কোন জবে এপ্লাই করার আগের প্রস্তুতি
কোন জব দেখার সাথে সাথে এপ্লাই করার একটা প্রবনতা অনেকের ভেতর থাকে বা জবে এপ্লাই করার আগেও যে প্রস্তুতি নেওয়ার প্রয়োজন এটা অনেকে চিন্তা করেন না। অথবা আমার নিচের পরামর্শগুলোর সাথে মিলিয়ে নিতে পারেন আপনি যেভাবে প্রস্তুতি নিতে পারেন।
১। একাধিকবার জব ডেসক্রিপশন পড়া। যদি মনে হয় জবটি আপনার স্কিল সেটের সাথে যায় তাহলেই শুধুমাত্র এপ্লাই করুন। সাধারণত ১০০% স্কিল সেটের সাথে মিলে খুব কম, এই ক্ষেত্রে ৮০% মিল হলেও এপ্লাই করা যেতে পারে। যদি এন্ট্রি লেভেল জব হয় তাহলে অনেকে সময় ২০-৩০% স্কিল মিলে গেলে এপ্লাই করা যেতে কারণ ফ্রেসার হায়ার করা হয় বেসিক দেখে এবং শেখার সুযোগ দেওয়া হয়। ( সাইডনোটঃ এক্ষেত্রে শুরুতে স্যালারি সামান্য কম হলেও অফার পেলে গ্রহন করা উচিৎ।)
২। যে কম্পানী থেকে জব পোস্ট করা হচ্ছে তাদের ওয়েব সাইট ব্রাউজ করুন। তারা কি ধরনের কাজ করে তা ভালো করে জানার চেস্টা করুন। অনেক সময় স্যালারি বেশি কিন্তু তারা যে ধরনের কাজ করেন তা আপনার পছন্দ নাও হতে পারে। বরং কম্পানীর ওয়েব সাইট ঘেটে যদি ইন্টারভিউতে যাওয়া হয় তাহলে আপনি এক ধাপ এগিয়ে থাকবেন। অনেকে ইন্টারভিউতে মিথ্যাচার করেন যে "হ্যাঁ আমি আপনাদের সাইট দেখেছি" ... কি দেখেছেন প্রশ্ন করে আমতা আমতা করে উত্তর পাওয়া যায় এতে ইন্টারভিউয়ার বুঝতে পারেন। তাই এপ্লাই করার আগে কম্পানীর কালচার, তাদের কার্যক্রম, তাদের ফোকাসড এরিয়া জানার চেস্টা করুন। কোন প্রশ্ন থাকলে কমেন্টে প্রশ্ন করুন বা ইমেইল করুন অনেক সময় জব ডেসক্রিপশনে কম্পানী তাদের সম্পর্কে সংক্ষেপে জানিয়ে দেয়।
৩। সাধারনত দেখা যায় একটা রিজিউম বানানো আছে সেটাই প্রতি জবে পাঠানো হয়। এটা ঠিক নয়, আপনার উচিৎ প্রতিটি জবের আগে আবার রিজিউম খুলে দেখা এবং জব ডেসক্রিপশন অনুসারে একটু এদিক ওদিক করা। ধরুন আপনি লারাভেল ও জানে আবার ওয়ার্ডপ্রেস সিএমএস সম্পর্কেও জানেন, যেখানে এপ্লাই করছেন সেখানে ওয়ার্ডপ্রেস বেসড কাজ হয় তাহলে আপনার উচিৎ হবে ওয়ার্ডপ্রেস সম্পর্কিত আপনার স্কিল গুলো বেশি হাইলাইট করে লেখা। চাইলে একটা আলাদা রিজিউম পাঠাতে পারেন যেখানে শুধু আপনার ওয়ার্ডপ্রেস অভিজ্ঞতা নিয়ে লেখা থাকবে। আচ্ছা নির্দিষ্ট স্কিল টার্গেট করে রিজিউম বানানোর আইডিয়া আমার মাথায় এই মাত্র আসল। বিষয়টা বেশ কার্যকরি হওয়া উচিৎ। কারণ কম্পানী গুলো না বুঝে জব ডেসক্রিপশনে সুপারম্যান খুঁজলেও আসলে কিন্তু আপনাকে জবে গিয়ে নির্দিষ্ট ধরনের কাজ বেশি বেশি করতে হবে, প্রতিটি কম্পানীর যে কোন একটা নির্দিষ্ট স্কিল সেট বেসড প্রজেক্ট বেশি বেশি থাকে।
কম্পানীর ওয়েব সাইট দেখে তাদের পালস বুঝার চেস্টা করা উচিৎ এই জন্য। (সাইডনোটঃ আমি সব সময় রিজিউম এর কথা বলি, সিভি না কারণ রিজিউম হচ্ছে সিভির সংক্ষিপ্ত ভার্সন এবং জবে রিজিউম পাঠানোকে আমি উৎসাহিত করি তবে কম্পানীভেদে এটা আলাদা হবে, অনেকে জব পোস্ট করার সময় সচেতন ভাবে রিজিউম বা সিভি কোনটা পাঠাবে তা চিন্তা না করেই সিভি বা রিজিউম পাঠানোর জন্য লেখে)
৪। ইমেইল করার সময় জব ডেসক্রিপশনে যে ইমেইল সাবজেক্ট থাকে তা সঠিক ভাবে দেখুন। অবশ্যই শুধু সিভি বা রিজিউম এটাচ , সাবজেক্ট লেখা ছাড়া ইমেইল বডিতে কিছু লিখুন। অনেকে মনে করেন এই লেখা দিয়ে কি হয়, রিজিউমে সব আছেই তো। কিন্তু এটা ঠিক না। আপনার সামান্য চার পাঁচ লাইন লেখা আপনার লেখার সক্ষমতাকেও প্রকাশ করে। এই ৪/৫ লাইনে এমন কিছু লিখুব যা সংক্ষেপে আপনার সম্পর্কে সর্বোচ্চ প্রকাশ করে। আপনার স্যাম্পল প্রজেক্ট , গিটহবা বা লিঙ্কডইন এর লিঙ্ক দিতে পারেন এই ইমেইল বডিতে যা মেইল থেকে দেখেই ক্লিক করে একজন রিক্রুটার দেখে নিতে পারেন সহজে। প্রতিটি জবে একই টেক্সট কপি পেস্ট করবেন না। কারো কাছ থেকে শিখে নেওয়া টেমপ্লেট টাইপ টেক্স কপি পেস্ট করবেন না। কোন লেখা অন্য কোথাও থেকে কপি করা কিনা সেইটা লেখার ধরন দেখে বুঝা যায়। এই জন্য হুট করে ইমেইল না করে প্রস্তুতি নিয়ে ইমেল করুন। অনেকে বার বার এপ্লাই করে হতাশ হয়ে যান কোন ইন্টারভিউ কল পান না। এর একটা অন্যতম কারন হতে পারে আপনি আলাদা ভাবে দৃষ্টি আকর্ষন করতে ব্যর্থ হয়েছেন। সাধারনত যত সিনিয়র পোস্ট হয় সেই গুলো রিজিউম কম সাবমিট হয়, আর এন্ট্রি বা ফ্রেসারদের জন্য প্রতিটি জবে কমপক্ষে ১০০-২০০ রিজিউম সাবমিট হয়। এটার হার পপুলার জব সাইটে জব পোস্ট করলে ১০০০ এর উপর চলে যায়। আপনিই ভাবুন ১০০ রিজিউম পড়েতে কত সময় লাগতে পারে।!
- Sabuj Kundu