"হাওর বাওরের সুস্বাদু মাছ "
Hello everyone
আসসালামু আলাইকুম/ আদাব /নমস্কার প্রিয় স্টিমিয়ান বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই আশা করি সুস্থ আছেন, আমিও সৃষ্টিকর্তার অশেষ কৃপায় ভালো আছি। আজ আমি আপনাদে মাঝে একটি টপিক নিয়ে উপস্থিত হলাম তা হল "হাওর বাওর এর সুস্বাদু মাছ "চলুন শুরু করা যাক।
হাওর বাওরের পরিচিতিঃ
হাওর বাওর বলতে সাধারণত আমরা যাহা বুঝি তাহা হচ্ছে একটি বৃহৎ এলাকা জুড়ে নিচু ভূমি যা বর্ষার মৌসুমে পানির নীচে তলিয়ে যায় এবং শুষ্ক মৌসুমে পানি কমে গেলে ভূমি শুকিয়ে শস্য ক্ষেতের জন্য উপযুক্ত হয় এবং গরু ছাগলের বিচরণ ভূমিতে পরিনত হয় যাহাকে আমরা হাওরের পতিত মাঠ হিসেবে জানি।
হাওর বাওর অঞ্চলঃ
বাংলাদেশের সাধারণত হাওর বাওর অঞ্চল হিসাবে যে সকল অঞ্চলকে চিহ্নিত করা হয় সে অঞ্চল গুলো হল -কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ।
আর এই নিম্ন অঞ্চলগুলোতে বর্ষার সিজনে পানি এক বিশাল জলরাশিতে পরিণত হয়। এমনকি মিনি সমুদ্রের আকার ধারণ করে এবং সেখানে আমরা প্রতিবছর ছোট, বড় ও মাঝারি ধরণের নৌকা নিয়ে পিকনিক করে থাকি
এবং বিভিন্ন প্রজাতির মিঠা পানির মাছ ও জলজ প্রাণী শিকার করে থাকি ।
শুষ্ক মৌসুমে জলাবদ্ধতা কমে গেলে বিশাল হাওর এলাকা চাষাবাদের জন্য উন্মুক্ত হয়।
বর্ষার পানিতে প্লাবিত ভূমিঃ
বর্ষাকালে অসংখ্য খাল বিল নদী নালা পানিতে প্লাবিত হয়ে বিশাল চারণ ভূমি পানিতে টইটুম্বর হয়ে একাকার হয়ে যায়। এই সকল নিম্ন অঞ্চল গুলোকে আমরা হাওর বাওর বলে থাকি।
জীববৈচিত্রের আহরণ ভূমি হাওর বাওরঃ
আমরা জানি বাংলাদেশের হাওর অঞ্চল একটি জীববৈচিত্রের অভয়ারণ্য । এই হাওর বাওর অঞ্চল থেকে আমরা বিভিন্ন প্রজাতির সুস্বাদু মাছ,ও প্রাণী আহরণ করে থাকি।
সাধারণত হাওর বাওর এর মাছগুলোকে আমরা মিঠা পানির মাছ বলে থাকি। আমরা মিঠা পানি থেকে যে সকল মাছ আহরণ করে থাকি সে সকল মাছের কয়েকটি প্রজাতি আপনাদের মাঝে তুলে ধরলাম।
যেমনঃ বোয়াল, রুই, টাকি, কৈ, শিং,পাবদা, পুটি, টেংরা,বাইম,চাঁদা মাছ, মলা, চাপিলা, কাইক্কে মাছ,পাঙ্গাস,চিংড়ি ইত্যাদি ।
কিন্তু দুঃখের সাথ বলতে হয় যে আমরা যখন ৯০ এর দশকে হাওর বাওরে মাছ ধরতে যাইতাম তখন প্রচুর পরিমাণে মাছ পাইতাম। কিন্তু এখন আর মিঠা পানির মাছ সেরকম পাওয়া যায় না, এমনকি পেশাদার জেলেরাও তেমন মাছ পায় না এরও বিশেষ কিছু কারণ রয়েছে।
হাওর বাওরের মাছ কমে যাওয়ার কারণঃ
আমার ধারণা মতে হাওর বাওর মাছ কমে যাওয়ার কয়েকটি কারণ উল্লেখ করলাম।
নির্বিকারে মাছ ধরাঃ
ডিম ওয়ালা মা মাছ ধরার ফলে মাছের প্রজনন ও বিচারহীন ভাবে মাছ শিকার করার ফলে হাওর বাওরের মাছ কমে যাচ্ছে।
ছোট আকারের মাছ ধরাঃ
মানুষ বিচারহীন ভাবে প্রযুক্তিগত জাল ব্যবহার করে ছোট আকারের মাছ শিকার করার ফলে প্রজনন প্রক্রিয়ায় বাধাগ্রস্ত হচ্ছে ও মাছের পরিপূর্ণতা হওয়ার আগেই শিকার করে ফেলা হচ্ছে যার কারণে হাওর বাওরের সুস্বাদু মাছ কমে যাচ্ছে।
কল কারখানার বিষাক্ত দূষণঃ
কলকারখানা বিষাক্ত দূষণ /বর্জ্য আমাদের নদী নালা খাল বিল হাওর বাওরের পানির সাথে মিশে পানিকে দূষিত করার ফলে মাছের ডিম নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ।
যার ফলে মাছের পরিমাণও কমে যাচ্ছে।
জমিতে বিষাক্ত কীটনাশক প্রয়োগঃ
জমিতে বিষাক্ত কীটনাশক প্রয়োগের ফলে আগাছা পরিষ্কার হচ্ছে বটে কিন্তু জমিতে মাছের ডিমগুলা সংরক্ষণ থাকাকালীন অবস্থায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে যার ফলে মাছের প্রজনন ক্ষমতাও কমে যাচ্ছে এবং মানুষের প্রয়োজন অনুযায়ী মাছ পাওয়া যাচ্ছে না।
পরিশেষে আমি একটি কথা বলতে চাই আমাদের প্রত্যেককে প্রত্যেকের অবস্থান থেকে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে এবং সমস্যাবলী সমাধান করতে হবে। যাহাতে করে আমরা- আমাদের প্রয়োজন অনুযায়ী প্রাকৃতিক উপায়ে খাল বিল হাওর বাওরের পর্যাপ্ত পরিমানে সুস্বাদু মাছ পেতে পারি।
ধন্যবাদ।