শীতের স্মৃতিগুলো
বাংলাদেশ ছয়টি ঋতুর দেশ। বাংলাদেশের ঋতু বৈচিত্রের মধ্যে সবথেকে বেশি সময় থাকে গরম কালটি। খুবই অল্প সময় তাও বলা যায় তুই থেকে তিন মাস শীতকাল থাকে। শীতের মৌসুমটা আমাদের দেশের খুবই জনপ্রিয় একটি মৌসুম। তার একটা অন্যতম কারণ হতে পারে শীত মৌসুমের সময়কালটা অল্প থাকে এজন্য। আর তাছাড়া এই মৌসুমে কুয়াশার চাদরে মোড়া সকাল আর সন্ধ্যা, গরম কাপড় পরে বাইরে ঘোরা, শীতের সন্ধ্যায় গরম চায়ের কাপে চুমুক দেওয়া, সকাল বেলার মিষ্টি খেজুরের রস, নানা রকম পিঠা পায়েস, খেজুরের গুড়ের মিষ্টি গন্ধ ইত্যাদি অন্যতম।
সবগুলো কারণের মধ্যে খেজুরের রস একটা অন্যতম কারণ এই শীতের জনপ্রিয়তার। বিশেষ করে গ্রামের দিকে এই খেজুরের রসের প্রচলন বেশি। শীতের শুরুতে গাছীরা খেজুর গাছগুলো রস আসার জন্য মাথাগুলো কেটে রাখে। তার কিছুদিন পর সেখানে বাঁশের তৈরি ছোট্ট পাইপ এর মত একটি নল লাগিয়ে দেয়। তারপর সেখান থেকে টুকটুক করে সারারাত ধরে রস পড়ে। একটি মাটির ভাড় সেখানে ঝোলানো থাকে। সেই ভাড়ে সারারাত ভরে যায় খেজুরের মিষ্টি রসে। সকালবেলা সেই টাটকা রস খেতে যে কি মজা তা আসলে ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব না।
ডিভাইস | স্যামসাং এস ২১ |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @surzo |
লোকেশন | ফুলবাড়ি, কোটচাঁদপুর, ঝিনাইদহ, বাংলাদেশ |
আমরা যারা জীবনের প্রয়োজনে ঢাকাতে বা শহরে থাকি, শীত আসলে এই জিনিসটা খুবই মিস করা হয়। যদিও বর্তমানে খেজুরের রস গুড় ইত্যাদি জিনিসটা আগে তুলনায় অনেকটা কমে এসেছে। তবুও শীত আসলে খেজুরের রস না খেলে যেন পুরো শীতটাই কাটে না। ছোটবেলার কথা মনে পড়ে যায়, তখন আমি গ্রামে থাকতাম। আমাদের পুকুরের চারিদিকে অনেকগুলা খেজুর গাছ ছিল। সেই গাছগুলো গাছিরা কাটতো। আর সকালে ভাড় বোঝাই করে রস দিয়ে যেত। আমার দাদি বসে বসে সেই রস জ্বাল দিয়ে গুড় তৈরি করতেন। তারপর আমরা ভাই বোনেরা মিলে সেই জাল দেওয়া গুড়ের হাঁড়ির চার সাইডে বসে খেজুরের পাতা দিয়ে টেনে টেনে ওই গরম গুড় খেতাম। সেই সব দিনের কথা মনে পড়লে এখনো গায়ে কাঁটা দিয়ে ওঠে। আহ কি দিন যে ছিল। শীত আসলেই এইসব ছোটবেলার স্মৃতি যেন মনে পড়ে যায়।