অপেক্ষিত হাসি(Part-2)
রাতে হঠাৎ চিৎকার দিয়ে ঘুম থেকে জেগে উঠে অবণী।অনেক কষ্টে সাকিব অবণীকে শান্ত করে।হাতে হাত রেখে বাচ্চা মেয়ের মত ঘুমিয়ে যায় অবণী।স্পর্শটা সাকিবের কাছে খুব ভালো লাগে।মুখে হাসি নিয়ে সাকিব ঘুমিয়ে পড়ে।সকাল বেলায় অবণীর ভেজা চুলের পানির ছাঁটে ঘুম ভাঙ্গে সাকিবের।প্রথম বারের মত নিজের প্রকৃতির দেয়াল ভেঙ্গে অবণীর মিষ্টি মুখের মায়া চেহারায় প্রতি ভালবেসে সাকিব কাছে আসতে চায়।কিন্তু অবণী বাঁধা দিয়ে মন খারাপ করে সাকিবকে এড়িয়ে যায়।আজো সাকিব রহস্যে পড়লো।বড়সড় একটা রহস্য।
রাতের বেলা যখন সাকিব অবণীর প্রিয় আইসক্রিম নিয়ে রুমে ঢুকল,অবণী তখন কাঁদছিল।
(শান্ত কন্ঠে)কি হয়েছে,কাঁদছো কেন?
আমাকে ক্ষমা করে দেবেন, আমি আপনাকে ঠকিয়েছি।
(মৃদু কৌতূহলী হাসি দিয়ে)মানে?
আমি জানি, একটা মেয়ের কাছে স্বামীর ভালবাসার চেয়ে বড় সুখ আর কিছুই নেই।কিন্তু আমি আপনাকে আর ঠকাতে চাই না।
স্পষ্ট করে বলো কি বলতে চাও?
আমিও একদিন একজনকে ভালবেসেছিলাম।খুব ভালবেসেছিলাম।হয়ত নিজের থেকেও একটু বেশি।কিন্তু ভালবাসার মানুষটি নিজের স্বার্থটা হাসিল করে আমাকে রিক্ত করে চলে গেছে।প্রতারণার জালে আমি আমার সব হারিয়েছি।আপনাকে দেবার মত আমার কাছে আর কিছুই নেই।(কাঁদতে কাঁদতে)
সাকিবের ভেতরে যেন কিসের একটা বাতাস বয়ে গেলো।দমকা ঝড়ো বাতাস,যে বাতাসে সব সুখের প্রদীপগুলো যেন নিভে গেছে।ঠায় বসে পড়ল সাকিব।কাঁদতে থাকা অবণী বারান্দায় এসে দাঁড়ালো।সাকিব কোনো কথা না বলে বেড়িয়ে গেলো।
রাতে আর বাড়ি ফেরে নি সাকিব।যখন ফিরলো,মায়ের কাছে শুনতে পেল অবণী সকাল হতেই ব্যাগ নিয়ে বাবার বাড়ি চলে গেছে।মায়ের কৌতূহল না মিটিয়ে পরিবারের কারো কোনো কথার জবাব না দিয়ে সাকিব রুমে এসে দরজা আটকে দিলো।খুব মনে পড়ছে,কিন্তু কেন এমনটা হলো তার সাথে?
সন্ধা হওয়ার আগ মূহর্তে সাকিব শশুড়বাড়ি এসে উপস্থিত হলো।এখানে এসে শুনলো সেই সকালে এসে অবণী দরজা বন্ধ করেছে কিন্তু এখনো খুলে নি।অবণীর মায়ের হাজার ডাকেও অবণী দরজা খুলে নি।
অবণী?
হুম।(কান্নাজড়িত কন্ঠ)
দরজাটা খুলো।
কেন?
আমি এসেছি খুলবে না?
অবণী দরজা খুলল,
কেন এসেছেন?ডিভোর্স লেটার দিতে?
তোমার কি মনে হয় আমি কি এতটাই খারাপ?
আমার মনে হওয়া না হওয়াতে কিছু আসে যায় না।
ভালবেসে ফেলেছি যে।
অভ্যাস হারিয়েছেন ভালবাসা নয়।আমার চেয়ে ভালো মেয়েকে বিয়ে করে নিয়েন।দুঃখিত আপনাকে কষ্ট দেয়ার জন্য।
ঐ,স্বার্থপর পুচকি মেয়ে।এত কথা কোথা থেকে শিখেছো?বলেছি ভালবাসি, তো ভালবাসি।আর কোনো কথা হবে না।বেশি কথা বলবে তো এক থাপ্পড়ে সবকটা দাঁত ফেলে দিবো।
(কাঁদতে কাঁদতে)সাকিবকে জড়িয়ে ধরল অবণী।
আমিও যে দুষ্টু, দায়িত্ববান বরটাকে ভালবেসে ফেলেছি।
তাহলে আমাকে ছাড়ার কথা কেন বললে?
ভয় হয়,যদি তোমাকে হারিয়ে ফেলি?
আপনি থেকে তুমি?বাব্বাহ !
দেখেছো কি?আগে তোমাকে মানুষ করবো,কপালে অনেক কষ্ট আছে তোমার।
হুম,আমিও আমার দুষ্টু-মিষ্টি পুঁচকি বউটার আদর-শাসন সবটুকু পেতে চাই।
হুম,পাবে।
ক্ষুধা লেগেছে খুব,সকাল থেকে কিছুই খাওয়া হয় নি।
হুম,আমারো।দাঁড়াও আনছি।
(পেছন থেকে ডাক দিয়ে)শুনো?
কি?
ভালবাসি খুব।
অবণী একটা প্রাণ খোলা মুক্তঝরা হাসি দিয়ে সামনে থেকে চলে গেল।বহুকালের অপেক্ষিত এই হাসির মাঝেই খুন হবার তীব্র ইচ্ছে সাকিবের।
This post has received a 1.56 % upvote from @drotto thanks to: @ohimahathir.