শেষ বিকেলের মায়া - আমার লেখা ছোট একটি গল্প - পার্ট ২০
গল্পের বাকি অংশ সুরু করা যাক ......
.
সাবধান করব না? অবশ্যই করব। কিন্তু কী আজব। আমরা স্পষ্ট দেখি, আমাদের চোখের সামনেই আমাদের সন্তান-সন্ততি, ভাইবোন ছিটকে বেরিয়ে যাচ্ছে দ্বীন থেকে। ভুলের গলিতে আহ্লাদ নিয়ে পা বাড়াচ্ছে। আমরা নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে থাকি। আমরা
মুখে কুলুপ এঁটে রাখি।
For Photos I use:
Camera |
Iphone 12 Mini |
Lens |
Wide 26 mm-Equivalent |
Photographer |
@fxsajol |
Location |
Mirpur 12 , Dhaka, Bangladesh |
Processing photos |
Outdoor |
আসলে আপনি যত শিক্ষিতই হোন। পিএচডি-ধারী হোন বা যা-ই হোন, সত্যি কথা হলো দ্বীনের জ্ঞান ছাড়া কখনই প্রজ্ঞা আসে না। আর আমাদের মিডিয়ার কল্যাণে, এমন একটা জেনারেশন বেড়ে উঠছে, যারা জীবন মানে শুধুই খাওয়া, পরা, বাঁচা বোঝে। এই জীবনের পরের জীবন নিয়ে কেউ যে ভাবেই না। ভাঁপ ওঠা হৃদয়ে তাদের হিদায়াতের জন্যই দোয়া করে যাই—বার বার
সময় গড়িয়ে একসময় এইচএসসি পরীক্ষাও শেষ করলাম। ততদিনে মনের মধ্যে শর্ট বোরকার প্রতি প্রবল আগ্রহ জন্মে গিয়েছিল। এমনিতেই আমার ওয়েস্টার্ন ড্রেসের দিকে বেশ ঝোঁক ছিল। জিন্সের সাথে শর্ট বোরকা খুব ভালো লাগতে শুরু করে। মামার বাসায় থেকে কোচিংয়ে আসা যাওয়া করতাম। বাসে উঠতে ঝামেলা হয় অজুহাতে লং বোরকা ছেড়ে নেমে গেলাম শর্ট বোরকা, হিজাব আর জিন্সে। এভাবেই কোচিংয়ের সময়টা পার করে পৌঁছলাম ভার্সিটিতে। উঠে গেলাম হোস্টেলে। নেমে গেলাম আরও এক ধাপ। তবে এই নামাটা কেন যেন মনে সায় দিচ্ছিল না। তাই সেটা হঠাৎ হঠাৎ নামা হতো। কোনো প্রোগ্রামে বা কারও বার্থডে ট্রিট দিলে বা কারও বিয়েতে শর্ট বোরকাও আমার শরীর থেকে অদৃশ্য হয়ে যেত। শুধু হিজাবটাই থাকত।
কখনো কখনো হিজাবও নাই হয়ে যেত। এই বেলায় এসে অবশ্য আম্মি কিছুটা আপত্তি তুলেছিল। বোরকা ছাড়তে না করত; তবে তাও ধোঁপে টিকল না। একটিবারও আমাকে বুঝিয়ে বলেনি, কেন পর্দা করতে হবে, বরং বলত, ‘এমন কামিজ/শাড়ির সাথে হিজাব পরলে মানুষ কী বলবে তোমাকে।' আর ‘মানুষ কী বলবে' আমার কাছে এ সেন্টেন্সটা কখনো কোনো মানে বহন করত না। এখনো করে না।
এমনই একবার এক ফ্রেন্ডের বার্থডে ট্রিটে শর্ট বোরকা ছেড়ে শুধু কামিজের সাথে হিজাব পরে গিয়েছিলাম। তো সব শেষে বের হওয়ার সময় হঠাৎ কিরণ বলে উঠল, 'কী রে তোর বোরকা কই?'
কথাটা খুব গায়ে লেগেছিল সেদিন। কোনো উত্তর দিতে পারিনি। কিরণের সাথে আমার তেমন ভালো ফ্রেন্ডশিপ ছিল না। এই হঠাৎ হঠাৎ কথা হতো, এই যা। ওর মুখে এমন প্রশ্নে খুব বেশি বিক্ষিপ্ত হয়ে গিয়েছিল অন্তরটা।
মানুষের কথা আমাদের সার কনসাসলি কতটা প্রভাব তৈরি করে, তা বলে বুঝানো সম্ভব না।
ফেলেছিল, কিন্তু তখন বুঝতাম না। তখন প্রিয় শত্রুর ফিসফিসানি নিজের ইচ্ছেই মনে হতো। আলহামদুলিল্লাহ, আমার রব আমাকে দুয়ের মধ্যে পার্থক্য বুঝিয়েছেন।
এর মধ্যে আরও কিছু ঘটনা ঘটল। আমি যে রুমে ছিলাম সেখানে ছিল চারটা বেড। কিন্তু চার জনের রুমে শুধু আমি আর মিতু থাকতাম। দুটা বেড ফাঁকা ছিল। একদিন হোস্টেলে এসে দেখি অন্য একটা বেডে মনিরা নামের একজন মেয়ে উঠেছে। মিতু ওর সাথে আমাকে পরিচয় করিয়ে দিল। বলল, ‘মনিরা, এটা মুন আপু। খুব ধার্মিক।”
মিতুর কথা শুনে আমি আকাশ থেকে পড়লাম।
কিহ! আমি ধার্মিক! কীভাবে! আসলে নিজের এই অধঃপতনের কঠিন সময়েও সালাতের ব্যাপারে আমি খুব সচেতন থাকতে চেষ্টা করতাম। নিজে সালাত পড়তাম অন্যকেও সালাতের প্রতি উৎসাহ দিতাম। আর এ একটা গুণের কারণেই হোস্টেলময় আমার ধার্মিক পরিচয় হয়, যা মিতু বলার আগে আমি বুঝিনি।
প্রকৃতপক্ষে মনিরা ছিল ধার্মিক। কালো বোরকা, নিকাব, হাত মোজা, সবকিছু ও বুঝে মেনে চলত। আমার মতো অভ্যাস থেকে না। অনেক বই পড়ে জেনে বুঝে মেনে চলত ও। আল্লাহ মনিরাকে দ্বীন, দুনিয়া ও আখিরাতে সর্বোচ্চ সাফল্য দিক। আমিন।
একটা সত্যি কথা বলি। তখন মনিরাকে দেখে কেন যেন আমার বুকের ভেতরটা হুহু করে উঠত। আমি আমার ফেলে আসা আমাকে খুব মিস করতাম। মনিরার সাথেও আমার সিনের রিপিটেশন হতে শুরু হলো। আমি যেন চোখের সামনে আমার কলেজ লাইফের আমাকেই দেখতে শুরু করলাম। মনিরা কালো বোরকা পরার জন্য কথা শুনছে, মানুষের ভ্রু কুচকানো দেখছে। আমি নিজে তখনও পর্দাহীন, তবু কেন যেন মনিরার প্রতিটা অনুভূতি আমার নিজেরই মনে হতো। ও যখন বোরকা পরা নিয়ে কারও কাছ থেকে কটাক্ষ শুনে এসে তা আমার সাথে শেয়ার করত, আমি তখন ওকে বুঝাতাম। শক্ত করে দ্বীন ধরে রাখতে উৎসাহ দিতাম। কী অদ্ভুত ছিল সেই দিনগুলো। আমরা দুজন পড়ন্ত বিকেলে ছাদে বসে কত্ত গুটুর গুটুর গল্প করতাম। আমাদের গল্পে কোনো গিবত থাকত না। থাকত না কারও সমালোচনা। দ্বীন নিয়ে আমি যা জানতে পারি তা মনিরাকে বলি। মনিরা যা জানে তা আমাকে বলে। এভাবেই চলছিল। হঠাৎ পারিবারিক কিছু সমস্যার কারণে আমার পড়াশোনা বন্ধ
হয়ে যায়।
For Photos I use:
Camera |
Iphone 12 Mini |
Lens |
Wide 26 mm-Equivalent |
Photographer |
@fxsajol |
Location |
Mirpur 12 , Dhaka, Bangladesh |
Processing photos |
Outdoor |
হোস্টেল ছেড়ে চলে আসি বাড়িতে। তখন আর কেন যেন আমার শর্ট বোরকা ভালো লাগত না। দেখা যেত বোরকা পরেও হাজার বার টেনেটুনে সব ঢাকার চেষ্টা করছি। শেষমেষ অতিষ্ট হয়ে আম্মিকে বললাম লং বোরকা বানিয়ে দিতে। আম্মি খুশিই হলো; না করল না। তখনো নিকাব পরা শুরু করিনি। কেমন যেন লাগত। মনে হতো
Congratulations, your post has been upvoted by @nixiee with a 9.234734115752936 % upvote Vote may not be displayed on Steemit due to the current Steemit API issue, but there is a normal upvote record in the blockchain data, so don't worry.