প্রেমের নদী এখনো বহে ——অতীত থেকে বর্তমান, একই তীরহীন বেদনা
শতাব্দীর পাথরে খোদাই তোমার নাম,
আমার কণ্ঠে এখনো জমে আছে সেই মৃৎপাত্রের বিষ—
প্রাসাদের ছায়ায় আমরা দুটি প্রতিমা,
যুগের সীমানা পেরিয়েও চোখে পড়ে না পরস্পরের চিহ্ন।
প্রথম স্তবক: প্রাচীন অলিন্দের ধূলো
মৌর্য সাম্রাজ্যের চন্দ্রগুপ্তের মোহর আজো জ্বলে
আমাদের কব্জিতে—
জাতিভেদের লাল সুতোয় বাঁধা আঙুল,
অশোকের স্তম্ভে লেখা ছিল "মিলন নিষিদ্ধ"।
তবু রাতের পদ্মা জেগে উঠত গোপনে,
মাটির নিচে লুকানো প্রেমের গুহাচিত্রে
আমাদের মুখচ্ছবি আঁকত এক অজানা শিল্পী—
রক্তে মিশে যেত হরপ্পার সিলমোহরের রেখা।
দ্বিতীয় স্তবক: আধুনিকতার নিওনে
এখনো সেই নদী—
কেবল নাম বদলেছে: হুগলি, বুড়িগঙ্গা, যমুনা।
সেতুর নিচে আমাদের ছায়া ভেঙে যায় প্রতিদিন,
মোবাইলের স্ক্রিনে জমে থাকে অদৃশ্য অশ্রু।
ফেসবুকের প্রোফাইল পিকচারে তুমি পরি নির্জনতা,
আমার আইডি কার্ডে লাল কালি দিয়ে লেখা "অবিবাহিত"।
কন্ট্রোল রুমের সার্কিটে ধ্বংস হয় আমাদের চুম্বনের ফ্রিকোয়েন্সি,
ডিজিটাল যুগেও প্রেম остается সেই পুরোনো গুপ্তচর।
শেষ স্তবক: ভবিষ্যতের বীজ
কিন্তু শোনো, প্রিয়তম,
এই নদীর জলে আজ মিশেছে নতুন এক স্বাদ—
যে মেয়েরা ভাঙছে গঞ্জের কুয়োর বাঁধ,
যে ছেলেরা সেলাই করছে জাতপাতের ছিন্ন জামা।
মৌসুমি বাতাসে উড়ছে প্রাচীন পুঁথির পাতা,
উত্তরায়ণে খুলে যায় জটিল গণিতের গ্রন্থি—
এবার হয়তো বর্ষার শেষে
নদীটি তার নাম ফিরে পাবে "মুক্তি"।