বেড়ানো | রূপসী গোয়ালিয়া | উখিয়া, কক্সবাজার | ১০% @btm-school

মিনি বান্দরবান খ্যাত রূপসী গোয়ালিয়া!
3.jpg

'রূপসী গোয়ালিয়া' কক্সবাজারের একটা নতুন আবিষ্কৃত ট্যুরিস্ট এট্রাকশন। মেরিন ড্রাইভ ধরে এগিয়ে গিয়ে, হিমছড়ি পার হয়ে রেজুখাল ব্রীজের ঠিক আগে বামদিকে বা পূর্বদিকে ১ কিলোমিটার গেলেই নয়নাভিরাম এই জায়গাটা চোখে পড়বে। চারিদিকে পাহাড় বেষ্টিত, অনেকটা বান্দরবানের ফিল এনে দিবে নিমেষেই। সেজন্য অনেকেই এটাকে 'মিনি বান্দরবান' নামে আখ্যায়িত করে থাকে।

4.jpg

2.jpg

বর্তমানে বাংলাদেশের এক শ্রেণীর মানুষ বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম প্রচুর ঘুরতে ভালবাসে, তারা নতুন নতুন জায়গা আবিষ্কার করে আনন্দ পায়, এডভেঞ্চার করতে পছন্দ করে। সেকারণে তারা দেশের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে চষে বেড়ায়। দেশের মধ্যে যেসব জায়গায় পরিচিত দর্শনীয় স্থান রয়েছে সেগুলোতে প্রতিদিন প্রচুর সংখ্যক ট্যুরিস্ট ভ্রমন করে থাকে, এর বাইরেও বিভিন্ন অঞ্চলে নতুন নতুন দর্শনীয় জায়গার সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে দিন দিন। আর সেসব জায়গার বেশিরভাগেই তরুণদেরই পদচারণা বেশি।

5.jpg

6.jpg

আজ আপনাদেরকে তেমনই একটা নতুন পরিচিতি লাভ করা ট্যুরিস্ট স্পটের সন্ধান দিবো। জায়গাটার নাম রূপসী গোয়ালিয়া বা মিনি বান্দরবান। জায়গাটা পড়েছে কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলায়। কক্সবাজার শহরের ডলফিন স্কয়ার থেকে ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সা বা সিএনজি নিয়ে সোজা মেরিন ড্রাইভ ধরে চলে যাওয়া যায় রূপসী গোয়ালিয়াতে। স্পটে পৌঁছাতে সিএনজি বা অটো ভাড়া লাগবে জনপ্রতি ৪০-৫০ টাকা। দামাদামি করে রিজার্ভ করেও যাওয়া যায়। অবশ্য বেড়ানোর সঙ্গী কয়েকজন হলে একটা চাঁদের গাড়িও ভাড়া করে নিয়ে যেতে পারেন।

7.jpg

8.jpg

কক্সবাজার শহরের কলাতলী মোড় পার হয়ে মেরিন ড্রাইভ ধরে এগিয়ে গেলে প্রথমে চোখে পড়বে সাম্পান বীচ, তারপর আরও কিছুদূর গেলে পড়বে দরিয়ানগর সী ভিউ পার্ক, আরও কিছুদূর গেলে প্যারাসেইলিং পয়েন্ট পড়বে (সেখানে স্পীডবোট ও প্যারাস্যুটের সাহায্যে আকাশে ওড়ার এক্সাইটিং অভিজ্ঞতা পাওয়া যায়), এরপরে আসবে রেইবো বীচ, তারপর মেরিন ড্রাইভ ওয়াটার ফল, আরও কিছুদূর যাওয়ার পর পড়বে হিমছড়ি। হিমছড়ি পার হওয়ার পরে আসবে কাঁকড়া বীচ, তারপরে আসবে পেঁচার দ্বীপ, এরপর মারমেইড বীচ রিসোর্ট পার হয়ে সামনে পড়বে বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউট, এর কিছুদূর সামনে গেলেই চলে আসবে রেজু খাল এবং তার উপরে বড় ব্রীজ। এই ব্রীজের একটু আগে পুলিশ চেকপোস্টের সামনে দিয়ে পূর্বদিকে একটা রাস্তা চলে গেছে। এই রাস্তা ধরে এক কিলোমিটারের মতো গেলেই রূপসী গোয়ালিয়ার সেই নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখা যাবে।

9.jpg

1.jpg

মেরিন ড্রাইভ রোড থেকে রূপসী গোয়ালিয়ার দিকে যাওয়ার পথে রাস্তার দুপাশে হজারো-লাখো সুপারি গাছ সমৃদ্ধ বড় বড় বাগান চোখে পড়বে। দুপাশে কিছু বাড়ি-ঘর রয়েছে। রাস্তাটা আস্তে আস্তে পাহাড়ের উপরে উঠে গেছে। এই রাস্তাটা সোজা 'মরিচ্চা' হয়ে কক্সবাজার-উখিয়া-টেকনাফের মেইন রোডে গিয়ে মিশেছে। রাস্তার দুপাশেই উচু উচু বড় পাহাড় এবং চারিদিকে সবুজের হাতছানি। যেদিকেই তাকাবেন খালি সবুজ আর সবুজ। বড় বড় পাহাড়গুলো ছেয়ে আছে ছোট-বড় হাজারো সবুজ গাছে।

10.jpg

11.jpg

রূপসী গোয়ালিয়া জায়গাটা একটা বড় পাহাড়ের উপর। এখান থেকে দুপাশেই রাস্তা নিচের দিকে নেমে গেছে। পাহাড়ের গা ঘেঁষে আঁকাবাঁকা সরু পথ চলে গেছে একেবারে উপরের দিকে। অনেক তরুণ পর্যটক সেসব সরু পথ ধরে পাহাড়ের উপরে ওঠার লোভ সামলাইতে পারেনা, ফলে তারা সেখানে এডভ্যাঞ্চারে মেতে ওঠে। পাহাড়ের খাঁজে খাঁজে দুয়েকটা পাহাড়ী ঘর চোখে পড়বে। এখানে কয়েকটা দোকান আছে, সেসব দোকানে নানা রকম পাহাড়ী ফল যেমন: কলা, আনারস, পেয়ারা, কমলা ইত্যাদি পাওয়া যায়। দুয়েকটা ঝালমুড়ির দোকানও আছে সেখানে। একটা জুসের দোকান আছে, নানারকম ফল দিয়ে চোখের সামনেই ফ্রেশ জুস বানিয়ে দেয় তারা। আরও দুয়েকটা মুদি টাইপের দোকান চোখে পড়বে সেখানে।

12.jpg

13.jpg

ওখানে গেলেই দুপাশের প্রাকৃতিক পরিবেশ দেখে নিমিষেই চোখ জুড়িয়ে যাবে। পাহাড়, সবুজ গাছ-গাছালি, নির্মল বাতাস, শান্ত পরিবেশ -সব মিলিয়ে স্বর্গীয় একটা অনুভূতি এনে দিবে। এখান থেকে ফিরে মেইন রোডে এসে রেজু খালে কায়াকিং করার সুযোগও রয়েছে। ছোট ছোট সরু বোটে একজন বা দুইজন বসে ঐ খালে প্লাস্টিকের হাল বা দাঁড় বেয়ে কায়াকিং করতে হয়। এটাও আরেকটা মজার খেলা। মোটকথা রূপসী গোয়ালিয়ায় বেড়াতে গেলে হাতে ৪-৫ ঘন্টা সময় নিয়ে যেতে হবে। তাহলে আপনি ওখানকার সম্পূর্ণ আনন্দটা উপভোগ করতে পারবেন।

14.jpg

15.jpg

এই ছিল আমাদের আজকের বেড়ানো ও নতুন জায়গার সন্ধান। এভাবে আস্তে আস্তে আমরা নতুন নতুন জায়গা আবিষ্কার করবো। খুব শীঘ্রই আবার হাজির হবো অন্য কোন অঞ্চলের গল্প নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন, সবার জন্য শুভ কামনা।

Sort:  
 2 years ago 

ভাইয়া খুব সুন্দর হয়েছে ভাল লাগলো

ধন্যবাদ রোমেন।

 2 years ago 

অনেক সুন্দর ভাবে বর্ণনা করেছেন সবকিছু ।
এইভাবেই এগিয়ে যান।

পাশে থাকবেন, ধন্যবাদ।

 2 years ago 

আসলেই প্রাণ স্পর্শ করে আপনার লেখা গুলো। হৃদয় ছুঁয়ে যায়। সামনে উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ আপনাকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে। পাশে আছি সব সময়।

অনেক ধন্যবাদ ভাই।
আপনারা পাশে থাকলে আমিও প্রতিনিয়ত এমন সুন্দর সুন্দর পোস্ট লিখতে উৎসাহিত হবো।

 2 years ago 

ভাই আপনার প্রতিটা পোস্ট আমি পড়ি। খুব ভাল লাগে।

অনেক ধন্যবাদ আপু।
এভাবেই পাশে থাকবেন আশাকরি।

Coin Marketplace

STEEM 0.15
TRX 0.17
JST 0.028
BTC 68641.27
ETH 2457.35
USDT 1.00
SBD 2.33