Best movei in my life ✌✌✌✌

in #movies7 years ago (edited)

কার গল্প দিয়ে শুরু করবো?
বাবার নাকি ছেলের?
নাকি ময়ূরাক্ষীর?
image
বাবার গল্প দিয়েই শুরু করি। একজন ৮৪ বছরের বৃদ্ধ লোক। জীবদ্দশায় তিনি ছিলেন ইতিহাসের শিক্ষক। এর ফলে তার মাথায় স্টোর করে রাখা বিভিন্ন সময়ের বিভিন্ন ঘটনা বেশ ভালোভাবেই জীবিত আছে। শুধু বয়স আর একাকী জীবনাচরণের ভারে ফিঁকে হয়ে গেছে তার বর্তমান। নিজের একমাত্র সন্তানের আর ময়ূরাক্ষীর স্মৃতি ছাড়া তার কাছে আর কিছু নেই। ছেলের ভাবনা থেকে তিনি বারবার ফিরে যান সেই ক্রিকেটের দিনগুলোতে আর ময়ূরাক্ষীর কাছে। পঁচিশ বছর আগেকার সেই ময়ূরাক্ষীর কাছে।

ছেলে। বিষণ্ণতার ভারে ন্যুহ হয়ে গেছে তার বর্তমান। প্রথম বিয়ে টিকেনি তার। সেই ঘরে একটি প্রাণবন্ত ছেলে আছে। ২য় বিয়েটারও বিচ্ছেদ ফাইল হয়ে গেছে। জীবনের এই টানাপোড়েনে তার সাময়িক প্রশান্তির জায়গা তার বহু আগেকার এক বান্ধবী। বাবার অসুস্থতার খবর শুনে বাবার কাছে ফিরে আসে সে। ফিরে আসে পঁচিশ বছর আগেকার ময়ূরাক্ষীর কাছে। যাকে বিয়ে করার কথা ছিলো তার।

বাবা প্রতিনিয়ত তার আশেপাশে খুঁজে বেড়ান ময়ূরাক্ষীকে। বাবার সাথে দেখা করিয়ে দিতে ছেলে এবার নামে ময়ূরাক্ষীর খোঁজে। আসলেই কি বাবার জন্য নামে? নাকি নিজের ভাঙাচোরা জীবনে একখন্ড প্রশান্তি লাভের সুপ্ত আশায় সে নিজেই খুঁজে বেড়ায় ময়ূরাক্ষীকে?

জীবনের হিসেব নিকেশে একটি গোলমেলে ব্যাপার স্যাপার আছে। আমি আমার যে বাবাকে একসময় প্রচন্ড ঘৃণা করতাম, এখন তাকে আমি ভালোবাসি। যদিও ততটা ফিল হয়না আমার, কিন্তু ছোটবেলা থেকে বাবাকে কাছে না পাওয়ার যে তাড়নায় আমি আমার বাবাকে ঘৃণা করতাম, তাকে যখন নিজের সামনে বাচ্চাদের মতো হাসতে দেখি, ছেলের উপর অগাধ ভরসার দৃষ্টি দেখি, তখন কেমন জানি একটা লাগে। মনে হয়, বুড়ো বয়সে লোকটার পাশে আমাকে থাকতে হবে। যে লোকটি আমাদের জন্য সারাজীবন কষ্ট করে গেলো, তার চোখে যখন ছেলের প্রতি অগাধ বিশ্বাস আর ভরসার দৃষ্টি দেখি, তখন উঁবে যায় আমার বিষণ্ণতা, উঁবে যায় সকল ঘৃণা।

অপ্রিয় হলেও সত্য, আমি আমার বাবাকে মাত্র ৬দিনের জন্য বাবা হিসেবে পেয়েছিলাম। উনি ব্যস্ত মানুষ। সময় পাওয়া যায়না উনার।
সেই ৬দিন আমি যেভাবে পেরেছি, নিজেকে উনার জায়গায় দাঁড় করিয়ে উনার মুখে একখন্ড প্রশান্তির হাসি দেখার চেষ্টায় ছিলাম সবসময়।
ময়ূরাক্ষীর বাবা ছেলের রসায়ন দেখে আমার সেসব দিনের কথা বারবার মনে হচ্ছিলো। এতোটাই বুঁদ হয়ে ছিলাম যে, আমি আমার বিষণ্ন আমিকে প্রসেনজিৎের জায়গায় দাঁড় করিয়ে বারবার নিজের কথা ভাবছিলাম।

ময়ূরাক্ষী যথেষ্ট মন্থরগতির সিনেমা। তবে, গল্পে বুঁদ হতে পারলে, শেষ হওয়ার পর একটি প্রচ্ছন্ন ছায়া ফেলবে মানবচেতনায়। ইচ্ছে করবে নিজের বাবাকে ভালোবাসতে, নিজের সন্তানের বিষণ্নতায় তাকে জিজ্ঞেস করতে, তোর কি খুব মন খারাপ? তাই না?

আর সিনেমার দৃশ্য থেকে দৃশ্যে মনে হবে, এই বুঝি দেখা পাওয়া গেলো ময়ূরাক্ষীর। এই বুঝি দেখা পাওয়া গেলো একখন্ড প্রশান্তির। ২৫ বছর আগে যে প্রশান্তি হারিয়ে গিয়েছিলো বাবা-ছেলের কাছ থেকে, তাকে এই বুঝি এই ধরা গেলো।

অতনু ঘোষের এ্যবি সেন নামের একটা সিনেমা দেখেছিলাম বহু আগে। খুব একটা ভালো ছিলোনা সেটা। তবে ময়ূরাক্ষী? বহুদিন থাকবে মনে, গেঁথে থাকবে চেতনায়।

এরচেয়ে বেশি গুছিয়ে লিখতে পারছি না। ঘুমের ট্যাবলেট নামে ৩০ এমজি একটা জিনিস খেয়েছিলাম। ১০-১৫ মিনিটের মধ্যে কাজ করার কথা থাকলেও ২ঘন্টা হতে চললো, এখনো কাজ করছে না। মনে হচ্ছে, বাবা যদি এখন জিজ্ঞেস করতো, কিরে? তোর খুব মন খারাপ? তাইনা?
তাহলে আমি চরম প্রশান্তিতে ঘুমিয়ে যেতে পারতাম।

#আসিফের_রিভিউ

Coin Marketplace

STEEM 0.30
TRX 0.27
JST 0.041
BTC 98445.27
ETH 3638.54
SBD 3.69