অভিশাপ||চতুর্থ পর্ব
গত পর্বে:
গত পর্বে আমরা দেখেছি রবির দাদুর বাবা মারা গেছেন।তাকে নিয়ে সবাই শ্মশানে যায়৷ সবাই যখন চিতা সাজানোয় ব্যস্ত তখন রবির দাদু যায় প্রকৃতির ডাকে সারা দিতে।আর তখনই সে কিছু একটা দেখে প্রচন্ড ভয় পায় আর চিৎকার করে ওঠে।তার চিৎকার শুনে বাকি সবাই খুজতে থাকে কি দেখে তিনি ভয় পেলেন।
বর্তমান পর্বে
দাদুর চিৎকার শুনে সবাই ছুটে আসে।এবং তার ইশারা করা দিকে সবাই খুজতে শুরু করে।খোজাখুজির একপর্যায়ে একজন কিছু একটা পায় এবং সবাইকে ডাকে। সবাই সেখানে গিয়ে দেখে একটি ছায়া মূর্তি দাঁড়িয়ে আছে।আলো আনার পর দেখা গেলো সে কোন ভূত নয় একজন মানুষ।
তার দেহ কঙ্কালসার,মুখে দাড়ি গোফের জঙ্গল,পড়নে কোনমতে একটি ন্যাকড়া জড়ানো।
এ যেন মানুষের রূপে নরকঙ্কাল।এর মাঝে একজন বলে ফেলল,"আরে এ তো হারান। সেই উন্মাদ হারান।"তার কথা শুনে সবাই ভাল করে দেখে একমত হল এই ছায়ামূর্তি হারানই বটে।এরপর সবাই মিলে হারান কে ধরে আনতে লাগল। কিন্তু হারান জোর করে তাদের থেকে নিজেকে ছুটিয়ে নেয়। তাকে ধরে থাকা মানুষ তার এই কান্ডে হতবাক হয়ে যায়।কারন তার এই শীর্ণ শরীরে যেনো অসুর ভর করেছে।তার শক্তির সাথে দশজন মানুষ পেরে উঠছিল না।
সে নিজেকে ছুটিয়ে নেওয়ার পর, চিতার দিকে আঙ্গুল ইশারা করে বলল জমিদার বাড়ির সব ঐ চিতার মত জ্বলবে।আমি যেমন সন্তান হারা হয়েছি তারাও সন্তান হারাবে।এই বলে সে দৌড় দেয় নদীর দিকে এবং লাফ দেয় নদীতে।তখন একজন বলে আরে হারান তো সাতার জানত না।২দিন পর তিনগ্রাম দুরের এক জায়গায় হারানের লাশ পাওয়া যায়।
যাই হোক এরপর আর কিছু হয়নি।সবাই সুষ্ঠভাবে মৃতদেহ সৎকার করে বাড়ি ফিরে আসেন।এর কিছুদিন পরের ঘটনা। এখন ক্ষমতা দাদু ও দাদুর ভাইয়ের হাতে। তারা দুইভাই মিলেমিশে জমিদারি শাসন করছিল।বেশ ভালই চলছিল জমিদারি।তারা তাদের বাবার মত অঅত্যাচারী ছিল না।ফলে প্রজারাও ছিল খুশি।কিন্তু তখনই হয় বিনা মেঘে বজ্রপাত।
হঠাৎ একদিন জমিদার বাড়িতে আগুন লাগল।কিন্তু আগুন লাগার বিষয়টি অদ্ভুত।আগুন শুধু লেগেছে ধানের গোলা গুলোতে। আরো আশ্চর্য বিষয় হল,গোলা গুলো একটা আরেকটা থেকে বেশ দূরে দূরে।তাই একটা থেকে আরেকটিতে আগুন লাগা সম্ভব না।অথচ দেখা গেল ৪০টি ধানের গোলা জ্বলছে।শত জল দিয়েও কিন্তু সে আগুন নেভানো গেল না।
সব গুলো ধানের গোলা পোড়ার পরেই আগুন নিভল।এরপর কিছুদিন সব ঠিকঠাক।এর কিছুদিন পরের ঘটনা,
রবির বাবা তখন ছোট। উনি তখন উঠানে খেলছিলেন,হঠাৎ একটি লোক এসে বলল,"বাবা জমিদার সাহেবের বড় ছেলেকে গিয়ে বলো হারান এসেছে,তার কি মনে আছে অভিশাপের কথা?" রবির বাবা ছোট মানুষ।অতশত বুঝলেন না।তিনি দৌড়ে ভিতরে গিয়ে তার জ্যাঠা কে সেই অদ্ভূত লোকের কথা বলল।
তার কথা শুনে জমিদার মশাইয়ের বড় ছেলে অবাক হয়ে গেলেন।কারন হারান মারা গেছে অনেক দিন আগে।তখন তিনি লোকটির বর্ণনা জানতে চাইলেন।রবির বাবা যে বর্ণনা দিল তার সাথে শ্মশানে দেখা হারাণের সেদিনের চেহারা মিলে গেছে।কিন্তু তা কিভাবে সম্ভব? উনি তো নিজে হারানের মৃতদেহ দেখেছেন।এরপর থেকে উনি কেমন যেন পাগল হয়ে গেলেন। শুধু বলতে লাগলেন,"তা কি করে হয়?"
OR
আমি বৃত্ত মোহন্ত (শ্যামসুন্দর)। বর্তমানে ছাত্র। নতুন কিছু শিখতে, নতুন মানুষের সাথে মিশতে আমার খুব ভাল লাগে। তেমনি বই পড়া আর ঘুরে বেড়ানো আমার পছন্দের কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম। মুক্তমনে সব কিছু গ্রহণ করার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি,"বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর, সবার আমি ছাত্র"।
ভাইয়া আপনার অভিশাপ গল্পের সর্বশেষ পর্ব পড়ে খুব ভালো লাগলো। আগের পর্বগুলো পড়া হয়নি তবে এই পর্ব পড়ে যেটুকু বুঝেছি ততটুকুই ভালো লেগেছে। একটু ভয়ও পেয়েছি তবে এমন গল্প পড়তে অনেক ভালো লাগে। আমি আবার গল্প পড়তে খুব পছন্দ করি। জমিদার বাড়িতে আগুন লেগেছে কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় ধানের গোলার মধ্যে লেগেছে। যেই হারান অনেক বছর আগে মারা গিয়েছে সে আবার ফিরে এসেছে এই কথা জমিদার বাবুর বড় ছেলে শুনে পাগল হয়ে গিয়েছে। সত্যি এমন হওয়ারই কথা।কারণ মৃত মানুষ কিভাবে ফিরে আসে। ভাইয়া বাকি গল্প পড়ার অপেক্ষায় রইলাম। ধন্যবাদ।
এই গল্পটি তো দেখছি খুবই অদ্ভুত। আমি এই গল্পটির মাঝখানে এক পর্ব নাকি দুই পর্ব পড়ি নাই মনে হয়। আসলে এই বিষয়টি কিন্তু খুবই অদ্ভুত হারান তো মারা গিয়েছিল তাহলে পরে সে কিভাবে ফিরে এসেছে। তারপরে ৪০ টি ধানের গোলার মধ্যে আগুন লেগেছিল অন্য কিছু ছাড়া। যখন ৪০টি ধানের গোলা পুড়ে যায় এরপর আগুন নিভে যায় এগুলো কিন্তু সত্যি খুবই অদ্ভুত ঘটনা। অভিশাপ এই গল্পটি কিন্তু বেশ ভালোই লাগছে পড়তে আমার কাছে। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম তাহলে।
অভিশাপ এই গল্পটি প্রথম পর্ব আমি পড়েছিলাম। আজকে চতুর্থ পর্বটি পড়ে এমনিতেই আমার কাছে ভীষণ ভালো লেগেছে আবার অদ্ভুত কান্ডগুলোর কথা পড়ে খুবই অদ্ভুত লেগেছে। লোকটি এক বছর পরে কিভাবে ফিরে আসতে পারে আমি শুধু তা ভাবছি। আর ধানের গোলা ছাড়া অন্য কিছুতে আগুন ধরে নাই এবং কি ধানের গোলা সবগুলোতে আগুন লেগে গিয়েছিল এরপর আগুন নিজে নিজে থেমে যায় এগুলো সত্যি একেবারে অদ্ভুত। অপেক্ষায় থাকলাম পঞ্চম পর্বের কি অদ্ভুত ঘটনা নিয়ে আসছে পঞ্চম পর্ব তা দেখার অপেক্ষায় থাকলাম।