হিংসা
আজ যে ঘটনার কথা বলছি সেটা ঘটেছিল গত কুরবানি ঈদের পরেই।ঈদের ছুটিতে বন্ধুবান্ধব সবাই এক জায়গায় হয়ে আড্ডা দিচ্ছি।আড্ডা দেওয়ার জায়গা টা আমার বন্ধু নাহিদের বাসার পেছনে খোলামাঠ।বন্ধু বান্ধব মিলে আড্ডা দিলে যা হয় আরকি,স্থান কাল পাত্র কিছুই মনে থাকে না।
আমাদেরও ছিল না,তখনই হঠাৎ একটি ডাক শুনে আমাদের ধ্যান ভাঙ্গে। তখন দেখি একজন আন্টি পাশ থেকে ডাকছে।আর ডাকছে নাহিদ কে। আন্টিকে দেখে নাহিদের মুখ কালো হয়ে গেল।আমরা ব্যাপার টা বুঝলাম না।ভবলাম আড্ডা থেকে নাহিদ এর যাওয়ার ইচ্ছা নাই তাই হয়ত এমন অবস্থা।
যাই হোক আন্টির এদিকে ডাক থামানোর কোন ইচ্ছা নেই,এদিকে নাহিদেরও উঠে যাওয়ার কোন ইচ্ছা নেই। কিন্তু বিষয়টা আমাদের ভাল লাগল না,তাই আমরা ওকে জোর করে উঠিয়ে দিলাম আর সাথে আমরাও ঘটনা কি দেখার জন্য এগিয়ে গেলাম।নাহিদ আন্টিকে সালাম দিয়ে কথা শুরু করল।
কিন্তু আন্টি দেখলাম সেসব এর ধার কাছ দিয়েও গেলেন না।উনি বলতে শুরু করলেন,এভাবে আড্ডা দিলেই দিন কাটবে? কি করো এখন? নাহিদ দেখলাম চরম বিরক্ত, তারপরেও অনেক ভদ্রভাবে উত্তর দিল আন্টি আমি পড়াশোনা করতেছি,এখনো শেষ হয়নি। তখন আন্টি বলল, তাও তো পাশাপাশি কিছু করতে পারো,তোমার বয়েসি ছেলে মেয়েরা কত কিছু করে নিজের খরচ নিজেই চালায়।
তখন নাহিদ দেখলাম বলল,আমি কিছু করছি না দেখেই শান্তিতে ঘুমাতে পারছেন।আমি কিছু করলেই তো আপনাদের ঘুম হারাম হয়ে যাবে। তাই আপনাদের কথা ভেবেই বেকার বসে আছি।যাতে আপনারা শান্তিতে অন্তত ঘুমাতে পারেন।এবার আন্টির মুখ বাকা হয়ে গেল। প্রচন্ড রেগে গেলেও কিছু না বলে গট গট করে চলে গেলেন।
আমরা ভীষণ অবাক হয়ে গেলাম।কারন নাহিদ বেশ শান্ত শিষ্ট ছেলে। এমন কড়া কথা ওর মুখ থেকে আশাই করা যায়না। তাই আমরা ওকে জিজ্ঞেস করলাম, "ভাই হঠাৎ এমন খারাপ বিহেভ করলি যে? কি মনে করবে উনি?"
নাহিদ বলল,"বাদ দে। উনি কি মনে করল না করল তাতে যায় আসে না।উনার অভ্যাস ই এমন। আমরা জিজ্ঞেস করলাম কাহিনী কি বলতো? তখন নাহিদ বলল,ইনি আমাদের প্রতিবেশী। শুধু এখানেই না,আমাদের গ্রামের বাড়িও পাশাপাশি।প্রতিবেশির ধর্ম কি? একজন আরেকজন এর সুখে দুখে পাশে দাঁড়াবে। একজন এর খুশিতে আরেকজন খুশি হবে।
কিন্তু ইনি সে জাতেরই নয়। মুখে দেখাবে আমাদের জন্য কত চিন্তা,কিন্তু অন্তরে প্রচুর বিষ। আমাদের ভাল কিছু হলে ইনার চোখের ঘুম উড়ে যায়। উনি সব সময় চিন্তা করেন কিভাবে আমাদের ক্ষতি হয়,মানুষজনের কাছে আমাদের নামে যা নয় তাই বলে বেড়ায়। আমি ssc তে যখন গোল্ডেন পেলাম উনি পুরো এলাকা বলে বেড়িয়েছেন আমি নাকি নকল করে রেজাল্ট ভাল করেছি। উনি ছয় মাস আমাদের বাড়ি আসেন নাই। এই কথা গুলো শুনে আমরা বুঝলাম কেন নাহিদের ধৈর্যের বাধ ভেঙ্গে গেছে।যাই হোক আমাদের আড্ডা দেওয়ার মুড তখন চটকে গেছে। আমরাও চলে আসলাম।
কোথায় যেন শুনেছিলাম নিজের দুখে জ্বলে যিনি, পরের দুঃখে খুশি যিনি তাকেই বলে প্রতিবেশী। আর আপনার আজকের শেয়ার করা পোস্টটি পড়ে কিন্তু আমার সেই কথাটিই মনে পড়ে গেল। সমাজে এমন ধরনের অনেক মানুষ আছে যারা অন্যের ভালো কিছুই সহ্য করতে পারে না।এদের কে জাস্ট ঘৃণা করা উচিত।
হ্যা আপু। এসব মুখোশধারী মানুষজনকে ঘৃণা করা উচিৎ। ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
কিছু কিছু মানুষ আছে যাদের কথাবার্তা শুনলে অনেক খারাপ লাগে। যেমন আপনাদের আন্টি কথাগুলো যেভাবে বলেছে মনে হয় তার কাছে ব্যবহার বলে কিছু নেই। তবে আপনার বন্ধু নাহিদের ধৈর্য আছে বলতে হবে। সে কিভাবে কথাগুলো ধৈর্য ধরে শুনলেন এবং স্বাভাবিক উত্তর দিলেন। আর আপনি এসএসসিতে গোল্ডেন প্লাস পেয়েছেন। অথচ সেই আপনাদের এলাকায় বলতেছে আপনি নকল করে পাস করেছেন। নকল করে পাশ করা যায় কিন্তু গোল্ডেন প্লাস পাওয়া যায় না। কারণ নকল করে ৩৩ নাম্বার উঠাতে অনেক কষ্ট হয়ে যায়। যাইহোক এ ধরনের লোকদেরকে এড়িয়ে চলাই ভালো। ধন্যবাদ আপনাকে পোস্টে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
আপনাকেও ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।