অল্প দিনের আয়ু😥
আমার বাংলা ব্লগ বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই। আশা করছি ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি আপনাদের আশীর্বাদ ও সৃষ্টিকর্তার কৃপায়।
আমি @shapladatta বাংলাদেশ থেকে। আমার বাংলা ব্লগের একজন ভেরিফাই নিয়মিত ইউজার। আমি গাইবান্ধা জেলা থেকে আপনাদের সঙ্গে যুক্ত আছি।
পৃথিবীতে সব থেকে কঠিন ও কষ্ট হলো বাবার কাঁধে সন্তানের লাশ।সন্তান তো সন্তানই হয়।সন্তান বাবা,মায়ের কাছে আজীবন ছোট্ট টি থাকে।সন্তান বুড়ো হলেও কখনো মা,বাবার কাছে বড়ো হয় না।সন্তানের কষ্টে মা,বাবা কষ্ট পায়।একটি সন্তান কে পেটে ধারণ করা থেকে শুরু করে আমৃত্যু মা কষ্ট করে থাকে।সন্তানের কষ্টে মা বেশি কষ্ট পায় আর সেই সন্তান যদি অকালে মৃত্যুবরণ করে তাহলে তো পৃথিবীর সবকিছু মিথ্যা হয়ে যায়।
আমাদের গ্রামের এক পরিবারে গত দুদিন আগে ঘটে গেছে এক মর্মান্তিক ঘটনা। সেই ঘটনাটি আমি এখন আপনাদের সাথে ভাগ করে নেবো।
তো চলুন দেখা যাক ঘটনাটি কেমন।
মধ্যবিত্ত পরিবার দু ছেলে এক মেয়ে মেয়ের বিয়ে হয়েছে এবং মেয়ের বিয়ের পর বড়ো ছেলের বিয়ে হয়েছে। ছোট ছেলে পুলিশে জব করেন। ছোট ছেলেরও পুলিশের সাথেই বিয়ে হয়েছে। বড়ো ছেলে মোটরসাইকেল মেকানিক।
বেশ ভালোই চলছিলো। বড়ো ছেলের ঘরে পরিবারের কোল আলো করে একটি ফুটফুটে ছেলে সন্তান আসে।বেশ স্বাভাবিক সুন্দর জীবন যাপন করছিলো। বাচ্চাটির বয়স যখন তিন বছর তখন তার জ্বর হয় এবং সাথে বমি।স্বাভাবিক জ্বর মনে করে স্থানীয় ডাক্তারের কাছে ঔষধ এনে খাওয়ালে ঠিক হয়ে যায়। কয়েকদিন পর আবারো জ্বর আবারো জ্বর। অলটাইম শরীরে জ্বর থাকে। শরীরে রক্তশূন্যতা দেখা দেয়।
শিশু ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলে কিছু টেষ্ট দেন এবং ঔষধ দেন সেগুলো খেয়ে কিছুদিন ভালো থাকে।আবারও অসুস্থ হয়ে যায় এবার শিশু ডাক্তার আবারো কিছু টেষ্ট দেন এবং এবার বিভাগিয় শিশু ডাক্তারের কাছে রেফার করেন।বিভাগিয় শিশু ডাক্তার কিছু ব্লড টেষ্ট ও অন্যন্য টেষ্ট দেন এবং যা ধরা পরে তার জন্য পরিবারের কেউ প্রস্তুত ছিলো না।ফুলের মতো শিশুটির ব্লাড ক্যান্সার ধরা পরে।পরিবারের সবাই এটা জানার পর যেন বিনা মেঘে বজ্রপাত হয়।সবাই চোখে অন্ধকার দেখে।পরিবার পরিজন আত্নীয় স্বজন সবাই খুবই ব্যাথিত হয় এবং ভগবানের কাছে প্রার্থনা করতে থাকে।নিস্পাপ একটি ফুলের মতো পবিত্র শিশুর এমন অবস্থা কোন মানুষ মেনে নিতে পারে না।
চিকিৎসা শুরু হয় অনেক টাকা খরচ করে কিন্তুু ভালো হয় না।ঢাকা ক্যান্সার হাসপাতালের চিকিৎসা হয়।তিন বছর বয়সে ক্যান্সার ধরা পরে আর পাঁচ বছর বয়সে মারা যায়।
সারাদিন রাত পেটের ব্যাথায় কাতরায় মা বুকে জড়িয়ে ধরে সারারাত কান্না করে বুকে আকারে ধরে থাকে।ওতটুকু ছেলে মায়ের কান্না করতে দেখে চোখের জল মুছে দেয় ও আধো আধো কন্ঠে কষ্ট চাপা দিয়ে বলে মা কান্না করো না আমি আর কাদবো না। মা কান্না করো না বলতে বলতে মায়ের চেখের জল মুছে দেয়। কি নির্মম দৃশ্য। কি হৃদয় ভেঙ্গে চুরে খানখান করা কথা।কি করে পারবে ওর মা এই কথাটি সারাজিবন ভুলতে।
মা ছেলেকে আকরে ধরে থাকে আর রাত পোড়ানোর অপেক্ষা করে। এম্বুলেন্স ডাকা হয়। এম্বুলেন্স বারিতেও আসে কিন্তুু সকলের মাযা মমতা ত্যাগ করে মায়ের বুক খালি করে।মায়ের চোখের জল সারাজিবনের জন্য হয়ে না ফেরার দেশে চলে যায়। বিধাতা এতো নিষ্ঠুরতম কেন করলে নিস্পাপ শিশুটির মায়ের সাথে।কি করে এই মা বাঁচবে। কি করে শিশুটির স্মৃতি ভুলে থাকবে।প্রথম সন্তান। আর বাচ্চা নিতে পারবে না।বাবা,মায়ের কোন এক সমস্যা রয়েছে যতো বাচ্চা হবে সব গুলোই এই বাচ্চাটির মতো হবে।সৃষ্টি কর্তা কোন পাপের ফল দিয়েছে এই মাকে আমি জানি না তবে এটুকু আন্দাজ করতে পারি এই মা পৃথিবীতে সব থেকে যন্ত্রণাময় নরক যন্ত্রণা ভোগ করবে।
সৃষ্টিকর্তা কেন এতো নির্মম কেন এতো শাস্তি দেয় আমার জানা নেই।কেন এতো অল্পদিনের আয়ু নিয়ে পাঠালে কেনই বা মা,বাবার কোল শুন্য করে কেড়ে মিলে।আমি সত্যি নির্বাক।গোটা গ্রামের মানুষ বাকরুদ্ধ। শান্তনা দেয়ার ভাষা কারো নেই।শিশুটির সমাধিতে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়।মানুষের সাথে ও ওই ফুলটফুটে শিশুটির জন্য গ্রামের সবাই কেঁদেছে আকাশ কেঁদেছে বাতাস কেঁদেছে শুধু কাঁদে নি সৃষ্টিকর্তার মন।এটাই হয়তো নিয়তি এটাই বাস্তবতা।
কোন মায়ের কোল এভাবে খালি না হোক।কোন মানুষের এতো অল্প আয়ু না হোক। সেই কামনা করি সৃষ্টিকর্তার কাছে।
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি।আবারও দেখা হবে অন্যকোন পোস্টের মাধ্যমে।সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ ও নিরাপদ থাকুন।
টাটা
পোস্ট | বিবরণ |
---|---|
পোস্ট তৈরি | @shapladatta |
শ্রেণী | জেনারেল রাইটিং |
ডিভাইস | OppoA95 |
লোকেশন | বাংলাদেশ |
আমি হৈমন্তী দত্ত। আমার স্টিমিট আইডিরঃshapladatta. জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী। শখঃবাগান করাও নিরবে গান শোনা,শপিং করা। ভালো লাগে নীল দিগন্তে কিংবা জোস্না স্নাত খোলা আকাশের নিচে বসে থাকতে।কেউ কটূক্তি করলে হাসি মুখে উড়িয়ে দেই গায়ে মাখি না।পিছু লোকে কিছু বলে এই কথাটি বিশ্বাস করি ও সামনে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি।বিপদকে ও অসুস্থতার সাথে মোকাবেলা করার সাহস রাখি সহজে ভেঙ্গে পরি না। সবাইকে নিয়ে ভালো থাকার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি পর হিংসা আপন ক্ষয়। ধন্যবাদ ।
আসলে এমন ঘটনা গুলো মেনে নেওয়া বেশ কঠিন হয়ে পড়ে আপু। ছোট বাচ্চা যার হাসিখুশি ভাবে বেড়ে ওঠার কথা সে অসুস্থ তাই নিজে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে আবার পরিবারকেও মনে কষ্টের মাঝে ডুবে তুলছে। আসলে মানুষের জীবনটা এমনটাই। কেউ বলতে পারেনা কার জীবন কেমন ভাবে যায়।
ঠিক বলেছেন আপু।