জলপাইয়ের মুইঠ্যা....😊
"আমার বাংলা ব্লগবাসী"
সবাইকে আমার নমস্কার,আদাব।আশাকরি আপনারা সকলেই ভালো আছেন,সুস্থ আছেন?ঈশ্বরের অশেষ কৃপায় আমিও ভালো আছি।
আমি @bristychaki,আমি একজন বাংলাদেশী। আমার বাংলা ব্লগ এর আমি একজন ভেরিফাইড ও নিয়মিত ইউজার।আমি বাংলাদেশের গাইবান্ধা জেলা থেকে আপনাদের সাথে যুক্ত আছি। প্রতিদিনের মতো আমি আজও নতুন একটি রেসিপি ব্লগ নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি।আশাকরি আমার আজকের রেসিপি ব্লগ টি আপনাদের ভালো লাগবে।
শীতকাল মানেই জলপাই আচার বানানোর ধুম পড়ে যায় সবার ঘরে ঘরে।আমিও এর ব্যতিক্রম নই আচার খাই বা না খাই কিন্তু আচার বানাতেই হবে তা না হলে কেনো জানি ভালো লাগে না।আচার বানাবো রোদে শুকিয়ে বয়ামে ভরে সারাবছর রেখে দিবো এটাই তো শান্তি।এবার বাজারে জলপাই ওঠার সাথে সাথেই আমি জলপাইয়ের আচার বানানো শুরু করে দিয়েছি।তার কারণ হলো প্রতিবার এমন সময় জলপাইয়ের আচার বানাতে গিয়ে রোদ না পাওয়ার কারণে শেষে ফেলে দিতে হয়েছে।তাই এবার আর সেই ভুলটি করিনি। রোদ থাকা অবস্থায় কয়েক প্রকার আচার বানিয়ে ফেলেছি।আজকের আচার বানাতে যদিওবা রোদের প্রয়োজন নেই কিন্তু আমি মনে করি আচার বানানোর পর যদি কয়েকদিন রোদে রাখা যায় তাহলে সেই আচার দীর্ঘদিন ভালো থাকে এবং স্বাদেও দ্বিগুণ হয়ে যায়।আজকে আমি জলপাইয়ের মুইঠ্যা আচার বানিয়েছি।এই আচারের রেসিপি টি @shapladatta আমার বৌদি তাঁর ঠাকুরমার কাছ থেকে শেখা।দিদু খুবই গুণী একজন মানুষ ছিলেন তার গুণের বর্ণনা দিয়ে শেষ করা যাবে না।একবার বৌদিদের বাড়িতে গিয়ে এই আচার টি খেয়েছিলাম তখন থেকে মনে করেছি এই আচার আমি একবার হলেও বানাবো।কিন্তু সেই থেকে আর কখনোই বানানো হয়ে ওঠেনি।আজ প্রায় ৭-৮ বছর পর হঠাৎ করেই দিদুর আচারের কথা খুব মনে পড়লো আর তাই ঝটপট বানিয়ে ফেললাম।খেতে দিদুর আচারের মতো না হলেও খুব একটা যে খারাপ হয়েছে তা নয়।আসলে সবার একটা নিজস্বতা থাকে আমরা চাইলেও সেটা পুরোপুরি নিজের মধ্যে আনতে পারি না তবে চেষ্টা করতে পারি অন্যের দেখে ভালো কিছু করার।কখনো সফল হবো কখনো বা ব্যর্থ তাতে কি এসে যায়!
আর কথা না-বাড়িয়ে রেসিপি টি শেয়ার করি।
ধাপ-১
প্রথমে জলপাই গুলো সামান্য পরিমাণ লবণ দিয়ে ভালো করে সিদ্ধ করে নিয়েছি।
ধাপ-২
এবার সিদ্ধ করা জলপাই গুলো খুব ভালোভাবে ডোলে মিহি করে নিয়েছি যাতে কোন দানা দানা না থাকে।তারপর জলপাইয়ের বিচি গুলো আলাদা করে রেখেছি।
ধাপ-৩
এবার আমি আচারের মসলাটা তৈরি করে নিয়েছি।গোটা পাঁচফোড়ন গোটা জিরা শুকনা মরিচ কড়াই দিয়ে ভালোভাবে ভেজে শিলপাটায় গুঁড়ো করে নিয়েছি।
ধাপ-৪
কড়াইয়ে পরিমাণ মতো সরিষার তেল দিয়েছি।তারপর জলপাইগুলো দিয়ে কিছুক্ষণ নেড়েচেড়ে ভেজে নিয়েছি।
ধাপ-৫
এবার ভাজা জলপাইয়ের মধ্যে লবণ হলুদ মরিচের গুঁড়ো জিরার গুঁড়ো এবং চিনি দিয়ে খুব ভালোভাবে নেড়েচেড়ে সবগুলো উপকরণ মিশিয়ে নিয়েছি।
ধাপ-৬
চিনি থেকে জল ছেড়ে দিলে অল্প আঁচে অনেক সময় ধরে নেড়েচেড়ে জল শুকিয়ে নিয়েছি। তারপর ভাজা মসলাগুলো দিয়ে দিয়েছি।
ধাপ-৭
এবার জলপাইয়ের বিচি গুলো দিয়ে কিছু সময় ধরে জলপাইগুলো ভাজা ভাজা করে নিয়েছি।যখন জলপাইগুলো নাড়ুর পাকের মতো হয়ে আসছে হাত দিয়ে নাড়ুর আকারে তৈরি করা যাচ্ছিলো তখন চুলা থেকে নামিয়ে নিয়েছি।
ধাপ-৮
এবার একটা প্লেটে ছড়িয়ে রেখেছি ঠান্ডা হওয়ার জন্য।একটা জলপাইয়ের বিচি নিয়ে তারপর হাতে কিছুটা ভাজা জলপাই নিয়ে বিচিটা ভালোভাবে ঢেকে দিয়েছি।তারপর দুই হাতের সাহায্যে ভালোভাবে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে মুইঠ্যা গুলো তৈরি করে নিয়েছি।
আর এভাবেই তৈরি হয়ে গেলো মজাদার জলপাইয়ের মুইঠ্যা আচার রেসিপি টি।
পরিবেশন
এই ছিলো আমার আজকের রেসিপি আশাকরি আপনাদের ভালো লেগেছে?সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন এই প্রত্যাশা করে আজ এখানেই শেষ করছি।
OR
আপনি দেখছি আজকে খুবই সুন্দর করে সাজিয়ে গুছিয়ে জলপাইয়ের মুইঠ্যা রেসিপি তৈরি করেছেন। আপনার তৈরি করা রেসিপি টি অসাধারণ হয়েছে আপু। আচারের রেসিপি গুলো দেখলেই লোভ লেগে যায়। আপনার তৈরি করা রেসিপি টি একদম মজাদার হয়েছিল। প্রতিটি উপকরণ একদম সমান ভাবে মিশ্রণ করে রেসিপি টি সম্পন্ন করেছেন।
হ্যাঁ সত্যিই অনেক মজার হয়েছিলো।অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
রেসিপিটির নাম আমার কাছে একেবারেই নতুন লাগলো। এ রেসিপিটি আমি আগে কখনো দেখেছি বলে মনে হয় না। দারুন একটি রেসিপি শেয়ার করেছেন আপু। শীতকাল জলপাইয়ের মৌসুম। এ সময় বাংলার ঘরে ঘরে জলপাই দিয়ে বিভিন্ন ধরনের খাবার তৈরি করা হয়। আজ আপনার শেয়ার করা জলপাইয়ের মইঠ্যা রেসিপিটি আমার কাছে দারুণ লেগেছে। সুন্দর একটি রেসিপি শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ জানাই।
সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই আপু।
আপনার আচার গুলো দেখে মনে করেছিলাম এগুলো হয়তো মিষ্টি। কিন্তু পোস্ট পড়ে জানতে পারলাম এগুলো জলপাইয়ের মুইঠ্যা। আপনার কাছ থেকে রেসিপিটি শিখে নিলাম। একদিন অবশ্যই তৈরি করবো।ধন্যবাদ আপনাকে সুস্বাদু একটি রেসিপি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
জ্বি আপু দেখে কালোজাম মিষ্টির মতো লাগছিলো।তৈরি করে খাবেন আশাকরি অনেক ভালো লাগবে।ধন্যবাদ আপু।
দিদি, এসব তো খাইনি, সত্যি বলতে কি জলপাই শুধু বইতেই পড়েছি৷ চোখেও দেখিনি কোনদিন৷ এদিকে আপনারা অনেক কিছু বানান। আমার ক্ষেত্রে ওই দেখাই সার৷ পড়তে পড়তে জিভে জল চলে এলো, এদিকে করার কিছু নেই বসে বসে আঙুল চোষা ছাড়া৷
সত্যিই কি তাই!!জলপাই দেখেননি??যাক আসছে বছর আমি আগে থেকেই জলপাইয়ের আচার করে আমার ছোট ভাই বানারসি থাকে ওকে দিয়ে পাঠানোর ব্যবস্থা করবো যদি ভগবান মঙ্গল মতো রাখেন।দুঃখ পেলুম😥
এটা আমার কাছে একদম নতুন একটা রেসিপি ছিল। জলপাই দিয়ে সব সময় আচার তৈরি করা হয়েছে তবে জলপাইয়ের মুইঠ্যা কখনো তৈরি করা হয়নি খাওয়াও হয়নি। আপনার রেসিপি টা দেখে তো খেতে ইচ্ছে করছে। ইউনিক একটা রেসিপি শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপু।
জ্বি আপু এই রেসিপি টা খুব এটা সচারাচর দেখা যায় না।খেতে চাইলে চলে আসুন আপু।😅 ধন্যবাদ আপু।
promotion link
আপনার এই রেসিপি কিন্তু ইউনিক ছিল। জলপাই কিছুদিন আগে বেশ খেলাম কিন্তু এভাবে রেসিপি করা হয়নি। বেশি দারুন লাগলো আপনার এই সুন্দর পোস্ট দেখে।
সুন্দর মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ আপু।
আপনার আচার দেখে দিদুর কথা মনে পড়ে গেলো। পুরা পোস্ট পড়তে গিয়ে দেখি আপনিও দিদুর আচার রেসিপিটি বানিয়েছেন। সত্যি দিদু খুব ভালো বানাতো আচার।একদমই দিদুর সেই আচার দেখতে পেলাম অনেক দিন পর আপনার মাধ্যমে।এই আচারের ভীতরে জলপাইয়ের বিচি দেয়ার কারণে বেশি ভালো লাগে খেতে।ধন্যবাদ আপনাকে লোভনীয় আচার রেসিপিটি ধাপে ধাপে চমৎকার সুন্দর করে আমাদের সাথে ভাগ করে নিয়েছেন জন্য।
হ্যাঁ আমারও খুব দিদুর কথা মনে পড়ছিলো তাই তো দিদুর রেসিপি টা করে ফেললাম।উপরে সফট জলপাই আর ভিতরে বিচি বিষয় টা সত্যিই দারুণ ছিলো।ধন্যবাদ।
বাহ বেশ চমৎকার তো। সত্যি বলতে দেখতেই অন্যরকম লাগছে। জলপাইয়ের এমন রেসিপি আগে খাইনি। জলপাইয়ের মুইঠা রেসিপি টা দারুণ তৈরি করেছেন আপু। এবং আপনার উপস্থাপনা টা বেশি ভালো ছিল। সবমিলিয়ে অসাধারণ করেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে।।
জ্বি ভাইয়া সবমিলিয়ে সত্যিই অসাধারণ ছিলো।ধন্যবাদ।