"একজন মুক্তিযোদ্ধার কাহিনী"
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাত। আশা করি আল্লাহর রহমতে সবাই ভালো আছেন। সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ সুবহানাতায়ালার।
আজকে আমি আপনাদের সাথে একটি গল্প শেয়ার করব। গল্পটি হলো একজন মুক্তিযোদ্ধার ।
একজন মুক্তিযোদ্ধার গল্প
১৯৭১ সালের মার্চ মাস। ঢাকার রাস্তাগুলোতে উত্তেজনা, শংকা, এবং বিপ্লবের গন্ধ মিশ্রিত। শহরের এক কোণে বাস করতেন সাহসী যুবক রফিক। বয়স মাত্র তেইশ, কিন্তু হৃদয়ে দেশপ্রেমের অগ্নিশিখা।
পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর অত্যাচারে যখন পুরো দেশ স্তব্ধ, রফিক আর চুপ থাকতে পারেননি। ২৫শে মার্চ রাতে ঢাকায় পাকিস্তানি বাহিনী যে নৃশংসতা চালায়, তা দেখে তিনি সিদ্ধান্ত নেন মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেওয়ার। পরিবারের বারণ সত্ত্বেও তিনি গোপনে গ্রামের বাড়ি চলে যান।
গ্রামে গিয়ে তিনি কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে মুক্তিবাহিনীতে যোগ দেন। প্রশিক্ষণ শিবিরে কঠোর প্রশিক্ষণ নেন, অস্ত্র চালানো থেকে শুরু করে বিভিন্ন যুদ্ধকৌশল শিখে নেন। দিনরাত পরিশ্রম করে দেশকে মুক্ত করার শপথ নেন।
একদিন গভীর রাতে রফিক ও তার সঙ্গীরা একটি গুরুত্বপূর্ণ অপারেশনে বের হন। শত্রুপক্ষের একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্রিজ ধ্বংস করতে হবে। ব্রিজটি ধ্বংস করতে পারলে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর রসদ ও অস্ত্র সরবরাহের পথ বন্ধ হয়ে যাবে। রফিক ও তার দলের সদস্যরা চুপিসারে ব্রিজের কাছে পৌঁছান। তারা সুনিপুণভাবে বিস্ফোরক বসিয়ে ফিরে আসার চেষ্টা করেন, কিন্তু হঠাৎই শত্রুপক্ষের টহল দলের মুখোমুখি হন।
বীরত্বের সাথে রফিক ও তার সঙ্গীরা যুদ্ধ করেন। রফিকের শরীরে একের পর এক গুলি বিদ্ধ হয়, কিন্তু তিনি নিজের মিশন শেষ করতে পেরেছিলেন। ব্রিজটি ধ্বংস হয়, শত্রুপক্ষের রসদ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।
রফিকের আত্মত্যাগ বৃথা যায়নি। তার সেই সাহসী অভিযানের পর মুক্তিযোদ্ধাদের মনোবল আরও দৃঢ় হয়। দেশের মানুষ নতুন উদ্যমে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে।
১৬ই ডিসেম্বর আসে বিজয়ের সেই দিন। কিন্তু রফিক আর সেই দিন দেখতে পাননি। তার জীবন উৎসর্গিত হয়েছিল মাতৃভূমির জন্য। রফিকের গ্রামের লোকেরা তার সেই বীরত্বগাথা আজও স্মরণ করে। গ্রামের স্কুলের সামনে তার একটি স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপন করা হয়েছে, যাতে লেখা আছে: "তোমাদের মতো সাহসী যোদ্ধারাই আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছে।"
আজ এ পর্যন্তই, সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন।