ইসলামের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে জাপানীজ শিক্ষার্থীদের মাঝে
সম্প্রতি চলতি সামাজিক স্রোতের একটি হচ্ছে সন্ত্রাসবাদী মুসলমানরা ইসলামের একটি নেতিবাচক ভাবমুর্তি গড়ে বিশ্বাব্যাপী ইসলাম বিরোধী শত্রুতা প্রচার করা – কিন্তু জপানে এই বিশ্বাসটি অপরিচিত
কিন্তু জাপানের যুবসমাজ এখনো এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে যে সত্যিকারের ইসলাম কি শিখায় এবং কোন প্রেক্ষিতে ইসলামকে উগ্রপন্থার জন্য দায়ী করা হয়।
ইসলামের অনুসারী না হয়েও টোকিও শহরের বহু স্কুলই সম্প্রতি তাদের শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক শিক্ষা প্রদানের অংশ হিসাবে তাদের ছাত্রদেরকে শহরের বড় কয়েকটি মসজিদ ভ্রমন করিয়েছে যেন তাদের ছাত্ররা এটি জানতে পারে যে ইসলাম একটি পক্ষপাতহীন এবং বাস্তব ধর্ম।
শুনিয়া সেনেগা(১৭) একজন ছাত্র বলেন, মুসলিমদের নামাজ আদায় করতে দেখতে পারা তার জন্য একটি মুল্যবান অভিজ্ঞতা, এছাড়া আর বলেন আমি বুঝতে পারছি মুসলিমদের জন্য তাদের আল্লাহর দেখানো পথই মূল। তিনি আরও জানান যে, আমার সঙ্গে একজন মুসলিমের সৌজন্য পরিচয় আছে যাকে দেখে আমি নিশ্চিত যে তাঁর বিশ্বাস তাঁর সামাজিকতা এবং রাষ্ট্রীয় সংস্কৃতিকে বাধাগ্রস্থ করে না অথবা তাঁর আচরনে আমার কখন মনে হয়নি যে আমি তাঁর থেকে ভিন্ন।
তিনি জানান মৌলিক ইসলামিক শিক্ষা তাদের স্কুল পাঠ্যক্রমের অংশ, তিনি বিশেষভাবে বলেন ইসলামিক স্টেট গ্রুপের যে সংবাদ প্রতিবেদনগুলো প্রতিনিয়ত দেখা যাচ্ছে তাতে স্পষ্ট বোঝা যায়, তারা ইসলামকে আমাদের কাছে নেতিবাচক প্রচার করার চেষ্টা করছে।
ওমিয়া,সাইতামা প্রিফেকচারের পাবলিক ওমিয়া কিতা হাই স্কুলের ৩৬০ জন ছাত্রের মধ্যে সেনেগা একজন যিনি গত এপ্রিল মাসে ভ্রমন করেন জাপানের সবচেয়ে বড় মসজিদ টোকিও কামজি এবং শিবুইয়াতে অবস্থিত তুর্কিশ সংস্কৃতিক কেন্দ্র।
সেনেগার একজন সহপাঠী নাওতো তাকাকু বলেন, আই.এস. সম্পর্কের খবরগুলো জানি তারপরও বলবো মুসলমানরা প্রকৃতপক্ষে সত্যি খুব ভাল মানুষ, শুধুমাত্র কিছু সংখ্যক মুসলমান তাদের ধর্মের প্রকৃত মূল্যবোধের বিপক্ষে কাজ করছে।
সিঙ্গাপুর এবং মালয়েশিয়াতে কোনও একটি গ্রামভিত্তিক মালয়েশিয়ান মসজিদ ও মুসলিম পরিবারের সাথে সময় কাটানো পাঠ্যক্রমের অংশ।
এই কার্যক্রমের দায়িত্বরত একজন শিক্ষক আকিকো কোবাইয়াশি বলেন, ‘এই ধরনের পরিবেশে তারা ইসলাম সম্পর্কে ধারনা পাবে এবং জানবে ইসলাম প্রকৃতপক্ষে কি ধরনের ধর্ম, আমি চাই ছাত্ররা দেখুক কিভাবে ইসলামিক সম্প্রদায় একে অপরের উপর নির্ভর করে এবং একে অপরকে সাহায্য করে সামাজিক জীবন যাপন করে। এবং তাদের দৈনন্দিন জীবন পদ্ধতি দেখে তারা যেন বুঝতে পারে যে ইসলাম একমাত্র শান্তিকেই সমর্থন করে।
যাদের সাথে আমরা কথা বলেছিলাম সেই গ্রুপের প্রায় সকল শিক্ষার্থীর জন্যই এটি ছিল ইসলামের সম্পর্কে তাদের প্রথম সম্মুখ অভিজ্ঞতা, এবং নিঃসন্দেহে এটি তাদের জন্য ছিলো শান্তি এবং শ্রদ্ধার অনুভূতিতে পরিপূর্ণ।
লক্ষনীয় একটি মজার বিষয় ছিলো শিক্ষার্থী দলের মধ্যে যেসব মেয়েরা ছিলো তারা মসজিদে ঢুকতে কিছুটা সংকোচ বোধ করছিলো, কেউ কেউ তাদের জুতা খুলে প্রবেশ করছিল নিজ থেকেই, কেউ কেউ আবার ভিশন শ্রদ্ধার সাথে নিজেদের মাথা ঢেকে হিজাব করার চেষ্টা করেছিলো। কিন্তু তাদের প্রত্যেকেই ছিল নতুন কিছু জানার জন্য ভীষণ আগ্রহী এবং আনন্দিত।