আমার নিজের লেখা গল্প, কবিতা এবং আমার নিজের করা ফটোগ্রাফি।।। পর্ব- 117
মায়ের মুখ হাঁ হয়ে গিয়েছিল। তিতির কথা শেষ করতেই মা বলল, 'তার মানে তুই অভিনয়ের জন্য জামা বানাতে দিয়ে এলি?'
'মাথা নাড়ল তিতির।
'তুই ওদের কথা দিয়ে এসেছিস।' মায়ের গলা ওপরে উঠল। 'বাঃ, এতবড় একটা সুযোগ আমি হাতছাড়া করব?'
'কিছুক্ষণ গালে হাত দিয়ে বসে রইল মা। যেন পাহাড় ভেঙে পড়েছে মাথায়। তারপর বলল, 'কথা দেওয়ার আগে আমাকে একবার জিজ্ঞাসা করলি না?'
'সুযোগ পাব কিনা তার তো ঠিক ছিল না। আজই বলল। ভেবেছিলাম হয়ে গেলে তোমাতে জানাব। তাই জানালাম।' তিতির হাসল।
'আমাকে জানাবার আগে বউদির শাড়ি দেখে যখন জামার অর্ডার দিয়ে এসেছিস তখন তাকেই
নিশ্চয়ই জানাতে হয়েছে।' মা মুখ ফেরাল। 'নাঃ। বউদি কারণ জিজ্ঞাস করেছিল, কিন্তু আমি কিছু বলিনি।'
কথাটা শুনেও মায়ের মুখের কোনও পরিবর্তন হল না। ঘন ঘন মাথা নাড়তে লাগল, 'এখন তী হবে? শুনলে তোর দাদা তো বাড়ি মাথায় করবে। তোর বাবাও মেনে নেবে বলে মনে হয় না। তুই অভিনয় করতে নামলে কোনও ভদ্রবাড়ি থেকে সম্বন্ধ আসবে না। বিয়ে দেব কী করে তোর?'
For work I use:
মোবাইল |
Redmi Note 11s |
ফটোগ্রাফার |
@taskiaakther |
লোকেশন |
ঢাকা, বাংলাদেশ |
ছবি তোলা |
বাহিরে |
'আশ্চর্য! তুমি যখন সিরিয়াল মুগ্ধ হয়ে দ্যাখো তখন তো এসব কথা ভাব না। কেউ ভাল অভিনয় করলে তো বারংবার প্রশংসা করো। আর আমি অভিনয় করব জেনে ঠিক উলটোটা করছ। তোমার মন আর মুখের মধ্যে কোনও মিল নেই। বউদিকে দেখলে না? ঘরে বসে সিরিয়াল দেখত আর অভিনেত্রীদের সম্পর্কে আজেবাজে মন্তব্য করত। যেই পুরনো বান্ধবীর কাছ থেকে চাকরির প্রস্তাব পেল অমনি সব ধ্যান-ধারণা পালটে গেল। আমি যদি মাসে কুড়িদিন কাজ করি তা হলে
এখনই বউদির ডাবল টাকা রোজগার করব। জান?' 'বিয়ে-থা করবি না?'
'ইচ্ছে হলে করব।'
'হ্যাঁ, ওইসব অভিনেত্রীদের মতো। বিয়ে করে বছর ঘুরতে না ঘুরতেই ডিভোর্স করে আর একটা লোককে বিয়ে করছে। ছিঃ।'
'সেটা অভিনেত্রী ছাড়া সাধারণ মেয়েরা করে না? যদি বনিবনা না হয় তা হলে অশান্তি নিয়ে একসঙ্গে থাকবে?'
'কেন? আমাদের তো কখনও ছাড়াছাড়ির কথা মনে হয়নি?'
For work I use:
মোবাইল |
Redmi Note 11s |
ফটোগ্রাফার |
@taskiaakther |
লোকেশন |
ঢাকা, বাংলাদেশ |
ছবি তোলা |
বাহিরে |
'তিতির হেসে ফেলল, 'আমার বাবা ভালমানুষ, তাই!'
'ভালমানুষ? একটার পর একটা কাণ্ড করেছে আর আমি জ্বলেপুড়ে মরেছি।'
'বেশ। তুমি ছেড়ে যেতে পারোনি কারণ যাওয়ার জায়গা ছিল না। তুমি তো চাকরি করতে না। সেই জন্য বাঁধা পড়েছিলে।' তিতির সত্যি কথাটা বলে দিল।
হঠাৎ মা ওর হাত ধরল, 'আমার খুব ভয় করছে রে!'
'কেন?' তিতির অবাক।
'তুই যদি নষ্ট হয়ে যাস?'
খামোকা নষ্ট হতে যাব কেন?'
' 'ওই যে তোর দাদা বলল সিনেমা লাইনের-
'দ্যাখো মা, যে নষ্ট হতে চায় সে যে-কোনও লাইনে গিয়ে নষ্ট হতে পারে। এই যে বউদি চাকরি পেয়েছে, চাইলে বউদিও নষ্ট হতে পারে।'
মা শুয়ে পড়ল। তিতির বুঝল আজ দুপুরে ভদ্রমহিলা ঘুমোতে পারবেন না। সে চুপচাপ নিজের ঘরে চলে এল। এত সহজে যে সিরিয়ালের কাজ করার কথাটা মাকে বলা যাবে সে ভাবেনি। বলার পর বেশ হালকা লাগছে। এইবার মা বলবে বাবাকে, দাদা জানবে। তারপর! মাথা নাড়ল তিতির, যা হওয়ার হবে।
সে আয়নার সামনে দাঁড়াল। নাঃ, দেখতে খুব খারাপ লাগছে না। শুধু চোখদুটো যদি আর একটু বড় হত আর চিবুকের পাশের ফোলা ভাবটা আর একটু কম হত- ? তা হলে কী হত। ঐ ঐশ্বর্য রাই না সুস্মিতা সেন? যাঁরা সত্যিকারের অভিনেত্রী তাঁদের তো অনেক খুঁত থাকে। কিন্তু মানুষ সে সব খুঁতের কথা ভাবে না, তাঁদের অভিনয়টাই মুগ্ধ হয়ে দ্যাখে। সঞ্চয়িতা বের করল তিতির।