নাইস ভিউ [বাস্তব ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত]

in #n2 years ago

কেমন আছেন সবাই ? আজ আমি একটা মুভি রিভিউ শেয়ার করতে যাচ্ছি আপনাদের সাথে। এই মুভিটি বাস্তব কাহিনী অবলম্বনে নির্মিত একটি চাইনিজ সিনেমা। ছবিটির মধ্যে কোন রোমান্স কোন অ্যাকশন সিন কিছুই নেই। তবে মুভিটি দেখলে আপনারা বুঝতে পারবেন মুভিটি আসলেই অনেক সুন্দর।

Nice_View_poster.jpg

প্লট/ স্টোরিলাইনঃ-
সিনেমার প্রথমেই জিনহাও কে দেখানো হয় যার একটা ফোন রিপেয়ারিং এর দোকান আছে। তার সংসারে শুধুমাত্র তার ছোট বোন আছে। তার মা অনেক আগেই একটা কঠিন রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন। আর সেই সেম অসুখটা তার বোনের মধ্যেও আছে। তোর বোনের অপারেশন করার জন্য অনেক টাকার প্রয়োজন কিন্তু জিনহাও একটা ছোট দোকান চালাতো । তার পক্ষে এত টাকা ম্যানেজ করা সম্ভব ছিল না। কিন্তু তার মায়ের মৃত্যুর সময় তার মাকে জিনহাও কথা দিয়েছিল যে সারাজীবন তার ছোট বোনকে সে দেখেশুনে রাখবে।

জিনহাও খুবই চিন্তিত ছিল কারণ এত টাকা ম্যানেজ করা তার পক্ষে কোনভাবেই সম্ভব ছিল না। হঠাৎ এক সময় জিনহাও এর ফোনে তার বন্ধুর কল আসে। তার বন্ধু তার সাথে জরুরী দেখা করতে বলে। জিনহাও তার বন্ধুর ফোন পেয়ে তার সাথে দেখা করতে চলে যায়। এরপর জিনহাও এর বন্ধু জিনহাওকে একটা ফ্যাক্টরিতে নিয়ে গিয়ে বিশাল বড় একটা কার্টুনের গোডাউন দেখায়। সেখানে অনেক অনেক পুরাতন ফোন ছিল। যেগুলোর কোন মালিক ছিল না। এগুলোর মালিকের জেল হয়েছে এবং সে এখন জেলে বন্দী আছে। এজন্য এগুলোর দায়িত্ব জিনহাও এর বন্ধুর উপর দিয়ে দেয়া হয়েছে বিক্রি করার জন্য। এখন জিনহাও এর বন্ধু এক লক্ষ টাকার বিনিময় সেগুলো সেল করে দেবে। জিনহাওকে ওর বন্ধু অফার দেয় যে তুমি ১ লক্ষ টাকা দিয়ে সব কিছু নিয়ে নাও। তুমি তো ফোন রিপেয়ারিং এর কাজ করো তুমি এগুলো সেরে সুরে সেল করতে পারবে। এই প্রস্তাবে জিনহাও রাজি হয়ে যায়।

পরে এসব পুরাতন ফোনগুলো তার নিজের দোকানে নিয়ে এসে ধীরে ধীরে ওগুলো সারাই করতে থাকে। জিনহাও হিসাব করে দেখলো প্রত্যেকটা ফোন যদি সে সারাই করে বিক্রি করতে পারে তাহলে তার মোট ১০ লক্ষ টাকা লাভ হবে। এতে তার বোনের চিকিৎসা হবে এবং সে বড় একটা দোকান দিতে পারবে। তাদের আর কোন দুঃখ থাকবে না। এই ভেবে জিনহাও অনেক খুশি ছিল। কিন্তু জিনহাও অনেক বড় একটা দুঃসংবাদ শুনতে পায় খুব শীঘ্রই। সরকার থেকে ঘোষণা দেয়া হয় আর কেউ কখন থেকে পুরাতন ফোন কিনতে বা বিক্রি করতে পারবে না। এই নিউজ শুনে ওর মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। সে এমনি অনেক কষ্টের মধ্যে দিন যাপন করতেছে এরপর আবার এতো বড়ো একটা ধাক্কা। জিনহাও যে এক লক্ষ টাকা দিয়ে ফোনগুলো কিনলো, সে টাকাটা ব্যাংক থেকে লোন নেওয়া হয়েছে। ব্যাংকের প্রেসার রয়েছে তার মাথার উপর।

অনেক চিন্তা ভাবনা করার পর জিনহাও একটা বুদ্ধি বের করে। এই ফোনগুলো যে কোম্পানির সেই কোম্পানির ম্যানেজারের কাছে যায়। ম্যানেজারের কাছে গিয়ে রিকোয়েস্ট করে যে পুরাতন ফোনের পার্টসগুলো যদি আপনারা নিয়ে নেন তাহলে আপনারা এই পার্টস ব্যবহার করে রিফারবিসড ফোনে লাগাতে পারবেন। এতে আপনাদের খুব সহজেই অনেক লাভ হবে। এরপর ওই ম্যানেজার জিনহাও কে বলে ওই পুরনো ফোনের পার্টস গুলো যে ভালো আছে সেটার প্রমাণ দাও। এরপর জিনহাও কিছু পার্টস টেস্টিং হাউসে নিয়ে যায়। সেখান থেকে টেস্ট করার পর দেখতে পায় প্রত্যেকটা পার্টসই অনেক ভালো আছে। নতুন পার্টস এর মতই পারফরম্যান্স। এরপর সেই রিপোর্টটা জিনহাও নিয়ে এসে ওই ম্যানেজারকে দেখায়। কিন্তু ম্যানেজার তখন আর কোন সাড়া দেয় না। এতে জিনহাও খুব কষ্ট পায়। এরপর জিনহাও ওই কোম্পানির মালিকের সাথে দেখা করার আপ্রাণ চেষ্টা করে। কিন্তু তেমন কোনো সুযোগ পায় না। অনেক চেষ্টা করার পর ওই কোম্পানির মালিকের সাথে ১০ মিনিট কথা বলার সুযোগ পায়। অনেক রিকোয়েস্ট করার পর মালিক যখন কথা বলতে চায় তখন জিনহাও তার সবকিছু বুঝিয়ে বলে। তখন ওই মালিক বলে যে আমরা তোমাকে অগ্রিম টাকা দিতে পারব না। তুমি যদি সত্যিই এটা করতে পারো তাহলে করে নিয়ে আসো আগে। তিন মাস সময় হাতে আছে তোমার জন্য।

এই অফার পেয়ে জিনহাও খুবই খুশি হয়। এরপর জিনহাও বাসায় আসে নতুন একটা ফ্যাক্টরি সাইজের ঘর ভাড়া নেয়। এখানে বলে রাখি জিনহাও এর আগের দোকানপাট সব কিছুই কেরে নেয়া হয়েছে। সবকিছুই ব্যাংকের লোনের কারণে তারা এসে নিয়ে গেছে। কারণ জিনহাও লোন পরিশোধ করতে পারেনি। আর এদিকে নিজের ঘরেও থাকতে পারছিলো না কারণ ভাড়া দিতে পারেনি গত ৩ মাস। এজন্য ফ্যাক্টরিতে থাকতে হতো। এখন কাজ করার জন্য ফ্যাক্টরিতে তো অনেকগুলো কর্মচারী প্রয়োজন। জিনহাও কর্মচারীর হায়ার করার জন্য একটা প্ল্যান করে। কিছু প্লাটুন নিয়ে ঘুরে বেড়াতো। লেখা থাকতো এই কোম্পানিতে কেউ নিস্বার্থভাবে কাজ করতে পারবে কিনা। যদি পারে তবে সবাই একসাথে রিক্স নিতে হবে। সাকসেস হলে সবাই হবে। এই সর্ত নিয়ে কেউ কাজ করতে পারবে কিনা। এরপর খুবই ভালো মনের কিছু ভালো ব্যাকগ্রাউন্ডের লোক খুজে পায়। তাদের অতীত অনেক ভাল ছিল। বিভিন্ন কারণে তারা আজ পথে পথে ঘুরছে।

জিনহাও এরকম কিছু মানুষ ম্যানেজ করে কোম্পানির কাজ শুরু করে। কিন্তু কম্পানির ওই ঘরের বেতন পরিশোধ করতে পারছিল না। এজন্য ওখান থেকে ওদের বের করে দেওয়া হয়। এরপর কর্মচারীদের বাড়িতে গিয়ে তারা রাতদিন কাজ করতে থাকে। এদিকে জিনহাও তার কর্মচারীদের বাড়িতেই রাত যাপন করত তার ছোট বোনের নিয়ে। কারণ ওদের থাকার কোন জায়গা ছিল না। এভাবে করতে করতে তারা অনেক অনেক পার্টস ঠিকঠাক করে কোম্পানির কাছে হস্তান্তর করে। এরপর কোম্পানি সেগুলো চেক করে ফলাফল জানাবে বলে তাদেরকে অপেক্ষা করতে বলে।

জিনহাও ও তার সব কর্মচারীরা সবাই বাইরে অপেক্ষা করছিল। কিছুক্ষন পর ফলাফল আসে এবং তাদেরকে অভিনন্দন জানানো হয় আর কোম্পানিতে দুই বছরের জন্য কন্ট্রাক্ট করে পার্টস সরবরাহ করতে। আর এভাবেই জিনহাও অনেক উপরে উঠে যায়। পরবর্তীতে জিনহাও নিজেই একটা পার্টস তৈরীর কারখানা বানিয়ে ফেলে। সে এখন একজন বড় মাপের শিল্পপতি। আর চায়নার একটা বাস্তব ঘটনা। যাইহোক রিভিউ কেমন লাগলো জানা

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.24
JST 0.034
BTC 95807.92
ETH 2778.70
SBD 0.68