আমার নিজের লেখা গল্প, কবিতা এবং আমার নিজের করা ফটোগ্রাফি।।। পর্ব- 140
'তোমার অন্যায় পছন্দ আমি মেনে নেব কেন?'
'না নিলে নিয়ো না। তুমি ওই অফিসে চাকরি করবে না। আমি খোঁজ নিয়েছি। ওই ভদ্রমহিলা
মোটেই ভাল নয়।' 'আচ্ছা। কীরকম? রঞ্জনা তাকাল।
মহিলা লেসবিয়ান। মদ সিগারেট সব খায়।'
মদ সিগারেট তো তুমিও খাচ্ছ। আর লেসবিয়ান কী তা নয় সেটা তুমি নিজে প্রমাণ পাওনি। পেলেও তার ব্যক্তিগত ব্যাপার নিয়ে আমি কেন মাথা ঘামাতে যাব। এরপর থেকে আমাকে তুমি ডিস্টার্ব কোরো না।' রঞ্জনার কথা শেষ হওয়া মাত্র সুবীর দু'হতে মুখ চেপে ফুঁপিয়ে উঠল। হতভম্ব হয়ে গেল রঞ্জনা। পুরুষমানুষ যখন মাতাল হয়ে কাঁদে তখন বড় কুৎসিত দেখায়।
এগারো
কাল রাত্রে দাদার ঘর থেকে কান্নার আওয়াজ ভেসে আসতেই তিতির তার ঘর থেকে বেরিয়ে
এসে বাবার গলা শুনেছিল, 'না, তুমি একদম যাবে না।'
For work I use:
মোবাইল |
Redmi Note 11s |
ফটোগ্রাফার |
@taskiaakther |
লোকেশন |
ঢাকা, বাংলাদেশ |
ছবি তোলা |
বাহিরে |
মা চাপা গলায় বলেছিল, 'অত বড় ছেলে কাঁদছে নিশ্চয়ই কিছু হয়েছে।'
'হোক। এটা ওদের স্বামী-স্ত্রীর ব্যাপার। ওখানে তুমি নাক গলালে সমস্যা আরও বেড়ে যাবে।' বাবার গলায় আদেশ।
মা বলেছিল, 'নিশ্চয়ই রঞ্জনা কোনও খারাপ কথা বলেছে।' যদি বা বলে থাকে তা হলে নিশ্চয়ই সত্যিকথাই বলেছে। বুড়ো দামড়া ছেলে রাত
দুপুরে বাড়ি ফিরে সেই কথা শুনে কাঁদলে তার ওপর মায়া দেখানো মূর্খামি। তবে আজ প্রথমদিন। এরপরে হলে দিনের বেলায় আমি কথা বলব। আমাদের কেন এসব নাটক শুনতে হবে।'
'রঞ্জনা চাকরি করতে না গেলে এসব হত না।' মা গজগজ করছিল। বোধহয় বাবার হুকুম উপেক্ষা করে যেতে না পেরে বেশ দুঃখিত হয়েছিল।
ব্যাপারটা নিয়ে তিতির অনেকক্ষণ ভেবেছে। বিয়ের পর থেকে এতদিন হয়ে গেল। কখনওই দাদা বউদিকে ঝগড়া করতে দেখেনি। সামান্য যা কথা কাটাকাটি হয়েছে তার প্রতিক্রিয়া ঘরের বাইরে আসেনি। বউদি বা দাদা কাঁদছে এবং সেটা বাড়ির অন্যঘর থেকে শোনা যাচ্ছে এটা কল্পনার বাইরে ছিল। আজ এরকম হল কেন? বউদি চাকরি করতে গিয়েছে বলে? লক্ষ লক্ষ মেয়ে তো চাকরি করে। দাদার অফিসেও অনেক মহিলা আছেন। মেয়েরা চাকরি করতে গেলেই তাদের সন্দেহ করতে হবে এমন মানসিকতা নিশ্চয়ই দাদার থাকার কথা নয়।
For work I use:
মোবাইল |
Redmi Note 11s |
ফটোগ্রাফার |
@taskiaakther |
লোকেশন |
ঢাকা, বাংলাদেশ |
ছবি তোলা |
বাহিরে |
বউদি যে মাইনে পাবে তার সবটাই নিশ্চয়ই নিজের জন্য জমিয়ে রাখবে না। সে ধরনের মেয়ে বউদি নয় তা দাদাও জানে। এতে দাদারই উপকার হবে। সাচ্ছল্য বাড়বে। তা ছাড়া বাড়িতে বসে বসে বউদি কীরকম গেজিয়ে যাচ্ছিল। রান্নাঘরের কাজ আর টিভি দেখা ছাড়া বউদির কোনও জগৎ ছিল না। এই কিছুদিন আগেও বউদি টিভি সিরিয়াল নিয়ে বিশ্রী মন্তব্য করেছিল। আজ চাকরি করতে গিয়ে কত দ্রুত বদলে গিয়েছে ওই একই মানুষ। কল্পনা করে কাউকে খারাপ বলার মধ্যে যে সব মেয়ে আরাম পায়, বউদি এখন আর তাদের দলে নয়। হাঁটাচলা এমনকী শাড়ি পরার ধরনের মধ্যেও চমৎকার স্মার্টনেস এসে গেছে। দাদা বোধহয় এই উত্তরণ সহ্য করতে পারছে না। কিন্তু না পেরে কাঁদল কেন? হঠাৎ তিতিরের মনে হল দাদা যদি পারত তা হলে তার কাছে এসেও ওইরকম কান্নাকাটি করে আবেদন করত অভিনয় না করার জন্য। আজ বউদির কাছে দাদা যেটা স্বচ্ছন্দে করতে পারল তার কাছে পারছে না। কেন? এই দাদাই তো বিয়ের আগে বোন বলতে পাগল ছিল। এখন দাদা মাকে শুনিয়ে তাকে শিক্ষা দিতে চায়। বড়জোর কথা বন্ধ করে দেয়। দাদার চরিত্র সত্যি জটিল হয়ে উঠেছে।
স্ক্রিন্ট নিয়ে বসেছিল তিতির। কিন্তু কিছুতেই মন স্থির করতে পারছিল না। দাদার কান্নাটাকে কান থেকে মুছে ফেলতে পারছিল না সে। আর একটু বাদে বউদির গলা পেল, 'আপনার ছেলে আজ রাত্রে খেতে পারবে না।'
'কেন?' মায়ের গলা।
'ওর এখন খাওয়ার অবস্থা নেই।'
'সে কী! কী হয়েছে?' মায়ের প্রশ্ন করার ধরন ভাল লাগল না তিতিরের।