সয়া প্রোটিন আসলে কি ???? What is Soya Protein Actually????
সয়াবিন নামটি আমাদের অনেকেরই জানা। সারা বিশ্বে বহুল প্রচলিত ও জনপ্রিয় একটি খাবার এর নাম ' সয়াবিন'।এর বোটানিক্যাল নাম Glycine max , ইংরেজি নাম SOYA BEAN। প্রায় ৩০০০ বছর থেকে বিশ্বের অনেক দেশে বিশেষ করে চীন দেশে সর্বপ্রথম সয়াবিনের চাষাবাদ শুরু হয়। ২৮৩৮ খ্রিস্টপূর্ব চীন দেশের তৎকালীন সম্রাট শেনইয়াং তার রাজত্বে বাধ্যতামূলক সয়াবিনের চাষ করাতেন এবং উন্নত মানের খাদ্য হিসেবে রাজপরিবারের সদস্যরা সল্প মাত্রায় সারা বছর গ্রহন করতেন। প্রাচীনকালে ভারতীয় মুনি ঋষিরা মধুর সাথে দেহের পুষ্টি সাধনের জন্য উন্নত ও শক্তিশালী খাদ্যরুপে গ্রহন করতেন এই সয়াবিন।
পরবর্তীতে এর পুষ্টিগুন বিবেচনা করে বিশ্বের সকল উন্নত দেশ ,যেমনঃ যুক্তরাষ্ট্র ,কানাডা , অস্ট্রেলিয়া , রাশিয়া , ইংল্যান্ড , জাপান , সাউথ আফ্রিকা ও ভারতে এর চাষাবাদ প্রচলিত হয়েছে। সম্প্রতি বাংলাদেশের কিছু অঞ্চলে এর চাষাবাদ শুরু হয়েছে। যদিও সয়াবিন আমাদের দেশেই উৎপাদন হচ্ছে ,কিন্তু তার বেশিরভাগই বিদেশে রপ্তানি হয়ে যাচ্ছে । বাংলাদেশে সয়াবিন এর প্রাপ্যতা সত্ত্বেও আমরা এর পুষ্টি গুনাগুন সম্পর্কে অনেকেই জানিনা। আধুনিক যুগের স্বাস্থ্য ও পুষ্টি বিজ্ঞানীরা অনেক দিন গবেষণা ও পরিক্ষা করে প্রমান করেছেন যে , প্রচলিত গম,চাল অথবা অন্যান্য খাদ্যের তুলনায় প্রায় ১০ গুন পুষ্টি উপাদানে সমৃদ্ধ সয়াবিন। এতে রয়েছে অতি মূল্যবান ২ টি খাদ্য উপাদান। তার ১ম টির নাম Isoflavones , ২য় টির নাম হচ্ছে Stenols । আর এই দুইটি উপাদান হৃদরুগ ও ডায়াবেটিস প্রতিরোধের জন্য অতি মূল্যবান ভেষজ উপাধানরুপে স্বীকৃত।
সয়াবিন এমন একটি খাদ্য যার মধ্যে ৫২% প্রোটিন এবং অতি কম পরিমাণে ১৯% কার্বোহাইড্রেট । বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, আমেরিকান খাদ্য ও ঔষধ নিয়ন্ত্রন কত্রিপক্ষ FDA ,আমেরিকান হার্ট এসোসিয়েশন AHA ও আমেরিকান সয়াবিন উৎপাদক
এসোসিয়েশনের প্রখ্যাত স্বাস্থ্য গবেষক ও পুষ্টি বিজ্ঞানীরা একমত হয়েছেন, " যদি প্রতিদিন ২৫ গ্রাম সয়া প্রোটিন নিয়মিত খাদ্য তালিতায় অন্তরভুক্ত করা যায় তাহলে হৃদ রুগ বা হার্ট অ্যাটাকের সম্বাভনা অদিকাংশ ক্ষেত্রে কমে আসে"।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এই ঘোষনা আজ সারা দুনিয়ায় ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ,কানাডা , চীন , জাপান , মালয়েশিয়া , রাশিয়াসহ ইউরোপের উন্নত দেশসমুহের জনগন আজ সয়া প্রোটিন বা এঁর থেকে উৎপাদিত দুধ দই কেক রুটি বিস্কুট ইত্যাদি খাদ্য তৈরি করে নিয়মিত খাবারে পরিনত করেছে । ফলে ঐ সকল দেশের জনগুষ্টির গড় আয়ু অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে এবং হৃদ রুগ , ডায়াবেটিস বা অন্যান্য নিরব ঘাতক অকাল মৃতু রুগের কবল থেকে ৫০% - ৮০% জনগুষ্ঠি মুক্ত হয়েছে।