বেড়ানো | কাঁকড়া বিচ | হিমছড়ি, কক্সবাজার | ১০% @btm-school
কক্সবাজারে সমুদ্র সৈকত ছাড়াও দিন দিন তার আশেপাশে নতুন নতুন দর্শনীয় স্পট আবিষ্কৃত হচ্ছে। কক্সবাজারে আগে খুব বেশি বেড়ানোর জায়গা ছিলনা। ইনানী, হিমছড়ি, টেকনাফ, মহেশখালী, ফিশারীঘাট ইত্যাদি জায়গাগুলো ছিল বেড়ানোর অন্যতম জায়গা। কিন্তু বর্তমানে কক্সবাজারে অনেক অনেক নতুন নতুন বেড়ানোর জায়গা তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে কক্সবাজার টু টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ রোডটা তৈরি হওয়ার পরে তার আশেপাশে প্রচুর এমন স্পটের দেখা মিলেছে যেখানে আগে কেউ যেতো না। আজ তেমনই আরেকটি দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে আপনাদেরকে জানাবো। জায়গাটির নাম হচ্ছে কাঁকড়া বিচ বা লাল-কাঁকড়ার বিচ। জায়গাটা বেশ কয়েক বছর আগে আবিষ্কৃত হয়েছে। এই বিচে সকাল-সন্ধ্যায় অপরূপ সৌন্দর্যের লাল কাঁকড়ার দেখা মেলে হাজারে হাজারে।
কাঁকড়া বিচে যেতে হলে আপনাকে কক্সবাজার শহরের কলাতলী পয়েন্টের ডলফিন স্কয়ার থেকে যানবাহন নিতে হবে। এখানে চাঁদের গাড়ী (জীপ), মিনিবাস, সিএনজি এবং ব্যাটারী চালিত অটোরিক্সা পাওয়া যায়। সঙ্গে যদি কয়েকজন মেম্বার থাকে তাহলে বড় কোন গাড়ী ভাড়া করে নিয়ে যেতে পারেন, আর একা হলে সিএনজি বা অটোরিক্সায় চলে যেতে পারেন। এখান থেকে সিএনজিতে পারহেড ভাড়া নিবে ৪০-৫০ টাকা। মেরিন ড্রাইভ ধরে টেকনাফের দিকে যেতে যেতে হিমছড়ির পরেই কাঁকড়া বিচের অবস্থান। হিমছড়ি এবং পেঁচার দ্বীপের মাঝামাঝি নতুন লাগানো ঝাউবনঘেরা জায়গাটিকেই কাঁকড়া বিচ বলা হয়ে থাকে। সমুদ্র এখান থেকে কিছুটা দূরে, বিশাল বড় ধু ধু বালিকণা সমৃদ্ধ খোলা জায়গা। এখানেই সকাল ও সন্ধ্যার আগে আগে বালুর নিচ থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে লাল কাঁকড়া বের হয়ে আসে খাবারের সন্ধানে। এদের নামানুসারেই এই বিচের নামকরণ করা হয়েছে কাঁকড়া বিচ।
কাঁকড়া বিচটা পেঁচার দ্বীপেরই একটা অংশ। হিমছড়ি পার হয়ে মেরিন ড্রাইভ রোডের পাশে নেমে বেশকিছুটা পথ পায়ে হেঁটে কাঁকড়া বিচে যেতে হয়। রাস্তার পাশে ছোট একটা খাল রয়েছে, তার উপরে আবার সুন্দর একটা কাঠের সেতু আছে, সেটা পার হয়ে সোজা সমুদ্রের দিকে বালি-মাটির রাস্তা দিয়ে হেঁটে যেতে হবে। যাওয়ার পথে রাস্তার দুপাশে অনেক অনেক ছোট ছোট ঝাউগাছ দেখতে পাবেন। কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগ এখানে প্রায় ৫ হেক্টর জমিতে ১২,৫০০ টি ঝাউগাছের চারা লাগিয়েছে নতুন বনায়ন তৈরি করার উদ্দেশ্যে। এই বন পার হলেই বিশাল বালিরাশি আর তারপরেই সমুদ্র। এই গোটা অঞ্চলকেই কাঁকড়া বিচ বা লাল কাঁকড়ার বিচ বলা হয়ে থাকে।
এখানে প্রতিদিন প্রচুর মানুষ আসে কাঁকড়া, বালিরাশি আর সমুদ্রের পানিতে পা ভেজানোর জন্য। এখানে অবশ্য প্যারাগ্লাইডিং করারও সুযোগ রয়েছে। প্যারাস্যুটের সাথে লম্বা রশি বেঁধে স্পীডবোটে লাগিয়ে দেয়া হয়, স্পীডবোট চলতে থাকে আর প্রচন্ড বাতাসের গতিতে প্যারাস্যুট উপরে উঠতে থাকে। উপর থেকে পুরো বিচের সৌন্দর্য দেখার খুবই ভাল একটা উপায় এটি। এখানে প্যারাগ্লাইডিং করতে পারহেড ৫০০-১০০০ টাকা লাগে। ৫-৭ মিনিট ধরে আকাশে ভেসে ভেসে পুরো বিচ ও সমুদ্র দেখতে যে কি আনন্দ তা ওখানে না গেলে বোঝার উপায় নাই। দিনের বেলা এখানে প্রচুর রোদ ও বাতাস থাকে। বাতাসের বেগে বিচের বালিগুলো উড়ে যেতে থাকে পূর্ব থেকে পশ্চিমে। অত্যাধিক রোদে তপ্ত হয়ে ক্লান্ত হয়ে গেলে বিচের ঠিক উপরে একটা ছাউনি দেয়া ঘর রয়েছে, সেখানে বসে বিশ্রাম নেয়া যায়।
এই হচ্ছে মোটামুটি কাঁকড়া বিচ সম্পর্কে একটা ধারণামূলক পোস্ট। আশাকরি সেখানে না গিয়েও আপনারা কিছুটা হলেও একটা আইডিয়া করতে পেরেছেন জায়গাটা সম্পর্কে। আর সময় ও সুযোগ হলে অবশ্যই সবাই ঘুরতে যাবেন, কাঁকড়া বিচ ছাড়াও কক্সবাজারে বেড়ানোর মত আরও অনেক জায়গা রয়েছে। আজ তাহলে এই পর্যন্ত, সবাই ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। খুব শীঘ্রই আবারও নতুন কোন জায়গায় বেড়ানোর খবর নিয়ে হাজির হবো ইনশাআল্লাহ।
সবাইকে অনেক ধন্যবাদ।
কাঁকড়া বিচ সম্মন্ধে জানতে পেরে অনেক ভালো লাগলো। বিচ টির প্রাকৃতিক সুন্দর্য আমাকে সত্যিই মুগ্ধ করেছে। সরকার থেকে যে ৫ হেক্টর জমিতে ১২,৫০০ ঝাউগাছের চারা লাগানো হয়েছে এটি সত্যি প্রশংসনীয়। পরবর্তী সময়ে এটি প্রচুর পরিমানে পর্যটক দের আকর্ষণের কেন্দ্র বিন্দু হয়ে উঠবে।
ঠিক বলেছেন দাদা।
দেশের যেখানেই এমন খালি জায়গা রয়েছে সেখানেই যদি আমরা প্ল্যান করে এমন গাছ লাগিয়ে দিতে পারি তাহলে একদিন এই গাছগুলোই আমাদের প্রকৃতিকে অনেক কিছুই দিবে।
ভাই, পোস্টটি পড়ে অনেক কিছুই জানতে পারলাম। এটি আমাদের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের একটি উৎকৃষ্ট বর্ণনা। ধন্যবাদ আপনাকে।
আমার পোষ্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য আপনাকেও ধন্যবাদ ভাইজান।
খুব সুন্দর জায়গা কিন্তু লাল কাকড়া দেখলাম না তো?
হুম, জায়গাটা আসলেই অনেক সুন্দর।
আর লাল কাঁকড়া আমরাও দেখতে পাইনি!
সাধারণত লাল কাঁকড়া বের হয় খুব সকালে আর সন্ধ্যার আগে আগে যখন আবহাওয়া ঠান্ডা থাকে, তারা খাবারের খোঁজে বের হয়। কিন্তু আমরা ওখানে গেছিলাম তপ্ত দুপুরে।
কাঁকড়া বিচ সমন্ধে অনেক কিছু জানলাম , সত্যি অনেক সুন্দর জায়গা আর অনেক কিছুই জানতে পারা গেলো।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
এই পোস্টটি দেখে আমার কক্সবাজার ভ্রমনের মুহূর্ত গুলো মনে পরে গেলো
ধন্যবাদ পুরোটা পড়ার জন্য।