আমার নিজের লেখা গল্প, কবিতা এবং আমার নিজের করা ফটোগ্রাফি।।। পর্ব- 149
কৌশিক মাথা নাড়ল, 'আর সময়। একদিনে যদি দু'-সিফট কখনও তিন সিফট কাজ করতে
হয় তা হলে হোমওয়ার্ক করব কখন?' 'একদিনে তিনটে সিরিয়ালের শুটিং করতে রাজি হচ্ছ কেন?'
'না হয়ে উপায় নেই। পাইলট যখন করেছিলাম তখন বুঝিনি সবগুলো একসঙ্গে টেলিকাস্ট হবে। রাজি না হলে প্রোডিউসার বিপদে পড়বেন।' কৌশিক বলল।
সারাটা দিন একসঙ্গে কাজ করে তিতির বুঝতে পারল অভিনয়ের ব্যাপারে কৌশিক খুবই সিরিয়াস। সময় না পাওয়ায় সংলাপ মুখস্থ না হওয়ায় ও বেশ লজ্জা পাচ্ছিল। দুটো দৃশ্য তোলার মাঝখানে কৌশিক তাকে জিজ্ঞাসা করল, 'আপনি কোনও গ্রুপে নাটক করেন?'
মাথা নাড়ল তিতির, 'না। কেন?'
'নাটক থেকে যারা এসেছে তারা একটু সুবিধে পায়। অবশ্য সিনিয়ারদের ক্ষেত্রে কোনও নিয়মই খাটে না।' কৌশিক হেসেছিল।
'আমি তা নই। এটা হঠাৎই হয়ে যাওয়া। লোকের ভাল না লাগলে দ্বিতীয়বার হবে না, কিন্তু আপনি নিশ্চয়ই গ্রুপ থিয়েটার করেছেন?' তিতির জিজ্ঞাসা করল।
'দশ বছর। সেটের পেরেক ঠুকেছি, টিকিট পুশ সেল করেছি, টিউশনির টাকায় নাটকের ধার শোধ করেছি। কিন্তু অভিনয়টা কী শিখেছি জানি না। মাত্র দু'বছর আগেও কল্পনা করিনি যে দিনে
তিনটে সিরিয়ালের সংলাপ বলব।'
For work I use:
মোবাইল |
Redmi Note 11s |
ফটোগ্রাফার |
@taskiaakther |
লোকেশন |
ঢাকা, বাংলাদেশ |
ছবি তোলা |
বাহিরে |
কঙ্কনার সঙ্গে আজ তিতিরের কোনও কাজ ছিল না। তিনটে দৃশ্যে সে কৌশিক এবং অন্য শিল্পীদের সঙ্গে অভিনয় করল। নিজের কাজ না থাকলে মেকআপরুমে গিয়ে বসে থাকে তিতির কিন্তু আজ সে ক্যামেরার পেছনে দাঁড়িয়ে কঙ্কনার অভিনয় দেখল। দেখে অবাক হল। আট দশ লাইনের সংলাপ দু'বার শুনেই মুখস্থ হয়ে গেল মহিলার। অশোকের কাছে জেনে নিল কম্পোজিশনটা কীরকম হবে। যখন মনিটার দিল তখন কঙ্কনা একদম স্বচ্ছন্দ। কথা বলা, অন্যের কথা শোনার সময় যে অভিব্যক্তি তাতে পেশাদারি দক্ষতার ছাপ দেখতে পেল তিতির। এই কল্পনার সঙ্গে মেকআপরুমে আলাপ হওয়া কঙ্কনার কোনও মিল নেই। এত ভাল কাজ করে বলেই কঙ্কনা এতদিন ধরে ফিলা এবং সিরিয়ালে অভিনয় করে যেতে পারছে।
দৃশ্যটি দেখেই সে চলে এসেছিল মেকআপরুমে। আজ তার কাজ শেষ। জগুদা দাঁড়িয়েছিল দরজায়। সরে দাঁড়িয়ে বললেন, 'নাও, এই তোমার লিস্ট।'
তিতিরের মনে পড়ল। মেকআপ বক্সের জন্য কী কী কিনতে হবে তার লিস্ট জগুদা করে দিয়েছেন। সে নামগুলো পড়ল, বেশিরভাগ নাম সে শুনেছে কিন্তু কখনও ব্যবহার করেনি। দুটোর নাম শোনেইনি।
তিতির জিজ্ঞাসা করল, 'এগুলো কিনতে নিউমার্কেটে যেতে হবে, না?'
জগুদা মাথা নাড়লেন, 'হ্যাঁ। তবে পারলে ফ্যান্সি মার্কেটে যেয়ো, ওখানে ভাল বিদেশি জিনিস
পাবে আল্লারাখার দোকানে।'
For work I use:
মোবাইল |
Redmi Note 11s |
ফটোগ্রাফার |
@taskiaakther |
লোকেশন |
ঢাকা, বাংলাদেশ |
ছবি তোলা |
বাহিরে |
'আল্লারাখা?'
'হ্যাঁ। যে কেউ বলে দেবে। ওকে শুধু আমার নামটা বলো।'
জগুদাই তার মেকআপ তুলে দিয়ে গেলেন। হেয়ার ড্রেসার চুল খুলে দিচ্ছিল। এই সময়
দরজায় শব্দ হল। গোবিন্দর গলা পাওয়া গেল, 'দিদিভাই!'
তিতির হেয়ার ড্রেসারের দিকে তাকাল। সে জবাব দিল, 'একটু পরে।'
চুল আঁচড়ে নিজেই উঠে গেল তিতির দরজা খুলতে। প্রোডাকশন ম্যানেজার গোবিন্দর পিছনে
দু'জন ভদ্রলোক দাঁড়িয়ে আছেন।
গোবিন্দ বলল, 'আপনি কি এখন কথা বলতে পারবেন?'
তিতির বলল, 'হ্যাঁ বলুন।'
গোবিন্দ লোক দুটোকে সমাদর করে ঘরে নিয়ে এসে বসাল, 'ইনি হচ্ছেন স্বপন দত্ত, বিখ্যাত
প্রোডিউসার আর ইনি পরিচালক রাজা নন্দী।'
ওঁরা নমস্কার করায় তিতিরকেও করতে হল। গোবিন্দ উলটোদিকের ডিভানটা দেখিয়ে তিতিরকে বলল, 'বসুন, বসুন দিদিভাই।'
রাজা নন্দী বলল, 'আপনার আজকের শুটিং শেষ হয়ে গেছে জেনে কথা বলতে এলাম। তবে তার আগে বিভাসবাবুর সঙ্গে আমার কথা হয়ে গেছে। উনি আপনার সঙ্গে দেখা করতে অনুমতি দিয়েছেন।'