুভ বলে আমাকে ক্ষমা করে দাও এরপর থেকে আর এমনটি হবে না। শুভ মনিকার চোখের জল মুছিয়ে দেয়। মনিকা শুভকে বলে চলুন আমি খাবার রেডি করছি। কিন্তু একটা কথা আপনাকে বলি আর এমনটি কোনদিন করবেন না কারণ আমার কষ্ট হয়। শুভ বলে মনিকে তুমি কি আমাকে ভালোবাসো। মনিকা বলে আমি জানিনা।