Traditional 3 food Photography Contest in your place. আমার গ্রামের বিখ্যাত তিনটি ঐতিহ্যবাহী খাবার সম্পর্কে লিখলাম
আসসালামু আলাইকুম আশা করি সবাই ভাল আছেন।
আজকে চলে এসেছি কনটেস্টে পার্টিসিপেট করার জন্য ।
চলছে ট্র্যাডিশনাল খাবার নিয়ে একটি কনটেস্ট তাই গ্রামীণ এলাকার বিখ্যাত তিনটি ট্রেডিশনাল খাবার নিয়ে আলোচনা করার জন্য আজকে আমি আপনাদের সামনে উপস্থিত হয়েছি ।আমার পছন্দের তিনটি ট্রেডিশনাল খাবার সম্পর্কে আজকে আপনাদেরকে জানাবো ।
মানুষ পৃথিবীতে খাবারের জন্যই মূলত বেঁচে থাকে। খাওয়া ছাড়া মানুষের জীবন কল্পনা করা যায় না ।আমার মনে হয় বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি ভোজন রসিক মানুষ বসবাস করে চট্টগ্রাম বিভাগে। চট্টগ্রামে যে হারে রেস্টুরেন্ট রয়েছে এবং যেভাবে মানুষ বিভিন্ন রকমের খাবারের আয়োজন করে অন্য কোন জেলায় সে ধরনের কোন কিছু চোখে পড়েনি কিংবা শুনিনি কারো কাছে। চট্টগ্রামের বিখ্যাত কয়েকটি খাবারের মধ্যে অন্যতম একটি হচ্ছে লবন ইলিশ ।
যখন প্রচুর পরিমাণে নদী থেকে ইলিশ মাছ সংগ্রহ করা হয় তখন বিশেষ এক প্রক্রিয়ায় লবণের মাধ্যমে অনেক ইংলিশ সংগ্রহ করা হয় ।
যাতে যখন ইলিশ পাওয়া যাবে না তখন নিশ্চিন্তে আপনি খেতে পারবেন। ইলিশ মাছ যেহেতু শুটকি আকারে প্রসেস করা সম্ভব নয় ।তাই লবণের মাধ্যমে ইলিশ কে সংরক্ষণ করা হয় আরে লবণ ইলিশ কে যদি আপনি বেশি করে পেঁয়াজ মরিচ মিক্স করে মিষ্টি কুমড়া শাকের পাতা দিয়ে যদি ভালোভাবে রান্না করতে পারেন তাহলে অনায়েসে ভরবেট ভাত খেয়ে উঠা সম্ভব। আমার মা মাঝেমধ্যে লবণ ইলিশ দিয়ে এভাবে রান্না করে যেটা খেতে আমি খুবই পছন্দ করি। শুধু আমার মা নয় চট্টগ্রামের খাবারের মধ্যে এই প্রক্রিয়া ইলিশ মাছ রান্না করাটা একটা ঐতিহ্যের মত। অনেক বছর যাবত এই প্রক্রিয়ায় ইলিশ মাছ রান্না চলে আসছে । তবে অবশ্যই যদি আপনি কেমিক্যাল মুক্ত লবণ ইলিশ খেতে পারেন তবেই আপনি অরজিনাল টেস্টটা পাবেন ।বর্তমানে তো আসলে কেমিক্যাল ছাড়া কোন খাবার কল্পনা করা যায় না।
আপনাদের সুযোগ হলে কোন সময় আপনার এভাবে চেষ্টা করে দেখতে পারেন।
চট্টগ্রামের বিখ্যাত বিখ্যাত সব রকমের খাবার পাওয়া যায়।
চট্টগ্রাম তো এমনিও মেজবানি মাংসের জন্য বিখ্যাত।
চট্টগ্রামে যেভাবে মেজবানের আয়োজন করা হয় বাংলাদেশের অন্য কোন জায়গায় এত বড় করে মেজবান আয়োজন করা হয় না ।
কিন্তু এইটা নিয়ে আমি কথা বলবো না।
আমি কথা বলব গ্রামের বাড়ির আরেকটি ঐতিহ্যবাহী খাবার সেটা হচ্ছে মোচা।
এটা চার পাঁচ রকমের আইটেম দিয়ে তৈরি করা এক ধরনের খাবার যেটা সাধারণত চট্টগ্রামে বিশেষ এক উপলক্ষে তৈরি করা হয়।
কিন্তু বর্তমানে অনলাইনের উদ্যোগে মোচা তৈরি করার ক্ষেত্রে কোন উপলক্ষ্য প্রয়োজন মনে করছে না। অনেক রকমের ভর্তা বিনি চালের ভাত একটি আস্ত মুরগির রোস্ট ইত্যাদির সমন্বয় করে একটি মোচা তৈরি করা হয় ।একটি মাঝারি সাইজের মোচা তিন থেকে পাঁচ জন অনায়াসে পেট ভরে খেতে পারবে ।আমাদের গ্রামের দাদুরা মায়েরা খুব দারুণভাবে আনন্দের সাথে মোচা তৈরি করে। যেহেতু বলেছিলাম এটা বিশেষ এক উপলক্ষে তৈরি করা হয় তাই খুবই যত্ন সহকারে উপহার হিসেবে মৌচা নিয়ে যাওয়া হয় ।
সাথে অন্যান্য উপহার তো থাকে।
গত বছর আমার এক ফ্রেন্ড আয়োজন করে আমাদের সবাইকে একসাথে তার জন্মদিনে মৌচা খাইয়ে ছিল ।
সেই মোচার স্বাদ ছিল অতুলনীয় এখনো সেই দিনটির কথা আমার স্মরণে আছে ।
সর্বশেষ আপনাদের সাথে আলাপ করব চট্টগ্রাম ঐতিহ্যবাহী পিঠা সম্পর্কে ।শীতকাল আসলে বাংলা দেশের সব গ্রামে পিঠা তৈরির উৎসব বসে যায় ।
নতুন চালের পিঠা খাওয়ার জন্য নাতিরা চলে যায় নানার বাড়িতে। নানুর বাড়িতে গিয়ে পিঠা খাওয়ার এক আলাদা আনন্দ রয়েছে ।সব নাতিরা একসাথে চলে আসে ছুটি কাটাতে নানুর বাড়িতে। নানি ও আনন্দের সাথে তৈরি করে বিভিন্ন রকমের পিঠা ।পুলি পিঠা চিতই পিঠ নকশী পিঠা এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভাপা পিঠা ।
শীতকালে ভাপা পিঠা তৈরি করা যেন একটি ফরজ কাজের মত। শীতকালে অন্য কোন পিঠা তৈরি না করলেও প্রত্যেক বাড়িতে ভাপা পিটা একদিনের জন্য হলেও বানানো হয়। ভাপা পিঠা তৈরি করে বিয়াই বাড়িতে বেড়াতে যাওয়া হয় । এটা চট্টগ্রাম জেলার একটি ঐতিহ্য । কোন কারনে পিঠা তৈরি করতে না পারলে ।পিটা তৈরি করার জন্য যা যা লাগে সেই সবকিছু নিয়ে উপস্থিত হয়ে যায় বিয়াই বাড়িতে ।পিঠার মধ্যে আমার প্রিয় হচ্ছে ভাপা পিঠা ।
অনেক বেশি নারিকেল ও গুড় দিয়ে ভাপা পিঠা খাওয়ার মজাই আলাদা। সবচেয়ে ভালো লাগে গরুর মাংসের ঝোল দিয়ে সাদা ভাপা পিঠা খেতে। ভাপা পিঠা অপছন্দের এমন মানুষ হয়তো পাওয়া যাবে না। কারণ আমরা ছোটবেলা থেকেই ভাপা পিটার খেয়ে বড় হয়েছি এবং এর স্বাদ সব সময় অতুলনীয়। প্রতিবছরে যখন নানু বেঁচে ছিল তখন তিনি সবাইকে নিয়ে বাবা পিঠা খাওয়ার আয়োজন করতো । কিন্তু নানু মারা যাওয়ার পর নানুর বাড়িতে আয়োজন আর হয় না ।কিন্তু আমার মা প্রতি বছর শীত আসলেই ভাপা পিটা তৈরি করার কথা কখনো ভুলে না ।ভালো থাকোক সেইসব মায়েরা , নানুরা যারা যত্ন সহকারে আমাদের জন্য এতসব আয়োজন করে । ট্রেডিশনাল খাবার সম্পর্কে আজকে এতোটুকুই লিখলাম ।পরবর্তীতে অন্য কোন বিষয় সম্পর্কে আবার লিখব।
ধন্যবাদ সবাইকে আপনারাও আপনাদের পছন্দনীয় ট্র্যাডিশনাল খাবার সম্পর্কে আমাদেরকে জানান ।
আরো একটি নতুন ব্লগ নিয়ে আপনাদের সামনে পুনরায় উপস্থিত হব।
ইনশাল্লাহ
কনটেস্টের পোস্টটি শেয়ার করতে হবে। আর কনটেস্ট অংশগ্রহণ করার জন্য তিনজনকে আমন্ত্রণ জানাতে হবে। আর ট্যাগের মধ্যে ক্লাব ১০০ হবে এটা।।