পদ্মার চরে বরই খেতে যাওয়া।

in আমার বাংলা ব্লগlast year

আসসালামু আলাইকুম।

আমি রাহুল হোসেন। আমার ইউজার নেমঃ@mrahul40।বাংলাদেশ থেকে।আশা করি আল্লাহর রহমতে ভাল আছেন আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।

  • বরই খাওয়া
  • ০৬,মার্চ ,২০২৪
  • বুধবার

InCollage_20240306_104357302-01.jpeg


হ্যালো আমার বাংলা ব্লগবাসি কেমন আছেন আপনারা? আশা করি আল্লাহর অশেষ রহমতে অনেক ভাল আছেন। আজকে আপনাদের মাঝে আবারো হাজির হয়ে গেলাম নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। গ্রামের বাড়িতে থাকলে অনেক বেশি ঘোরাঘুরি হয়। আর ঘোরাঘুরি হবে না কেন অনেকদিন পর যখন শহর থেকে বাড়িতে যায় তখন প্রকৃতির যেন আপন মনে ডাকছে সেজন্য আর ঘরে বসে থাকতে পারিনা ‌। এর আগে পদ্মার চরে পিকনিক করেছি ওই সময় দেখে আসছিলাম গাছে প্রচুর বরই এগুলা অনেক সুস্বাদু ছিল। তাই সেদিনই প্লান করেছিলাম আবার একদিন আসব বরই খেতে। পিকনিকের দু-তিন দিন পার হয়ে গেল কিন্তু কবে যে বরই খেতে যাব সেই শিডিউল মিলাতে পারছি না কারণ এদিক সেদিক ঘোরাঘুরি করতে সময় চলে যাচ্ছে।

চরে গেলে যেহেতু বাইকে প্রচুর ধুলা জমে যাবে সেজন্য আমরা বাইক ওয়াশ করাইনি। তারপর আমরা বিকেলে তিনটা বাইকে নিয়ে ছয় জন রওনা করি সেই সুস্বাদু করে খাওয়ার উদ্দেশ্যে। যেহেতু বরই খেতে যাচ্ছি সাথে লবণ নিয়েছি আর বাজার থেকে পাঁচ টাকা দিয়ে মরিচ কিনে নিয়ে যাচ্ছি। আর বরই রাখার জন্য এবং বরই কে সুন্দর ভাবে ধৌত করার জন্য এক বোতল পানি এবং একটি গামলা নিয়েছে যাতে স্বাচ্ছন্দে আমরা খেতে পারি। আমরা যখন চরের দিকে নামছি তখন চারটা বেজে গিয়েছে সূর্যটা কিছুটা পড়ছে আকাশে ঢলে পড়েছে। আমরা কুষ্টিয়া জেলায় বসবাস করলে ওই চরটা হল পাবনা জেলার মধ্যে। এ জায়গার নাম চর মাঝপাড়া এটা পাবনা সদর উপজেলার মধ্যে পড়ে। তবে আমাদের এখান থেকে যেতে ১০ থেকে ১৫ মিনিট সময় লাগে।


IMG20240301163857-01.jpeg


Device : Realme 7
What's 3 Word Location :

আমাদের কে যেতে হবে ছোট একটি নদী পাড়ি দিয়ে যখন বর্ষা মৌসুম ছিল তখন নৌকার দিয়ে পার হতে হত। এখন যেহেতু পানি কমে গিয়েছে নদীর মাঝ দিয়ে সুন্দর একটি রাস্তা বের হয়েছে। কিছুদিন পরে এই রাস্তাটা আরো বেশি সুন্দর লাগবে যখন দুই পাশে ধানের ক্ষেত বড় বড় হয়ে যাবে। তখন সবুজের মাঝে যেন একটি মাটির রাস্তা এ যেন গ্রাম্য পরিবেশের অসাধারণ অনুভূতি। আমাদের এই সুন্দর রাস্তা ধরেই যেতে হবে বরই খেতে ‌‌। আরেকটি রাস্তা দিয়ে যাওয়া যায় কিন্তু ওই রাস্তা দিয়ে গেলে ধূলাই সবকিছু অন্ধকার হয়ে যায় সেজন্য আর ঐ দিক দিয়ে যায় নাই। এত সুন্দর মাটির রাস্তা দেখে কিছু সময় এখানে দাঁড়িয়ে প্রকৃত উপভোগ করছিলাম।


IMG20240301163905-01.jpeg

IMG20240301163900-01.jpeg


Device : Realme 7
What's 3 Word Location :

আমাদের এমন মাটির রাস্তায় বাইক রাইড করতে হবে আরো বিশ মিনিট তারপর আমরা পৌঁছাবো আমাদের গন্তব্যে। খুব এক্সাইটমেন্ট কাজ করছিলাম আবার সেই বড়ই খাব সাথে নিয়ে এসেছি মরিচ এবং লবণ সব মিলিয়ে অসম্ভব ভালো লাগবে। এ রাস্তা তে প্রচুর ধুলা যাতে ধুলা না ওরে সেজন্য আমরা ধীরে ধীরে বাইক রাইড করতে করতে যাচ্ছিলাম। এই এলাকাতে ঘোরাঘুরি করতে অনেক বেশি ভালো লাগে প্রকৃতির এক অপরূপ সৌন্দর্যের দেখা মেলে। এখানে জনসংখ্যা খুবই কম সেজন্য ঘোরাঘুরি করেও অনেক বেশি মজা। আমরা প্রায় বরই গাছের কাছে চলে এসেছি। তার আগে আমরা যে পানির বোতল নিয়ে এসেছিলাম একটা টিউবওয়েল থেকে বোতলটা ভর্তি করে নিই পানি দিয়ে। তারপর মাঠের মধ্য দিয়ে আমরা চলে গেলাম বড়ই গাছের নিচে।


IMG20240301165400-01.jpeg


Device : Realme 7
What's 3 Word Location :

সবাই বরই পারতে ব্যস্ত হয়ে গেল আমি আর রিপন অন্য একটি গাছের সন্ধান পেয়েছি সেখানে গেলাম। সেখানে গিয়ে দেখি কুল বরই ধরে আছে এবং বেশ সুস্বাদু তবে এখনো পাকেনি। পাকার আগে এখানকার মানুষ সব খেয়ে ফেলবে কারণে সব বড়ই গাছের মালিকানা নেই সবার জন্য উন্মুক্ত। আমরা গিয়ে কিছু বড়ই পেরে খেতে থাকি বেশ ভালো মজা ছিল। ওখান থেকে ঘুরে এসে দেখি আমাদের সাথে এক ভাই এসেছিল গাছের মাথায় উঠে পড়েছে এবং বইগুলো ব্যাগে ভর্তি করেছে। তারপর আমরা এইগুলো নিয়ে চলে যায় পদ্মার নদীর তীরে। বেশ শীতল হাওয়া বইছিল আর পদ্মা নদীর হাওয়া এমনিতেই অনেক বেশি ভালো লাগে। নদীর পরিবেশ উপভোগ করতে করতে আমাদের বরই খাওয়ার পালা। বরই গুলো সুন্দরভাবে ধৌত করল সুমন ভাই। সাথে মরিচ এবং লবণ একটি গামলায় রেখে দিলাম।


IMG20240301172043-01.jpeg


Device : Realme 7
What's 3 Word Location :

এমন সতেজ বড়ই দেখে কি আর থেমে থাকা যায় জিভে পানি চলে আসলো সাথে মরিচ এবং লবন দিয়ে মিশিয়ে বরই খাওয়া শুরু করে দিলাম। তবে আমি ঝাল খেতে পারিনা জন্য আমি একটা মরিচ খেতে পেরেছি কোন মত তারপর প্রচুর ঝাল লেগে যায়। আর এমনিতেই মরিচ গুলোর ঝাল অনেক বেশি ছিল। আমাদের সাথে সোহাগ ভাই ছিল সে তো বরই খেতে গিয়ে ছয়টা মরিচ খেয়েছে। সে সর্বোচ্চ মরিচ খেয়ে বিজয়ী হয়েছে। বরই যখন শেষের দিকে আর একটি বড়ই আছে তখন সে একটা মরিচ দিয়ে একটি বড়ই খেয়ে ফেলেছে। প্রচুর ঝাল খেতে পারে আমার ঝাল দেখলেই মাথা গরম হয়ে যায়। বড়ই খাওয়া-দাওয়ার পর্বটা বেশ ভালোই ছিল বিশেষ করে নদীর ধারে এমন প্রকৃতির মাঝে বরই খাওয়াটা অসম্ভব সুন্দর লাগছিল। বড়ই খাওয়া-দাওয়া এখন শেষ এখন আমাদের বাড়ি ফেরার পালা। এখন প্ল্যান করেছি আমরা যে রাস্তা দিয়ে এসেছি ওই দিক দিয়ে না গিয়ে অন্য একটি রাস্তা ধরে এগোতে থাকি।


IMG20240301175201-01.jpeg


Device : Realme 7
What's 3 Word Location :

এখন যেহেতু সকল ফসল উঠে গিয়েছে আমরা মোটরসাইকেল নিয়ে যেদিক দিয়ে ইচ্ছা সে দিক দিয়ে চলে যেতে পারবো। অবশ্য কিছু কিছু জায়গায় পথ তৈরি করা আছে আমরা ওই দিক দিয়ে প্রথমে যাই ।তারপর মাঠের মধ্য দিয়ে নামিয়ে দেই অবশ্য ছোট ছোট ঢিলা ছিল বাইক রাইট করতে একটু কষ্টসাধ্য বটে। আমরা চর থেকে উপরে উঠতে উঠতে সূর্যটা তখন অনেকটাই পশ্চিম আকাশেতে হলে পড়েছে কিছুক্ষণের মধ্যেই অস্ত চলে যাবে। সূর্যাস্তের এই মুহূর্তটা অসম্ভব ভালো লাগে ।বিশেষ করে নদীর ধারে যদি বসে থাকা যায় তাহলে মনে হয় সূর্যটা যেন নদীর ভিতর হারিয়ে যাচ্ছে। বড়ই খাওয়ার অনুভূতিটা অনেক বেশি ভালো ছিল বিশেষ করে মরিচ দিয়ে খাওয়ার ব্যাপারটা বেশ দারুন ছিল। আজ এই পর্যন্তই দেখা হবে পরবর্তী কোনো পোস্টে অন্য কোন গল্প নিয়ে ধন্যবাদ সবাইকে।


আমি কে !

IMG_20231120_103032_225.jpg

আমি মোঃ রাহুল হোসেন, আমার ইউজার নেম @mrahul40। আমি বর্তমানে ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটিতে সিভিল টেকনোলজিতে বি.এস.সি ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে লেখাপড়া করছি। আমি ভ্রমণ করতে, ফটোগ্রাফি করতে খুবই পছন্দ করি। "আমার বাংলা ব্লগ" আমার গর্ব "আমার বাংলা ব্লগ" আমার ভালোবাসা। আমার নিজের ভেতরে লুকায়িত সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত করার লক্ষ্যে "আমার বাংলা ব্লগে" আমার আগমন।

standard_Discord_Zip.gif

Sort:  
 last year 

আরো একটা অ্যাডভেঞ্চার 😍
আপনার পোস্টগুলো আমার রীতিমতো বেশ ভালো লাগে।
বন্ধুরা মিলে চরে বড়ই খেতে চলে গেলেন। বড়ই গুলো দেখে লোভ সামলানো মুশকিল 😋 আর সাথে কাঁচামরিচ আর লবণ। আর আপনার বর্ননা এবং ফটোগ্রাফী অসাধারণ ছিল। সবমিলিয়ে দারুন একটা পোস্ট উপহার দিয়েছেন ভাই।

Posted using SteemPro Mobile

 last year 

জি ভাইয়া এডভেঞ্চার ছাড়া কোন গল্প হবে না শুধু এডভেঞ্চার হবে। ধন্যবাদ মতামত প্রকাশের জন্য

Posted using SteemPro Mobile

 last year 

পদ্মার চরে বরই খাওয়া নিয়ে খুব সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন ভাইয়া। পোস্টটি ভালো লেগেছে।ছয় বন্ধু মিলে লবন,মরিচ,গামলা ও পানি নিয়ে যে বরই খাওয়া অভিযানে গিয়েছেন, এগুলো আপনাদের সুখ স্মৃতি হয়ে থাকবে আজীবনের জন্য। মাঝে মাঝে বন্ধুদের সাথে এরকম ঘুরাঘুরি, খাওয়া-দাওয়া অনেক আনন্দের। পোস্টটি শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

 last year 

জি আপু এই মুহূর্তগুলো সারাজীবন মনে থাকবে অনেক বেশি ঘোরাঘুরি এবং মজা করা হয়। ধন্যবাদ মতামত প্রকাশের জন্য

Posted using SteemPro Mobile

 last year 

প্রাকৃতিক পরিবেশের মাঝে ঘোরাঘুরি করতে যেতে কার না ভালো লাগে। ঠিক তেমনি পর্দার চরে ঘোরাঘুরি করতে যাওয়ার মুহূর্ত আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। আর একই সাথে সেই জায়গায় বরুই খাওয়ার অনুভূতি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আসলে কুল আমারও প্রিয় একটি ফল। সুন্দর একটা মুহূর্ত কিন্তু আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন দেখে খুশি হয়েছি।

 last year 

আসলেই প্রাকৃতিক পরিবেশের মাঝে ঘুরাঘুরি করতে অনেক বেশি ভালো লাগে। ধন্যবাদ মতামত প্রকাশের জন্য

Posted using SteemPro Mobile

 last year 

ওয়াও দেখেই তো লোভ লাগছে। এমন সুন্দর পরিবেশে বরই গাছ থেকে টাটকা বরই পেরে মরিচ লবন দিয়ে মাখিয়ে খাওয়ার ব্যাপারটা দারুন ছিল। মনে হচ্ছে মুহূর্তটা অনেক সুন্দর কেটেছে। ধন্যবাদ সুন্দর মুহূর্তটা আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

 last year 

লোভ লেগে আর কি হবে। আপনি বাড়ি থাকলে আপনার জন্য নিয়ে আসতাম।

Posted using SteemPro Mobile

 last year 

পদ্মার চরে বরই খেতে যাওয়ার পোস্টটি পড়ে আমারও খুব ইচ্ছে করছিল, এরকম একটি সুন্দর জায়গায় গিয়ে, সবাই মিলে কাঁচা মরিচের ঝাল দিয়ে বরই মাখিয়ে খেতে। বেশ বুঝতে পারছি আপনারা ছয় জন মিলে পদ্মার চরে গিয়ে ঝাল ঝাল বরই মাখা খেয়ে খুব সুন্দর সময় অতিবাহিত করেছেন। বিশেষ করে পানি শুকিয়ে যাওয়ার কারণে নদীর মাঝ দিয়ে এত সুন্দর একটি রাস্তা দিয়ে ভ্রমণ করার মুহূর্ত খুবই উপভোগ্য হয়েছিল। আর হ্যাঁ আপনার ভাই এত ঝাল খোর তা তো জানা ছিল না, কেননা বড়ই খেতে গিয়ে তিনি ছয় ছয়টি কাঁচা মরিচ খেয়েছেন যা খুবই অবাক করার বিষয়। যাই হোক ভাই, খুব সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন এজন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

 last year 

আমাদের এলাকায় চলে আসুন ভাইয়া নিয়ে যাবো বড়ই খাওয়ার জন্য। মতামত প্রকাশের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ

Posted using SteemPro Mobile

 last year 

আপনি রিপন ভাই এবং অন্যরা মিলে বরই খেতে যাওয়ার চমৎকার অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন আমাদের মাঝে । বরই আমি এবং আমার বন্ধুরা অনেক খেয়েছি এটা খুবই চমৎকার ছিল।

 last year 

আসলেই অনেক বেশি মজা করেছি। ধন্যবাদ মতামত প্রকাশের জন্য

Posted using SteemPro Mobile

 last year 

বন্ধু ব্যস্ততার কারণে পদ্মা নদীর চরে বড়ই খেতে যাওয়াটা মিস করে গেলাম। তবে প্রথমে পিকনিকের দিনে গিয়ে সত্যি বেশ মজা করেছিলাম ওই জায়গাটিতে। ওই গাছের বরই যে এতটা টেস্ট আগে জানতাম না। বন্ধু আবার বাড়িতে আসলে ওই জায়গায় গিয়ে পিকনিক করবো প্লাস বরই খাবো। যাইহোক সবাই মিলে গিয়ে অনেক সুন্দর সময় অতিবাহিত করেছে এবং মজা করে বরই বেশ ভালো লাগলো।

Posted using SteemPro Mobile

 last year 

তুমি ব্যস্ত মানুষ মিস তো করবেই কিন্তু আমরা খুব মজা করেছিলাম। ধন্যবাদ মতামত প্রকাশের জন্য

Posted using SteemPro Mobile

 last year 

মাঝে মাঝে কি বিষয় গুলো শেয়ার করেন ভাইয়া জিভে জল চলে এসে যায় দেখলে। আপনারা দেখতেছি বেশ মজাই আছেন সবাই মিলে। পদ্মার পাড়ে ঘুরতে গেলেন ঝাল ঝাল করে বড়ই খেলেন সবাই মিলে। এর আগেও আবার কিছুদিন আগে পিকনিক খাওয়ার দৃশ্য শেয়ার করেছিলেন আপনারা। আপনাদের সময় গুলো খুবই মধুর ভাবে পালন করেন। এত সুন্দর বন্ধন খুবই ভালো লাগে দেখলে।

 last year 

সবাই যখন একসাথে থাকি তখন তো মজা করতেই হবে না হলে তো সব বৃথা। মতামত প্রকাশের জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ

Posted using SteemPro Mobile

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.24
JST 0.034
BTC 95745.34
ETH 2808.33
SBD 0.67