ধর্ম আলোচনা
ধর্ম আলোচনা ,
একটু উঁচু মার্গের আলোচনা বলে সম্মানিত পাঠক গণের মনে হতেপারে , কথা দিচ্ছি তেমন কিচ্ছুটি হবেনা আমি অতি সাধারণ মানুষ যা মনে আসে তাই লেখার চেষ্টা করি কারণ পরে কিছু মনে থাকে না । যা হোক এবার কথায় আসি, থুড়ি ধর্ম কথায় ।
লঞ্চে যাত্রী তেমন নাই মাওয়া কেওড়া কান্ধি পারাপারে চল্লিশ মিনিটের মতো সময় লাগে । এর ভেতর এক বেহারা হকার কবিরাজী ঔষুধ এর প্রচার করতে প্রায় ত্রিশ মিনিট খেয়ে ফেলেছে । আমি তার বেচাকেনা দেখছি তার আশেপাশে আর একজন বেশ বেটে করে মোটাসোটা পেছনে বিরাট বড়ো একটা জটবাঁধা চুল নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে । যাহোক এর ভেতর কবিরাজের বেচাকেনা শেষ তল্পি তোল্পা গুঁছিয়ে ক্যাবিন থেকে বেরহয়ে গেলো আমরাও দম ছেড়ে বাচালাম । এত্ত কথা বলে যে শুনতে শুনতে কান কপাল নষ্ট হবার উপক্রম ।
লঞ্চের বারান্দায় দাঁড়িয়ে পদ্মার ঠান্ডা হাওয়া শরীর একটু জুড়িয়ে নিচ্ছি । চৈত্রের দাবদাহে চারিদিক যখন ঝাঁজালো রোদে খা খা করে , তখন পদ্মার মাঝ নদীর মৃদু ঠান্ডা বাতাস ভারী প্রাণজুড়ানো হয়
।
আবার পেছেন দিকে লঞ্চের কেবিন থেকে নানা রকম ধর্মীয় চর্চা করার পণ্যের নানা উপকারিতা দাম দর দুই তিনটা একসাথে কিনলে বিশেষ মূল্য ছাড় শুনে ফিরে তাকাতেই দেখি সেই মোটা করে লোকটা প্রায় গোটা ছয়েক ব্যাগ নিয়ে একটু দ্রুত সাথে এক এর পর এক ধর্মীয় পণ্য দেখিয়ে যাচ্ছে ।
পুরা একটা ধর্মের দোকান আমার কিছু মেলে কিনা টি একটু আগ্রহ করে দেখতে লাগলাম শেষ পর্যন্ত কিছুই পেলামনা । আমি মাঝে মাঝে পুরানো ঢাকার শাখারি বাজারে ধর্মের দোকানে যাই কিছু পূজার উপকরণ কিনতে । হিন্দু ধর্ম ভিন্ন অন্য কোনো ধর্মের কোনো কিছু কি পাওয়া যায় সেখানে ? এক কোথায় উত্তর না ? এমন কোনো দোকান কোথাও চোঁখে পড়েনা যেটা ঠিক ধর্মের দোকান সেখানে সমস্ত ধর্মের পণ্যই থাকবে যে কেউ যেতে পারবে যার যার ধর্মের পণ্য গুলো সংগ্রহ করে নিয়ে গন্তব্যের দিকে যাত্ৰা করতে পারবে । অথবা প্রার্থনালয় একটা জায়গা যেখানে ধর্মীয় প্রার্থনা করার জন্য প্রস্তুত করা যে যার মতো গিয়ে তার প্রার্থনা করবে ।
আসলে এমন টা হয়না হাওয়া সম্ভব ও না কারণ ধর্মের নিজের কোনো অস্তিত্ব নেই , আছে কেবল মাত্র প্রকাশ । যে উৎস থেকে মতাদর্শ তৈরী হয় ধর্ম কেবল তারই প্রকাশ করে মাত্র । সেই উৎসের কর্ম সমূহকে ধারণ করে ধর্ম সময়ের সাথে ভ্রমণ করে । অনেক টা আলোর মতো, সূর্যের আলোর যেমন জীবন দায়ী নানা উপাদান নিয়ে ভ্রমণ করে সৃষ্টির কল্যানে নিবেদিত অন্য উৎস থেকে উৎপাদিত আলোতে ওসব মেলেনা কিন্তু তাদের ও ভিন্ন অনেক উপকারিতা আছে কারো অতি দহন ক্ষমতা , ভেদ্য ক্ষমতা ইত্যাদি । এদের কে তখনি সঠিক ভাবে চিহ্নিত করা যায় যখন তার উৎস যুক্ত করে বলা যায় । যেমন আলোক ঝলকানিতে চোখ নষ্ট , মনে হতে পারে তাহলে তো আলোই খারাপ , কিন্তু বাস্তবতা কোনো ফ্ল্যাশ আলো হতে পারে কোনো বৈদ্যুতিক ঝালাই খানার আলো । ধর্ম কথাটি ব্যবহার করে কিছু বলার আগে তার উৎস যুক্ত করে ধর্ম বললেই সবার জন্য অধিক ফলপ্রদ বলেই প্রতীয়মান । যেমন তারল্য জলের ধর্ম ।